দ্বিতীয় খন্ড
উত্তরপর্ব
2 of 3

অশোক ব্রত মাহাত্ম্য

।। অশোক ব্রতস্য মাহাত্ম্য।।

আশ্বযুচ্ছক পক্ষস্য প্রথমেহহ্নি দিনাদয়ে। অশোকং পূজয়েদ বৃক্ষং প্ররুঢ়শুভ পল্লবম্।।১।। বিরুটেঃ সপ্তধান্যৈশ্চ গুণকৈর্মোদকৈঃ শুভৈঃ। ফলৈঃ কালোদ্‌ভবৈদিব্যৈন্নালিকরৈঃ সদাভিসৈঃ।।২।। পুষ্পধূপাদিনা তদ্বৎপূজয়েৎদ্দিনেনেখ। অশোকং পান্ডবং শ্রেষ্ঠং শোকং নাপ্নোতি কুত্রচিৎ।।৩ পিতৃভ্রাতৃপতিশ্চশ্রুশ্বশুরাণাং তথৈব চ। অশোক শোকশমনো ভব সর্বত্র ন কুলেঃ।।৪।। ইত্যুচ্চার্য ততো দদ্যাদর্ঘ্যং শ্রদ্ধাসমন্বিতম্। পাতকাভিরলংকৃত্য প্রচ্ছাদ্য শুভবাসসা।।৫।। দময়ন্তী যথা স্বাহা যথা বেদ্ববতী সতী। তথাশোকব্রতাদস্মাজ্জায়তে পতিবল্লভা।।৬।।

।। অশোক ব্রত মাহাত্ম্য।।

এই অধ্যায়ে অশোক ব্রত মাহাত্ম্যের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ বললেন আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের প্রথমদিন সূর্যোদয়ের সময় শুভপল্লব সমন্বিত অশোক বৃক্ষের পূজন করা উচিৎ। বিরুঢ়কৃত সাতপ্রকার ধ্যান করে নুণ ও মোদক দ্বারা, ফল, দিব্য নারিকেল, দাড়িম্ব সহিত পুষ্প, ধূপ, দীপ, গন্ধ, অক্ষত ইত্যাদি উপাচারের দ্বারা পূজন করতে হয়। হে অনঘ, হে পান্ডব শ্রেষ্ঠ, অশোক বৃক্ষপূজনকারী কদাপি শোক লাভ করেন না।।১-৩।।

বনে ব্রজন্ত্যা সদ্ধর্মঃ সীতয়া সংপ্রদর্শিতঃ। দৃষ্ট্বাবৃশোকং বনে প্রার্থ পল্লবালং কৃতাম্বরম্।।৭।। কৃত্বা সমীপে ভর্তারং দেবরং চ তিলাক্ষতৈঃ। দীপালংকৃতনৈবেদ্যধূপসূত্রফলাৰ্চনৈঃ।।৮।। অর্চয়িত্বা হ্যর্থিতোহসৌ রক্তাশোকো যুধিষ্ঠির। মৈথিল্যা প্রাঞ্জলির্ভূত্বা শৃণ্বতো রাঘবস্য চ।।৯।। চিরং জীবতু মেবৃদ্ধঃ শ্বশুরঃ কোশলেশ্বরঃ। ভর্তা মে দেবরাশ্চৈব জীবন্তু ভরতাদয়ঃ। কৌশল্যামপি জীবন্তীং পশ্যেয়মিতি মৈথিলী।।১০।। য্যাচে তং মহাভাগা দ্রুমং সত্যোপমাচনম্। প্রদক্ষিণমুপাবৃত্য ততস্তে প্ৰযয়ু পুনঃ।।১১।। এবমন্যাপি যা নারী পূজয়েস্তুবিতং ন্যাম্। তিলতন্ডুলসম্মিশ্রৈয়বগ্ৰোধূম সসপৈঃ।।১২।। ক্ষমাপ্য কদয়ে মূলং পাদপং রক্তাপল্লবম্ মন্ত্রেণানেন কৌন্তেয় প্রণম্য সত্রী পতিব্রতা।।১৩।।

অশোক বৃক্ষ অর্চনের সময় প্রার্থনা করবে–হে অশোক, আপনি আমার কুলের শোক নাশক হোন। অতঃপর পূর্ণশ্রদ্ধা দ্বারা তাকে অর্ঘ প্রদান করবে। পতাকা, বস্ত্র দ্বারা তাকে সুসজ্জিত করবে। রাজা নলের স্ত্রী দময়ন্তী, স্বাহা, সতী বেদবতী ছিলেন তেমন অশোক ব্রত পালন করে পত্নী পতিবল্লভা হন। বনগমনকারী সীতা এর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি অশোক বৃক্ষ দর্শন করে তার সমীপে দেবর ও স্বামীকে রেখে তিল, অক্ষত, দীপ, অলংকার, নৈবেদ্য, ধূপ, সূত্র এবং ফলের দ্বারা অর্চন করে জানকী প্রার্থনা করেছিলেন, হে অশোক, কোশল দেশের অধীশ্বর আমার বৃদ্ধ শ্বশুর মহারাজ দশরথ চিরকাল যেন জীবিত থাকেন। আমার স্বামী ও দেবর সকলেই যেন অধিককাল পর্যন্ত জীবিত থাকেন। তিনি শ্বশ্রুমাতা কৌশল্যার দীর্ঘজীবন চেয়েছিলেন। তারপর সেই বৃক্ষ প্রদক্ষিণ করে তারা সকলে চলে গেলেন।।৪-১০।।

মহাবৃক্ষ মহাশাখ মকরধ্বজমন্দির। প্রার্থয়ে ত্বাং মহাভাগ বনোপবন ভূষণ।।১৪।। এবমাভাষ্য তং বৃক্ষং দত্ত্বা বিপ্রায় দক্ষিণম্। সখীভিঃ সহিতা সাব্ধী ততঃ স্বভবনং ব্ৰজৈৎ।।১৫।। সা শোকনাশনমশোকতরুং তরুন্যঃ। সংপূজয়ন্তি কুসুমাক্ষত ধূপদীপৈঃ। তাঃ প্রাপ্য সৌখ্যমতুলং ভুবি ভর্তুজাতং। গৌরীপদং প্রমুদিতাঃ পুনবাপুবস্তি।।১৬।।

এই বিধানে অন্য কোনো নারী অশোকবৃক্ষপূজন করলে তিল, তন্ডুল, যব অথবা সর্ষপ দ্বারা করবে। তারপর ক্ষমা প্রার্থনা করে সেই রক্ত পল্লব বৃক্ষের মূল বন্দনা করতে হয়। তারপর হে মহাবৃক্ষ, হে মহান্ শাখাযুক্ত, মকরধ্বজ মন্দির, হে মহাভাগ্যবান্ আপনি বনের ও উপবনের ভূষণ। এইরূপ প্রার্থনা করে বিপ্রকে দক্ষিণা দিতে হয়।। ১১-১৫।।

যে সকল তরুণীগণ শোকনাশ করতে চান তারা অশোক কুসুম ও অক্ষত তথা ধূপ, দীপ দ্বারা পূজন করবে। তার ফলে তারা এই ভূতলে স্বামী সুখপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর পর গৌরীপদ লাভ করেন।।১৬।।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *