আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম।
And We sent down from the sky water (rain) in (due) measure, and We gave it lodging in the earth, and verily, We are Able to take it away.
وَأَنزَلْنَا مِنَ السَّمَاء مَاء بِقَدَرٍ فَأَسْكَنَّاهُ فِي الْأَرْضِ وَإِنَّا عَلَى ذَهَابٍ بِهِ لَقَادِرُونَ
Waanzalna mina alssama-i maan biqadarin faaskannahu fee al-ardi wa-inna AAala thahabin bihi laqadiroona
YUSUFALI: And We send down water from the sky according to (due) measure, and We cause it to soak in the soil; and We certainly are able to drain it off (with ease).
PICKTHAL: And we send down from the sky water in measure, and We give it lodging in the earth, and lo! We are Able to withdraw it.
SHAKIR: And We send down water from the cloud according to a measure, then We cause it to settle in the earth, and most surely We are able to carry it away.
KHALIFA: We send down from the sky water, in exact measure, then we store it in the ground. Certainly, we can let it escape.
১৮। আমি আকাশ থেকে পরিমাণ মত বৃষ্টি প্রেরণ করি এবং আমি তা মৃত্তিকায় সংরক্ষিত করি। এবং [ খুব সহজেই ] আমি তা অপসারণ করতে সক্ষম ২৮৭৮।
২৮৭৮। “আকাশ থেকে পরিমাণ মত বৃষ্টি প্রেরণ করি” – এখানে বৃষ্টির উদাহরণের দ্বারা দয়াময় আল্লাহ্র করুণাধারাকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে। বিশ্ব-প্রকৃতি নির্দ্দিষ্ট নিয়মের সুত্রে বাঁধা। প্রকৃতির বিভিন্ন নিয়মাবলীকে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে , প্রকৃতির নিয়মের প্রতিটি সুত্র এক সুশৃঙ্খল নিয়মের অধীন। সৃষ্ট জীবের জন্য যা কিছু কল্যাণকর শুধু ততটুকুই প্রকৃতি ধারণ করে থাকে। উদাহরণ দেয়া হয়েছে , বৃষ্টির। বৃষ্টি হচ্ছে ধরিত্রির জন্য প্রাণরক্ষাকারী। কিন্তু এর আধিক্য ধরিত্রির বুকে আবার বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে। সাধারণতঃ প্রতিটি ভূখন্ডের উপরে ততটুকুই বৃষ্টিপাত ঘটে, যতটুকু সে দেশের ভূখন্ডের জন্য প্রয়োজনীয়। পরিমিত বৃষ্টি মাটিকে আর্দ্র রাখে, যাতে শষ্যের ফলন উপযুক্ত হয়। আবার বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি মাটির স্তর ভেদ করে ভূগর্ভস্ত পানির স্তর সৃষ্টি করে , যা ভূমির গুণাগুণ বৃদ্ধিতে সহায়ক। আবার মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা নদী সমূহকে বয়ে যেতে সাহায্য করে। কারণ দেখা যায় নদীর গতিপথ অনেক সময়ে এমন দেশের মধ্যে দিয়ে ধাবিত হয় যেখানে বৃষ্টিপাত অতি নগণ্য। কিন্তু মাটির এই পানি ধারণ ক্ষমতার ফলে সে সব দেশে নদীর সমস্ত পানি ভূগর্ভস্ত স্তরে শোষিত হয় না। ভারতের বহু স্থানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যন্ত কম হওয়ায় তারা এ সব নদীর পানি বাঁধের সাহায্যে ব্যবহার যোগ্য করে মরুভূমি সদৃশ্য ভূমিকে শষ্য শ্যামল ভূমিতে পরিণত করেছে। প্রকৃতিতে আকাশ থেকে প্রাপ্য পানির সুষম ও পরিমিত বন্টনের আর একটি উদাহরণ হচ্ছে তুষার পাত। প্রকৃতিতে তুষারপাতের অবদানও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা মাটি ও বাতাসকে সুসামঞ্জস্যপূর্ণ রাখে। যদি সুউচ্চ পর্বতমালাতে তুষারের আধিক্য না থাকতো তবে সারাটা বছর নদীগুলি তাদের নাব্যতা রক্ষা করতে পারতো না। গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে কি অপূর্ব বিধান প্রকৃতির পানির সুষম বন্টনের জন্য। বৃষ্টির পানি পৃথিবীকে ধৌত করে ও তার আর্দ্রতা রক্ষা করে সমুদ্রে ফিরে যায় এবং আবার মেঘ রূপে পৃথিবীতে ফিরে আসে। একেই আজকের বিজ্ঞান বলে পানিচক্র। যদি বৃষ্টির পানি প্রাকৃতিক নিয়মে নিঃস্বারিত না হতো তবে সমস্ত পৃথিবীতে জলাবদ্ধতা , এবং বন্যার ব্যপকতা ঘটতো। যেমন নদী ভরাট হওয়ার ফলে বাংলাদেশে নদীবাহিত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হওয়ার সুযোগ পায় না ফলে বন্যার সৃষ্টি হয়। আবার যদি নির্দ্দিষ্ট পরিমাণের কম বৃষ্টিপাত ঘটে তবে মাটি ও আবহাওয়া শুষ্ক হওয়ার ফলে মাটি ও ফসলের ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়। আমাদের জীবনে পরিমিত বৃষ্টি যে কতটুকু প্রয়োজনীয় তা আমরা বন্যা বা খরা কবলে পতিত না হলে বুঝতে পারি না। কিন্তু প্রকৃতির এ ভারসাম্যের জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষ কতটুকু কৃতজ্ঞ ? বিশ্ব প্রকৃতিকে স্রষ্টা মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন বিভিন্ন প্রাকৃতিক নিয়মের মাধ্যমে। অকৃতজ্ঞ মানুষ কি তা অনুধাবনের চেষ্টা করে ?