অষ্টবসু

দেবতা; মনু-পুত্র প্রজাপতি ও তাঁর স্ত্রী ধূমা রতা শ্বাসা ও প্রভাতার আট সন্তান – ধর (ভব) ধ্রুব সোম অহঃ (বিষ্ণু) অনিল অনল প্রত্যূষ ও প্রভাস (প্রভব বা দ্যু)। বশিষ্ঠ মুনির কামধেনু সুরভিকে চুরি করতে গেলে মুনি ওঁদের শাপ দেন যে, মর্তে গিয়ে ওঁদের জন্ম নিতে হবে। ওঁরা ক্ষমা চাইবার পর বশিষ্ঠ তাঁর শাপ লাঘব করে বলেন যে,শুধু দ্যু – যিনি চুরির ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগ নিয়েছিলেন – তিনি ছাড়া আর সবাই এক বছরের মধ্যেই স্বর্গে ফিরে আসতে পারবেন। বসুগণরা তখন দেবী গঙ্গাকে অনুরোধ করেন – মর্তে তাঁদের মাতা হতে। গঙ্গা তাতে রাজি হন,কারণ তিনি জানতেন যে, রাজা মহাভিষ স্বর্গে এসে ওঁকে কামনা করায় ব্রহ্মা স্বর্গবাসের অনুপযুক্ত বলে মহাভিষকে আবার মর্তে পাঠাচ্ছেন। সুতরাং দৈবচক্রে ওঁদের মিলন হবে। মহাভিষ মর্তে এসে মহারাজ প্রতীপের পুত্র শান্তনু নামে জন্ম নেন। শান্তনু রাজা হবার পর একদিন গঙ্গার তীর দিয়ে মৃগয়াতে যাবার পথে দেবী গঙ্গাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিবাহ করতে চান। গঙ্গাদেবী সন্মতি দেন এই সর্তে যে, শান্তনু কোনওদিন তাঁর কোনও কাজে বাধা দিতে পারবেন না। দিলেই তিনি চলে যাবেন। প্রতি বছর গঙ্গার একটি করে সন্তান হত, আর সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেটিকে গঙ্গা-নদীতে বিসর্জন দিয়ে বসু দেবতাদের মুক্তি দিতেন। এই ভাবে সাতটি দেবতা মুক্তি পাবার পর,যখন অষ্টম সন্তানকে তিনি জলে বিসর্জন দিতে যাচ্ছেন, তখন শান্তনু এসে ওঁকে বাধা দিলেন। গঙ্গাদেবী তখন শর্তের কথাটা শান্তনুকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে নবজাত পুত্রকে নিয়ে অদৃশ্য হন। পরে পুত্র যৌবন প্রাপ্ত হলে গঙ্গা তাঁকে (যিনি পরে ভীষ্ম রূপে পরিচিত) শান্তনুর হাতে দিয়ে বিদায় নেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *