।। কবীর-নরশ্রী-পীপা-নানক-বৃত্তান্ত।।
দিতিপুত্রৌ মহাঘোরৌ বিষ্ণুনা প্রভবিষ্ণুনা। সহতৌ তু দিতিজ্ঞাত্বা কশ্যপং সমপূজয়ৎ।।১।। দ্বাদশাব্দান্তরে স্বামী কশ্যপো ভগবানৃষি উবাচ পত্নীং স হি তাং বরং ব্রৃহি বরাননে। সা তু শ্রুত্বা নমস্কৃত্য বচনং প্ৰাহ হর্ষিতা।।২।। অদিচিতমম যা দেবী সপত্নী পুত্রসংযুতা। দ্বাদশততয়াস্নাস্যা মম দ্বৌ তনয়ৌ স্মৃতৌ।।৩।। তদব্যসুতে নৈব বিষ্ণুনা সুরপালিনা। বিনাশিতৌ সুতৌ চোরৌ ততোহ হং ভূশদুঃখিতা।।৪। দেহি মে তনয়ং স্বামিন্দ্বাদশাদিত্যনাশনম্। ইতি শ্রুত্বা বচো ঘোরঃ দিতিং প্রাহ সুদুঃখিতঃ।। ৫।। ব্রাহ্মণা নির্মিতৌ লোকে ধর্মাধর্মো পরাপরৌ। ধর্মপক্ষাস্ত যে লোকে নরাস্তে ব্রহ্মণঃ প্রিয়াঃ।।৬।। অধর্মপক্ষাস্তু নরা বৈরিণস্তস্য ধীমতঃ। অধর্মপক্ষৌ তনয়ৌ তস্মামৃত্যুমুপাগতৌ।।৭ ॥ অতো ধর্মপ্রিয়ে শুদ্ধং কুরু তস্মান্মহাবলঃ। ভবিষ্যতি সুতো ধীমাঁশ্চিরঞ্জীবী তব প্রিয়ঃ।।৮।। ইতি শ্রুত্বা দিতিদেবী কশ্যপাদ্ গর্ভমুত্তমম্। সংপ্রাপ্য সা শুভাচারা বভূব ব্রতধারিণী।।৯।। তস্যাগর্ভগতে পুত্র মহেন্দ্ৰশ্চ ভয়ান্বিতঃ। দাসভূতঃ স্থিতো গেহে স দিতেরাজ্ঞয়া গুরো।।১০।। সপ্তমাসি স্থিতে গর্ভে শক্রমাযাবিমোহিতা। অশুচিশ্চ দিতিদেবী সুস্বাপ নিজমন্দিরে।।১১।। অঙ্গুষ্ঠমাত্রো ভগবান্মহেন্দ্ৰো বজ্ৰসংযুতঃ। কুক্ষিমধ্যে সমাগম্য চক্রে গর্ভং স সপ্তধা।।১২।।
।। করীর-নরশ্রী-পীপা-নানক বৃত্তান্ত।।
এই অধ্যায়ে কবীর-নরশ্রী-পীপা-নামক এবং নিত্যানন্দ সাধুদের সমুৎপত্তি বৃত্তান্ত বর্ণন করা হয়েছে।
সুর গুরু বৃহস্পতি বললেন–দিতির দুই পুত্র মহাঘোর ছিলেন। তারা দুজনে বিষ্ণুর দ্বারা প্রভবিষ্ণু হয়ে মারা গেলেন। এই ঘটনা জেনে দিতি কশ্যপকে সম্যক রূপে পূজা করলেন।।১।।
দিতি যখন ১২ বৎসর ধরে যজন করলেন তখন ভগবান্ কশ্যপঋষি নিজ পত্নীকে বললেন–হে বরাননে, তুমি নিজের মনোবাঞ্ছিত বর প্রার্থনা কর। সেই দিতি একথা শ্রবণ করে প্রচন্ড হর্ষিত হলেন এবং পতিকে প্রণাম করে তাকে বললেন- হে ভগবান্ আমার সপত্নী অদিতি দেবী পুত্রসংযুক্ত। তাঁর ১২ পুত্র মাছে এবং আমার দুই পুত্র ছিল। সেই দুই পুত্রকে অচর্যসুত সুর পারনকারী বিষ্ণু বিনাশ করেছেন। যারফলে আমি অতি দুঃখিত। হে স্বামিন, আমাকে এমন পুত্র প্রদান কর, যারা দ্বাদশ অদিতি পুত্র নিািশকারী হবে। এই ঘোর বচন শ্রবণ করে কশ্যপ দুঃখিত হয়ে দিদিকে বললেন- লোকমধ্যে ব্রহ্মাপর এবং অপর ধর্মতথা অধর্ম এই দুই নির্মাণ করেছেন। ধর্মপক্ষ গ্রহণ কারী নর তারা ভগবাণের প্রিয় অধর্ম পক্ষ গ্রহণ কারী নর সেই ধীমানের শত্রু। তোমার পুত্র তো অধর্ম পক্ষগ্রহণকারী। এই কারণে তারা মৃত্যুপ্রাপ্ত হয়েছে। হে ধর্মপ্রিয়ে, এই কারণে মনশুদ্ধ কর। এর ফলে মহাবলবান্, ধীমান এবং চিরকাল জীবনধারণকারী তোমার পুত্র জন্মগ্রহণ করবে। একথা শ্রবণ করে দিতি দেবী কশ্যপ ঋষির থেকে উত্তম গর্ভধারণ করলেন এবং পুনরায় তিনি শুভাচারী বৃত্তধারণকারী হলেন; তার গর্ভ থেকে পুত্র আগত হলে মহেন্দ্ৰ দেব অত্যন্ত ভয়াতুর হলেন এবং গুরুর আজ্ঞাতে দাস হয়ে দিতির গৃহে স্থিত হলেন। যখন গর্ভস্থিত সন্তান ৭মাস হল তখন দিতি ইন্দ্রের মায়াতে বিমোহিত হয়ে অশুচি দশাতে নিজ মন্দিরে শয়ন করলেন। এই ছিদ্র প্রাপ্ত করে মহেন্দ্র দেব অগুষ্ঠ মাত্র হয়ে রজ্রধারণ করে দিতি গর্ভে প্রবেশ করে নিজ বজ্র দিয়ে গর্ভকে ৭ টুকরো করলেন।। পুনরায় জীবভূত অত্যন্ত বলবান্ সেই ৭ মহারিপুকে দেখে মহেন্দ্র প্রত্যেক খন্ডকে ৭ খন্ডে বিভক্ত করলেন। তাদের নম্রীভূত দেখে ইন্দ্র তাদের সাথে যোনি দ্বা দিয়ে বাইরে নিয়ে এসে মহেন্দ্ৰ দিতিকে প্রণাম করলেন।। ২-১৪।।
জীবভূতাননতিবলান্দষ্ট্বা সপ্ত মহারিপূন্। একৈকঃ সপ্তধা তেন মহেন্দ্ৰেণ তদা কৃতঃ।।১৩।। নম্রীভূতশ্চ তান্দুষ্টা মহেন্দ্ৰস্তৈঃ সমন্বিতঃ। যোনিদ্বারেণ চাগম্য প্রণনাম তদা দিতিম্।।১৪।। প্রসন্না সা দিতিদেবান্মহেন্দ্ৰায় চ তান্দদৌ। মরুদ্ণাশ্চ তে সর্বে বিখ্যাতাঃ শত্রুসেবকাঃ।।১৫।। স তু পূর্বভবে জাতো ব্রাহ্মণো লোকবিশ্রুতঃ। ইলো নাম স বেদজ্ঞো যথেলো নৃপতিস্তদা।।১৬।। একদা বলবা জামনুপুত্র ইলঃ স্বয়ম্। একাকী হয়মারুহ্য মেরোবিপিনমাযযৌ।।১৭।। মেরোরধঃ স্থিতঃ খন্ডঃ স্বর্ণগর্ভো হরিপ্রিয়ঃ। নিবাসং কৃতবাঁস্তত্র কৃত্বা রাষ্ট্রং মহোত্তমম্।।১৮।।
দিতি তখন প্রসন্ন হয়ে সেই দেবগণকে মহেন্দ্রের জন্য প্রদাণ করলেন। তার সকলে ইন্দ্রের সেবক মরুতগণ এই নামে বিখ্যাত হলেন।। তারা পূবৃজন্মে লোক প্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণ হয়েছিলেন। তাঁরা বেদজ্ঞাতা এই নামে পরিচিত ছিলেন। সেই সময় ইলরাজা ছিলেন।। ১৫-১৬।।
বলবান্ মনুপুত্র রাজা ইল স্বয়ং একলা অশ্বে সমারোহন করে মেরুবনে গিয়েছিলেন। মেরুগিরির নিম্ন ভাগে হরিপিয় স্বর্ণ গর্ভখন্ড ছিল। সেখানে তিনি মহোত্তম রাষ্ট্র নির্মাণ করে নিজের নিবাস স্থান করেছিলেন। সেই স্থলে দেবগণ ইলের দ্বারা আবৃত্তও ছিলেন। অতঃপর দেবপ্রিয় সেই খন্ড ইলাবৃত নামে প্রসিদ্ধ হয়েছিল।। ১৭-১৯।।
ইলেনাবৃতমেবাপি কৃতং তত্র স্থলে সুরাঃ। ইলাবৃতমিতি খ্যাতঃ খন্ডোহ ভূদ্বিবুধপ্রিয়ঃ।।১৯।। ভারতে যে স্থিতা লোকা ইলাবৃতমুপাগতাঃ। মেরুগিরির্বক্ষময়ো বিধাত্ৰা নিৰ্মিতো হি সঃ।।২০।। আহোরণং নরৈস্তস্মিষ্কৃতং স্বর্ণময়ং শুভম্। তমারুহ্য ক্রমাল্লোকঃ স্বর্গলোকমুপাগতঃ।।২১।। তান্দৃষ্ট্বা মনুজাপ্রাপ্তাস্নদেহাম্বগমন্ডলে। বিস্মিতাশ্চ সুরাসসর্বে মহেশং শরণং যঃ।।২২।।
জ্ঞাত্বা স ভগবাভ্ৰুদ্রো ভবান্যা সহ শংকরঃ ইলাবৃতবনে রম্যে স রেমে চ তয়া সহ।।২৩।। এতস্মিন্নন্তরে প্রাপ্তো বৈবস্বতসুতো মহান্ ইলো নাম মহা প্রাজ্ঞো মৃগয়ার্থী সদাশিবম্।।২৪।। নগ্নভূতং সমালোক্য নেত্রে সংমীল্য সংস্থিতঃ। লজ্জিতাং গিরিজাং দষ্টা শশাপ ভগবাস্থরঃ।।২৫।।
ভারতে যে লোকস্থিত ছিলেন তারা ইলাবৃততে উপগত হলেন। সেটি মেরুগিরি বৃক্ষ পরিপূর্ণ বিধাতা নির্মিত ছিল। সেখানে নরগণ স্বর্ণময় শুভ আরোহণ করলেন। সেখানে আরোহণ করে ক্রমে লোক স্বর্গলোকে উপগত হলেন।। ২০-২১।।
স্বদেহে সেই মনুষ্যগণকে স্বর্গে দেখে সমস্ত দেবগণ আশ্চর্য হলেন, এবং পুনরায় তারা মহেশের শরণে গেলেন।। ভগবান্ রুদ্র ভবানীর সাথে এই কথা জেনে পুনরায় ভবানীকে নিয়ে সেই রম্য ইলাবৃত বনে রমন করতে লাগলেন।। ২২-২৩।।
ইতিমধ্যে মহান্ বৈবস্বত পুত্র মহাপন্ডিত ইল মৃগয়ার্থে সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। তিনি নগ্নরূপী সদাশিকে দেখে নিজনেত্র বন্ধ করে সেখানে স্থিত হলেন। যখন ভগবান্ হর গিরিজাকে লজ্জিত দেখলেন তখন তিনি শাপ দিলেন যে, এই রম্য বনে আমি ব্যতীত সকলে নারী রূপে প্রাপ্ত হবে। এই বচন বলার পর সকলে নারী রূপ প্রাপ্ত হল। রাজাও মনোহারি নারীরূপী কন্যা ইলাতে পরিণত হলেন। তিনি অনেক সময় পর্যন্ত মেরুশিখর প্রচন্ড তপস্যা করলেন। সমাধিভূত ইলা ২৭ চতুর্যুগ পর্যন্ত তপ করেছিলেন। তার পর সেই কন্যা ইলা ত্রেতা যুগের মধ্যে চন্দ্রপুত্র বুধকে নিজ পতি রূপে প্রাপ্ত হয়ে চন্দ্র বংশ সমুৎপন্ন করলেন।। ২৪-২৮।।
অস্মিনখন্ডে সদা নাৰ্যো ভবিষ্যন্তি চ মাং বিনা। ইত্যুক্ত্বা বচনং তস্মিন্নার্য সর্বা বভূবিরে।।২৬।। ইলা বভূব নৃপতেঃ কন্যা জনমনোহরা। বহুকাল মেরুশৃঙ্গে মহত্তপমচীকরৎ।। ২৭।। ইলাসমাধিভূতায়াঃ সপ্তবিংশচ্চতুযুগম্। জাতং তত ইলা কন্যা ত্ৰেতামধ্যে তু চন্দ্রজম্। বধুং দেবং পতিং কৃত্বা চন্দ্ৰবংশমজীজনৎ।।২৮।। অযোধ্যাধিপতিঃ শ্ৰীমান্যদেলাবৃতমাগতঃ। তস্য রাজ্ঞী মদবতী নান্না তুষ্টাব পার্বতীম্।।২৯।। তদা প্রাপ্ত ইলো বিপ্রস্তস্যারূপেন মোহিতঃ। পস্পর্শং তাং মদবতীং রাজ্ঞী কামবিমোহিতঃ।।৩০।। এতস্মিন্নন্তরে তত্র বাগুবাচাশরীরিণী। ইলো নায়ং দ্বিজশ্চায়ং তব রূপবিমোহিতঃ।।৩১।। অনিলো নাম তত্রৈব বিখ্যাতোহ ভূদ্বিজস্য বৈ। কামাগ্নিপীড়িতো বিপ্ৰস্স তুষ্টাব চ পাবকম্।।৩২।। ছিত্তা ছিত্তা শিরো রম্যং তস্মৈ জাতং পুনঃ পুনঃ দত্ত্বা তুষ্টাব তং দেবং প্রসন্নোহ ভূদ্ধনঞ্জয়ঃ।।৩৩।। প্রাহ ত্বমুনপঞ্চাশদ্বিভেদাজ্ঞনয়িষ্যসি। তথাহং মিত্রবাভূত্বা তৎসংখ্যস্তব কামদঃ।।৩৪।। যথা কুবেরো ভগবান্যড় বিংশদ্বরুণপ্রিয়ঃ। তথাহমুনপঞ্চাশদ্বিভেদস্তব বৈ সখা।।৩৫।। ইত্যুক্তে বচনে তস্মিন্দিতেকুক্ষৌ দ্বিজোত্তমঃ। বায়ুনাম স বৈ জাতঃ পাবকস্য প্রিয়সখা।।৩৬।। ইতি শ্রুত্বা গুরোবাক্যং বৈশ্যজাত্যাং সমুদ্ভবঃ। ধান্যপালস্য বৈ গেহে মূলগন্ডান্তজঃ সুতঃ।। পিতৃমাতৃপরিত্যক্তঃ কাশ্যাং বিন্ধ্যবনে তদা।।৩৭।। অলিকো নাম বৈ ম্লেচ্ছস্তত্র স্থানে সমাগতঃ।।৩৮।।
অযোধ্যাপতি ধীমান্ যে সময় ইলাবৃতে এসেছিলেন সেই সময় সেই রাজার রানী মদবতী পার্বতীর স্তুতি করেছিলেন। সেই সময় ইলবি সেখানে এসেছিলেন এবং মদবতীকে দেখে তার রূপে তিনি মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন, কাম বিহ্বল হয়ে সেই বিপ্র সেই মদবতী রাজ্ঞীকে স্পর্শ করলেন।। ৩০।।
ইতিমধ্যে অশরীরী বাণী বললেন তিনি ইল নন তোমার রূপে বিমোহিত ইনি দ্বিজ, সেখানে দ্বিজের অনিল এই নাম প্রসিদ্ধ হল। কামাগ্নিতে পীড়িত সেই ব্রহ্মাণ পাবকের স্তুতি করলেন। তিনি নিজ রম্য শির কেটে অগ্নিতে প্রদান করলেন। কিন্তু পুনঃ পুনঃ ও উৎপন্ন হতে লাগল। এই প্রকারে তিনি অগ্নিদেবের স্তব করলেন। তখন ধনঞ্জয় প্রসন্ন হলেন। তিনি সন্তুষ্ট হয়ে বললেন তুমি ৪৯ বিভেদ উৎপন্ন করবে। তখন আমি বিত্রবান্ হয়ে সেই সংখ্যা যুক্ত তোমার কামনাদেব।। ভগবান্ কুবের যেমন ২৬৪ রুনের প্রিয়ং সেই প্রকার ৪৯ বিভেদ যুক্ত তোমার সখা হব।। ৩১-৩৬।।
সূতজী বললেন- গুরুর এই বাক্য শ্রবণ করে বৈশ্য জাতিতে সমুঃপন্ন ধান্যপালের গৃহে মূলগভান্তে জন্ম গ্রহণ কারী পুত্র জাত হল যে মাতা পিতার দ্বারা পরিত্যক্ত হন সেই সময় কাশীতে বিন্ধ্য বনে অলিক নাম্নী ম্লেচ্ছ ছিল তিনি সেই স্থানে গেলেন।। ৩৭-৩৮।।
অনপত্যো বস্ত্রকারী সুত প্ৰাপ্য গৃহং যযৌ। কবীর ইতি বিখ্যাতঃ স পুত্রো মধুরাননঃ।।৩৯।। স সপ্তাব্দবপুভূত্বা গোদুদ্বপানতৎপরঃ। রামানন্দং গুরুং মত্বা রামধ্যানপরোহ ভবৎ।।৪০। স্বহস্তেনৈব সংস্কৃত্য ভোজনং হরয়েহ পর্যৎ। তৎপ্রিয়ার্থং হরিসসাক্ষাৎ সর্বকাম প্রদোহ ভবৎ।।৪১।। উত্তানপাদতনয়ো ধ্রুবোভূৎক্ষত্রিয় পুরা। পিতৃমাতৃপরিত্যক্তঃ স বাল পঞ্চহায়নঃ।।৪২।। গোবর্দ্ধনগিরৌ প্রাপ্য নারদস্যোপদেশতঃ। স চক্রে ভগদ্ধযানং মাসাম্মট্ চ মহাব্রতী।।৪৩।। তদা প্রসন্নো ভগবান্বিষ্ণুনারায়ণঃ প্রভুঃ। খমন্ডলে পদং তস্মৈ দদৌ প্ৰীত্যা নভোময়ম্।। ৪৪।। দৃষ্ট্বা তদ্বদনং রম্যং মায়াশক্ত্যা দিশো দশ। স্বামিনং চ ধ্রুবং মত্বা ভক্তি নম্রা বভূবিরে।।৪৫।।
সেই ম্লেচ্ছ সন্তান হীন ছিলেন এবং বস্ত্রবারী ছিলেন। তিনি সেই সন্ত ান প্রাপ্ত হয়ে গৃহে চলে গেলেন। তিনি কবীর এই নামে সংসারে প্রসিদ্ধ হলেন। সাতবর্ষ বয়স হলে গোদুগ্ধ পান করে এবং স্বামী রামানন্দকে নিজ গুরু বলে মেনে নিয়ে শ্রীরামের ধ্যানে মগ্ন হলেন। নিজ হাতে সংস্কার করে তিনি হরিকে ভোজন করাতেন। তার ভালোর জন্য হরি সমস্ত কামনা প্রদানকারী হলেন।। ৩৯-৪১।।
বৃহস্পতি বললেন -পূর্বে রাজা উত্থান পাদের পুত্র ক্ষত্রিয় ধ্রুব জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাঁচবর্ষে পদার্পণ করলে মাতা-পিতার দ্বারা পরিত্যক্ত হণ।। ৪২।।
তিনি গোবর্দ্ধন পর্বতে গিয়ে নারদের উপদেশে ছয়মাস পর্যন্ত মহান ব্রত ভগবান্ শ্রীবিষ্ণুর ধ্যানপরায়ণ হলেন। তখন ভগবান্ বিষ্ণু নারায়ণ প্রভু পরম প্রসন্ন হয়ে আকাশমন্ডলে নভোময় প্রীতিপদ প্রদান করলেন। মায়াশক্তির দ্বারা তাঁর পরম রম্য মুখ দেখে দশদিকে ধ্রুবকে স্বামী বলে মনে করে ভক্তি ভাবে বিনম্র হলেন। ধ্রুবত্ত সাক্ষাৎ ভগবানের পুজ্য হলেন। তিনি স্বয়ং ভগবানের পতি দিপতি হলেন।। ৪৩-৪৬।।
ধ্রুবোঽপি ভগবাস্নাক্ষাৎ সর্বপূজ্যো বভূব হ।। দিক্পতিঃ স তু বিজ্ঞেয়ো ভগণানাং পতিঃস্বয়ম্।।৪৬। নভঃপতিঃ কালকরঃ শিশুমারপতিসস বৈ। পঞ্চতত্ত্বা হি বৈ মায়া প্রকৃতিস্তৎপতিঃ স্বয়ম্।।৪৭।। তস্মাদ্ধারায়াংসংভূতো ভৌমো নাম মহাগ্রহঃ। জলদেব্যাস্ততো জাতঃ শুক্রো নাম মহাগ্রহঃ।।৪৮।। বহ্নিদেব্যাং ততো জাতশ্চাহং তত্র মহাগ্রহঃ। বাসুদেব্যাংধ্রুবাজ্জাতঃ কেতুনাম মহাগ্রহঃ।।৪৯।। গ্রহভূতঃ স্থিতস্তত্র নভোদেব্যাং তদুদ্ভবঃ। রাহুনাম তথা ঘোরো মহাগ্রহ উপগ্রহঃ।।৫০। পূর্বস্যাং দিশি বৈ তস্মাজ্জাতশ্চৈরাবতো গজঃ। আগ্নেয্যাং দিশি বৈ তস্মাৎপুন্ডরীকো গজোহ ভবৎ।।৫১।। বামনঃ কুমুদরশ্চৈব পুষ্পদন্তঃ ক্রমাদগজাঃ। সার্বভৌমঃ সুপ্রতীকো নভোদিক্ষু তু তৎসুতাঃ।।৫২।।
নভোপতি কালকর এবং তিনি শিশুমার পতি ছিলেন। পঞ্চতত্ত্ব ময়ী প্রকৃতির পতি হলেন। এই কারণে ধরাতে ভৌম নামক মহাগ্রহ উৎপন্ন হল। অনন্তর জলদেবী শুক্র নাম্নী সেখানে মহাগ্রহ উৎপন্ন হল।। তারপর বহ্নিদেবীতে সেখানে মহাগ্রহ সমুৎপন্ন হল। বাসুদেবীতে ধ্রুবর থেকে কেতু নামক মহাগ্রহ জন্ম ধারণ করল।। ৪৭-৪৯।।
সেখানে গ্রহভূত হয়ে তিনি স্থিত হলেন। তার উদ্ভব নভোদেবীতে হয়েছিল। রাহু নামক মহাগ্রহ অতিঘোর উপগ্রহ ছিল। পূর্ব দিকে ঐরাবত হাতী তার থেকে সমুৎপন্ন হয়েছিল।। ৫০।।
অভ্রঃকপিলা চৈব পিঙ্গলাখ্যা ইমাঃক্রমাৎ। তাম্রকর্ণী শুভ্রদন্তী চাঙ্গনা চাঙ্গনাবতী।।৫৩।। ভূমিদিক্ষু করিণ্যশ্চ জাতাস্তস্মাত্তু তৎপ্রিয়াঃ। ভগিনী চ তথামাতা সুতা চৈব সুষা তথা।।৫৪।। পশুয়োন্যুদ্ভবানাং চ নৃণাং তা যোষিত সদা। দেবয়োন্যুদ্ভবানাং চ নৃণাং পত্নী স্মৃতা স্বসা।।৫৫।। মনুবংশেঅদভবানাং চ নৃণাংচান্যোদভবাঃ স্ত্রিয়ঃ। ইতি ধর্মো বিধাত্রোক্তো ময়া প্রোক্তঃসুরা হি বঃ।।৫৬। দ্বিধা ধ্রুবস বিজ্ঞেয়ো ভূমেরুদ্ধর্মধস্তথা। সদ্গুণঃ স দিবারূপো রাত্রিরূপস্তমোগুণঃ।।৫৭।। অধোধ্রুবে সদা রাত্রির্ণারকাস্তত্র বৈ স্থিতাঃ। উধ্রুবে দিবা নিত্যং তপোমধ্যে নিশা দিবা।।৫৮।।
অগ্নি দিশাতে তার থেকে পুন্ডরীক নামক গজ উৎপন্ন হয়েছিল। বামন-কুমুদ এবং পুষ্প দন্ত গজ তথা সার্বভৌম সুপ্রতীক ক্রমান্বয়ে গজ নভোগুলিতে উৎপন্ন হয়েছিল। তার পুত্র অভ্র -কপিলা এবং পিংগল নাম্নী ছিল। তার থেকে তাম্রকর্ণী -শুভ্রদন্তী -অঙ্গনা এবং অঞ্জনাবতী ভূমির বিভিন্ন দিকে এই সকল কবিগণ উৎপন্ন হন। তার প্রিয় ভগিনী -মাতা-সুতা এবং সুষা জাত হয়েছিলেন। পশুযোনিতে জাত মনুষ্যের তারা সদা স্ত্রী ছিলেন। দেব যোনিতে উদ্ভূত নর তার পত্নী স্বমা ছিলেন। মনুবংশে জাত গণের অন্যোভব স্ত্রী ছিলেন। হে দেবগণ বিধাতা যে ধর্মের কথা বলেছেন, আমি আপনাকে তা বলে দিলাম।। ৫১- ৫৬।।
সেই ধ্রুব ভূমির উর্দ্ধভাগে এবং অধোভাগে দুই প্রকার জানা উচিৎ। দিবারূপ সত্ত্ব গুণ সম্পন্ন এবং রাত্রিরূপ তমোগুণ সম্পন্ন। অধোভাগের ধ্রুব সদা রাত্রি হন সেখানে নরগামী লোক থাকেন। উর্দ্ধর্ভাগের ধ্রুবতে নিত্য দিন বিরাজ করে সেই দুইয়ের মধ্যে দিন এবং রাত্রি বিরাজ করে। ৫৭-৫৮।।
মহো জনস্তপসত্যং তেষু নিত্যং দিনং স্মৃতম্। রৌববশ্চান্ধকুপশ্চ তামিস্ট্রং চ তমোময়ম্। তেষুনিত্যং স্মৃতারাত্রিঃ কল্পমানং চ কোবিদৈঃ।।৫৯।। স তু পূর্বভবে চাসীব্রাহ্মণো মাধবপ্রিয়ঃ। ষষ্ট যব্দং সর্বতীর্থেষু প্রাতঃ স্মানং চকার হ।।৬০।। তীর্থ পুন্যাস্ত বৈ বিপ্রো মাধবো মাধবপ্রিয়ঃ। সুনীত্যাং নভমাসাদ্য ধ্রুবো ভূত্বা ররাজ হ। ষত্রিংশচ্চ সহস্রব্দং রাজ্যং কৃত্বা ধ্রুবোহ ভবৎ।।৬১।। ইতি শ্রুত্বা গুরোর্বাক্যং স ধ্রুবঃ পঞ্চমো বসুঃ। গুজরে দেশ আগম্য বৈশ্যজাত্যাং সমুদ্ভবঃ। নরশ্রীনাম বিখ্যাতো গুণবৈশ্যস্য বৈ সুতঃ।।৬২।। কুসীদগুণগুপ্তশ্চ নরশ্রীঃ পুত্রবৎসলঃ। ত্যক্ত্বা প্রানান্যযৌ স্বর্গংস বৈশ্যতনয়ো ধ্রুবঃ।।৬৩।।
মহলোক-জনলোক-তপোলোক-সত্যলোক এই চার লোকে নিত্য দিন বিরাজ করে। রৌবত্ব-অন্ধ-কূপ-তামিস্ত্র-এই চার লোক অন্ধকার ময় এবং তমোগুণ সম্পন্ন। তাতে সর্বদা রাত্রি বিরাজিত থাকে। কোবিদগণ এককল্প ধরে তার মান বর্ণনা করেছেন।। ৫৯।।
তিনি পূর্বজন্মে মাধবপ্রিয় ব্রাহ্মণ ছিলেন। ৬০ বৎসর পর্যন্ত সমস্ত তীর্থে তিনি প্রাতঃকালে স্নান করতেন। তীর্থের পুন্য প্রভাতে সেই বিপ্র মাধব প্রিয় হয়েছিলেন। পুনরায় সুনীতির গর্ভে তিনি ধ্রুব রূপে দীপ্তি মান হন। ৩৬ বৎসর পর্যন্ত রাজ্য সুখ অনুভব করে তিনি ধ্রুব হন।। ৬০-৬১।।
সূতজী বললেন গুরুর এই বাক্য শ্রবণ করে পঞ্চম বসু সেই ধ্রুব গুর্জর দেশে এসে বৈশ্য জাতিতে সমুদভূত হলেন। তার নাম নরশ্রী এবং তিনি গুনবৈশ্য নাম ধারী বৈশ্যের পুত্র ছিলেন।। ৬২।।
কবীর- নরশ্রী–পীপা–নানক- বৃত্তান্ত প্রত্যহংস হরেঃ ক্রীড়াং বৃন্দাবনমহোত্তমে। শিবপ্রসাদাৎ প্রত্যক্ষাং দৃষ্ট্বা হৰ্ষমবাপ্তবান্।।৬৪।। যস্য পুত্ৰবিবাহে চ ভগবাম্ভক্তবৎসলঃ। যাদবৈসহ সংপ্রাপ্তস্তস্য বাঞ্ছিতদায়কঃ।।৬৫।। পুরীং কাশীং সমাগম্য নরশ্রীভক্তরা স্বয়ম্। রামানন্দস্য শিষ্যহ ভূদ্বিষ্ণুধর্ম বিশারদঃ।।৬৬।। কদাচিদ্ভগবানত্রিগঙ্গকুলেহ নয়য়া। সার্দ্ধং তপো মহৎ কুবম্ব ক্ষধ্যানপরোহ ভবৎ।।৬৭।। তদা ব্রহ্মা হরিশম্ভুঃ স্বস্ববাহনমাস্থিতাঃ। বরং গৃহীতি বচনং তমাহুস্তে সনাতনাঃ।।৬৮।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তেষাং স্বয়ভূতনয়ো মুনিঃ। নৈব কিঞ্চিদ্বচঃ প্রাহ সংস্থিতঃ পরমাত্মনি।।৬৯।।
তার পুত্র কুসীদ গুণ গুপ্ত ছিলেন। পুত্রবৎসল নরশ্রী নিজ প্রাণ ত্যাগ করে স্বর্গলোকে গমন করেন। সেই ধ্রুব বৈশ্যতনয় ছিলেন। বৃন্দাবন মহোৎসবে প্রতিদিন তিনি ভগবান্ হরির ক্রীড়া শিবের অনুগ্রহে প্রত্যক্ষ রূপে দেখে অত্যন্ত হর্ষিত হগেত। তার পুত্রের বিবাহে ভক্তপ্রিয় ভগবান যাদকাণের সাথে বাঞ্ছিত আর্শীবাদ দিয়েছিলেন। কাশীপুরীতে এসে ভক্তের রাজা নরশ্রী স্বয়ং স্বামী রামানন্দের শিষ্য হলেন।। ৬৩- ৬৬।।
দেবগুরু বৃহস্পতি বললেন–কোনো সময় ভগবান্ অত্রিমুনি গঙ্গাতটে অনসূয়ার সাথে মহাত্মা করতে ব্রহ্মার ধ্যানে তৎপর হলেন। সেই সময় ব্রহ্মা হরি এবং শম্ভু এই তিন দেব নিজ নিজ বাহনে সমারোহন করে সনাতন “তোমার অভীষ্ট বর প্রার্থনা কর” -এই কথা বলেছিলেন। এই বচন শ্রবণ করে স্বয়ম্ভু পুত্র মুনি অত্রি কোনো কথা বলেননি কারণ সেই সময় তিনি পরমাত্মীয় সংলগ্ন ছিলেন।। ৬৭-৬৯।।
তস্য ভাবং সমালোক্য ত্রয়ো দেবাঃ সনাতনাঃ। অনসূয়াং তস্য পত্নীং সমাগম্য বচোহ ব্রুবন্।।৭০ ।। লিঙ্গহস্তঃ স্বয়ং রুদ্রো বিষ্ণুস্তদ্ৰ সৰ্বৰ্দ্ধনঃ। ব্রহ্মা কামব্রক্ষলোপঃ স্থিতস্তস্যাবশং গতঃ। রতিং দেহি মদাঘূর্ণে নো চেৎপ্রাণাংস্ত্যজাম্যহম্।।৭১। পতিব্রতাহনসূয়া চ শ্রুত্বা তেষাং বচোহ শুভম্। নৈব কিঞ্চিদ্বচঃ প্রাহ কোপভীতা সুরাম্প্রতি।।৭২।। মোহিতাস্তত্র তে দেবা গৃহীত্বা তাং বলাত্তদা। মৈথুনায় সমুদ্যোগং চক্ৰমাৰ্যাবিমোহিতাঃ।।৭৩।। তদা ক্রুদ্ধা সতী সা বৈ তাঙ্কুশাপ মুনিপ্ৰিয়া। মম পুত্রা ভবিষ্যন্তি যূয়ং কামবিমোহিতাঃ।।৭৪।। মাহাদেবস্য বৈ লিঙ্গং ব্রহ্মণোহস্য মহাশিরঃ। চরণৌ বাসুদেবস্য পূজনীয়া নরৈসদা। ভবিষ্যন্তি সুরশ্রেষ্ঠা উপহাসোহয়মুত্তমঃ।।৭৫।।
সেই সনাতন তিনদেব তাঁর ভাব দেখে পত্নী অনসূয়ার কাছে গিয়ে রুদ্র স্বয়ং লিঙ্গকে হাতে নিয়ে বিষ্ণু তাঁর রস বর্দ্ধন করে এবং কাম ব্ৰহ্মলোপ ব্ৰহ্মাও সেখানে স্থিত হলেন। হে মহাঘূর্ণে, এখন তুমি রতি দান না দিলে আমরা প্রাণ ত্যাগ করব। পাতিব্রত ধর্মপূর্ণ পালন কারিনী এই অশুভ বচন শ্রবণ করে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে ভয়াতুর হয়ে কোনো উত্তর দিলেন না।।৭০-৭২।।
সেখানে দেবগণ মোহিত হয়ে ছিলেন এবং সেই অনসূয়াকে বলপূর্বক গ্রহণ করে তথা মায়ার দ্বারা মোহিত হয়ে তাঁর সঙ্গে বলপূর্বক মৈথুন করতে উদ্যত হলেন। তাদের দেখে মুণি, প্রিয়া প্রচন্ড ক্রোধে তাদের শাপ দিলেন–তোমরা কাম বিমোহিত হয়ে অতএব তোমরা সকলে আমার পুত্র রূপে জন্ম নেবে।। ৭৩-৭৪।।
মহাদেবের এই লিঙ্গ-ব্রহ্মার মহাশির এবং বিষ্ণুর চরণ মনুষ্য সদা পূজা করবে। হে সুর শ্রেষ্ঠ, আপনারা এই প্রকারে পূজার যোগ্য হবেন এবং এটি উত্তম উপহাস হবে।। ৭৫।।
ইতি শ্রুত্বা বচো ঘোরং নমস্কৃত্য মুনিপ্রিয়াম্ তুষ্টবুর্ভক্তিতনম্রাশ্চ দেবপাঠেশ্চ ঋয়ৈ।।৭৬।। অনসূয়া তদা প্রাহ ভবন্তো মম পুত্রকাঃ ভূত্বা শাপং মদীয়ং চ ত্যক্ত্বা তৃপ্তিমবাস্প্যথ।।৭৭।। ইত্যুক্তে বচনে ব্রহ্মা চন্দ্রমাশ্চ তদা হ্যভূৎ। দত্তাত্রয়ো হরিঃ সাক্ষাদুর্বাসা ভগবাস্থরঃ। তৎপাপরিহারার্থং যোগবক্তো বভূবিরে।।৭৮।। এতস্মিন্নন্তরেদেধী প্রকৃতি সর্ব ধার্মিণী। বিধি বিষ্ণুং হরং চান্যং চক্রে সা গুণরূপিণী।।৭৯।। মন্বন্তরমতো জাতং তেষাং যোগং প্ৰকুৰ্বতাম্।। হৃষিতাশ্চ ত্ৰয়ো দেবাসমাগম্য চ তাম্প্রতি।।৮০।। উবাচ বচনং রম্যং তেষাং মঙ্গলহেতবে। চন্দ্রমাশ্চ ভবেৎসোমো বসুঃ ষষ্টঃ সুরপ্রিয়ঃ।।৮১।।
এই প্রকার পরম ঘোর বচন শ্রবণ করে তাঁরা মুনি প্রিয়াকে নমস্কার করে এবং ভক্তিপূর্বক অত্যন্ত বিনম্র হয়ে বেদ ঋকের দ্বারা তাঁদের স্তুতি করতে লাগলেন।। ৭৬।।
অতঃপর অনসূয়া বললেন–আপনারা তিনজন আমার পুত্র রূপে আমার শাপত্যাগ করে পুনরায় পরম তৃপ্তি লাভ করবেন।। ৭৭।।
এই কথা বলার পর সেই সময় ব্রহ্মা চন্দ্রমা হলেন হরি দত্তাত্রেয় এবং ভগবান্ হর সাক্ষাৎ দুর্বাসা হলেন। সেই পাপ পরিহারের জন্য তাঁরা যোগী হলেন।। ৭৮।।
ইতিমধ্যে সর্বধর্মময়ী প্রকৃতি দেবী যিনি গুণরূপী ছিলেন বিধি বিষ্ণু এবং হরকে অন্যপ্রকারে নির্মাণ করে স্থিত করলেন। তাঁরা যোগ করতে করতে মন্বন্তর অতিক্রম করলেন। পরমপ্রসন্ন তিন দেব তাদের মংগলের জন্য অতিরম্য বচন বললেন- চন্দ্ৰমা সোম হবেন, সুরপ্রিয় ছটাবসু হবেন এবং রুদ্রাংশ দুর্বাসা যোগী প্রভাস অষ্ট বসু হবেন।। ৮০-৮১।।
রুদ্রাংশশ্চৈব দুর্বাসাঃ প্রত্যুষঃ সপ্তমো বসুঃ। দত্তাত্রেয়ময়োযোগী প্রভাসশ্চাষ্টমো বসুঃ।। তেষাং বাক্যং সমাকর্ণ বসবস্তেত্রয়োহ ভবন্।।৮২।। ইতি শ্রুত্বা গুরোর্বাক্যং বসবো হর্ষিতাস্ত্রয়ঃ। স্বাংশেন ভূতলং জন্মঃ কলিশুদ্ধায় দারুণে। দাক্ষিণাত্যে রাজগৃহে বৈশ্যজাতাং সমুদ্ভবঃ।।৮৩।। পীপা নাম সুতঃ সোমঃ দেবস্য তদা হাভূৎ। কৃতং রাজ্যপদং তেন যথা ভূপেন তৎপুরে।।৮৪।। রামানন্দস্য শিষ্যোহ ভূদ্বারকাং স সমাগতঃ। হরেমুদ্রাং স্বর্ণময়ীং প্রাপ্য কৃষ্ণাৎস বৈ নৃপঃ। বৈষ্ণবেভ্যো দদৌ তত্র প্রেততত্ত্ববিনাশিনীম্।।৮৫।। প্রত্যুষশ্চৈব পাঞ্চালে বৈশ্যজাত্যাং সমুদ্ভবঃ। মাৰ্গপালস্য তনয়ো নামকো নাম বিশ্রুতঃ।।৮৬।। রামানন্দং সমাগম্য শিষ্যো ভূত্বাস নানকঃ। স বৈ ম্লেচ্ছান্বশীকৃত্য সূক্ষ্মমার্গয়দর্শয়ৎ।।৮৭।। প্রভাসো বৈ শান্তিপুরে ব্রহ্মজাতাং সমুদ্ভবঃ। শুক্লদত্তস্য তনয়ো নিত্যানন্দ ইতি স্মৃতঃ। ইতি তে বসুমাহাত্ম্যং ময়া শৌনক বর্ণিতম্।।৮৮।।
তাদের বাক্য শ্রবণ করে তিন বসু পরম হর্ষিত হয়ে নিজ অংশে কলিশুদ্ধের জন্য ভূতরে চলে গেলেন। সেখানে দারুণ দাক্ষিনাত্য রাজগৃহে বৈশ্য জাতির মধ্যে তাদের উদ্ভব হল।। ৮২-৮৩।।
সেই সময় দেবসৃত সোম পীপা নাম ধারী হয়েছিলেন,তিনি সেই পুরীতে ভূপের ন্যায় রাজপদ উপভোগ করেন। তিনি স্বামী রামানন্দের শিষ্য হন এবং দ্বারকাতে আসেন। সেই রূপ হরিকৃষ্ণের দ্বারা স্বর্ণময়ী মুদ্রা প্রাপ্ত করলেন, যা প্রেত তন্ত্র বিনাশকারী ছিল তা তিনি বৈষ্ণবদের দিয়ে দিলেন। ৮৪-৮৫।।
প্রত্যুষ পাঞ্চাল দেশে বৈশ্যজাতি যমুদ্ভূত হলেন। সেখানে মাৰ্গ পালক পুত্র নানক নামে প্রসিদ্ধ হন। সেই নানক স্বামী রামানন্দের সমীপে উপস্থিত হয়ে তাঁর শিষ্য হন। সেই নানক ম্লেচ্ছগণকে বশ করে তাঁদেরকে সূক্ষ্ম মার্গ দেখালেন।। প্রভাস শান্তি পুরে ব্রহ্মাজাতিতে সমুৎপন্ন হয়। সেখানে শুক্লাদত্তের পুত্র নিত্যানন্দ নামে প্রসিদ্ধ হন। হে শৌনক সেই বসুগণের মাহাত্ম্য আমি তোমাদের নিকট বর্ণনা করলাম।। ৮৬-৮৮।।