হজ্জ্বে কয়েকটি মাস আছে সুবিদিত। এসব মাসে যে লোক হজ্জ্বের পরিপূর্ণ নিয়ত করবে, তার পক্ষে স্ত্রীও সাথে নিরাভরণ হওয়া জায়েজ নয়। না অশোভন কোন কাজ করা, না ঝাগড়া-বিবাদ করা হজ্জ্বের সেই সময় জায়েজ নয়। আর তোমরা যাকিছু সৎকাজ কর, আল্লাহ তো জানেন। আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে নাও। নিঃসন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। আর আমাকে ভয় করতে থাক, হে বুদ্ধিমানগন! তোমাদের উপর তোমাদের পালনকর্তার অনুগ্রহ অন্বেষণ করায় কোন পাপ নেই।
The Hajj (pilgrimage) is (in) the well-known (lunar year) months (i.e. the 10th month, the 11th month and the first ten days of the 12th month of the Islâmic calendar, i.e. two months and ten days). So whosoever intends to perform Hajj therein by assuming Ihrâm), then he should not have sexual relations (with his wife), nor commit sin, nor dispute unjustly during the Hajj. And whatever good you do, (be sure) Allâh knows it. And take a provision (with you) for the journey, but the best provision is At-Taqwa (piety, righteousness, etc.). So fear Me, O men of understanding!
الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَّعْلُومَاتٌ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلاَ رَفَثَ وَلاَ فُسُوقَ وَلاَ جِدَالَ فِي الْحَجِّ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ يَعْلَمْهُ اللّهُ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيْرَ الزَّادِ التَّقْوَى وَاتَّقُونِ يَا أُوْلِي الأَلْبَابِ
Alhajju ashhurun maAAloomatun faman farada feehinna alhajja fala rafatha wala fusooqa wala jidala fee alhajji wama tafAAaloo min khayrin yaAAlamhu Allahu watazawwadoo fa-inna khayra alzzadi alttaqwa waittaqooni ya olee al-albabi
YUSUFALI: For Hajj are the months well known. If any one undertakes that duty therein, Let there be no obscenity, nor wickedness, nor wrangling in the Hajj. And whatever good ye do, (be sure) Allah knoweth it. And take a provision (With you) for the journey, but the best of provisions is right conduct. So fear Me, o ye that are wise.
PICKTHAL: The pilgrimage is (in) the well-known months, and whoever is minded to perform the pilgrimage therein (let him remember that) there is (to be) no lewdness nor abuse nor angry conversation on the pilgrimage. And whatsoever good ye do Allah knoweth it. So make provision for yourselves (Hereafter); for the best provision is to ward off evil. Therefore keep your duty unto Me, O men of understanding.
SHAKIR: The pilgrimage is (performed in) the well-known months; so whoever determines the performance of the pilgrimage therein, there shall be no intercourse nor fornication nor quarrelling amongst one another; and whatever good you do, Allah knows it; and make provision, for surely the provision is the guarding of oneself, and be careful (of your duty) to Me, O men of understanding.
KHALIFA: Hajj shall be observed in the specified months. Whoever sets out to observe Hajj shall refrain from sexual intercourse, misconduct, and arguments throughout Hajj. Whatever good you do, GOD is fully aware thereof. As you prepare your provisions for the journey, the best provision is righteousness. You shall observe Me, O you who possess intelligence.
রুকু – ২৫
১৯৭। হজ্জ্ব হয় সুবিদিত মাসে ২১৭। যদি কেউ এ সময়ে [হজ্জ্বের] কর্তব্য করার জন্য মনস্থির করে তবে হজ্জ্বের সময়ে, স্ত্রী সম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহ বিবাদ বৈধ নয়। তোমরা যে কোন ভাল কাজ কর, [নিশ্চিত থেকো] আল্লাহ্ তা জানেন। [তোমাদের সাথে] যাত্রার জন্য পাথেয় নিও ২১৮, তবে শ্রেষ্ঠ পাথেয় হচ্ছে উন্নত চরিত্র। সুতরাং হে প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আমাকে ভয় কর।
২১৭। ‘সুবিদিত মাস’ বলতে শাওয়াল, যিলক্বদ, যিলহজ্জ্ব মাস [১০ অথবা ১৩ পর্যন্ত] বুঝায়; যখন হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অর্থাৎ হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা শাওয়াল মাসের প্রথম থেকেই শুরু করা যেতে পারে, যখন থেকে হজ্জ্বযাত্রীরা মক্কার দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। তবে হজ্জ্বের মূল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় যিলহজ্জ্ব মাসের প্রথম দশ দিনে। বিশেষভাবে তা করা হয় ৮ম, ৯ম ও ১০ম যিলহজ্জ্ব তারিখে যখন হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। হজ্জ্বের সম্পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা নিম্নরূপ :
(১) নির্দিষ্ট স্থান থেকে ইহ্রাম পরিধান করে মক্কার দিকে অগ্রসর হতে হয়। এরপরে হজ্জ্বের বিধি নিষেধ তার উপরে আরোপিত হয়। এখান থেকেই হজ্জ্বযাত্রীরা আল্লাহ্র ইবাদতে মশগুল হয়ে পড়েন এবং পৃথিবীর সকল আকর্ষণকে পরিত্যাগ করেন। (২) সাত বার কাবা ঘরকে প্রদক্ষিণ (তাওয়াফ) করতে হয়। এ সময়ে কাবার দেয়াল সংলগ্ন কালো পাথরকে চুম্বন করতে হয়-যা আল্লাহ্র প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালবাসার প্রতীক। (৩) মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে [২:১২৫] দু’রাকায়াত নামাজ পড়ার পরে যমযম কূপের পানি পান করে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের উদ্দেশ্যে গমন করতে হয় [২:১৫৮]। এই পাহাড়দ্বয় ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়ের প্রতীকস্বরূপ। (৪) ৭ই যিলহজ্জ্ব হজ্জ্ব সম্পর্কীয় খুৎবাহ্ পাঠ করা হয় যা সকলে শ্রবণ করে (৫) ৮ই যিলহজ্জ্ব সকল হজ্জ্বযাত্রীগণ মক্কা থেকে ৬ মাইল উত্তরে মীনাতে গমণ করেন এবং সেখানে রাত্রি যাপন করেন। সেখান থেকে ৯ই যিলহজ্জ্ব আরাফাতের পাহাড়ে গমণ করেন। আরাফাত মীনা থেকে আরও ৫ মাইল উত্তরে যা ‘রহমতের পাহাড়’ নামে খ্যাত। এখানেই হযরত আদম ও বিবি হাওয়া দীর্ঘ বিচ্ছেদের পরে পুণরায় মিলিত হন এবং আল্লাহ্র ক্ষমা লাভ করেন। এখানেই বিশ্বনবী তাঁর বিদায় হজ্জ্বের ভাষণ দান করেছিলেন। এখানে প্রচারিত ভাষণ সকলেই শুনে থাকেন। (৬) ১০ যিলহজ্জ্ব হচ্ছে ঈদ-উল-আযহা বা কুরবানীর দিন। কুরবানী দেয়া হয় মীনার প্রান্তরে। এরপরে মাথার চুল কামিয়ে ফেলে হজ্জ্বের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয় ‘তওয়াফ-আল-ইফাদা’ এবং প্রতীকধর্মী শয়তানকে পাথর ছোঁড়ার মাধ্যমে। পরবর্তী দু’দিনও পাথর ছোঁড়া হয়। এই পাথর নিক্ষেপের অনুষ্ঠানটি প্রতীকধর্মী, যা মানুষের কুচিন্তা, কুকথা ও কু-কাজকে প্রত্যাখ্যানের সাথে সম্পৃক্ত। কুরবাণীর পরে আরও ২/৩ দিন মীনাতে অবস্থান করতে বলা হয়। এই দিনকে বলা হয় ‘তাশরিক’ দিন।
২১৮। বলা হয়েছে প্রতিটি হজ্জ্বযাত্রী হজ্জ্বের দিনগুলি সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করার মত অর্থ নিয়ে আসবেন যেনো বিদেশ বিভূঁয়ে অর্থাভাবে ভিক্ষার মত অসম্মানজনক কাজ করতে না হয়। কুরআনের চিরাচরিত প্রথায় এখানেও আমাদের পার্থিব থেকে আধ্যাত্মিক দর্শনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। যদি এই পৃথিবীতে স্বল্পকালীন [হজ্জ্বের উদ্দেশ্যে] ভ্রমণের জন্য পাথেয় প্রয়োজন হয়, তবে পৃথিবী থেকে পরলোকের যে সুদীর্ঘ যাত্রাপথ, সে পথের জন্য পাথেয় কতটা প্রয়োজনীয় তা সহজেই অনুমেয়। সে যাত্রা হবে অনন্তযাত্রা। এই পৃথিবী থেকে অন্যভূবনে যাত্রা। ভবিষ্যত পৃথিবীর এই যাত্রাপথে সর্বাপেক্ষা উত্তম যে পাথেয় তা আত্মসংযম বা সঠিক চারিত্রিক গুণাবলী বা তাকওয়া। তাকওয়া হচ্ছে আল্লাহ্ ভীতি-যার ফলে আত্ম সংযমের মাধ্যমে চারিত্রিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটে।