।। অশূন্যশয়ন ব্রতস্য মাহাত্ম্য।।
ভগবন্ ভবতা প্রোক্তং ধর্মার্থাদৈঃ সুসাধনম্। গার্হস্থ্যং তচ্চ ভবতি দম্পত্যোঃ প্রীয়মানয়োঃ।।১।। পত্নীহীনঃ পুমান্পত্নী ভৰ্ত্ত বিরহিতা তথা। ধর্মকামার্থ সংসিদ্ধী ন স্যাতাং মধুসূদন।।২।। তদব্রুহি দেবদেবেশ বিধবা স্ত্রী ন জায়তে। ব্রতেন যেন গোবিন্দং পত্ন্যাহবিরহিতৌ নরঃ।।৩।। অশূন্যশয়নীং নাম দ্বিতীয়াং শৃণু তাং মম। সামুপোষ্য ন বৈধব্যং প্রাপ্নোতি স্ত্রী যুধিষ্ঠির।।৪।। পত্নী বিমুক্তাশ্চ নরো ন কদাচিৎ প্রজায়তে। শেতে জগৎপতি বিষ্ণুঃ স্ত্রিয়া সার্দ্ধং যদা কিল।।৫।। অশূন্যশয়নং নাম তদা গ্রাহ্যা চ সা তিথিঃ। উপবাসেন নক্তেন তথৈবায়াচিত্তে চ।।৬।।
।। অশূন্যশয়ন ব্রত মাহাত্ম্য।।
যুধিষ্ঠির বললেন, হে ভগবান্, আপনি গার্হস্থ্য আশ্রমের ধর্ম, অর্থাদির সাধন সম্পর্কে বললেন। কিন্তু তা তখনই হয় যখন দম্পতির পরম প্রেম থাকে। হে মধুসূদন, যে পুরুষ পত্নীহীন ও যে স্ত্রী স্বামীহীন হয়ে জীবনযাপন করে তাদের ধর্ম, অর্থ ও কামের সিদ্ধি হয়না। হে দেব, দেবেশ, এমন কোনো ব্রত আছে যাতে করে স্ত্রী বিধবা হবেনা বা পুরুষ বিপত্নীক হবেনা। শ্রীকৃষ্ণ বললেন, এখন তুমি আমার কাছ থেকে অশূন্যশয়নী ব্রত কথা শ্রবণ কর। হে যুধিষ্ঠির, এই দ্বিতীয়া তিথিতে উপবাস করলে স্ত্রী কখনও বিধবা হয়না। পুরুষ কখনও নিজ পত্নীর থেকে দূরে থাকে না যে সময় জগৎপতি বিষ্ণু নিজ পত্নীর সঙ্গে শয়ন করেন।।১-৫।।
এই বিধি অশূন্যশয়ন বিধি নামে গ্রাহ্য হয়। যাতে করে উপবাস করবে অথবা অযাচিত ভোজন করবে।।৬।।
কৃষ্ণপক্ষে দ্বিতীয়ায়াং শ্রাবণে নৃপসত্তম। স্নানং নদ্যাং তড়াগে বা গৃহে বা নিয়তাত্মবান্।।৭ ॥ কৃত্বা পিতৃন্ মনুষ্যাংশ্চ দেবান্ সন্তৰ্প ভক্তিমান্। স্থন্ডিলং চতুরস্ত্রং তু মৃন্ময়ং কারয়েত্ততঃ।।৮।। তত্রস্থং শ্রীধরং শ্রীশং ভক্ত্যাভ্যর্চ্চ শ্রিয়া সহ। নৈবেদ্য পুস্পাধূপাদ্যৈঃ ফলৈঃ কালোদ্ ভবৈঃ শুভৈঃ।।৯ ইমমুচ্চারয়েমমন্ত্রং প্রনম্য জগতঃ পতিম্। শ্রীবৎ সধারিঞ্জীকান্ত শ্রীধামঞ্জীপতেহব্যয়।।১০।। গার্হস্থ্যং মা প্রণাশং মে যাতু ধমার্থকামদম্। অগ্নয়ো মা প্রণম্যন্তু মা প্রণশ্যন্ত দেবতাঃ। পিতরো মা প্রণশ্যন্তু মত্তো দাম্পত্যভেদতঃ।। ১১।। লক্ষ্ম্যা বিমুজ্যতে কৃষ্ণ ন কদাচিদ্যথা ভবান্। তথা কলত্রসম্বন্ধো দেবনা মে প্রশস্য তু।।১২।। লক্ষ্ম্যা ন শূন্যং বরদ যথা তে শয়নং সদা। শয্যা মমাপ্যশূন্যাস্ত তথা জন্মনিজন্মনি।।১৩।।
এবং প্রসাদ্য পূজাং চ কৃত্বা লক্ষ্ম্যা হরে স্তথা। চন্দ্রোদয়ে স্নানপূর্বং পঞ্চগব্যেন সংযুতম্। বি প্রায় দক্ষিণাং দদ্যাৎস্বশক্ত্যা ফলসংযুতাম্।।১৪।। অনেনবিধিনা রাজন্যাবন্ মাসচতুষ্টয়ম্। কৃষ্ণপক্ষে দ্বিতীয়ায়াং প্রাগুক্তবিধিমাচরেৎ।।১৫।। কার্তিকে চাথ সংপ্রাপ্তে শয্যাং শ্রীকান্তসংযুতাম্। সোপস্করাং সোদকুম্ভাং সান্নাং দদ্যাদ্বিজাতয়ে।।১৬।। প্রতিমাসং চ সোমায় অধ্যং দদ্যাৎ সমন্ত্রকম্। দধ্যক্ষতৈমূল ফলৈ রত্নৈ সৌবর্ণভাজনৈঃ।।১৭।। গগনাংগণসদ্দীপ দুগ্ধাক্কিমথনোদ্ ভব। আভাস্তিদিগাভোগ রমানুজ নমোস্তুতে।।১৮।। এবং করোতি যঃ সম্যভূঃমরো মাসতুষ্টয়ম্। তস্য জন্মত্রয়ং যাবদ্ গৃহভঙ্গো ন জায়তে।।১৯।। অশূন্যশয়নশ্চৈব ধর্মকামার্থ সাধকঃ। প্রবত্যব্যাহতৈশ্বর্যঃ পুরুষো নাত্রসংশয়ঃ।।২০।।
হে নৃপশ্রেষ্ঠ শ্রাবণ মাসে কৃষ্ণ পক্ষের দ্বিতীয়ার দিন কোনো নদীতে, তড়াগে বা নিজগৃহে নিয়মপূর্বক স্নান করবে। ভক্তিভাবে সমন্বিত পুরুষ পিতৃগণ, মনুষ্যবৃন্দ ও দেবগণকে পরিপূর্ণ তর্পণ করবে। চতুরস্র মৃত্তিকা দ্বারা স্থন্ডিল নির্মাণ করবে। তাতে নৈবেদ্য, পুষ্প, ধূপ, ফলাদি দ্বারা শ্রীকে পুরুষজ্ঞান অর্চনা করবে। তারপর জগৎ স্বামীকে প্রণাম করে বলবে – হে শ্রীবৎস ধারণকারী, শ্রীকান্ত, শ্রীধাম, শ্রীপতি, হে অব্যয় ধর্ম-কাম-অর্থ প্রদানকারী আমার গার্হস্থ্য আশ্রম কখনও নাশ করবেন না। অগ্নি, দেবগণ, পিতৃগণ যেন আমার দাম্পত্য সুখ নষ্ট না করতে পারে। হে শ্রীকৃষ্ণ, আপনি যেরূপ লক্ষ্মীদেবীর সাথে কদাপি বিমুক্ত হননা, তেমন আমার পত্নীবিরহ যেন না হয়। হে বরদাতা, আপনার ন্যায় আমার শয্যাও যেন পত্নীশূন্য হয়না। এই প্রকারে লক্ষ্মী নারায়ণকে প্রসন্ন করে তথা তাঁদের পূজন করে চন্দ্রের উদয়ের সময় প্রথমে স্নান করে পঞ্চগব্য নিয়ে বিপ্র নিজ শক্তি অনুসারে দক্ষিণা দেবে।।৭-১৪।।
হে রাজন, এই প্রকারে চারমাস কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পূর্ব নির্দেশ মতো পূজার্চন করবে। কার্তিক মাস এলে সকল উপস্কর নিয়ে জল কুম্ভ যুক্ত, শ্রীকান্ত শয্যা, অন্ন সহিত ব্রাহ্মণকে দান করবে।।১৫-১৬।।
নারী চ পার্থ ধর্মজ্ঞা ব্ৰতমেতদ্যথাবিধি। যা করোতি ন সা শোঢ্যা বন্ধুবর্গস্য জায়তে।।২১।। বৈধব্যং দুর্ভগত্বং চ ভর্তৃত্যাগং চ সত্তম।। প্রাপ্নোতি জন্মত্রিতয়ং ন সা পান্ডুকুলোদবহ।।২২।। এষা সমাচরতি যঃ পুরুষোহথ যোষিৎ প্রাপ্নো। ত্যসৌ শয়নম মহাগ্রহভোগ্যম্।।২৩।।
হে রমানুজ, আপনি গমনাঙ্গন সদৃশ সুন্দর ও সমুজ্জ্বল দীপ আপনার উৎপত্তি ক্ষীরসাগর মন্থন থেকে হয়েছে, আপনি দিকসমূহ আভাসিত করেন। আপনাকে প্রণাম। যে মনুষ্য এই প্রকার ভালোভাবে চারমাস ব্রত পালন করেন তাঁর তিন জন্ম পর্যন্ত গৃহ ভঙ্গ হয়না। এই ব্রত ধর্ম অর্থ কাম সাধক এই ব্রত পালনে পুরুষ অব্যাহত বৈভবমুক্ত হন। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। হে পার্থ, নারীধর্ম যিনি জানেন এই ব্রত পালন করেন। তিনি কদাপি বন্ধুবর্গের জন্য শোক করেন না। বৈধব্য, দুর্ভগত্ব এবং ভর্তৃ ত্যাগ তিনজন্ম পর্যন্ত তিনি প্রাপ্ত হননা। হে নৃপতি, এই দ্বিতীয়া অশূন্যাশয়না নামে খ্যাত। এই ব্রত সমস্ত কলুষ নাশকারী। যে কোনো পুরুষ বা স্ত্রী এটি পালন করলে তিনি উত্তম শয়ন ভোগ করেন।।১৭-২৩।।