যারা মাপে কম করে, তাদের জন্যে দুর্ভোগ,
Woe to Al-Mutaffifin [those who give less in measure and weight (decrease the rights of others)],
وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ
Waylun lilmutaffifeena
YUSUFALI: Woe to those that deal in fraud,-
PICKTHAL: Woe unto the defrauders:
SHAKIR: Woe to the defrauders,
KHALIFA: Woe to the cheaters.
================
সূরা মুতাফ্ফিফীন বা প্রবঞ্চক -৮৩
৩৬ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরাটি, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সূরার সমসাময়িক।
এই সূরার মাধ্যমে সকল প্রকার প্রতারণাকে নিন্দা করা হয়েছে। বিশেষ ভাবে ধর্মের ব্যাপারে এবং প্রতিদিনের জীবন যাপন প্রণালীতে।
সূরা মুতাফ্ফিফীন বা প্রবঞ্চক -৮৩
৩৬ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। যারা প্রবঞ্চনা করে, তাদের দুর্ভাগ্য।
২। যারা লোকের নিটক থেকে মেপে নেয়ার সময়ে পুর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে,
৩। কিন্তু যখন তারা অন্যকে দেয়, সে প্রাপ্য মাপ ও ওজনে কম দেয়। ৬০১১
৬০১১। মাপে কম দেয়ার অর্থ অন্যকে ঠকানো বা প্রতারণার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার প্রবণতা। মাপে কম দেয়া বাক্যটিকে সঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যবহৃত না হয়ে এর অর্থ ব্যপক ও গভীর ভাবে ব্যবহৃত হবে। কারণ ৩নং আয়াতে ‘মাপ ‘ ও ‘ওজন’ দুটি শব্দ একই সাথে ব্যবহার করা হয়েছে। ওজন হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা যে ভাবে জিনিষকে ওজন করে থাকে বাটখারার সাহায্যে। ‘মাপ’ হচ্ছে যে কোন প্রাপ্য বস্তুর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া। পরবর্তী দুটি আয়াতে মাপে কম দেয়ার প্রকৃত মানসিকতাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই মানসিকতার সাথে অন্যের প্রতি অন্যায় করায় প্রবণতা জড়িত থাকে – আর তা হচ্ছে অন্যকে তার ন্যায্য প্রাপ্য অপেক্ষা কম দেয়া এবং নিজের বেলাতে যা প্রাপ্য তা থেকে বেশী দাবী করা। এরূপ মানসিকতা ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রভূত প্রচলিত যা সচারচর আমাদের দেশে দৃষ্টি গোচর হয়। কিন্তু এই মানসিকতা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রচলিত আছে তবে তার ধরণ হবে আলাদা। যেমন গৃহে,বা সামাজিক অনুষ্ঠানে, বা অফিসে, আদালতে কোন ব্যক্তি বা গ্রুপ বিশেষ সম্মান বা সেবা দাবী করতে পারেন, কিন্তু তার বিনিময়ে তাদের করণীয় কর্তব্য সম্বন্ধে তারা হন অমনোযোগী। এও এক ধরণের প্রতারণা। একটি ছোট উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাপারটিকে এভাবে তুলে ধরা যায়। আমাদের দেশের উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারীরা যারা পদবলে উচ্চ সম্মানের ও সুযোগ সুবিধার দাবীদার। কিন্তু যে পদাধিকার বলে তিনি এ সব ভোগ করেন, তিনি সে পদের জন্য অর্পিত কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্বন্ধে অমনোযোগী। যার ফলে তাঁর কর্তব্য স্থলে ফাইলের পাহাড় গড়ে ওঠে। এটাও ঐ মাপে কম দেয়ার মানসিকতা থেকে উদ্ভুদ পরিস্থিতি। এটা একধরণের বিকৃত স্বার্থপরতা এবং দ্বিগুণ অন্যায়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আধ্যাত্মিক জগতের জন্য এ হচ্ছে এক বিপর্যয়কারী প্রক্রিয়া। যে লোক শুধুমাত্র নিজ স্বার্থের জন্য কাজ করবে, অন্যকে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে সে কিভাবে আল্লাহ্র করুণা ও রহমতের আশা করতে পারে ? ইংরেজীতে এক অতি মূল্যবান উপদেশ আছে, তা হচ্ছে, ” Do as you would be done by” এই সূরাতে আরও বিশদ ভাবে বলা হয়েছে যে, “অন্যেরা তোমার প্রাপ্য পরিশোধ করুক বা না করুক,তোমার নিকট অন্যের যা প্রাপ্য তা পূর্ণভাবে পরিশোধ করবে” সুতারাং এ ব্যাপারে ব্যক্তিগত দায় দায়িত্ব অত্যন্ত বেশী।