কাশের বনে শূন্য নদীর তীরে আমি তারে জিজ্ঞাসিলাম ডেকে , ‘ একলা পথে কে তুমি যাও ধীরে আঁচল - আড়ে প্রদীপখানি ঢেকে । আমার ঘরে হয় নি আলো জ্বালা , দেউটি তব হেথায় রাখো বালা । ' গোধূলিতে দুটি নয়ন কালো ক্ষণেক - তরে আমার মুখে তুলে সে কহিল , ‘ ভাসিয়ে দেব আলো , দিনের শেষে তাই এসেছি কূলে । ' চেয়ে দেখি দাঁড়িয়ে কাশের বনে , প্রদীপ ভেসে গেল অকারণে । ভরা সাঁঝে আঁধার হয়ে এলে আমি ডেকে জিজ্ঞাসিলাম তারে , ‘ তোমার ঘরে সকল আলো জ্বেলে এ দীপখানি সঁপিতে যাও কারে । আমার ঘরে হয় নি আলো জ্বালা , দেউটি তব হেথায় রাখো বালা । ' আমার মুখে দুটি নয়ন কালো ক্ষণেক - তরে রইল চেয়ে ভুলে । সে কহিল , ‘ আমার এ যে আলো আকাশপ্রদীপ শূন্যে দিব তুলে । ' চেয়ে দেখি শূন্য গগনকোণে প্রদীপখানি জ্বলে অকারণে । অমাবস্যা আঁধার দুই - পহরে জিজ্ঞাসিলাম তাহার কাছে গিয়ে , ‘ ওগো , তুমি চলেছ কার তরে প্রদীপখানি বুকের কাছে নিয়ে । আমার ঘরে হয় নি আলো জ্বালা , দেউটি তব হেথায় রাখো বালা । ' অন্ধকারে দুটি নয়ন কালো ক্ষণেক মোরে দেখলে চেয়ে তবে , সে কহিল , ‘ এনেছি এই আলো , দীপালিতে সাজিয়ে দিতে হবে । ' চেয়ে দেখি লক্ষ দীপের সনে দীপখানি তার জ্বলে অকারণে ।