1 of 3

030.021

আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংগিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
And among His Signs is this, that He created for you wives from among yourselves, that you may find repose in them, and He has put between you affection and mercy. Verily, in that are indeed signs for a people who reflect.

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ
Wamin ayatihi an khalaqa lakum min anfusikum azwajan litaskunoo ilayha wajaAAala baynakum mawaddatan warahmatan inna fee thalika laayatin liqawmin yatafakkaroona

YUSUFALI: And among His Signs is this, that He created for you mates from among yourselves, that ye may dwell in tranquillity with them, and He has put love and mercy between your (hearts): verily in that are Signs for those who reflect.
PICKTHAL: And of His signs is this: He created for you helpmeets from yourselves that ye might find rest in them, and He ordained between you love and mercy. Lo! herein indeed are portents for folk who reflect.
SHAKIR: And one of His signs is that He created mates for you from yourselves that you may find rest in them, and He put between you love and compassion; most surely there are signs in this for a people who reflect.
KHALIFA: Among His proofs is that He created for you spouses from among yourselves, in order to have tranquility and contentment with each other, and He placed in your hearts love and care towards your spouses. In this, there are sufficient proofs for people who think.

২১। তাঁর অন্যতম নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের জন্য সাথী সৃষ্টি করেছেন ৩৫২৫, যেনো তোমরা তাদের সাথে পরস্পর শান্তিতে বসবাস করতে পার ৩৫২৬। এবং তিনি তোমাদের [ হৃদয়ের] মাঝে ভালোবাসার [বন্ধন ] দিয়েছেন। যারা চিন্তাশীল অবশ্যই এ সবের মাঝে তাদের জন্য বহু নিদর্শন রয়েছে।

৩৫২৫। এই আয়াত নির্দ্দেশ করে নারী ও পুরুষের যৌন আকর্ষণের রহস্যের প্রতি। এই আকর্ষণ থেকেই জন্ম নেয় নারী ও পুরুষের মধ্যে পরস্পরের জন্য ভালোবাসা, ফলে সংসার যাত্রা নির্বাহের তীব্র আকর্ষণ যা পৃথিবীর অন্যান্য কোনও প্রাণীর মাঝেই নাই। নারী ও পুরুষের মিলনের ফলেই সন্তানের জন্ম হয়। মানব শিশু পৃথিবীতে অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে, যার পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে কমপক্ষে বিশ বৎসরের প্রয়োজন হয়। একটি শিশুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশের জন্য জন্মের পরবর্তী বিশ বৎসর পর্যন্ত প্রয়োজন হয় খাদ্য, পানীয় , স্নেহ-ভালোবাসা, নিরাপত্তা। পিতা -মাতা উভয়েই এই দীর্ঘ সময়ে তাদের সে প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। নারী ও পুরুষের মিলিত সংসার যাত্রা হচ্ছে সন্তান প্রতিপালন , তাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা ইত্যাদির ভিত্তি। একটি সংসার, সমাজ জীবনের একক স্বরূপ। মানব সমাজ ও সভ্যতার মূল ভিত্তি হচ্ছে নারী ও পুরুষের মিলিত সংসার জীবন, যেখানে থাকে প্রেম-প্রীতি , স্নেহ-ভালোবাসা। আবার নারী ও পুরুষের মিলিত জীবনের মূল ভিত্তি হচ্ছে পরস্পরের প্রতি যৌন আকর্ষণ। সুতারাং চিন্তা করে দেখলে অনুধাবন করা যায় সৃষ্টিকে রক্ষা করা এবং একে ভবিষ্যতের পানে গতিশীল করতে স্রষ্টার কি অপূর্ব কলা কৌশল ও রহস্য।

৩৫২৬। দেখুন [ ৭ : ১৮৯ ]। মানুষের মাঝে এই যৌন আকর্ষণ স্রষ্টা সৃষ্টি করে দিয়েছেন যেনো পৃথিবীতে তারা সুখ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে। যে সংসারে স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে প্রেম ও প্রীতির সম্পর্ক বিরাজ করে সেই সংসারই প্রকৃত শান্তির নীড় , সেখানেই সন্তান লাভ করে স্নেহময় মাতা ও পিতা, স্ত্রী লাভ করে প্রেমময় স্বামী, আবার স্বামী লাভ করে অনুগত ও যত্নশীল স্ত্রী। কি মধুর এই সংসারের চিত্র। পুরুষের নারীর নিকট পৌরুষ প্রদর্শন এক স্বাভাবিক ধর্ম। যার ফলে নারী পুরুষের ভালোবাসার মধ্যে থাকে পুরুষের নারীর জন্য ভালোবাসা যা হয় সহানুভূতি পূর্ণ এবং দরদী মনোভাবে সিক্ত। কারণ নারী পুরুষের তুলনায় শারীরিকভাবে দুর্বল আবার সেই সাথে অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও আবেগপূর্ণ। সুতারাং যে সবল তার দায়িত্ব ও কর্তব্য এই আবেগ ও অনুভূতিকে দরদী মন দিয়ে রক্ষা করা – এখানেই পুরুষের পৌরুষ প্রকাশ পায়। স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনের; মাধ্যমে নয়। যা আমাদের দেশে প্রকাশ হয়।

সংসার জীবনে নারী পুরুষের সম্পর্ক সমতার ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। নারী ও পুরুষের সম্পর্কের ব্যাপারে কোরাণের ভাষ্য , ” যেনো তোমরা তাদের সাথে পরস্পর শান্তিতে বসবাস করতে পার”। এখানে লক্ষণীয় “পরস্পর ” শব্দটি স্বামী স্ত্রীর প্রভু নয়। স্বামী ও স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের বন্ধু, সহযোগী ও সহকর্মী। কেউ কারও প্রভুও নয় বা অধিকারভুক্ত নয়। আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে পুরুষ ও নারীর দাম্পত্য জীবনের লক্ষ্য মনের শান্তি। এটা তখনই সম্ভব, যখন উভয় পক্ষ একে অপরের অধিকার সম্পর্কে সজাগ হয় এবং তা আদায় করে নেয়। নতুবা প্রভু -ভৃত্যের সম্পর্কের মাঝে প্রেম-প্রীতিপূর্ণ বন্ধুত্ব স্থান পেতে পারে না। সুতারাং সে সব সংসারে পরিপূর্ণ শান্তি বা শৃঙ্খলাও সম্ভব নয়। স্বামী-স্ত্রীর মিলিত সংসার জীবনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র অনুধাবনের জন্য আল্লাহ্‌ আমাদের এই আয়াতের শেষে বলেছেন, ” চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য ইহাতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে।” বৈবাহিক সম্পর্ককে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার জন্য শুধু নিদর্শন না বলে, “বহু নিদর্শন ” বলা হয়েছে, এই সম্পর্কের বিভিন্ন দিক ও তা থেকে অর্জিত পার্থিব ও ধর্মীয় উপকারিতার প্রতি লক্ষ্য করে।