সূর্যাস্তের পথ হতে বিকালের রৌদ্র এল নেমে।
বাতাস ঝিমিয়ে গেছে থেমে।
বিচালি-বোঝাই গাড়ি চলে দূর নদিয়ার হাটে
জনশূন্য মাঠে।
পিছে পিছে
দড়ি-বাঁধা বাছুর চলিছে।
রাজবংশীপাড়ার কিনারে
পুকুরের ধারে
বনমালী পন্ডিতের বড়ো ছেলে
সারাক্ষণ বসে আছে ছিপ ফেলে।
মাথার উপর দিয়ে গেল ডেকে
শুকনো নদীর চর থেকে
কাজ্লা বিলের পানে
বুনোহাঁস গুগ্লি-সন্ধানে।
কেটে-নেওয়া ইক্ষুখেত, তারি ধারে ধারে
দুই বন্ধু চলে ধীরে শান্ত পদচারে
বৃষ্টিধোওয়া বনের নিশ্বাসে,
ভিজে ঘাসে ঘাসে।
এসেছে ছুটিতে–
হঠাৎ গাঁয়েতে এসে সাক্ষাৎ দুটিতে,
নববিবাহিত একজনা,
শেষ হতে নাহি চায় ভরা আনন্দের আলোচনা।
আশে-পাশে ভাঁটিফুল ফুটিয়া রয়েছে দলে দলে
বাঁকাচোরা গলির জঙ্গলে,
মৃদুগন্ধে দেয় আনি
চৈত্রের ছড়ানো নেশাখানি।
জারুলের শাখায় অদূরে
কোকিল ভাঙিছে গলা একেঘেয়ে প্রলাপের সুরে।
টেলিগ্রাম এল সেই ক্ষণে
ফিন্ল্যান্ড্ চূর্ণ হল সোভিয়েট বোমার বর্ষণে।