এবং পঞ্চমবার বলবে যে, যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহর লানত।
And the fifth (testimony) (should be) the invoking of the Curse of Allâh on him if he be of those who tell a lie (against her).
وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِن كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ وَيَدْرَأُ
Waalkhamisatu anna laAAnata Allahi AAalayhi in kana mina alkathibeena
YUSUFALI: And the fifth (oath) (should be) that they solemnly invoke the curse of Allah on themselves if they tell a lie.
PICKTHAL: And yet a fifth, invoking the curse of Allah on him if he is of those who lie.
SHAKIR: And the fifth (time) that the curse of Allah be on him if he is one of the liars.
KHALIFA: The fifth oath shall be to incur GOD’s condemnation upon him, if he was lying.
০৬। এবং যারা তাদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে অপবাদ আরোপ করে, কিন্তু নিজেরা ব্যতীত এ ব্যাপারে তাদের কোন সাক্ষী নাই ২৯৬০, তাদের নিভৃত সাক্ষ্য [ গ্রহণ করা হবে ] , যদি তারা চার বার আল্লাহ্র নামে [ শপথ গ্রহণ করে ] বলে যে তারা অবশ্যই সত্য বলছে।
০৭। এবং পঞ্চম বারের [ শপথ ] হবে যে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপরে আল্লাহ্র লা’নত নেমে আসবে।
২৯৬০। এই আয়াতে [ ২৪ : ৬ ] বৈবাহিক জীবনে ব্যভিচারের পরিণাম সম্বন্ধে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিবাহিত ব্যক্তির দাম্পত্য জীবন, জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্র থেকে আলাদা। যদি স্বামী বা স্ত্রী যে কেহ ব্যভিচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, তবে এক পক্ষকে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কারণ বিবাহ বন্ধন এমন এক নিভৃত এবং দৃঢ় বন্ধন যে শত মত পার্থক্য থাকা সত্বেও মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী অন্য পক্ষকে কলঙ্কিত করার ক্ষমতা রাখে, কারণ মানুষ তা বিশ্বাস করে। মনে করুণ স্বামী স্ত্রীকে ব্যভিচারের সময় পর পুরুষের সাথে হাতে নাতে ধরে ফেললেন। স্বামী যতক্ষণে চারজন সাক্ষীকে ডেকে আনতে যাবেন, ততক্ষণ কি অপরাধীরা সেখানে অবস্থান করবেন? সেক্ষেত্রে বাইরের চারজন সাক্ষী অসম্ভব ব্যাপার। এরূপ ক্ষেত্রে পরবর্তীতে তাদের পূর্বের দাম্পত্য জীবন যাপন অসম্ভব ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে দু পক্ষেরই সামাজিক সম্মানের প্রশ্ন জড়িত হয়ে পড়ে। সমাজের চক্ষে অপরাধী ও নির্যাতিত উভয়েরই সমভাবে সম্মান হানি ঘটে থাকে। যেহেতু এ ক্ষেত্রে অপরাধ প্রমাণ করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার , সে জন্য এ ক্ষেত্রে শাস্তিটি একটু ভিন্ন মাত্রার হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যাপারটির ফয়সালার দায়িত্ব স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের মর্যদার উপরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। স্বামী চারবার শপথ করবে যে , তার অভিযোগ সত্য এবং পঞ্চম বার সে আল্লাহ্র শাস্তিকে আহ্বান করে। শপথ করবে এই বলে যে তার স্ত্রীর প্রতি আরোপিত অভিযোগ মিথ্যা হলে আল্লাহ্র শাস্তি তার উপরে পতিত হবে। ঠিক সমভাবে স্ত্রীকেও ব্যভিচারের অভিযোগের সত্যতার বিপক্ষে চার বার শপথ করতে হবে এবং পঞ্চম বারে আল্লাহ্র শাস্তিকে আহ্বান করবে। যদি সে তা না করে বা করতে অস্বীকার করে , তবে সে ব্যভিচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে এবং ব্যভিচারিণীর যা শাস্তি তা তার প্রাপ্য হবে। উভয় ক্ষেত্রে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যাবে। কারণ এরূপ একটি জঘন্য অভিযোগের পরে তাদের পক্ষে আর স্বামী-স্ত্রী রূপে বসবাস করা সম্ভব নয়।
মন্তব্য : আয়াতগুলিতে দেখা যায় ব্যভিচারী নারী ও পুরুষের জন্য শাস্তির বিধান সমান। এই আয়াতগুলি নারী ও পুরুষের সমতার জ্বলন্ত সনদ। তবে দুঃখের বিষয় অনেকে মনে করেন আয়াতগুলি বিশেষভাবে মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য – কারণ তাদের বিশ্বাস মেয়েদের সতীত্ব রক্ষার মাধ্যমেই সামাজিক শৃঙ্খলা বিরাজ করবে। এ সব বক্তারা ভুলে যান যে, ব্যভিচার কখনও এককভাবে সংঘটিত হয় না। নারী পুরুষের যৌথ ক্রিয়াতেই যৌন ক্রিয়া সংঘটিত হয়। সুতারাং ব্যভিচারের জন্য নারী যতটুকু দায়ী থাকবে, পুরুষও ততটুকু দায়ী থাকবে। সুতারাং শাস্তিও সমভাবে প্রযোজ্য হবে, এটাই ন্যায় বিচার এবং আল্লাহ্র প্রেরিত সত্য। সমাজের নারীদের প্রতি একপেশে দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সমাজে মুসলমান পুরুষেরা হয়ে ওঠে স্বেচ্ছাচারী ফলে মেয়েরা স্ব অধিকার লাভে ব্যর্থ হয় এবং ধীরে ধীরে পৃথিবী থেকে নির্বাসিত হয়ে ঘরের কোণাতে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হচ্ছে। তারপরেও তাদের মুক্তি নাই। আজকে বাংলাদেশের সমাজে অহরহ নারী হচ্ছে ধর্ষিতা, এসিডে নির্যাতিত ও মিথ্যা কলঙ্কে ভূষিত এবং ফতোয়ার দ্বারা অত্যাচারিত। কোরাণ পুরুষকে সংযমের আদেশ দান করেছে তা তারা অনুধাবনে অক্ষম [ ২৪ : ৩০ ]। ফলে সামাজিক শৃঙ্খলা হচ্ছে ব্যহত। কারণ ঘরের কোণাতেও মেয়েরা আজকে নিরাপদ নয়।