।। ইন্দুল পদ্মিনী কা বিবাহ।।
দৃষ্ট্বা সৈন্যনিপাতং চ বলখানিমহাবলঃ। সংপ্রাপ্য মানসীং পীড়াং যুদ্ধার্থং বিমুখোহ ভবৎ।।১।। দেবসিংহং সমায় ত্রিকালজ্ঞং মহামতিম্। তং মন্ত্ৰং মন্ত্রয়ামাস কার্যসিদ্ধিযথা ভবেৎ। শ্ৰুত্বোবাচ মহাযোগী দেবসিংহো মহাবলঃ।।২।। মহেন্দ্ৰতনয়ঃ কশ্চিৎসর্বশস্ত্রকোবিদঃ। ত্বৎসৈন্যং রোধয়িত্বা বৈ দিব্যাস্ত্রেণ দিবামুখে। রাত্রৌ স্বয়ং সমাগম্য করোতি বলসং ক্ষয়ম্।।৩।। অতস্ত্বং মৎসহায়েন তালনেন সমন্বিতঃ। কৃষ্ণাংশেন সমাগম্য শত্রুপুত্রং শুভাননম। বিজয়ী ভব শীঘ্রং হি নো চেদ্যায়াং যমক্ষয়ম্।।৪।।
।। ইন্দুল পদ্মিনীর বিবাহ।।
এই অধ্যায়ে পদ্মিনীর জন্ম এবং তার সাথে ইন্দুলের বিবাহ বৃত্তান্ত বর্ণনা করা হয়েছে।
সূতজী বললেন–বলখানি নিজ সেনাদের নিপাতন দেখে মানসিক পীড়া প্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং পুনরায় তিনি যুদ্ধ বিমুখ হয়ে গিয়েছিলেন। ত্রিকালজ্ঞ মহান্ মতিমান্ দেবসিংহকে ডেকে কার্য সিদ্ধিকারী মন্ত্ৰণা করেছিলেন। মহান্ বলবান্ দেবসিংহ সেকথা শ্রবণ করে বলেছিলেন, কোনো এক মহেন্দ্ৰ তনয় সমস্ত শাস্ত্র এবং অস্ত্রের মহাপন্ডিত। সে তোমার সেনাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং দিবামুখে কোনো দিব্য অস্ত্র দ্বারা তিনিই স্তম্ভন করেছেন। তিনি রাত্রে স্বয়ং সেখানে এসে সেনাদের সংক্ষয় করেন। এইজন্য তুমি আমার সহায়তায় তালনের সঙ্গে কৃষ্ণাংশের দ্বারা শুভানন শত্রু পুত্রের কাছে গিয়ে শীঘ্র বিজয়ী হও। অন্যথা মমক্ষয় প্রাপ্ত হবে।।১-৪।।
ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য দেবসিংহস্য ভাষিতম্। যত্নং চকার বলবান্ ভ্রাতৃমিত্ৰসমন্বিতঃ।।৫।। একবিংশাব্দকৃষ্ণাংশে সংপ্রাপ্তে যুদ্ধকোবিদে। সেনাং নিবেশয়ামাস পোতেষু হয়বাহনঃ।।৬।। অদ্ধং সৈন্যং চ তত্রৈব স্থাপয়িত্বা মহাবলঃ। অৰ্দ্ধং সৈন্যেন কৃষ্ণাংশো দক্ষিণাং দিশমাগমৎ।।৭।। হয়ারূঢ়াশ্চ তে শূরাঃ সর্বে যুদ্ধসমন্বিতাঃ। কপাটং দৃঢ়মুদ্ধাট্য নগরান্তমুপাযঃ।।৮। হত্বা তে রক্ষিণঃ সর্বাল্লুন্ঠয়িত্বা পুরং শুভম্। রিপোদুর্গং সমাসাদ্য চক্রঃ শত্রোমহাক্ষয়ম্।।৯।। রাজ্ঞোহন্তঃ পুরমাগত্য কৃষ্ণাংশো বলত্তরঃ দদর্শ সুন্দরীং বালাং পদ্মিনীং পদ্মলোচনাম্। সপ্তালিভিযুতাং রম্যাং গীতনৃত্যবিশারদাম্।।১০।। বলাদোলাং সমারোপ্য লুন্ঠয়িত্বা রিপোগৃহম্। জগাম শিবিরে তস্মিন্যত্র জাতো মহারণঃ।।১১।। বলখানিস্তু বলবান্দেবতালনসংযুতঃ। জঘান লাত্রবীং সেনামিন্দুলাস্ত্রেণ পালিতাম্।।১২।। সুখবৰ্মাণমাগত্য সেনাধ্যক্ষং রিপোঃ সুতম্। সর্বতস্তং স্বকীয়াসৈজঘুস্তে মদবিহুলাঃ।।১৩।। হতে তস্মিন্মহাবীর্যে জয়ন্তঃ ক্রোধমূৰ্চ্ছিতঃ। সেনামুজ্জীবয়াশ্চক্রে শত্রুপুত্রঃ প্রতাপবান্।।১৪।। শ্যালং চ সুখবৰ্মাণং সংজীব্য স্বগৃহং যযৌ। তত্র দৃষ্ট। জনানসর্বান্বহুরোদনতৎপরান্।।১৫।। বিস্মিতঃ স যযৌ গেহং যথা পূর্বং তথাবিধঃ। ন দদর্শ প্রিয়াং তত্ৰ সখীভিঃ সহিতাং মুনে।।১৬।। আৰ্য্যসিংহগৃহং গত্বা পৃষ্টবাসর্বকারণম্। জ্ঞাত্বা সংলুণ্ঠিতং গেহং শত্রুভিঃ সস্ত্ৰকোবিদৈঃ।।১৭।।
দেবসিংহ এই কথা বললে বলবান্ বলখানি ভ্রাতা-মিত্র প্রভৃতিকে নিয়ে যুদ্ধ জয়ের জন্য যত্ন করেছিল।।৫।।
যুদ্ধে পরম প্রবীণ পন্ডিত কৃষ্ণাংশ একবিংশ বৎসর বয়ঃপ্রাপ্ত হলে হয় বাহন পোতে সেনানিবেশ করেছিল। সেই মহাবলবান্ অর্ধেক সেনা সেখানেই নিবেশিত করলেন। বাকী অর্ধেক সেনার সঙ্গে কৃষ্ণাংশ দক্ষিণ দিকে গেলেন।।৬-৭।।
অশ্বারূঢ় সমস্ত শূর বীর সকলে যুদ্ধে লিপ্ত হলেন। তারা দৃঢ় কপাট খুলে পুনরায় নগরে অন্তে পৌঁছালেন। তারা সেখানে সমস্ত রক্ষিদের হত্যা করে সেই শুভ পুরী লুন্ঠন করে শত্রু দূর্গে পৌছোলেন এবং পুনরায় তারা শত্রুদের প্রভূত ক্ষয় করেছিলেন।।৮-৯।।
বলবান্ কৃষ্ণাংশ রাজার অন্তপুরে পৌঁছে সেখানে তাঁর কমললোচনা পরমাসুন্দরী কন্যা পদ্মিনীকে সপ্তসখী পরিবৃত দেখলেন। তারা অত্যন্ত রম্য নৃত্য–গীত বিশারদ ছিলেন। তাদের বলপূর্বক দোলাতে সমারোপিত করে শত্রুগৃহ ভালোভাবে লুন্ঠন করে যেখানে মহাযুদ্ধ হচ্ছিল সেই শিবিরে চলে গেলেন।।১০-১১।।
বলবান্ বলখানি দেবসিংহ এবং তালনের সঙ্গে ইন্দুলের অস্ত্রে পালিত শত্রুসেনাদের হনন করল।।১২।।
সেনাধ্যক্ষ সূর্যবর্মার কাছে গিয়ে বীরগণ তাঁকেও হনন করল। সেই মহাবীর্যবান্ হত হলে জয়ন্ত ক্রোধে মূর্ছিত হয়ে গেল এবং সেই প্রতাপবা শত্রুপুত্র সেনাদেরকে উজ্জীবিত করলেন।।১৩-১৪।।
তিনি নিজশ্যালক সূর্যবর্মাকে সঞ্জীবিত করে নিজ গৃহে চলে এলেন। সেখানে তিনি সকলকে অত্যধিক রোদন করতে দেখলেন। হে মুনে, তখন তিনি বিস্মৃত হয়ে কক্ষে প্রবেশ করে পূর্বের ন্যায় সখীদের সঙ্গে প্রিয়াকে দেখতে পেলেন না।।১৫-১৬।।
রুরোদ সুভূশং বীরো হা প্রিয়ে মদবিহ্বলে। দর্শয়াদ্য মুখং রম্যং ত্বৎপতিস্ত্বাং সমুৎসুকঃ।।১৮।। ইত্যেবং রোদনং কৃত্বা বড়বোপরি সংস্থিতঃ। ধনুস্তূনীরমাদায় খড়্গং শত্রুবিমোহনম্। একাকী স যযৌ ক্রুদ্ধো নিশি যত্র স্থিতো রিপুঃ।।১৯।। এতস্মিন্সময়ে বীরো বলখানিমহাবলঃ। দষ্ট। তাং সুন্দরীং বালাং বিললাপ ভূশং মুহুঃ।।২০।। হা ইন্দুল মহাবীর হা মদ্বন্ধো প্রিয়ঙ্কর। ত্বদ্যোগ্যেয়ং শুভা নারী রূপযৌবনশালিনী।।২১।। দর্শনং দেহি মে শীঘ্রং গৃহাণাদ্য শুভাননাম্। ইত্যুক্ত্বা মুৰ্চ্ছিতো ভূত্বা মানসে পূজয়চ্ছিবাম্।।২২।। তস্মিক্লালে চ সংপ্রাপ্তঃ শত্ৰুপুত্রো মহাবলঃ। জঘান শাত্রবীং সেনাং কৃষ্ণাংশেনৈব পালিতাম্।।২৩।
আর্যসিংহের ঘরে গিয়ে তাকে সমস্ত কারণ জিজ্ঞাসা করলেন, এবং শস্ত্রকোবিদ শত্রুর দ্বারা ঘর লুণ্ঠিত হয়েছে জেনে তিনি রোদন করে বলতে লাগলেন–হা মবিহ্বলে, হা প্রিয়া, আজ তুমি নিজ সুরম্য মুখ আমাকে দেখাও। এখানে তোমার পতি তোমার সঙ্গে মিলনের জন্য উৎসুক হয়ে আছে।।১৭-১৮।।
এইভাবে রোদন করে তিনি নিজ বড়াতে আরোহণ করে শত্রু বিমোহনকারী খড়্গ, ধনুষ এবং তূনীর গ্রহণ করে একাকী অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে নিশাকালে শত্রুমধ্যে পৌঁছালেন।।১৯।।
এই সময় মহাবলবান্ বীর বলখানি সেই সুন্দরী বালাকে দেখে বারংবার বিলাপ করতে লাগলেন। হা ইন্দুল, হা মহাবীর, হা মিত্র, হে প্রিয়ংবর তোমার যোগ্য সেই নারী রূপলাবণ্যময়ী। তুমি এখানে এসে আমাকে শীঘ্র দর্শন দাও এবং আজ সেই শুভমুখীকে গ্রহণ কর। এই রূপ বিলাপ করে তিনি মূর্ছিত হলেন এবং মনে মনে শিবার্চ্চনা করতে লাগলেন।। ২০-২২।।
দষ্টা সৈন্যনিপাতং চ তালনো বাহিনীপতিঃ। সিংহনাদং ননাদোচ্চৈঃ সিংহিন্যুপরি সংস্থিতঃ।।২৪।। ন জয়ঃ সৈন্যনাশেন তব বীর ভবিষ্যতি। মাং হত্বা জহি মৎসৈন্যং যোগিন্বালস্বরূপক।।২৫।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য শক্রপুত্রো ভয়ঙ্করঃ। জঘান হৃদয়ে বানান্স তু খড়্গেণ চাচ্ছিনৎ। স্বভল্লেন পুনর্বীরো দংশয়ামাস বক্ষসি।।২৬।। ইন্দুলে মূৰ্চ্ছিতে তস্মিন্বড়বা দিব্যরূপিনী। আকাশোপরি সংপ্রাপ্য জয়ন্তং সমবোধয়ৎ।।২৭।। তদা স বালস্বরিতঃ কালাস্ত্রং চাপ আদধে। তেন জাতো মহাঞ্ছব্দস্তালনঃ স মমার হ।।২৮।। মৃতে সেনাপতৌ তস্মিকৃষ্ণাংশো মদবিহ্বলঃ। নভোমার্গেন সংপ্রাপ্য জগৰ্জ্জ চ মুহুর্মুহুঃ।।২৯।।
সেই সময় বলবান্ শত্রুপুত্র সেখানে পৌঁছে গেলেন। তিনি কৃষ্ণাংশের সুরক্ষিত সেনাদের হনন করলেন। নিজ সেনাদের নিপাতিত হতে দেখে সেনাপতি তালন সিংহিনীর উপর আরোহণ করে উচ্চৈস্বরে সিংহনাদ করলেন।। ২৩-২৪।।
তিনি বললেন, হে বীর, এই সৈন্য নাশ করলেই তোমার জয় সম্ভব হবে না। হে যোগিন, হে বাল স্বরূপবালে, আমাকে প্রথমে মেরে তারপর সেনাদের হনন কর।। ২৫।।
সেই ভয়ংকর ইন্দ্রপুত্র সেকথা শ্রবণ করে বাণের দ্বারা হৃদয়ে আঘাত করল, কিন্তু নিজ খড়োর দ্বারা সেটি কেটে দিলেন। পুনরায় সেই বীর ভল্লের দ্বারা বক্ষঃস্থলে আঘাত করল।। ২৬।।
ইন্দুল মূর্ছিত হয়ে গেলে সেই দিব্যরূপী বড়বা আকাশের উপর গিয়ে জয়ন্তকে সম্বোধন করেছিলেন। তখন সেই বালক শীঘ্রগামী হয়ে ধনুতে কালাস্ত্র ধারণ করেছিল। তার থেকে মহাশব্দ সমুৎপন্ন হয়েছিল এবং তালন মারা গেলেন।। ২৭-২৮।।
ইন্দুলঃ ক্রোধ তাম্রাক্ষস্বাগ্নেয়ং শরমাদদে। বহ্নিভূতং নভস্তত্র স্বযোগেন মহাবলঃ। কৃত্বা শীঘ্রং যযৌ শত্রুং স তু বায়ব্যমাদধে।।৩০ ।। স্বযো গেনৈব কৃষ্ণাংশঃ পীত্বা বায়ব্যমুত্তমম্। পুনর্জগাম তৎপার্শ্বং কলৈকঃ স হরেঃ স্বয়ম্।।৩১।। তথাবিধং রিপুং দৃষ্টা শত্ৰুপুত্ৰো মহাবলঃ। গন্ধর্বাস্ত্রং সমাদায় মোহনাযোপচক্রমে।।৩২।। পুনর্যোগবলেনৈব তদস্ত্বং সংক্ষয়ং গতম। বারুণং শরমাদায় তস্যোপরি সদাক্ষিপৎ।।৩৩।। স্বযোগেনৈব কৃষ্ণাংশো জলং সর্বং মুখেহ করোৎ। এবং সর্বাণি চাস্ত্রাণি পীত্বা পীত্বা পুনঃ পুনঃ।।৩৪।। যযৌ শীঘ্রং প্রসন্নাত্মা বাহুশালী যতেন্দ্রিয়ঃ। ইন্দুলস্ত তদাত্ৰুদ্ধোহশ্বিনী ত্যক্ত্বা ভূবি স্থিতঃ। চর্ম খড়্গং গৃহীত্বাশু খড়্গগযুদ্ধমচীকরৎ।।৩৫।।
সেনাপতি তালন মারাগেলে কৃষ্ণাংশ মদবিহবল হয়ে গেলেন এবং তিনি আকাশ মার্গে গিয়ে বার বার গর্জন করেছিলেন। ক্রোধে রক্তবর্ণ নেত্র ইন্দুল আগ্নেয় অস্ত্রের আধান করেছিল্ সেই মহাবলবান্ নিজের যোগের দ্বারা সেখানে সমস্ত আকাশ বহ্নিভূত করে শীঘ্র শত্রুর কাছে গিয়েছিলেন এবং পুনরায় তিনি বায়ু অস্ত্র গ্রহণ করেছিলেন।। কৃষ্ণাংশ নিজ যোগের দ্বারা বায়ু অস্ত্র পান করেছিলেন। তারপর কৃষ্ণাংশ এক কলা স্বরূপের কাছে গিয়েছিলেন।। ২৯-৩১।।
মহাবলবান্ ইন্দ্ৰপুত্র সেইরূপ শত্রুকে দেখে মোহনের উপযোগী গন্ধব গ্রহণ করেছিলেন। পুনঃ যোগ বলে কৃষ্ণাংশ সেই অস্ত্রও ধ্বংশ করলেন। পুনঃ বরুণশর গ্রহণ করে কৃষ্ণাংশের উপর প্রয়োগ করলেন। কৃষ্ণাংশ নিজ যোগের দ্বারা সম্পূর্ণ জল নিজমুখে গ্রহণ করলেন। এই ভাবে ইন্দুলের সমস্ত অস্ত্র বার-বার পান করে সমাপ্ত করে দিয়েছিল।। ৩২-৩৪।।
পুনরায় সেই বাহুবলী প্রসন্নাত্মা এবং যতেন্দ্রিয় ইন্দুল সেই সময় ক্রুদ্ধ হয়ে এবং অম্বিনী ত্যাগ করে ভূমিতে স্থিত হয়ে গেলেন। তিনি শীঘ্র চর্ম এবং খড়্গা গ্রহণ করে খড়্গযুদ্ধে প্রবৃত্ত হলেন।। ৩৫।।
এতস্মিন্নিন্তরে প্রাপ্তা দেবাদ্যাঃ সর্বভূমিপাঃ। দদৃশুস্তন্মহদ্যুদ্ধং সর্ববিস্ময়কারণম্।।৩৬।। প্রাতঃ কালে চ সংপ্রাপ্তে বলখানির্মহাবলঃ। দদর্শ বালকং রম্যং জটাজিনসমন্বিতম্।।৩৭।। শ্রমেণ কর্শিতো বীরঃ শত্রুপুত্রঃ প্রতাপবান্। বলখানেঃ পিতুৰ্বন্ধোঃ শপথং কৃতবান্বয়ম্।।৩৮।। স্বখড়োনৈব কৃষ্ণাংশ শিরস্তব হরাম্যহম্। নো চেন্মে দূষিতা মাতা নান্মা স্বর্ণবতী সতী। ইত্যক্ত্বা খড়্গগমাদায় যযৌ শীঘ্রং রুষান্বিতঃ।।৩৯।। বলখানিস্তু তং জ্ঞাত্বা ত্যক্ত্বাস্ত্রং প্রেমকাতরঃ পুত্রান্তিক মুপাগম্য বচনং চেদমব্রবীৎ।।৪০। হে ইন্দুল মহাভাগ পিতৃমাতৃযশস্কর। আহ্লাদপ্রাণসদৃশ স্বর্ণবত্যঙ্গমানস।।৪১।। পূর্বং হত্বা চ মাং বীর স্বপিতৃব্যং ততঃ পুনঃ। তথৈবোদয়সিংহং চ দেবসিংহং তথা কুলম্। সুখী ভব মহাবীর গেহে বৈ সুখবৰ্মণঃ।।৪২।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য জ্ঞাত্বা স স্বকুলং শিশুঃ। ত্যক্ত্বা খড়গং পতিত্বা চ স্বপিতৃব্যস্য পাদয়ো। কৃতবানরোদনং গাঢ়মপরাধনিবৃত্তয়ে।।৪৩।। উবাচ মধুরং বাক্যং শৃণু তাত মম প্ৰিয় নারীয়ং দূষিতা বেদৈনৃণাং মোহপ্রদায়িনী।।৪৪।। দেবো বা মানুষো বাপি পন্নগো বাপি দানবঃ। আর্য্য নারীময়ৈ জালৈবন্ধনায় সমুদ্যতঃ।।৪৫।। সোহমাজমশুদ্ধস্য পিতুরাহ্লাদকস্য চ। গেহে জাতো জয়ন্তশ্চ শক্রপুত্রঃ স্বয়ং বিভো।।৪৬।। পদ্মিন্যা জনিত মোহং গৃহীত্বা জ্ঞাতবান্ন হি। ক্ষমস্ব মম মন্দস্য শেষমজ্ঞানজং পিতুঃ।।৪৭।।
ইতিমধ্যে দেবাদি সমস্ত ভূমিপাল সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। তারা সকলের বিস্ময় উৎপাদনকারী সেই মহাযুদ্ধ দেখেছিলেন। প্রাতঃকালে মহাবলী বলখানি বর্চা এবং অজিন যুক্ত এক রম্য বালককে দেখেছিলেন। অত্যন্ত শ্রমবর্ষিত বীর এবং প্রতিভাবান্ সেই যুবক ইন্দ্রপুত্র ইন্দুল। তিনি পিতার বন্ধু বলখানির কাছে স্বয়ং শপথ করেছিলেন।। ৩৬-৩৮।।
তিনি বলেছিলেন–হে কৃষ্ণাংশ আমি আমার খড়্গোর দ্বারা তোমার মস্তক ছেদন করব নচেৎ আমার নামে সতী স্বর্ণবতী মাতা দূষিত হবেন। এই প্রকার শপথ করে রোষান্বিত হয়ে শীঘ্র চলে গেলেন। বলখানি তার কথা শুনে প্রেম কাতর হয়ে অস্ত্র ত্যাগ করলেন এবং তার সমীপে গিয়ে বললেন–হে ইন্দুল, হে মহাভাগ, হে পিতা-মাতার ক্ষমাকারী, তুমি আহ্লাদের প্রাণ সদৃশ, এবং স্বর্ণবতীর অংশের মানসপুত্র। প্রথমে তুমি আমাকে বধ কর তারপর পিতৃব্য কৃষ্ণাংশকে বধ করবে। সেই প্রকারে উদয় সিংহ, দেব সিংহ তথা সমস্ত কুলের হনন করবে। হে মহাবীর, তার পর তুমি সূর্যবর্মার গৃহে জীবন কাটাবে। বলখানির এইরূপ বচন শ্রবণ করে ইন্দুল নিজের সমস্ত কুলের কথা জ্ঞাত হয়ে হস্তের খড়্গা ক্যাগ করলেন এবং নিজ পিতৃব্যের চরণে পতিত হলেন। নিজ কৃত অপরাধ নিবৃত্তির জন্য ইন্দুল প্রচুর রোদন করলেন।।৩৯-৪৩।।
পুনরায় মধুর বচনে ইন্দুল বললেন–হে আমার প্রিয়তাত, আমার কথা শ্রবণ করুন, নারীকে বেদ দূষিত বলেছেন। তারা নরেদের মোহে আচ্ছন্ন করে।। দেবতা, মনুষ্য বা পন্নগ বা দানব যাইহোক, হে আৰ্য নারীময় জালে শীঘ্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। হে বিভো, আমি জন্ম শুদ্ধ পিতা আহ্লাদের গৃহে জাত শত্রু পুত্র জয়ন্ত, স্বয়ং কামিনীর দ্বারা মোহে আবিষ্ট হয়ে সব কিছু ভুলে গিয়েছিলাম, আমি কিছুই জানতাম না। পিতার বিষয়ে অজ্ঞান বশতঃ মন্দ বুদ্ধি হয়ে যা কিছু করেছি তা ক্ষমা করে দেবেন।। ৪৪-৪৭।।
ইত্যুক্ত্বা স পুনর্বালো রুরোদ স্নেহকাতরঃ। সেনামুজ্জীবয়ামাস তালনং চ মহাবলম্।।৪৮।। ইতি শ্রুত্বা বচস্তস্য কৃষ্ণাংশো বচনং শিশোঃ । পরমানন্দনমাগম্য হৃদয়ে তমরোপয়ৎ। উৎসবং কারয়ামাস তত্র দেশে জনে জনে।। ৪৯।। আৰ্য্যসিংহস্ত তচ্ছু ত্বা নাপাদ্রব্যহসন্বিতঃ। দদৌ কন্যাং বিধানেন পদ্মিনীমিন্দুলায় বৈ।।৫০।। শতং হয়াংস্তথা নাগান্মুক্তামণি বিভূপিতান্। কন্যার্থে তান্দদৌ রাজা জামাত্রে বহুভূষণম্।। ৫১।। প্রস্থানমকোত্তেষাং স প্রেন্মা বাক্যগদ্ গদঃ। তে তু সৰ্বে মুদা যুক্তাঃ স্বগেহং শীঘ্রমাযঃ।।৫২।। উষিত্বা মাসমেকং তু তস্মিন্মার্গে ভয়ানকে। কীর্তিসাগরমাসাদ্য চক্রস্তে বহুধোৎসবম্।।৫৩।।
এই প্রকার বচন বলে ইন্দুল সম্পূর্ণ সেনা সহ তালনকে উজ্জীবিত করে দিয়েছিলেন। সেই শিশুর এইরূপ বচন শ্রবণ করে কৃষ্ণাংশ পরমানন্দ লাভ করলেন এবং তাকে হৃদয়াবদ্ধ করলেন। পুনরায় এই দেশে ঘরে ঘরে জনে জনে উৎসব করেছিলেন।। ৪৮-৪৯।।
রাজা আর্য সিংহ সমস্ত বৃত্তান্ত শ্রবণ করে প্রচুর দ্রব্য সমন্বিত হয়ে সেই পদ্মিনী কন্যাকে বিধি-বিধান পূর্বক ইন্দুলকে দান করলেন। মণিমুক্তা সমন্বিত শত অশ্ব, হাতী রাজ কন্যার জন্য সেই সকল দান করলেন এবং জামাতাকে প্রভূত ভূষণ দান করলেন। পুনঃ তিনি প্রেম গদগদ বাক্যে তাদের বিদায় জানালেন। তারা সকলে আর্যদের সঙ্গে নিজগৃহে প্রত্যাবর্তন করলেন।। ৫০ -৫২।।
আহ্লাদস্তু প্রসন্নাত্মা সুতং পত্নী সমন্বিতম্। দষ্ট্বা বিপ্রাস্নমায় দদৌ দানান্যনেকশঃ।।৫৪।। দশহারাখ্যনগরং সংপ্রাপ্তঃ স্বকুলৈসহ। কৃষ্ণাংশস্য মহাকীর্তির্জাতো লোকে জনে জনে।।৫৫।। পৃথ্বীরাজস্তু তচ্ছ্বত্বা বিস্ময়ং পরমং যযৌ। সা তু বৈ পদ্মিনী নারী দুর্বাসঃ শাপমোহিতা।।৫৬।। অস্পরস্ত্বং স্বয়ং ত্যক্ত্বাভূমৌ নারীত্বামাগতা। দ্বাদশাব্দপ্রমাণেন সোষিত্বা জগতীতলে।।৫৭।। যক্ষ্মণা মরণং প্রাপ্য স্বর্গলোকমুপাযযৌ। নব মাসাস্কৃতো বাসস্তয়াহ্লাদমন্দিরে।।৫৮।।
একমাস ধরে সেই পরম ভয়ানক মার্গে নিবাস করতে করতে কীৰ্তি সাগরে উপস্থিত হয়ে তারা প্রচুর বড় উৎসব করেছিলেন। আহ্লাদ প্রভূত প্রসন্ন হলেন, যখন নিজপুত্র ইন্দুলের সাথে তার পত্নীকে দেখলেন। এরপর তিনি সুযোগ্য ব্রাহ্মণদের ডেকে তাঁদের প্রচুর দান করেছিলেন। এরপর তিনি নিজ দশহারাখ্য নগর নিজকুলের সঙ্গে লাভ করেছিলেন। তখন থেকে কৃষ্ণাংশের কীর্তি জনে জনে বিস্তার লাভ করেছিল।। ৫৩ -৫৫।
রাজা পৃথ্বীরাজ এই সংবাদ শ্রবণ করে প্রভূত বিস্মৃত হয়েছিলেন। সেই পদ্মিনীনারী যিনি দুর্বাসার শাপে অপ্সরাত্ব ত্যাগ করে এই ভূ মন্ডলে নারী রূপ ধারণ করেছিলেন। দশবর্ষ বয়স পর্যন্ত জগতে নিবাস করে রাজযক্ষ্মা রোগে মৃত্যু প্রাপ্ত হয়ে স্বর্গলোক চলেগিয়েছিলেন। তিনি আহ্লাদের গৃহে কেবল নয়মাস নিবাস করেছিলেন।। ৫৬-৫৮।।