অলৌকিক জলযান – ৫৪

।। চুয়ান্ন।।

পালে বাতাস লেগেছে। ছোটবাবু শেষবারের মতো দুর থেকে হাত তুলে হাঁকল, গুডবাই ক্যাপ্টেন স্যালি হিগিনস, গুডবাই। আর সে তখনই দেখতে পেল এলবা উড়ে আসছে সাঁ-সাঁ করে। সোজা বোটের মাথায় বসে গেল। সে ফের তখন চিৎকার করে বলছে, চাচা, অপনি আমার জন্য ভাববেন না। ঠিক আমরা পৌঁছে যাব। এলবা বোধ হয় আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে।

ছোটবাবু দেখল বনি তখন দু’হাঁটুর ভেতর মাথা গুঁজে দিয়েছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ছোটবাবু ডাকল, বনি প্লিজ—কি হচ্ছে বনি! পালে বাতাস লেগেছে, এলবা বোটের চারপাশে উড়ছে—এবং সে কখনও আকাশের ওপরে উঠে যাচ্ছে কখনও আবার নিচে নেমে এসে ঝুপ করে বসে পড়ছে বোটের মাথায়, বোট দুলে উঠছে—অসংখ্য সব ছোট ছোট, ঝাঁকে ঝাঁকে শোলমাছের বাচ্চার মতো কতসব বিচিত্র মাছ, এবং তার নিচে কোনো বড় মাছের ঝাঁক এই পাঁচ-সাত ফুট লম্বা এবং চারপাশে জলের নিচে এক ডিজনি-ল্যাণ্ডের মতো ব্যাপার। এত স্বচ্ছ যে একটু নিচে তাকালেই যেন সমুদ্রের অতল দেখা যায়। গুচ্ছ গুচ্ছ কখনও সব সবুজ শ্যাওলা—আর হয়তো অতিকায় কোনো প্রাণী ভেসে উঠলে জলের নিচে তার কালো ছায়া প্রথম ভেসে উঠবে—ছোটবাবু সমুদ্রের বিশালতায় কি আশ্চর্য রোমাঞ্চ বোধ করতে থাকল। মৃত্যু যতই অনিবার্যতার শামিল হোক—সে কেমন সাহস পেয়ে যাচ্ছে—জাহাজ যত চোখের ওপর থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল, যত সে বনিকে নিয়ে অকুল সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে তত সে এক আশ্চর্য পৃথিবীর খবর পেতে চঞ্চল হয়ে উঠছে। সে হুকের সঙ্গে দড়ি বেঁধে ফেলল। বনির কান্না থামছে না। সে ওর পাশে হাঁটু মুড়ে বসল। নানভাবে বুঝিয়ে সে বনিকে শান্ত করতে পারছে না। বনি বুঝতে পেরেছে সব। এবং বনির কান্না ছোটবাবু একদম সহ্য করতে পারে না। সে শেষে ওর মুখ তুলে বলল, এই, আমি বুঝি, তোমার কেউ না!

বনি যেন কতকাল পর, কতদিন পর এক সাম্রাজ্য জয়ের অধিকারে সহসা ছোটবাবুর বুকে মুখ লুকিয়ে ফেলল। আর কি নরম সাবলীলতা রয়েছে সেই বলিষ্ঠ বাহুতে। যত ছোটবাবু সেই সমুদ্রে পাটাতনের ওপর আকাশের নিচে বনিকে বুকে টেনে নিচ্ছে যত ওকে আদর করছে, তত বনি ওর শরীরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, তত লতাপাতার মতো সে শরীরে জড়িয়ে যাচ্ছে এবং মসৃণ ত্বকের বর্ণমালায় ছোটবাবু ক্রমশ ডুবে যাচ্ছিল। বনি কি যে করছে! বনি তখনও ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বুঝি কাঁদছে—অথবা যুবতী হবার মুখে তার উপত্যকায় সত্যি বুঝি ফুল ফুটে যাচ্ছে—সেই যাতনা ফুলের, ফুল ফোটার যাতানায় বনির মুখে চোখে অধীর কুসুম কুসুম রঙ। পালে তেমনি বাতাস। সমুদ্রের জল কেটে কেটে বোট প্রায় উড়ে যাচ্ছে। আর ওদের মাথার ওপর এলবা উড়ছে। হঠাৎ বনি .ওপরে এলবাকে দেখে পা গুটিয়ে ফেলল, এই, এলবাটা দেখছে। এস ভিতরে এস। বনি ছোটবাবুকে নিয়ে ছই-এর ভেতরে ঢুকে গেল।

তারপর বনি বলল, ছোটবাবু আমরা কোথায় যাচ্ছি? ছোটবাবু হাঁটুর কাছে মুখ নিয়ে বলল, জানি না বনি, আমরা কোথায় যাচ্ছি জানি না। তবু জানি এ-ভাবেই আমাদের সবাইকে কোথাও না কোথাও পৌঁছে যেতে হয়। সামনে কি থাকে আমরা কেউ জানি না।

বনি বলল, বাবা কোথায় যাচ্ছেন? বাবা আমাদের বোটে ভাসিয়ে দিল কেন?

ছোটবাবু বলল, তিনিও রওনা হয়েছেন। কোথাও যাবেন বলেই তিনি আমাদের ফেলে গেলেন এখানে। তারপর ছোটবাবু যেন এক অকূল সাগরে ভেসে যাচ্ছে। বলল, শৈশবে আমার পাগল জ্যাঠামশাই ছিল, ঈশম দাদা ছিল। ফতিমা, মা বাবা কত কি ছিল। এখন শুধু তুমি আছ। তুমি ভেঙে পড়লে আমার আর এতটুকু দাঁড়াবার জায়গা থাকবে না বনি।

এভাবে এক অধীর প্রাণপ্রবাহ সামান্য এই বোটে উদ্দাম হয়ে উঠেছিল। নিশীথে যখন নক্ষত্রমালা বিরাজমান আকাশে এবং খেলাচ্ছলে ওরা বোটের নিচে শুয়ে নিজেদের ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছিল—পাখিটা তখন বোটের মাথায় পাখায় ঠোঁট গুঁজে রেখেছে। ওরা যখন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে জ্যোৎস্নায় সমুদ্রের অন্তহীন রহস্য খুঁজে বেড়াচ্ছে পাখিটা তখন বাতাসে ডাঙার গন্ধ শুঁকে বেড়াচ্ছে, ওরা যখন বোটের ভেতর রেশমের মতো নরম উলের বল নিয়ে খেলা করছে—আকাশের নক্ষত্রমালা তখন সব নিচে নেমে এসেছিল, চুরি করে দেখেছে ওরা কি যে এক অতীব সুন্দর বল ছুঁড়ে দিচ্ছে। মনে হয় এখুনি সেই নরম উলের বল বাতাসে উড়ে গিয়ে আকাশের দু’প্রান্তে দু’টো নক্ষত্র হয়ে যাবে। বনি বলছিল, ছোটবাবু আমার পৃথিবীতে আর কিছু লাগে না।

ছোটবাবু বলছিল, আমারও না।

ছোটবাবু বলেছিল, বনি ক্রসটা ভাসিয়ে দিচ্ছি। বোট হাল্কা হলে তাড়াতাড়ি ডাঙায় পৌঁছতে পারব।

বনি বলেছিল, দাও। ওটা আমাদের কোনো কাজে লাগবে না।

ছোটবাবু ক্রসটা নামিয়ে দেবার সময় কি ভেবে বলল, থাক। আছে যখন থাক। আগুন জ্বালানো যাবে।

বনি এবং ছোটবাবু এভাবে মৃত্যু এবং বিধাতাকে যখন অস্বীকার করে পৃথিবীতে ফিরতে চেয়েছিল—তখন স্যালি হিগিনস জাহাজে চুপচাপ শুয়ে আছেন। সারেঙ পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন, সাব খাবার খান এ-ভাবেই নিশীথে জাহাজ ভেসে যায়। দিন যায় জাহাজে। আবার রাত আসে। আবার নক্ষত্র মালার নিচে জাহাজ ভেসে যায়।

হিগিনসের চোখেমুখে শুধু বনি, বনির সেই অবোধ মুখ। যত দিন যাচ্ছে কেবল সমুদ্রের ভেতর থেকে তার আর্ত কান্না শুনতে পাচ্ছেন—বাবা তোমার মুখ দেখতে পাচ্ছি না কেন, বাবা! তুমি আমাকে বোটে নামিয়ে দিচ্ছ কেন?

হিগিনস একদিন বললেন, তুমি খেয়েছ?

সারেঙ-সাব বললেন, খেয়েছি। আসলে কিছুই আর সারেঙ-সাব খাচ্ছেন না। আহার এবং পানীয় বলতে যা কিছু সব নিঃশেষ। এবং এই বোধহয় শেষ খাবার। সারেঙ-সাব চোখে ভাল দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি শীর্ণকায় এবং অতীব দুর্বল হয়ে পড়েছেন। নিশিদিন স্যালি হিগিনস বিছানায় চুপচাপ শুয়ে আছেন। জাহাজটা মনে হচ্ছে নিশিদিন ছুটে যাচ্ছে কোথাও। সারেঙ-সাব টেবিলে শেষ জল এবং খাবার রেখে প্রায় হাঁটু মুড়ে নিচে বসে পড়লেন একদিন। চোখে আর কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। স্যালি হিগ্রিসকে কিছুতেই বুঝতে দিচ্ছেন না তিনি ক্রমশ দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছেন। এবং বোধহয় বুঝতে পারছিলেন এই শেষবার তাঁর এ-ঘরে আসা। তিনি অন্ধকারে বাইরে বের হয়ে এলেন। ডেকের ওপর বসে দু’হাত বিধাতার কাছে প্রার্থনার মতো বিছিয়ে রাখলেন—মনে হচ্ছিল চার পাশে শুধু সীমাহীন অন্ধকার, এক অন্ধকার জগতে তিনি এখন বিরাজমান—এবং মাঝে মাঝে দু’টো একটা আয়াত তাঁর মনে আসছিল- কেয়ামতের দিন তিনি কি জবাব দেবেন তাঁকে, এ-সবই বার বার মনে আসছিল। এবং তখন জাহাজটাকে ভাবাই যায় না আর সাধারণ জাহাজ, কেমন নিশীথে সে বেশ ছুটে চলেছে। এই অন্ধকার আকাশ নক্ষত্রমালা আর সমুদ্র অতিক্রম করে তার কোথাও যেন এক অলৌকিক যাত্রা শুরু হয়েছে। তিনি বুঝতে পারছিলেন, সমুদ্র ফের প্রলয়ঙ্কর ঝড় নিয়ে ছুটে আসছে। তিনি স্থির এবং অবিচল। জলোচ্ছ্বাসে তিনি ভেসে যাবেন হয়তো, কোনো দুঃখ থাকছে না—তাঁর কাছে এখন এই জাহাজ, সমুদ্র, জলোচ্ছ্বাস সব সমান। তাঁর কাছে এখন বিশ্বস্ত থাকার চেয়ে বড় কিছু নেই। তাঁর শেষ আহার ভোজ্যদ্রব্য যা কিছু তিনি স্যালি হিগিনসের টেবিলে রেখে এসেছেন। কেয়ামতের দিন বিধাতার কাছে তাঁর এটাই একমাত্র জবাব—বিশ্বস্ততা। শুধু এই সম্বল নিয়ে তিনি আল্লার কাছে করুণা প্রত্যক্ষ করছেন এখন। এবং সেই জলোচ্ছ্বাসে নিঃশ্বাস ক্রমে বন্ধ হয়ে এলে কেমন নীল বিন্দু বিন্দু বেলুনের মতো উজ্জ্বল আলোর মালার ভেতরে তিনি যাত্রা করেছেন। তারপর তারা একে একে সবাই নিভে যেতে থাকল। জীবনের এক রহস্যময় যাত্রা থেকে অন্য এক রহস্যময় যাত্রায় তিনি আবার রওনা হয়েছেন। গভীর বায়ুহীন আলোহীন এক জগৎ তাঁকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলল।

স্যালি হিগিনস ক্ষীণকণ্ঠে ডাকলেন, সারেঙ।

কোনো জবাব নেই। আবার ডাকলেন, সারেঙ।

শুধু হিস হিস সমুদ্রের তরঙ্গমালার শব্দ। জাহাজটা এবার যেন গতি পেয়ে গেছে। কোনো আলো নেই। আকাশে কোনো জ্যোৎস্না নেই। কোথায় কবে তিনি কোন জাহাজে উঠে এসেছিলেন মনে করতে পারছেন না—কেবল ঝড়ো বাতাসে জাহাজ দুলছে। আর বোধহয় সব তরঙ্গমালা জাহাজ ডেক ভাসিয়ে নিচ্ছে। ঝড়ের ভেতর তিনি বের হয়ে ডাকলেন—সারেঙ তুমি কোথায়? তুমি খাবে না?

শুধু অন্ধকার চারপাশে। নিরবছিন্ন অন্ধকার। আর আশ্চর্য তিনি আকাশের নক্ষত্রমালা দেখতে পাচ্ছেন না। আকাশে তবে এখন প্রলয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে যাচ্ছে। যত জোরে সম্ভব দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকলেন। হাত পা কাঁপছে। শরীর মনে হচ্ছে শক্ত হয়ে গেছে। গলা কাঠ। শেষ জল এবং আহার সারেঙ রেখে চলে গেছে। সারেঙ বনির কেবিনে থাকত। সব ফাঁকা। কিছু নেই।

তারপর তিনি ফের শুয়ে পড়লেন এসে। তিনি বুঝতে পারছিলেন, জাহাজে এখন একা তিনি। জাহাজটা যা চেয়েছে পেয়ে গেল। সে তার বিশ্বস্ত আরোহীকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তাঁর আর কোন দুঃখ থাকল না। তিনি জাহাজটার জন্য মায়া বোধ করলেন। জাহাজটা এখন নিশিদিন সমুদ্রে ভেসে বেড়াবে। তিনি এবং সে। সমুদ্রে তিনি এবং সে। এক অলৌকিক জলযানে তিনি সমুদ্রে ভেসে যেতে থাকলেন। এবং ক্রমে এভাবে দিন যায়। রাতে তিনি পোর্ট-হোলে আকাশের নক্ষত্র দেখতে পান, চাঁদের আলো এসে পড়ে—সমুদ্র নিথর নীরব, বর্ণহীন, গন্ধহীন। তিনি সাদা বিছানায় সাদা পোশাকে লম্বা হয়ে শুয়ে আছেন। শেষ খাবার আর জল টেবিলে। হাত তুলে খেতে পর্যন্ত পারছেন না।

হাত-পা ক্রমে এ-ভাবে ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। যেন অসাড় চোখ, স্থির বায়ুমণ্ডলে ভারী অক্সিজেনের অভাব। দু-হাতে তিনি সমস্ত বায়ুপ্রবাহ গিলে খেতে চাইছেন। পারছেন ন। কঠিন যন্ত্রণায় চোখ ঠেলে বের হয়ে আসছে। পাশে এখন কত সব মিছিলের মতো ছায়া এসে জড়ো হচ্ছে। এবং বার বার সেইসব শৈশবের মুখ, বাবা মা ছোট বোন, আর তারপর যৌবনে সেই প্রেমিকারা। কেউ কেউ ভারী অস্পষ্ট। তাদের তিনি চিনতে পারছেন না। কেবল তিনি দেখতে পেলেন এলিস পোর্টহোলে এসে দাঁড়িয়েছে। এবং দরজায় লুকেনার। আর আর কে আছেন, বনি ছোটবাবু তোমরা কোথায়—বনি বনি এবং বুঝতে পারছেন তিনি তাঁর অলৌকিক জলযানে এবার সত্যি আবার বের হয়ে পড়েছেন—কেউ তাঁর কথায় সাড়া দিচ্ছে না। এত কষ্ট এত যাতনা এবং স্থবির শরীর থেকে যেন শেষ বায়ুপ্রবাহ বের হয়ে যাবার আগে, সমস্ত ভূমণ্ডল জুড়ে প্রকম্পন। সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে। উৎক্ষিপ্ত হচ্ছে লাভা। শিলাস্তর ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে গ্রহনক্ষত্রের। আহা ক্রমে সব আবার শিথিল স্থবির হয়ে আসছে—শান্তি, পরম শান্তির বাণী তাঁর কানে বাজছিল—কেউ যেন পাশে দাঁড়িয়ে আছেন—তাঁর হাতে সবুজ লণ্ঠন, লণ্ঠনের আলোয় সেই পরম করুণাময়, আশ্চর্য সুধাপারাবারের খবর পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁর কানে। তিনি বলছেন, ডোনট বি অ্যাফরেড—আই অ্যাম দ্য ফার্স্ট অ্যাণ্ড আই অ্যাম দ্য লাস্ট। আজানু তাঁর সোনালী আলখাল্লায় ঢাকা। মাথায় বড় বড় সোনালী চুল। বড় বড় সব লাল নীল হলুদ অথবা ক্রিমসন কালারের আলোময় সৌরজগতের ভেতর দিয়ে তিনি হেঁটে যাচ্ছেন। এবং বার বার সেই অমোঘ বাণী, সব গ্রহনক্ষত্র থেকে যেন ভেসে আসছে। যত তিনি সেই অলৌকিক জলযানে ভেসে যাচ্ছেন সেই অমোঘ বাণী সব গ্রহনক্ষত্রের ভেতর গীর্জার ঘণ্টার মতো গমগম করে বাজছিল —ডোন্ট বি অ্যাফরেড, আই অ্যাম দ্য ফাস্ট অ্যাণ্ড আই অ্যাম দ্য লাস্ট।

সিউল-ব্যাংক জাহাজ নীল আকাশের নিচে ঘুরে ঘুরে কখনও অন্ধকারে, অথবা সাদা জ্যোৎস্নায় অজানা সমুদ্রে এভাবে ভেসে যাচ্ছিল। তার প্রিয় ক্যাপ্টেন স্যালি হিগিনস ভেতরে শুয়ে আছেন। সাদা চাদরে ওঁর শরীর ঢাকা। পোর্ট-হোলে তেমনি সূর্যের আলো, কখনো সমুদ্রের জল, কখনও সব নক্ষত্রমালার ছবি।

অসীম সমুদ্রে সিউল-ব্যাংক এখন একটা ভাসমান কফিনের মতো। নীল আকাশের নিচে নীল অন্ধকারে সাদা জাহাজটা এখন শুধু একজন ক্যাপ্টেনের কফিন। আর কিছু না। ক্যাপ্টেন স্যালি হিগিনস যেন ভেতরে শুয়ে আছেন। ঘুমিয়ে আছেন। ভেসে যাচ্ছেন তাঁর প্রিয় অলৌকিক জলযানে। যেন বলছেন, গ্লোরি হ্যালেলুজা আই অ্যাম অন মাই ওয়ে।

*****

‘নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে’ সিরিজ–৩য় পর্ব সমাপ্ত

শেষপর্ব – ঈশ্বরের বাগান

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *