মেঘের আড়ালে বেলা কখন যে যায়। বৃষ্টি পড়ে সারাদিন থামিতে না চায় । আর্দ্র - পাখা পাখিগুলি গীতগান গেছে ভুলি , নিস্তব্ধে ভিজিছে তরুলতা । বসিয়া আঁধার ঘরে বরষার ঝরঝরে মনে পড়ে কত উপকথা । কভু মনে লয় হেন এ - সব কাহিনী যেন সত্য ছিল নবীন জগতে । উড়ন্ত মেঘের মতো ঘটনা ঘটিত কত , সংসার উড়িত মনোরথে । রাজপুত্র অবহেলে কোন্ দেশে যেত চলে কত নদী কত সিন্ধু - পার । সরোবর - ঘাট আলা, মণি হাতে নাগবালা বসিয়া বাঁধিত কেশভার । সিন্ধুতীরে কত দূরে কোন্ রাক্ষসের পুরে ঘুমাইত রাজার ঝিয়ারি । হাসি তার মণিকণা কেহ তাহা দেখিত না , মুকুতা ঢালিত অশ্রুবারি । সাত ভাই একত্তরে চাঁপা হয়ে ফুটিত রে , এক বোন ফুটিত পারুল । সম্ভব কি অসম্ভব একত্রে আছিল সব — দুটি ভাই সত্য আর ভুল । বিশ্ব নাহি ছিল বাঁধা, না ছিল কঠিন বাধা , নাহি ছিল বিধির বিধান , হাসিকান্না লঘুকায়া শরতের আলোছায়া , কেবল সে ছুঁয়ে যেত প্রাণ ! আজি ফুরায়েছে বেলা , জগতের ছেলেখেলা গেছে আলো - আঁধারের দিন । আর তো নাই রে ছুটি , মেঘরাজ্য গেছে টুটি , পদে পদে নিয়ম - অধীন । মধ্যাহ্নে রবির দাপে বাহিরে কে রবে তাপে, আলয় গড়িতে সবে চায় । যবে হায় প্রাণপণ করে তাহা সমাপন খেলারই মতন ভেঙে যায় ।