মাপা হাসি চাপা কান্না – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
মাপা হাসি চাপা কান্না (অখণ্ড)
প্রথম প্রকাশ – ফেব্রুয়ারি ২০১০
ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক পত্রভারতী
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ – চণ্ডী লাহিড়ী
কম্পিউটার-সহায়তা – সুদীপ্ত দত্ত
স্নেহের
পুজা ও শুদ্ধা কে
.
মানুষের বরাতের মতো লেখারও বরাত আছে। অনেক ঘাটের জল খাওয়ার পর তারুণ্যের উৎসাহে উৎসাহী, পরম স্নেহভাজন ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় উদ্ধারের কাজে আমার আর এক প্রিয়জন মানসকে ডুবুরি নামালেন। মোটেই সহজ কাজ ছিল না। অক্লান্ত মানস তার একগুঁয়ে স্বভাবের জন্যে বিখ্যাত। অতীতে অনেক অসাধ্য সাধন করেছে। বর্তমানের এই সংকলনটি অবশ্যই তার চূড়ান্ত কীর্তি হিসাবে পরিগণিত হবে।
জীবনের কতটা পথ পেছনে ফেলে আসা হয়েছে। ‘কান্না হাসির দোল দোলান।’ দু:খ-সুখের শ্বেত শুভ্র কাশ ফুল মাথা দুলিয়ে শরতের মরকত নীল আকাশ দেখিয়ে বলেছে—ওই নির্ভার মেঘের মতো ভেসে যাও। পাহাড় থেকে সাগরে। ফেরালে ফিরবে, না হলে ঢেউ হয়ে যাবে। তটের আছাড়, ফেনার হাসি। ফসফরাসের ক্রোধ, ঝিনুকের সৃষ্টি, শী করের বৃষ্টি। এইসব ভাবতে ভালো লাগে। এক ধরনের বিলাসিতা। সময় নষ্ট। বরং এই গানটিতে আছে জীবনের সার সত্য। ‘লোহার বাঁধনে বেঁধেছে সংসার / দাসক্ষত লিখে নিয়েছে হায়।’
চারপাশে মানুষের যা অবস্থা! নানারকম মৃত্যুর সুনিপুণ আয়োজন। মৃত্যুর নাটমন্দিরে জীবনের ‘ধিতিঙ্গালি’ (অসমিয়া ভাষা। অর্থ—ধেই নাচ)। মানুষকে মানুষ প্যাঁট প্যাঁট করে মারছে। দুরকমের ‘পার্টি’। বড় বড় ক্লাবে ‘করপোরেট প্রাণীদের’ বোতল-চুর কালচার। টেম্পারেচারের যেমন প্লাস মাইনাস আছে, সেইরকম সুন্দরীদের মাইনাস পোশাক। এক কাঁচ্চা কাপড়ে শরীরের যাবতীয় বস্তুকে ‘হাইলাইট’ করা। আকর্ষণীয় ‘অ্যানিম্যাল’। নিলামবালা ছ’আনা যা লেবে, তাই ছ’আনা / ঘুঙরু কি তরা।।
আর একটা পার্টে হল রাজনীতি। ভালো করতে চাই—তাই তো আমি কোপাই। হিউম্যান স্যালাড বানাই। নিয়তি! তবু ‘জিপ ফাস্টনারের হাসি’, ‘গ্লিসারিনের’ কান্না। সময় চলেছে সাপের মতো ব্যাং ধরেছে ব্যাঞ্জ।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
১ জানুয়ারি ২০১০
Leave a Reply