আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই ব্যাপক ক্ষমতাশালী।
With power did We construct the heaven. Verily, We are Able to extend the vastness of space thereof.
وَالسَّمَاء بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
Waalssamaa banaynaha bi-aydin wa-inna lamoosiAAoona
YUSUFALI: With power and skill did We construct the Firmament: for it is We Who create the vastness of pace.
PICKTHAL: We have built the heaven with might, and We it is Who make the vast extent (thereof).
SHAKIR: And the heaven, We raised it high with power, and most surely We are the makers of things ample.
KHALIFA: We constructed the sky with our hands, and we will continue to expand it.
রুকু – ৩
৪৭। নভোমন্ডলকে আমি সৃষ্টি করেছি আমার ক্ষমতা ও দক্ষতাবলে ৫০২৫। নিঃসীম মহাশূন্যকে আমিই সৃষ্টি করেছি।
৪৮। [ বিস্তৃত ] পৃথিবীকে আমি বিছিয়ে দিয়েছি। কি সুন্দরভাবে আমি তা বিছাই !
৪৯। আর প্রতিটি বস্তুকে আমি সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায় ৫০২৬ ; যেনো তোমরা উপদেশ গ্রহণ করতে পার।
৫০২৫। আলোচ্য আয়াত সমূহে আল্লাহ্র শক্তিসমূহ বর্ণিত হয়েছে। যদি কেউ আল্লাহ্র শক্তিতে অবিশ্বাস করে এবং বলে যে, যে সব জাতির উদাহরণ দেয়া হয়েছে সে সব তো অতীতের ইতিহাস। তাদের আহ্বান করা হয়েছে দৃষ্টি ফেরানোর জন্য মহাবিশ্বের দিকে এবং আল্লাহ্র শক্তিকে উপলব্ধি করার জন্য।
১) প্রথমেই বলা হয়েছে অনন্ত মহাশূন্যের বা সীমাহীন আকাশের কথা। অনন্ত আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র, সতত সম্প্রসারণশীল আল্লাহ্র ক্ষমতায়, যা শুধুমাত্র বর্তমান জোর্তিবিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে। এই সত্যকে হৃদয়ে অনুভব করা সত্যিই অসাধারণ। এই বিশাল জগৎ, নক্ষত্র পুঞ্জ, উল্কা, নীহারিকা, ছায়াপথ কোটি কোটি দৃশ্য-অদৃশ্য নক্ষত্র জগৎ নিয়ে এই অনন্ত বিশ্ব – ক্ষুদ্র পৃথিবী এরই একজন অধিবাসী। ঐ গ্রহ,উল্কা, ধূমকেতু – ঐ নিঃসীম নাক্ষত্রিক বিরাট শূন্যের যিনি স্রষ্টা – ক্ষুদ্র মানুষ ঐ বিশাল নক্ষত্র জগত থেকে স্রষ্টার বিরাটত্ব অনুভবে সক্ষম হয় নিজের ক্ষুদ্রতা ও অসহায়ত্ব অনুভবের মাধ্যমে।
২) দ্বিতীয়ত : সূদূর মহাবিশ্ব থেকে দৃষ্টিকে মাটির পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে পরের আয়াতে। সমুদ্রের কি বিশাল অগাধ সুনীল জলরাশি এবং বিস্তৃত মহাদেশ যা সবুজ শ্যামলিমাতে যেনো কার্পেটের মত বিস্তৃত।
৩) পৃথিবীর প্রতিটি জীবন জোড়ায় জোড়ায় অবস্থান করে। উদ্ভিদ জগত, প্রাণী জগত, সকল জীবিত প্রাণই পুরুষ ও স্ত্রীরূপে বিরাজমান। সৃষ্টিকে অনাদিকাল থেকে ধরে রাখার স্রষ্টার এ এক অপূর্ব কৌশল।
এক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ, উদ্ভিদ বা প্রাণী বা মানুষ এরা পরস্পর পরস্পরের সম্পূরক কেউ বড় নয় কেউ ছোট নয়। শুধু যে জীবন্ত জিনিষই জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে তাই নয় জড় বস্তুকেও জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে। যেমন : দিন ও রাত্রি, ধ্বনাত্মক ও ঋনাত্মক বিদ্যুৎ, আকর্ষণ ও বিকর্ষণ শক্তি, এরূপ বহু শক্তি আছে যাদের আল্লাহ্ জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। এ ভাবেই প্রত্যেকে আল্লাহ্র উদ্দেশ্যকে পরিপূর্ণতা দান করে থাকে এবং বিশ্ব-ভূমন্ডলে আল্লাহ্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ভাবেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে আধ্যাত্মিক জগতের প্রতি যেখানে ভালোবাসা – ঘৃণা, অনুগ্রহ, ন্যায় বিচার, উদ্যম, বিশ্রাম প্রতিটি আত্মিক গুণাবলী জোড়ায় জোড়ায় বিরাজ করে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের স্ব স্ব কার্য দ্বারা আল্লাহ্র শৈল্পিক কর্মকে বিশ্বের মাঝে পরিষ্ফুট করে তোলে। আল্লাহ্র পরিকল্পনাকে নির্দ্দিষ্ট উদ্দেশ্যের প্রতি পরিচালিত করে। পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু, মনের প্রতিটি অনুভূতি জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করা হয়েছে। যারা একে অপরের সম্পূরক বা প্রতিরূপ বা জোড়া। দুয়ের মিলনের ফলেই পৃথিবীতে সৃষ্টি রক্ষা পায় ও সভ্যতার অগ্রগতি ঘটে, বস্তুজগতে ভারসাম্য রক্ষা পায় ও আত্মিক বিকাশ লাভ ঘটে। একমাত্র আল্লাহ্-ই এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনও অংশীদার নাই। আল্লাহ্র সৃষ্টির এই অভূতপূর্ব কৌশল সম্বন্ধে কেউ যদি ক্ষণিকের তরেও আত্মমগ্নভাবে চিন্তা করে তবে সে অনুভবে সমর্থ হবে আল্লাহ্র জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বিশালত্ব ও শিল্প কৌশল। তবেই শুধুমাত্র আল্লাহ্র প্রত্যাদেশ ও সৃষ্টির প্রকৃত উদ্দেশ্যকে সামান্য পরিমাণ হলেও অনুধাবন করা সম্ভব।
৫০২৬। দেখুন উপরের টিকা (৩) নম্বর অনুচ্ছেদ। আরও দেখুন [ ৩৬: ৩৬ ] আয়াত ও টিকা ৩৯৮১।