অধ্যায় ৬
প্রায় উড়ে এসে ওর বুকে আছড়ে পড়লো ইলোরা।
একটুখানি নয়, ভীষণ বিব্রতবোধ করলো মুহিব। মফস্বলের বাস টার্মিনাল। এলাকার সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে সন্দেহ নেই। এর মধ্যেই বাস থেকে নেমে এসেছিলো তিন ভুত শিকারি। স্টেশন পর্যন্ত আসেনি ভুতবাবা সুমন। হল ভ্যাকেন্ট হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর সে নাটোরে নেমে পড়েছে। বাসা ওদিকেই তার। মুহিবকে দৃষ্টিসীমার মধ্যে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাঁধের ব্যাগটা রাস্তায় আলগোছে ছেড়ে দিয়েছিলো ইলোরা। তারপর একশ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতার মতো ছুটে এসে এই শক্ত আলিঙ্গন। কোনো মানে হয়?
তাও কেন যেন চোখে পানি চলে এলো মুহিবের। আলতো করে একবার জড়িয়ে ছেড়ে দিলো মেয়েটিকে, “হয়েছে হয়েছে। যা শুরু করেছিস, লোকজন ধরে বেঁধে বিয়ে পড়িয়ে দেবে। গ্রাম এলাকার ব্যাপার স্যাপার।”
এতোক্ষণে ওকে ছেড়ে কাছ থেকে খুটিয়ে দেখলো ইলোরা, “আরি বাবা, ইমোশনাল হয়ে গেছে দেখি। ছ্যাঁকাখোর মুহিব।”
চোখের পানিটা আড়াল করার বৃথা চেষ্টা করলো মুহিব। হাসলো একটু। গত ছত্রিশটা ঘণ্টা কেমন কেটেছে সে ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপারটা হলো, এই পুরো সময়টা কেটেছে একদম একাকি। মুহিবের মনে হচ্ছিলো এভাবে আর একটা দিন পার করতে হলে একেবারেই ভেঙে পড়তো ও।
লিটু আর শামীমকে জড়িয়ে ধরলো এরপর। শক্ত আলিঙ্গনে একে অন্যের পিঠে চাপড় দিলো ওরা।
“হারামজাদারা ভূত ধইরা দুনিয়া উদ্ধার করছিস!”
“বালের অ্যাডভেঞ্চার করসি আমরা, মামা।” খেদের সঙ্গে বলল লিটু, এদিকে যে এমন একটা ঘটনা ঘটবে কে জানতো। তুই তো ক্যাম্পাসেই ছিলি। সব বলবি, এখনই। চল।”
কাছের একটা চায়ের দোকান দেখিয়ে দিলো সে। অসহায়ের মতো সেদিকে তাকালো মুহিব।
“অনেক কথা বলার আছে, দোস্ত। তোদেরটাও শোনার আছে। এতো অল্প সময়ে হবে না।”
শামীম মাথা দোলালো, ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। পাবলিক প্লেসে বলার চেয়েও বেশি কিছু বলার আছে মুহিবের।
“অলরাইট। সিগারেট চলতে পারে তো একদফা।
“শিওর।”
একসাথে চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে যায় ওরা। তার মধ্যেই প্রশ্ন করলো মুহিব, “হল কিন্তু ভ্যাকেন্ট। ইলোরা যাবে কোথায়?”
ছেলেরা হলে সীট না পেয়ে বাইরে মেসে থাকে বটে, তবে মেয়েদের জন্য প্রথম বর্ষ থেকেই হলে সীট থাকে। ওখান থেকে সাইকেল চালিয়ে ক্লাসে আসতে গিয়েই প্রথম দিকে নাটক কম হয়নি। হল ভ্যাকেন্ট করে দেওয়ার কারণে ছেলেদের মাথা ব্যথা নেই। তবে ইলোরা একজন মেয়ে।
কাঁধ ঝাঁকালো ইলোরা, পোষাক দেখালো নিজের, “যতোটা সম্ভব ছেলে সেজে এসেছি। আজকে রাতে শামীমের রুমে থাকবো আমি।”
ছয়টার মধ্যে মেয়েদের হলে ঢোকা নিয়ে কড়াকড়ি আছে বটে, তবে সারারাত কেউ হলে না থাকলে আপত্তি তোলার মতো কেউ নেই। ছাত্রিরা মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ে, বাইরে রাত কাটায়। যাদের বয়ফ্রেন্ডের বাড়ি কাছাকাছি, তাদের তো আরামের শেষ নেই।
“বাড়িওয়ালা জানতে পারলে তো অশ্লীল অভিযোগ আনবে।” মুহিব সামান্য হলেও ঘাবড়ে গেলো। ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার পর বাড়িওয়ালারা সেখানে মেয়ে ঢোকা নিয়ে এমনকি ঢাকাতেও সেন্সিটিভ। আর এ তো মফস্বল।
“ঐ বুড়োকে জানানোর দায় পড়েনি আমাদের কারও।” একবাক্যে বিষয়টা নাকচ করে দিলো শামীম, “শুধু ইলোরা না, তোরাও থাকবি আজ আমার রুমে। অনেক কথা জমে আছে।”
*
ছয় প্যাকেট সিগারেট, একতাল স্ন্যাকস আর দুই লিটারের একটা কোকের বোতলকে ঘিরে বসেছে ওরা চারজন। ঘরের আলো বলতে একটা ডিম লাইট। পরদিন ক্লাস না থাকলে এরকম একটা পরিবেশ একজন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের জন্য কতোটা অনাবিল আনন্দের তারাই জানে। আর ওদের ক্যাম্পাস তো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ।
এখান পর্যন্ত ইলোরাকে নিরাপদেই আনা গেছে। বাড়িওয়ালা টেরই পায়নি বিষয়টা। চারজন ছেলে সিঁড়ি বেয়ে উঠলো না তিনটি ছেলে আর একটি মেয়ে, তা কে বুঝবে? তাছাড়া ওদের রেকর্ডও পরিস্কার, মেয়েঘটিত
কেলেঙ্কারি কখনও হয়নি। লিটুর হ্যাট ইলোরার চুল ঢাকতে পেরেছে। নিচে দারোয়ানের বালাই নাই। ভয় ছিল কেবল সিঁড়িঘরে কারও সামনে পড়ে যাওয়ার, তাও ঘটেনি। এই ফ্ল্যাটে শামীমের আর দুই রেন্ট শেয়ারার হাল্কা চোখ টিপ দিয়েছে শামীমের উদ্দেশ্যে, তবে এটুকু খোঁচা সহ্য না করে ইলোরার মতো আগুন সুন্দরিকে একেবারে নিজের ঘরে আনা গেলে সেটা হতো ঐতিহাসিক ঘটনা।
মৃদু আলোয় একে অন্যের দিকে ওরা তাকাচ্ছে না। মুহিব অবশ্য আড়চোখে বন্ধুদের দেখলো একবার। লিটু আর ইলোরার মুখে ক্লান্তির ছাপ। শামীমকেই সবচেয়ে বেশি চাঙ্গা দেখাচ্ছে। সম্ভবত বাড়িওয়ালার চোখ এড়িয়ে একটা মেয়েসহ নিজের ঘরে বন্ধুদের নিয়ে আসার উত্তেজনা তার এই জাগ্রত দশার পেছনে প্রভাবকের কাজ করছে। অথবা নিকট ভবিষ্যতে হতে যাওয়া আলাপের সম্ভাবনাই তাকে এমন চাঙ্গা রেখেছে। মুখরোচক আলোচনার সময় ঘুমকাতর শামীমকে কেউ দেখেছে বলে মনে করতে পারে না। মুহিবের সাথে একবার চোখাচোখি হয়ে গেলো তার।
তাকে নিরাশ করতেই প্রস্তাব রাখলো মুহিব, “ক্যাম্পাস নিয়ে আলোচনা করবো খানিক পরে। আগে তোদেরটা শুনি। ভুতবাবার নেতৃত্বে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি যে গঠিত হলো, রেজাল্ট কি?”
“শামসভাইয়ের মার্ডারের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু না ওটা।” আপত্তি জানালো শামীম।
“তা তো বটেই। আমি বলছি না ঐ কেসটা শামসভাইয়ের মার্ডারের চেয়ে বেশি গুরুত্ব রাখে। কিন্তু হাল্কা কিছু দিয়ে শুরু করতে চাচ্ছি। কারণ আছে।”
মুহিবের কণ্ঠে একটা কিছু ছিল। আপত্তি করলো না আর কেউ। ইলোরা শুরু করলো প্রথমে। সীতাকুণ্ডের কাছাকাছি একটা পরিত্যক্ত বাড়ি, দোতলা। আর সব মধ্যযুগীয় গড়নের মতোই, মোটা দেওয়াল আর চওড়া খিলান ওটায় ছিল। জায়গায় জায়গায় ধ্বসে পড়া ছাত। সিঁড়ি দুটো, একটা ভাঙা। রাতের কি দিনে, বাদুড়ের আবাস দোতলায়। প্রথমদিন ইলোরা হাঁচড়ে পাঁচড়ে ভাঙা সিঁড়ি বেয়ে উঠে দোতলায় প্রথম দরজাটা খুলেই ভিড়মি খেয়েছিলো। এক ঝাঁক বাদুড় বেরিয়ে এসেছিলো ওখান থেকে, অনেকগুলোর সঙ্গেই মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছিলো “দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া” মহামতীর। কাজেই পতন এবং মূর্ছা! গল্পের এই পর্যায়ে এসে অবশ্য লিটু জানানোর চেষ্টা করলো জ্ঞান ফেরাতে তার মোজাকেই স্মেলিং সল্ট হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছিলো, তবে তারস্বরে আপত্তি করেছিলো ইলোরা।
শামীমের ঘরের পরিবেশ অনেকাংশে হাল্কা হয়ে এলো।
প্রথমেই ওরা সেট করেছিলো ক্যামেরা আর রেকর্ডিং ডিভাইস। গোটা বাড়িজুড়ে মোট তিনটা ক্রিটিকাল স্পট পেয়েছিলো, সুমনের ভাষ্যে। এসব দিকে তার এক্সপার্টিজ ফেলে দেওয়ার মতো নয়। একজন আর্সনিস্ট কিংবা এক্সপ্লোসিভ এক্সপার্টের মতোই দক্ষতার সাথে সর্বাধিক কম সংখ্যক ক্যামেরা আর রেকর্ডার বসিয়ে সবচেয়ে বেশি এলাকা কাভার করতে পারে সে। ইনফ্রারেড ক্যামেরা হিসেবে ক্যানন ভুতবাবার খুব পছন্দের। তুলনামূলক সস্তাও, ত্রিশ হাজারের মধ্যে পাওয়া যায়। তবে এমন ক্যামেরা ওর আছে ছয়টা। সবগুলো ব্যবহারের প্রয়োজন প্রথমে পড়েনি।
প্রথম রাতে ওরা টের পায়নি কিছুই। প্রবল অস্বস্তিবোধ হয়েছিলো। তবে শহর ছেড়ে খানিকটা দূরে এক কুখ্যাত পোড়াবাড়িতে রাত কাটানোর সময় যে কেউ অস্বস্তির শিকার হতে পারে। যদিও লিটু পরিস্থিতির বর্ণনা দিলো “পেছনের চুল হুড়হুড়াইয়া ওঠতেছিলো দোস্ত” আর ইলোরা একে আখ্যা দিলো “বুকের ভেতর কেমন যেন চিন চিন করছিলো, যেন খুব খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে” বলে। তবে তাদের উপমার ভাণ্ডার খালি করতে দিলো না মুহিব। পরিবেশটা সম্পর্কে সম্যক ধারণা তার হয়েছে।
দ্বিতীয় দিনটাও এভাবে গিয়েছিলো। কম আর বেশি। অস্বস্তির পরিমাণটা খানিক বেড়েছিলো শুধু, এই যা। তবে অমীমাংসীত কোনো স্থানে পা রাখলে সময়ের সাথে অস্বস্তি বেড়েই চলে এই তথ্যও সবার জানা আছে।
“ঘটনা আসলে ঘটলো তৃতীয় দিন।” শামীম অবশেষে বর্ণনার গুরু দায়িত্ব তুলে নিলো নিজের কাঁধে, “বাড়িটার সামনে একসময় বাগান ছিল হয়তো। এখন পুরোদস্তুর জঙ্গল। আমরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলাম যথারীতি। নিচতলায় আমি আর সুমন। দোতলায় ইলোরা আর লিটু।”
“বাই অ্যানি চান্স অজ্ঞান হয়ে গেলে যেন হাতের কাছে আমার মোজা থাকে, তাই।” গর্বের সঙ্গেই জানালো লিটু।
“যা হোক, তার পর আগের দিনের মতোই ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম আমরা। মাঝে মাঝে ফিসুর ফাসুর করছি আমি আর সুমন। আমাদের সেইম রুটিনে চলার ওইটাই ছিল শেষদিন। ঠিক করেছিলাম আমাদের উপস্থিতি হয়তো অতিপ্রাকৃত কোনো শক্তির জন্য অস্বস্তির কারণ হচ্ছে। আমরাই শুধু ওদের দেখলে ভয় পাই তা নয়, ওদের মধ্যেও কেউ কেউ থাকে যারা আমাদের দেখলে ভয় পায়।” এটুকু এসে সংশয়ে পড়ে গেলো শামীম, “অন্তত ভূতবাবা আমাকে তেমনটাই বলেছিলো। তবে কথা তো আর ওইটা না। আমাদের পরবর্তি প্ল্যান ছিল চতুর্থদিন বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করবো।
ভেতরে থাকবে ইকুয়েপমেন্টস। এইসব নিয়ে ফিসুর-ফাসুর করছি, এমন সময় ঘটলো ঘটনাটা।”
এক মুহূর্তের জন্য থামলো শামীম।
“নাটুকেপনা না করে বলে ফ্যাল।” হাল্কা বিরক্তিভরেই বলল মুহিব।
“ইএমএফ ডিটেক্টর। ফ্রিকুয়েন্সির তারতম্য ধরতে পারে এই যন্ত্র। সিগন্যাল পাওয়া শুরু করলাম হঠাৎ-ই। ক্যাম কর্ডার ঘুরিয়ে ভিডিওর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছিলো ভুতবাবা। ঠিক এই সময়-”
“-শুনতে পেলাম নেকড়ের ডাক।” নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে বলে ফেললো ইলোরা।
“নেকড়ে এলো কোত্থেকে?”
“আসতেই পারে। যে জঙলা ওখানে। তবে ডাকটা এসেছিলো ঠিক বাড়ির সামনের জঙ্গল হয়ে থাকা বাগান থেকে। এটা আমি কসম কেটে বলতে পারবো।” মাথায় হাত রেখে বলল শামীম, “ওই মুহূর্তে, বুঝতেই পারছিস, আত্মা উড়িয়ে গেছিলো আমাদের।”
“দোতলায় ইলোরারা কি ইএমএফ-এ কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলি?” জানতে চাইলো মুহিব।
“অবশ্যই। হারামজাদা নেকড়ে ডেকে ওঠার আগে আমরা ওই দিকেই মনোযোগ দিয়ে ধরাটা খেয়েছি। জান উড়িয়ে নিয়ে গেছিলো হারামজাদা।” সব রাগ মায়ানেকড়ের ওপরই ঝাড়লো লিটু।
“ফাইন। তারপর?”
“ভুতবাবা তো ব্যস্ত হয়ে গেলো মোমবাতি নিয়ে। মোমবাতি দিয়ে ভুত কিভাবে ধরে জানিস তো? একটা মোমবাতি জ্বালাতে হবে কাঁচের একটা বয়ামে, মুখটা রাখতে হবে খোলা। ভুত আলোক শক্তি দেখে আকৃষ্ট হবে, সুড়সুড় করে আলো খেতে চলে আসবে। আর টুক করে তখন মুখটা আটকে দিলেই বোয়ামে আটকে যাবে ভুত। সহজ উপায়।”
ফোঁৎ করে একটা নিঃশ্বাস ফেললো মুহিব। অবিশ্বাস আর হাসির সংমিশ্রণ বলা যায় শব্দটাকে। তবে লিটু আর ইলোরার গম্ভির মুখ দেখে বুঝতে পারলো তারা অন্তত এসব গাঁজাখুরি বিষয় বিশ্বাসই করছে।
“সুমন মোমবাতি নিয়ে একদম রেডি। ঠিক তখনই…”
“ধ্বসে পড়লো ছাদ।” ঢোক গিলে বলল লিটু।
“তোরা তখন কোথায় ছিলি?”
“আমি আর ইলোরা অল্পের জন্য ওই ফোঁকড় বেয়ে পড়িনি। পায়ের কাছেই ভাঙলো।”
“মেরেছে!”
“তাহলেই বোঝ! ভূতবাবার একটা ক্যামেরা ছাতচাপা পড়ে একেবারে শেষ। বিয়ন্ড রিপেয়ার।”
“ফাক!”
এর পরের রাতেই পেলাম ব্রেকথ্র। মানে শামসভাই যে রাতে-”
মাথা দোলালো মুহিব।
“রেকর্ডারে ধরা পড়েছিলো ব্যাপারটা। অস্বাভাবিক এক শব্দ। অন্যরকম জিনিসটা দোস্ত। বলে বোঝানো যাবে না।”
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো ওরা। ইলোরার চুল ফ্যানের বাতাসে উড়ছে। কিছুক্ষণ তার চোখে তাকিয়ে থাকলো মুহিব। একটু ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে মেয়েটিকে। গত কয়েক রাতের আতঙ্ক ভুলতে পারেনি
“আমাদেরটা তো সব শুনলি। শামসভাইয়ের ঘটনাটা বল তো এবার। হয়েছিলোটা কি?”
কাঁধ ঝাঁকালো মুহিব, “চার-পাঁচজন মানুষ মিলে শামসভাইকে তাড়া করে ভিসি স্যারের বাসার ওখানে নিয়ে গিয়ে জবাই করে ফেলেছিলো। রাত এগারোটার দিকে।”
“শিট! কারণটা কি? পলিটিকাল?”
“মনে হয়। খুনিদের একজন ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার কথা বলেছিলো। বা এরকম কিছু। পলিটিকাল হতে পারে।”
“এক সেকেন্ড!” হাত তুললো শামীম, “খুনিরা কি বলেছে তুই কি করে জানিস?”
প্যাকেট থেকে আরেকটা সিগারেট বের করলো মুহিব। ধীরেসুস্থে আগুন ধরালো। তারপর পালা করে সবার দিকে তাকালো একবার।
“কারণ ঠিক সেই সময় জায়গাটা থেকে সামান্য দূরে বসে সিগারেট টানছিলাম আমি।”