যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে।
Allâh is the Walî (Protector or Guardian) of those who believe. He brings them out from darkness into light. But as for those who disbelieve, their Auliyâ (supporters and helpers) are Tâghût [false deities and false leaders, etc.], they bring them out from light into darkness. Those are the dwellers of the Fire, and they will abide therein forever.
اللّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُواْ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّوُرِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ أَوْلِيَآؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ
Allahu waliyyu allatheena amanoo yukhrijuhum mina alththulumati ila alnnoori waallatheena kafaroo awliyaohumu alttaghootu yukhrijoonahum mina alnnoori ila alththulumati ola-ika as-habu alnnari hum feeha khalidoona
YUSUFALI: Allah is the Protector of those who have faith: from the depths of darkness He will lead them forth into light. Of those who reject faith the patrons are the evil ones: from light they will lead them forth into the depths of darkness. They will be companions of the fire, to dwell therein (For ever).
PICKTHAL: Allah is the Protecting Guardian of those who believe. He bringeth them out of darkness into light. As for those who disbelieve, their patrons are false deities. They bring them out of light into darkness. Such are rightful owners of the Fire. They will abide therein.
SHAKIR: Allah is the guardian of those who believe. He brings them out of the darkness into the light; and (as to) those who disbelieve, their guardians are Shaitans who take them out of the light into the darkness; they are the inmates of the fire, in it they shall abide.
KHALIFA: GOD is Lord of those who believe; He leads them out of darkness into the light. As for those who disbelieve, their lords are their idols; they lead them out of the light into darkness – these will be the dwellers of Hell; they abide in it forever.
২৫৭। যাদের ঈমান আছে; আল্লাহ্ তাদের রক্ষাকর্তা। অন্ধকারের অতল থেকে তিনি তাদের আলোতে পরিচালিত করবেন। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, ‘মন্দ’ [শক্তি] তাদের অভিভাবক হবে। ইহা তাদের আলো থেকে অতল অন্ধকারের দিকে পরিচালিত করে। তারা হবে আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা [চিরদিন] বাস করবে।
রুকু – ৩৫
২৫৮। তুমি কি ঐ ব্যক্তিকে দেখ নাই, যে ইব্রাহীমের সাথে তার প্রভুর সম্বন্ধে বিতর্ক করছিলো, যেহেতু আল্লাহ্ তাকে [ক্ষমতা ও] কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন ৩০২। ইব্রাহীম বলেছিলো, “আমার প্রভু তিনি, যিনি জীবন ও মৃত্যু দেন।” সে বলেছিলো, “আমিও জীবন ও মৃত্যু দান করি।” ইব্রাহীম বলেছিলো, “কিন্তু আল্লাহ্ সূর্যকে পূর্বদিকে উদয় করেন, তুমি উহাকে পশ্চিম দিক থেকে উদয় করাও তো।” এভাবেই যে [একগুঁয়ে ভাবে] ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো, সে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। যারা অন্যায়কারী আল্লাহ্ তাদের সৎপথ দেখান না ৩০৩।
৩০২। আয়াত [২ : ২৫৮ – ২৬০] এই আয়াত তিনটি সম্পর্কে নানা রকম মতবাদ আছে। বিশেষ করে কে সেই ব্যক্তি যে হযরত ইব্রাহীমের সাথে তর্কে প্রবৃত্ত হয়েছিলো ? কুরআন শরীফে যেহেতু তার নাম উল্লেখ করা হয় নাই, এবং আমাদের প্রিয় নবীও এ সম্বন্ধে কোনও বক্তব্য রাখেন নাই, সুতরাং এই ব্যক্তির নামের অনুসন্ধান করা বৃথা এবং এ সম্বন্ধে নিজস্ব কোনও অনুমান করাও উচিত নয়। গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক সময়ে অনুমান অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়। কিন্তু কুরআন শরীফ এমন এক গ্রন্থ যার বক্তব্য, যার শিক্ষা, সার্বজনীন এবং যুগ কাল অতিক্রান্ত। সুতরাং এখানে সামান্য একটা নামের ব্যাপারে অনুমান করে কূটতর্কে জড়িয়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। ফলে কুরআনের যে মূল শিক্ষা বা যে উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তার থেকে আমরা বহু দূরে চলে যেতে পারি। কুরআনের সার্বজনীন ও বৃহত্তর রূপ হৃদয়ঙ্গম করার পরিবর্তে আমরা ক্ষুদ্র পরিবেশে কুটতর্কের ফলে আল্লাহ্র বাণীর মহিমা থেকে বঞ্চিত হব। এ যেনো সমুদ্র দর্শনের পরিবর্তে ক্ষুদ্র ‘ডোবা’ দর্শন এবং এর মহিমা কীর্তন। উপরের আয়াত তিনটি [২ : ২৫৮, ২৫৯, ২৬০] যে কোনও পয়গম্বরের জীবনেই ঘটতে পারে, তবে আয়াত [২ : ২৫৮]-এ আল্লাহ্, নবী মুহম্মদ মুস্তফাকে (সাঃ) সম্বোধন করেছেন।
৩০৩। আয়াতের [২ : ২৫৮] লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে মানুষের ক্ষমতার দম্ভ ও অহংকার আল্লাহ্র ক্ষমতার কাছে তুচ্ছ। যে ব্যক্তির সাথে হযরত ইব্রাহীমের তর্কবিতর্ক হচ্ছিল, সম্ভবতঃ তিনি ছিলেন বেবীলনের রাজা নমরুদ। মাওলানা ইউসুফ আলী এখানে নমরুদের উল্লেখ করেছেন এ জন্য যে হযরত ইব্রাহীমের আদি বাসস্থান ছিল বেবীলনে। সে সময়ে বেবীলন শিল্প, সাহিত্য ও বিজ্ঞানে পৃথিবীর শীর্ষ স্থানীয় ছিল। বিজ্ঞান পৃথিবীতে বহু আশ্চর্য্য ঘটনার জন্ম দিতে সক্ষম। একথা সে সময়ের বেবীলনের জন্যও প্রযোজ্য ছিল, বর্তমান সময়ের জন্যও প্রযোজ্য আছে। বিজ্ঞান যত কিছুই আবিষ্কার করুক না কেন জীবনের বা প্রাণের রহস্য আজও তার কাছে অজানা। এই রহস্য সে সময়েও বিজ্ঞানীদের হতবুদ্ধি করতো, আজ এত বছর পরেও বিজ্ঞানীদের প্রাণের রহস্য সেই একইভাবে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করে। আজকের যুগে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে মানুষ সৃষ্টির কলা-কৌশল উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইব্রাহীমের (আঃ) পরে কত যুগ অতিক্রান্ত হয়েছে। বিজ্ঞানের জ্ঞান কত সমৃদ্ধ হয়েছে, তবুও নিউটনের মত বলতে হয়, “আমরা জ্ঞান সমুদ্রের তীরে নুড়ি কুড়াচ্ছি।” অসীম জ্ঞানের আঁধার একমাত্র সর্বশক্তিমান। যখন লোকে অহংকারে স্ফীত হয়ে দম্ভ প্রকাশ করে তখন সে এই সত্যকে ভুলে যায় বা দেখতে অপারগ হয়। নিজেকে সে স্রষ্টার সমকক্ষ মনে করে। আজকের যুগেও আমরা এসব লোকের সন্ধান পাই যারা বিজ্ঞান পড়ে আল্লাহ্র অস্তিত্ব অস্বীকার করে। তাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানের দম্ভে ভুলে যায় যে, পৃথিবীর যাবতীয় প্রাকৃতিক বিধান বা বিজ্ঞান সবই আল্লাহ্র অসীম জ্ঞানের সামান্য অংশ মাত্র। নৃপতি বা রাজা এবং বিজ্ঞানী এরা উভয়েই সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্ষমতাধর সন্দেহ নাই। কিন্তু আল্লাহ্র তুলনায় তা অত্যন্ত সীমিত। হযরত ইব্রাহীম নমরুদকে সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, যদি সে আল্লাহ্র মতই ক্ষমতাধর হয়, তবে সূর্যকে বলুক পশ্চিম দিক থেকে উঠতে।