তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। এবং জনগণের সম্পদের কিয়দংশ জেনে-শুনে পাপ পন্থায় আত্নসাৎ করার উদ্দেশে শাসন কতৃপক্ষের হাতেও তুলে দিও না।
And eat up not one another’s property unjustly (in any illegal way e.g. stealing, robbing, deceiving, etc.), nor give bribery to the rulers (judges before presenting your cases) that you may knowingly eat up a part of the property of others sinfully.
وَلاَ تَأْكُلُواْ أَمْوَالَكُم بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ وَتُدْلُواْ بِهَا إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُواْ فَرِيقًا مِّنْ أَمْوَالِ النَّاسِ بِالإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
Wala ta/kuloo amwalakum baynakum bialbatili watudloo biha ila alhukkami lita/kuloo fareeqan min amwali alnnasi bial-ithmi waantum taAAlamoona
YUSUFALI: And do not eat up your property among yourselves for vanities, nor use it as bait for the judges, with intent that ye may eat up wrongfully and knowingly a little of (other) people’s property.
PICKTHAL: And eat not up your property among yourselves in vanity, nor seek by it to gain the hearing of the judges that ye may knowingly devour a portion of the property of others wrongfully.
SHAKIR: And do not swallow up your property among yourselves by false means, neither seek to gain access thereby to the judges, so that you may swallow up a part of the property of men wrongfully while you know.
KHALIFA: You shall not take each others’ money illicitly, nor shall you bribe the officials to deprive others of some of their rights illicitly, while you know.
১৮৮। তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না। মানুষের ধন-সম্পদের অংশ বিশেষ জেনে বুঝে অন্যায়রূপে গ্রাস করার জন্য বিচারকদের, [শাসকদের] ঘুষ প্রদান করবে না ২০১।
২০১। জৈবিক প্রয়োজন তিনটি খাদ্য, পানীয় এবং যৌন অনুভূতি। এই তিনটি প্রয়োজন পশু, মানুষ সকলেরই সামন কিন্তু মানুষের পশু অপেক্ষা আর একটি কামনা প্রবল তা হচ্ছে অর্থ ও সম্পদের আকাঙ্ক্ষা। সৎ পথে অর্থ উপার্জন ইসলাম অনুমোদন করে। শুধু অনুমোদনই করে না উৎসাহিত করে। কিন্তু যখন এই অর্থ সম্পদ উপার্জন অসৎ পথে হয় তখনই তা পাপের পথ বা পাপে পর্যবসিত হয়। সাধারণভাবে আমরা সৎপথ বলতে বুঝি চুরি, ডাকাতি না করা, এবং তহবিল তসরুফ না করা। একজন সৎ মানুষ এই তিনটি থেকে বিরত থাকাকেই মোটামুটিভাবে সৎ পথ বলে ধারণা করেন। কারণ মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে অর্থ উপার্জনের জন্য এই তিনটি উপায়েরই আশ্রয় গ্রহণ করে। তিনটি উপায়ই হচ্ছে অর্থলোভ চরিতার্থ করার উপায়। কিন্তু এখানে আরও দুটি সুক্ষ্ণ লোভের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলির একটা হচ্ছে ঘুষ দেওয়া। অর্থাৎ অন্যের সম্পদ গ্রাস না করে নিজের সম্পদ বিচারক বা কর্তৃত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ঘুষ প্রদান করা যেনো অন্যায়ভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে বা আর্থিক সুবিধা লাভ করতে পারে কিন্তু আইন তাকে ধরতে পারে না। এরকম উদাহরণ আমাদের সমাজে অজস্র। দ্বিতীয়টি অনুবাদ করা হয়েছে ‘একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করো না’। একথাটির অর্থ এই দাঁড়ায় যে, জনগণের সম্পদ (Public Property) অন্যায়ভাবে গ্রাস না করা। কর্তৃপক্ষকে ঘুষ দেওয়া, ঘুষ খাওয়া, অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করা ইসলামে নিষিদ্ধ। এগুলি সবই অসৎপথে উপার্জিত অর্থ। অসৎ পথে উপার্জিত অর্থ হারাম।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন, ‘যখন কোন বান্দা হারাম মাল খায় এবং সদ্কা খয়রাত করে, তা কবুল হয় না। যদি তা থেকে ব্যয় করে, তবে তাতে বরকত হয় না। যদি তা উত্তরাধিকারী ওয়ারিশানের জন্য রেখে যায় তবে তা জাহান্নামে যাওয়ার পক্ষে তার জন্য পাথেয় হয়।’ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মন্দ বস্তু দ্বারা মন্দ আমলকে বিধৌত করেন না। অবশ্য সৎ কর্ম দ্বারা অসৎ কর্মকে ধুয়ে দেন। আমাদের সমাজে হারাম খাওয়ার সম্বন্ধে সাধারণ ব্যক্তিদের যা ধারণা তা হচ্ছে শুকরের মাংস, মদ এবং আল্লাহ্র নাম ব্যতীত জবাই করা পশুর গোশ্ত খাওয়া হারাম। এ ব্যাপারে সবাই কঠোরভাবে অনুশীলন করতে চেষ্টা করে। কিন্তু অসৎপথে [ঘুষ, চোরাকারবারী, জনগেণর সম্পদ] অর্জিত অর্থকে হারাম বলে গণ্য করা হয়না। অসৎ পথে অর্জিত অর্থ সমাজের শৃঙ্খলা ও শান্তি বিঘ্নিত করে। শুকরের মাংস, মদ ও বেহালাল পশুর মাংস অপেক্ষাও অসৎ পথের উপার্জিত অর্থে কেনা খাদ্য অনেক বেশী ক্ষতিকর এবং হারাম। হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, মহানবী (সাঃ) বলেছেন, ‘আর সে সত্তার কসম করে বলছি, যাঁর হাতে মুহম্মদের প্রাণ, বান্দা যখন নিজের পেটে হারাম লোকমা ঢোকায়, তখন চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোন আমল কবুল হয় না। আর যার শরীরের মাংস হারাম মাল দ্বারা গঠিত হয়, সে মাংসের জন্য তো জাহান্নামের আগুনই যোগ্য স্থান।’
এই আয়াতের শিক্ষা সর্বযুগের সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য। এ কারণেই আজ বহু মুসলিম দেশ অনুন্নত ও সামাজিক অনাচার ও অত্যাচারের শিকার। সুতরাং রোজার সংযম হচ্ছে খাদ্য, পানীয়, যৌন অনুভূতি ও অর্থ সম্পদের অন্যায় লোভ থেকে নিজেকে রক্ষা করা ও আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য রীপু সমূহের সংযমের চেষ্টা করা।