2 of 3

066.001

হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।
O Prophet! Why do you ban (for yourself) that which Allâh has made lawful to you, seeking to please your wives? And Allâh is Oft-Forgiving, Most Merciful.

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ تَبْتَغِي مَرْضَاتَ أَزْوَاجِكَ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
Ya ayyuha alnnabiyyu lima tuharrimu ma ahalla Allahu laka tabtaghee mardata azwajika waAllahu ghafoorun raheemun

YUSUFALI: O Prophet! Why holdest thou to be forbidden that which Allah has made lawful to thee? Thou seekest to please thy consorts. But Allah is Oft-Forgiving, Most Merciful.
PICKTHAL: O Prophet! Why bannest thou that which Allah hath made lawful for thee, seeking to please thy wives? And Allah is Forgiving, Merciful.
SHAKIR: O Prophet! why do you forbid (yourself) that which Allah has made lawful for you; you seek to please your wives; and Allah is Forgiving, Merciful.
KHALIFA: O you prophet, why do you prohibit what GOD has made lawful for you, just to please your wives? GOD is Forgiver, Merciful.

=================
সূরা তাহারীম বা নিষিদ্ধ করা – ৬৬
১২ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা : সূরা নং ৫৭ থেকে আরম্ভ করে যে দশটি সূরার শ্রেণী মদিনাতে অবতীর্ণ হয়েছিলো, বর্তমান সূরাটি হচ্ছে শ্রেণীটির সর্বশেষ সূরা। দেখুন ৫৭ নং সূরার ভূমিকা। এই সূরার বিষয়বস্তু হচ্ছে বিপরীত লিঙ্গের বিরুদ্ধাচারণ করা বা বিপরীত লিঙ্গের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের অনিষ্ট ঘটতে পারে।

সূরাটির অবতীর্ণ কাল সম্বন্ধে বলা হয় যে তা হচ্ছে ৭ম হিজরীর যে কোন সময়ে।

সার সংক্ষেপ : নারীর প্রতি দুর্বলতার কারণে পুরুষ তার সামাজিক জীবনের কর্ম থেকে বিচ্যুত হবে না। পারস্পরিক বিশ্বাস ও সমন্বিত জীবন যাপনের উপরে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পূণ্যাত্মাদের উপরে আল্লাহ্‌র আর্শীবাদ বর্ষিত হয় মন্দের পরিকল্পনা সত্বেও। [ ৬৬ : ১ – ১২ ]।

সূরা তাহারীম বা নিষিদ্ধ করা – ৬৬
১২ আয়াত, ২ রুকু, মাদানী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। হে নবী ! আল্লাহ্‌ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন, তুমি তা নিষিদ্ধ করছো কেন ৫৫২৯ ? তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি কামনা কর ৫৫৩০। কিন্তু আল্লাহ্‌ বারে বারে ক্ষমাশীল, পরম করুণাময়।

৫৫২৯। হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ্‌ (সা) প্রত্যহ নিয়মিত ভাবে আসরের পরে সকল বিবির কুশল জিজ্ঞাসার জন্য গমন করতেন। একদিন হযরত যয়নব (রা ) এর কাছে একটু বেশী সময় অতিবাহিত করলেন ও মধু পান করলেন। এতে হযরত আয়েশার মনে ঈর্ষার সৃষ্টি হলো এবং হযরত হাফসার (রা) সাথে পরামর্শ করে স্থির করলেন যে, হযরত যার কাছেই যাবেন তারা সকলেই একবাক্যে বলবেন যে, হযরত দুর্গন্ধযুক্ত কিছু পান করেছেন। রাসুল (সা) যখন বলবেন যে তিনি মধু পান করেছেন, তখন সেই বিবি বললেন যে হয়তো মৌমাছি দুর্গন্ধযুক্ত ফুলের মধু আহরণ করেছিলো। সে মতে রাসুলুল্লাহ্‌ (সা) একটি হালাল বস্তু অর্থাৎ মধুকে কসমের মাধ্যমে নিজের জন্য হারাম করে নিয়েছিলেন। যয়নব মনঃক্ষুণ হবেন চিন্তা করে হযরত বিষয়টি প্রকাশ না করার জন্যও বলে দিলেন। আয়াতটি নাজেল হওয়ার শানে নজুল হচ্ছে উপরে বর্ণিত ঘটনা।

রাসুলের (সা) পরিবার আর দশজন সাধারণ মানুষর পরিবারের মত নয়। রাসুলের (সা) স্ত্রীগণ হচ্ছেন পবিত্রতার প্রতীক। তাঁরা হবেন সাধারণ মহিলাদের তুলনায় মিতবাক ও সংযত। কারণ তাঁরা হচ্ছেন মুসলিম বিশ্বের মাতা স্বরূপ ; তারা হচ্ছেন সর্বকালের সর্বযুগের মুসলিম মহিলাদের আদর্শস্বরূপ। দেখুন [ ৩৩ : ২৮ ] আয়াতের টিকা নং ৩৭০০। হাজার হোক তারাও ছিলেন সাধারণ মানুষ। তাই সাধারণ নারীদের ন্যায় তাদের মনেও ঈর্ষার জন্ম নেয়, এবং তাঁরা তাদের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব সম্বন্ধে বিস্মৃত হন। হযরত আয়েশার অবিচক্ষণতা আরেকবার হযরতের মনে দুঃখ দান করেছিলো [ দেখুন ২৪ : ১১ আয়াত ও টিকা ২৯৬২ ] এবং হযরতের জীবনে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিলো। যার ফলে হযরত কিছু দিনের জন্য সকল স্ত্রীদের সঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন। হযরত আবু বকরের কন্যা ছিলেন হযরত আয়েশা এবং হাফসা ছিলেন হযরত ওমরের কন্যা। আবু বকর ও ওমর উভয়েই ছিলেন হযরতের একান্ত প্রিয় সহচর। তাদের কন্যা হয়েও তারা সাধারণ নারীর ন্যায় অন্যায় আচরণ করেছিলেন এবং পরস্পরের মধ্যে গোপনীয় কথা যা বলতে হযরত নিষেধ করেছিলেন তা প্রকাশ করেছিলেন। ফলে হযরতের অন্তর দুঃখে পরিপূর্ণ হয়ে পড়লো কারণ হযরত (সা) ছিলেন পরিবারের জন্য প্রেম ও ভালোবাসার আদর্শ প্রতীক স্বরূপ।

হযরত যে মধু পান করবেন না বলে শপথ করেন তারই প্রেক্ষিতে আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।

৫৫৩০। দেখুন আয়াত [ ৩৩ : ২৮- ৩৪ ]। যেখানে রাসুলের (সা) স্ত্রীগণকে আল্লাহ্‌ মৃদু ভৎর্সনা করেছেন। যদি রাসুল অন্যান্য সাধারণ স্বামীর ন্যায় হতেন তবে তিনি পারিবারিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবনের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানে সক্ষম হতেন না। কিন্তু তিনি সাধারণ স্বামী ছিলেন না। হালাল খাদ্য গ্রহণ না করার কসম রাসুলুল্লাহ্‌র (সা) জন্য শোভন নয়। এতে তাঁর উম্মতের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী প্রজন্ম মধুকে হারাম মনে করতে পারে। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তাঁকে কসম ভঙ্গ করতে আদেশ দান করেছেন।