1 of 3

033.009

হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যখন শত্রুবাহিনী তোমাদের নিকটবর্তী হয়েছিল, অতঃপর আমি তাদের বিরুদ্ধে ঝঞ্চাবায়ু এবং এমন সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলাম, যাদেরকে তোমরা দেখতে না। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা দেখেন।
O you who believe! Remember Allâh’s Favour to you, when there came against you hosts, and We sent against them a wind and forces that you saw not [i.e. troops of angels during the battle of Al­Ahzâb (the Confederates)]. And Allâh is Ever All­Seer of what you do.

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ إِذْ جَاءتْكُمْ جُنُودٌ فَأَرْسَلْنَا عَلَيْهِمْ رِيحًا وَجُنُودًا لَّمْ تَرَوْهَا وَكَانَ اللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرًا
Ya ayyuha allatheena amanoo othkuroo niAAmata Allahi AAalaykum ith jaatkum junoodun faarsalna AAalayhim reehan wajunoodan lam tarawha wakana Allahu bima taAAmaloona baseeran

YUSUFALI: O ye who believe! Remember the Grace of Allah, (bestowed) on you, when there came down on you hosts (to overwhelm you): But We sent against them a hurricane and forces that ye saw not: but Allah sees (clearly) all that ye do.
PICKTHAL: O ye who believe! Remember Allah’s favour unto you when there came against you hosts, and We sent against them a great wind and hosts ye could not see. And Allah is ever Seer of what ye do.
SHAKIR: O you who believe! call to mind the favor of Allah to you when there came down upon you hosts, so We sent against them a strong wind and hosts, that you saw not, and Allah is Seeing what you do.
KHALIFA: O you who believe, remember GOD’s blessing upon you; when soldiers attacked you, we sent upon them violent wind and invisible soldiers. GOD is Seer of everything you do.

রুকু – ২

০৯। হে মুমিনগণ স্মরণ কর আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ যা তোমাদের তিনি [দান ] করেছিলেন, যখন [ দলে দলে] সৈন্যদল তোমাদের [ আক্রমণ] করেছিলো ৩৬৭৯। কিন্তু আমি তাদের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলাম প্রবল ঘূর্ণিবার্তা এবং এক বাহিনী যা তোমরা দেখ নাই ৩৬৮০। কিন্তু তারা যা করে আল্লাহ্‌ তা [ পরিষ্কার ] দেখেন ৩৬৮১।

৩৬৭৯। এই আয়াতের মাধ্যমে পঞ্চম হিজরীতে মদিনা অবরোধের সংগ্রামের শুরু এবং শেষ কে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দুষ্কর্মে সহযোগীদের মৈত্রীবদ্ধ সংঘ একযোগে ইসলামকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়, যার কথা ভূমিকাতে বলা হয়েছে। তাঁদের সৈন্যসংখ্যা ছিলো দশ থেকে বার হাজারের মত। এরূপ বিশাল সেনা বাহিনী সে যুগের জন্য ছিলো নজিরবিহীন ঘটনা। এই যুদ্ধ পরিখার যুদ্ধ নামে খ্যাত।

৩৬৮০। পরিখার যুদ্ধের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ বিশ্ববাসীর নিকট তাঁর শক্তিকে উন্মোচন করেছেন। যারা সত্যের জন্য সংগ্রামী এবং আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভরশীল, আল্লাহ্‌ তাঁদের প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে থাকেন। ঘটনাটি ছিলো এরূপ : বিরোধী দলের মৈত্রীরা যারা মদিনা অবরোধ করতে এসেছিলো তাঁরা ২ -৪ সপ্তাহ মদিনা অবরোধ করে রাখে। যারা সহজ বিজয়ের আশায় এসেছিলো এরূপ অকৃতকার্যতায় তারা হতাশ হয়ে পড়লো। সময়টা ছিলো ফেব্রুয়ারী মাস। মদিনাতে ফেব্রুয়ারী মাসে হাঁড় কাপানো শীতের আগমন ঘটে থাকে, কারণ মদিনা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ ফিট উচ্চে অবস্থিত।

একে তো যুদ্ধে জয়ী না হওয়ার জন্য হতাশা , তদুপরি হাঁড় কাপানো ঠান্ডা এর উপরে শুরু হলো প্রচন্ড ঝড়। বাতাসের বেগে তাদের তাবু ছিড়ে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় , আগুন নিভে যায় এবং বৃষ্টির ঠান্ডা ফোঁটা এবং বালি প্রচন্ড বেগে তাদের চোখে মুখে সূচের মত বিধঁতে থাকে। এসবই তাদের কাছে অশুভ লক্ষণ বলে প্রতিভাত হতে থাকে, তারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে প্রকৃতির এই বৈরিতায়। ফলে তারা মানসিক দিক থেকে ভেঙ্গে পড়ে এবং রণে ভঙ্গ দিয়ে প্রস্থান করে। অপর পক্ষে মদিনাবাসীদের সৈন্যসংখ্যা ছিলো মাত্র ৩০০০ এর মত। তার উপরে ইহুদীদের বানু কুরাইজা গোত্র মদিনার অভ্যন্তরে থেকে ক্রমাগত মূসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে এবং মদিনার মোনাফেকেরা তাদের সাথে যুক্ত হয়। দেখুন টিকা ৩৬৬৬। এ সব হচ্ছে মুসমানদের মদিনার অভ্যন্তরের বিরুদ্ধ শক্তি। কিন্তু মুসলমানদের জন্য অদৃশ্য শক্তি কাজ করে – আর তা হচ্ছে আল্লাহ্‌র সাহায্য। আল্লাহ্‌র হুকুমে প্রকৃতি তাদের হয়ে কাজ করে এবং ফেরেশতারা অদৃশ্যভাবে মুসলমানদের হয়ে কোরেশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

উপদেশ : সত্যের জন্য সংগ্রামে আল্লাহ্‌র সাহায্য অবধারিত। যারা ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করে তারা কখনও একা নয়। স্বয়ং আল্লাহ্‌ তাদের রক্ষাকর্তা।

৩৬৮১। আল্লাহ্‌ সকল কিছুই দেখেন ও জানেন তিনি সম্যক দ্রষ্টা। মূসলমানদের নৈতিক মনোবল, বিপদের মাঝেও ঠান্ডা মাথায় শৃঙ্খলা রক্ষা করা , অপরপক্ষে শত্রু পক্ষের নিজেদের মাঝে বিশ্বাসহীনতা, দুর্বল মনোবল, ষড়যন্ত্র, এবং স্বর্গীয় শক্তি ব্যতীত শুধুমাত্র পশুশক্তির প্রয়োগ, এ সব কিছুই হচ্ছে আল্লাহ্‌র অদৃশ্য শক্তির প্রয়োগ যা যুদ্ধের গতিকে ফিরিয়ে দেয়। এ সব ঘটনাতে বহু ধরণের অদৃশ্য শক্তি কাজ করে এবং যুদ্ধ জয়ে সাহায্য করে থাকে। কোনও পক্ষই তা সঠিকভাবে উপলব্ধি করত সক্ষম হয় না।

উপদেশ : আমাদের উপলব্ধির জগতের বাইরেও আল্লাহ্‌র শক্তি কার্যকর। সুতারাং সাফল্যে কখনও অহংকারে স্ফীত হওয়া উচিত নয়, বরং কৃতজ্ঞ অন্তরে আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা প্রয়োজন। কারণ তাঁরই অদৃশ্য সাহায্য সকল সাফল্যের মূল।