পার্থিব জীবন তো কেবল খেলাধুলা, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও এবং সংযম অবলম্বন কর, আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিদান দেবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চাইবেন না।
The life of this world is but play and pastime, but if you believe (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism), and fear Allâh, and avoid evil, He will grant you your wages, and will not ask you your wealth.
إِنَّمَا الحَيَاةُ الدُّنْيَا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَإِن تُؤْمِنُوا وَتَتَّقُوا يُؤْتِكُمْ أُجُورَكُمْ وَلَا يَسْأَلْكُمْ أَمْوَالَكُمْ
Innama alhayatu alddunya laAAibun walahwun wa-in tu/minoo watattaqoo yu/tikum ojoorakum wala yas-alkum amwalakum
YUSUFALI: The life of this world is but play and amusement: and if ye believe and guard against Evil, He will grant you your recompense, and will not ask you (to give up) your possessions.
PICKTHAL: The life of the world is but a sport and a pastime. And if ye believe and ward off (evil). He will give you your wages, and will not ask of you your wordly wealth.
SHAKIR: The life of this world is only idle sport and play, and if you believe and guard (against evil) He will give you your rewards, and will not ask of you your possessions.
KHALIFA: This worldly life is no more than play and vanity. But if you believe and lead a righteous life, He will reward you, without asking you for any money.
৩৬। এই পার্থিব জীবন তো কেবল ক্রীড়া কৌতুক ৪৮৬০ এবং যদি তোমরা ঈমান আন, এবং পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা কর, আল্লাহ্ তোমাদের পুরষ্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ চান না ৪৮৬১।
৪৮৬০। দেখুন [ ৬ : ৩২ ] ও টিকা ৮৫৫ ; এবং [ ২৯ : ৬৪ ] ও টিকা ৩৪৯৭। পৃথিবীর কর্মব্যস্ত জীবনে খেলাধূলার স্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তা ব্যক্তিকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সংসার সংগ্রামের উপযুক্ত ব্যক্তিরূপে গড়ে তোলে। সে ভাবে জীবনের ক্ষেত্রে খেলাধূলার উপযুক্ত মূল্যমান বর্তমান। কিন্তু কর্মক্ষেত্র পরিত্যাগ পূর্বক কেউ যদি শুধুমাত্র খেলাধূলাতে জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করে তবে তা ব্যক্তির জীবনকে বিপর্যস্ত ও দুঃখময় করতে বাধ্য। ঠিক সেরূপ হচ্ছে আমাদের পার্থিব জীবন ও পারলৌকিক জীবন। পার্থিব জীবনের চাওয়া-পাওয়া, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, সাফল্য-ব্যর্থতা সবই খেলাধূলার ন্যায়। এ সব আমাদের ব্যক্তিসত্ত্বা ও আত্মিক উন্নতির মাধ্যম মাত্র। পার্থিব জীবনের মাধ্যমেই আমরা পারলৌকিক জীবনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকি। কিন্তু আমরা যদি পারলৌকিক জীবনকে গুরুত্বের মধ্যে না এনে সকল মনোযোগ শুধুমাত্র ইহলৌকিক আয়-উন্নতি ও সুখের পিছনে ব্যয় করি তবে জীবনের শেষ যোগফলে আমরা সফলতা লাভ করবো না। একথা স্মরণ রাখতে হবে যে ইহকাল হচ্ছে পরলোকের সুখ ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্র বিশেষ।
৪৮৬১। তারাই আল্লাহ্র পুরষ্কার লাভের যোগ্যতা অর্জন করে যারা আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে। ঈমান আনার অর্থ শুধুমাত্র মুখে কলেমার উচ্চারণ নয়। এর অর্থ অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আল্লাহ্র প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করা এবং বিশ্বাসকে কার্যে পরিণত করা। কার্যে পরিণত করার অর্থ হচ্ছে তাকওয়া অবলম্বন করা অর্থাৎ আল্লাহ্ যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ্ যে সব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তাই-ই হচ্ছে পাপ। পাপ থেকে বিরত থাকার নামই হচ্ছে তাকওয়া অবলম্বন করা। আল্লাহ্ মানুষের নিকট তার ধনসম্পদের প্রার্থী নন, তিনি মানুষের নিকট আত্মোৎসর্গ কামনা করেন। এই-ই হচ্ছে ঈমান ও তাকওয়া অর্জনের পথ। স্ব-ইচ্ছায় আল্লাহ্র ইচ্ছার নিকট আত্মসমর্পন অতি মহৎ কাজ। কারণ এর অর্থ হচ্ছে ব্যক্তির আত্ম নিবেদন সম্পূর্ণরূপে শুধুমাত্র সেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্র উদ্দেশ্যে নিবেদিত। এরূপ আত্মিক নিবেদন আইন করে, নিয়ম করে করা সম্ভব নয়। আবার কোনও মহৎ উদ্দেশ্য ব্যতীত আত্মোৎসর্গ বা জীবন দান করাও কোনও পূণ্যের কাজ নয়। যখন কেউ মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতি লক্ষ্য করে পরিশ্রম ও চেষ্টা করে এবং প্রয়োজনে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতেও দ্বিধা বোধ করে না, তখনই তা পূণ্যের কাজ হয়ে দাঁড়ায়। এরূপ ক্ষেত্রে ব্যক্তি তার মেধা, মননশক্তি,অর্থ, সম্পদ সব কিছু মহৎ উদ্দেশ্যে বা আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করতে প্রস্তুত থাকে। যদি আইন করে আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করতে বাধ্য করা হয় তবে মানুষের স্বাভাবিক প্রবণতা হচ্ছে ধন সম্পদচ্যুত অবস্থায় গরীব হয়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষ মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। সেখানে আল্লাহ্র প্রতি যে আত্ম নিবেদনের স্পৃহা, মহৎ উদ্দেশ্যের প্রতি যে নিবিষ্ট আত্মোৎসর্গ তা অনুপস্থিত হয়ে পড়ে। ফলে সম্পূর্ণ ব্যাপারটি শুধুমাত্র শুষ্ক আনুষ্ঠানিকতাতে পরিণত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ব্যাপারটি তিক্ততা ও বিদ্রোহে পরিসমাপ্তি লাভ করে। যেরূপ দেখা যায় বহু দেশ ইসলামের নামে মানুষের উপরে অত্যাচার ও নির্যতন করে থাকে।