1 of 3

002.187

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।
It is made lawful for you to have sexual relations with your wives on the night of As-Saum (the fasts). They are Lîbas [i.e. body cover, or screen, or Sakan, (i.e. you enjoy the pleasure of living with her – as in Verse 7:189) Tafsir At-Tabarî], for you and you are the same for them. Allâh knows that you used to deceive yourselves, so He turned to you (accepted your repentance) and forgave you. So now have sexual relations with them and seek that which Allâh has ordained for you (offspring), and eat and drink until the white thread (light) of dawn appears to you distinct from the black thread (darkness of night), then complete your Saum (fast) till the nightfall. And do not have sexual relations with them (your wives) while you are in I’tikâf (i.e. confining oneself in a mosque for prayers and invocations leaving the worldly activities) in the mosques. These are the limits (set) by Allâh, so approach them not. Thus does Allâh make clear His Ayât (proofs, evidences, lessons, signs, revelations, verses, laws, legal and illegal things, Allâh’s set limits, orders, etc.) to mankind that they may become Al-Muttaqûn (the pious – see V.2:2).

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَآئِكُمْ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ عَلِمَ اللّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ فَالآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُواْ مَا كَتَبَ اللّهُ لَكُمْ وَكُلُواْ وَاشْرَبُواْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّواْ الصِّيَامَ إِلَى الَّليْلِ وَلاَ تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللّهِ فَلاَ تَقْرَبُوهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ
Ohilla lakum laylata alssiyami alrrafathu ila nisa-ikum hunna libasun lakum waantum libasun lahunna AAalima Allahu annakum kuntum takhtanoona anfusakum fataba AAalaykum waAAafa AAankum faal-ana bashiroohunna waibtaghoo ma kataba Allahu lakum wakuloo waishraboo hatta yatabayyana lakumu alkhaytu al-abyadu mina alkhayti al-aswadi mina alfajri thumma atimmoo alssiyama ila allayli wala tubashiroohunna waantum AAakifoona fee almasajidi tilka hudoodu Allahi fala taqrabooha kathalika yubayyinu Allahu ayatihi lilnnasi laAAallahum yattaqoona

YUSUFALI: Permitted to you, on the night of the fasts, is the approach to your wives. They are your garments and ye are their garments. Allah knoweth what ye used to do secretly among yourselves; but He turned to you and forgave you; so now associate with them, and seek what Allah Hath ordained for you, and eat and drink, until the white thread of dawn appear to you distinct from its black thread; then complete your fast Till the night appears; but do not associate with your wives while ye are in retreat in the mosques. Those are Limits (set by) Allah: Approach not nigh thereto. Thus doth Allah make clear His Signs to men: that they may learn self-restraint.
PICKTHAL: It is made lawful for you to go in unto your wives on the night of the fast. They are raiment for you and ye are raiment for them. Allah is Aware that ye were deceiving yourselves in this respect and He hath turned in mercy toward you and relieved you. So hold intercourse with them and seek that which Allah hath ordained for you, and eat and drink until the white thread becometh distinct to you from the black thread of the dawn. Then strictly observe the fast till nightfall and touch them not, but be at your devotions in the mosques. These are the limits imposed by Allah, so approach them not. Thus Allah expoundeth His revelation to mankind that they may ward off (evil).
SHAKIR: It is made lawful to you to go into your wives on the night of the fast; they are an apparel for you and you are an apparel for them; Allah knew that you acted unfaithfully to yourselves, so He has turned to you (mercifully) and removed from you (this burden); so now be in contact with them and seek what Allah has ordained for you, and eat and drink until the whiteness of the day becomes distinct from the blackness of the night at dawn, then complete the fast till night, and have not contact with them while you keep to the mosques; these are the limits of Allah, so do not go near them. Thus does Allah make clear His communications for men that they may guard (against evil).
KHALIFA: Permitted for you is sexual intercourse with your wives during the nights of fasting. They are the keepers of your secrets, and you are the keepers of their secrets. GOD knew that you used to betray your souls, and He has redeemed you, and has pardoned you. Henceforth, you may have intercourse with them, seeking what GOD has permitted for you. You may eat and drink until the white thread of light becomes distinguishable from the dark thread of night at dawn. Then, you shall fast until sunset. Sexual intercourse is prohibited if you decide to retreat to the masjid (during the last ten days of Ramadan). These are GOD’s laws; you shall not transgress them. GOD thus clarifies His revelations for the people, that they may attain salvation.

১৮৬। যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্বন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো প্রকৃতই [তাদের] অতি নিকটে। যখন আহবানকারী আমাকে ডাকে, আমি প্রত্যেক আহবানকারীর আহবানে সাড়া দেই। সুতরাং তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক; যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে; ১৯৪।

১৮৭। সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সম্ভোগ বৈধ করা হলো। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ], তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ [স্বরূপ] ১৯৫। আল্লাহ্‌ জানেন তোমরা পরস্পরের সঙ্গে গোপনে যা করতে। কিন্তু তিনি তোমাদের দিকে ফিরেছেন এবং ক্ষমা করেছেন। সুতরাং এখন তাদের সাথে সঙ্গত হও, এবং আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর ১৯৬। এবং আহার কর এবং পান কর যতক্ষণ না ঊষার শুভ্র রেখা রাত্রির কৃষ্ণরেখা থেকে স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত হয় ১৯৭। অতঃপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর ১৯৮। কিন্তু মসজিদে ই’তিকাফের সময়ে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সঙ্গত হয়ো না ১৯৯। এগুলি আল্লাহ্‌ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখা। সুতরাং এগুলির নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ্‌ মানব জাতির নিকট তাঁর নিদর্শনাবলী সুস্পষ্ট করেন; যেনো তারা আত্মসংযম শিক্ষা লাভ করে।

১৯৪। আয়াত [২:১৮৬] এবং আয়াত [২:১৮৮] দু’টি রমজানের রোজার সাথে সংশ্লিষ্ট, ১৮৬ তে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে রমজানের আধ্যাত্মিক দিকটির প্রতি। রোজা সংক্রান্ত ইবাদতে অবস্থা বিশেষে অব্যহতি দান এবং বিভিন্ন সহজতা সত্ত্বেও কিছু কষ্ট বিদ্যমান রয়েছে। এ কষ্টকে সহজ করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ্‌র বিশেষ অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আমি বান্দাদের সন্নিকটে রয়েছি। আল্লাহ্‌ আমাদের প্রার্থনার জবাবে তাঁর সান্নিধ্যের আশ্বাস দিচ্ছেন। এর থেকে বড় পাওয়া আর বান্দার জীবনে কি হতে পারে? আয়াত [২:১৮৮] তে বলা হচ্ছে যে, অন্যায়ভাবে যেন অন্যের সম্পত্তি গ্রাস না করি অর্থাৎ হারাম খাবার না খাই।

১৯৫। এই আয়াতটি থেকে বোঝা যায় ইসলামে নারী ও পুরুষকে আল্লাহ্‌ সমান মর্যাদা দিয়েছেন। নারী ও পুরুষ একে অপরের ভূষণ। অর্থাৎ পরস্পরের বন্ধু, সুখে-দুঃখে পরস্পরের অংশীদার, বিপদে-আপদে পরস্পরের সান্ত্বনা ও অবলম্বন। অর্থাৎ একে অপরের সম্পূরক বা অংশ। পোষাক যেরূপ শরীরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকে নারী ও পুরুষের মধ্যে সম্পর্কও তাই, একে অপরের পোষাকের ন্যায়। কেউই বড় নয় বা কেউই ছোট নয়। এখানে পোষাকের উপমা দেয়া হয়েছে কারণ পোষাকের ব্যবহার হচ্ছে লজ্জা নিবারণ ও সৌন্দর্য্যবৃদ্ধির জন্য। ঠিক সেরকম স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হচ্ছে সুখ-দুঃখ, বিপদ-আপদ সবকিছুতে পরস্পর সমতার ভিত্তিতে জীবনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও বাহিরের নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে আত্মরক্ষা করা। অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক হবে সমঝোতার (Mutuality) ভিত্তিতে।
স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে সহবাসের প্রশ্নটিও এসে যায়। এটা অত্যন্ত জটিল ব্যাপার, তাই আল্লাহ্‌র হুকুম হচ্ছে এ ব্যাপারে সততা এবং স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গীর (Openness) আশ্রয় নিতে। মিথ্যা এবং আত্মবঞ্চনাকে পরিহার করতে বলা হয়েছে। যৌন অনুভূতিকে খাদ্য এবং পানীয় এর সাথে এক শ্রেণীভূক্ত করা হয়েছে। কারণ খাদ্য, পানীয় এবং যৌন অনুভূতি এ তিনটিই পশু এবং মানুষ উভয়েরই মধ্যে সমভাবে বর্তমান। সুতরাং এ তিনটি প্রবৃত্তিকে পশু প্রবৃত্তি বলা চলে। সুতরাং রমজান মাসে দিনের বেলায় এই প্রবৃত্তিগুলিকে অবদমিত রাখতে হবে, তবে রাতের বেলায় এসবে নিষেধ নাই এবং এর জন্য লজ্জিত হওয়ার কোন কারণ নাই। কারণ প্রবৃত্তির জন্য আমরা দায়ী নই। এটা আল্লাহ্‌ প্রদত্ত। আমাদের প্রতি আল্লাহ্‌ আদেশ দিয়েছেন প্রবৃত্তি ও রিপুসমূহকে নিজের আয়ত্বে আনতে। আমরা যেনো প্রবৃত্তি ও রিপুর দাস না হই। তাই রমজানের একমাস এর চর্চা হয়।

১৯৬। ‘এবং আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর’। এই লাইনটি সম্বন্ধে বিভিন্ন মতবাদ আছে। বিভিন্ন অনুবাদক একে বিভিন্ন ভাবে অনুবাদ করেছেন। কেহ কেহ বলেন এর অর্থ এই যে ঊষা সমাগমের পূর্ব পর্যন্ত পানাহার এবং যৌনসঙ্গম বৈধ। আবার অনেকের মতে এর অর্থ হচ্ছে তোমাদের জন্য যা বৈধ করা হয়েছে তা ভোগ কর এবং রোজার যা মূল উদ্দেশ্য তার অনুসন্ধান কর। রোজার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রিপুর দমন করা যাতে আত্মার উন্নতি লাভ ঘটে, ফলে আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য লাভ সহজ হয়। অর্থাৎ আধ্যাত্মিক উন্নতি লাভের চেষ্টা করাই হচ্ছে রোজার মূল উদ্দেশ্য।

১৯৭। যারা প্রকৃতির সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত তারা জানে, প্রতুষ্যের রূপমাধুর্য কী মনোহর। প্রথমে দেখা দেয় পূর্বদিগন্তে সাদা অনির্দিষ্ট আলোকের চিকন চিকন রেখা তারপর একটি অন্ধকার সবকিছু গ্রাস করে ফেলে, পরে এই অন্ধকারের বুক চিরে ধীরে ধীরে দেখা দেয় একটি রক্তিমাভ সাদা সুনির্দিষ্ট আলোক রেখা। এটিই হচ্ছে সত্যিকার প্রভাত বা ‘সুবহ্‌ সাদিক’। এরপর থেকেই রোজার সময় শুরু হয়।

১৯৮। ‘নিশাগম’ আরবীতে এই অর্থই হয়। তবে রাসূলের (সাঃ) শিক্ষা ও প্রত্যক্ষ রোজা রাখার নিয়ম থেকে জানা যায় যে এর সঠিক অর্থ হবে, ‘সূর্যাস্ত পর্যন্ত’।
১৯৯। এই আয়াতটি দ্বারা ‘ইহ্‌তিকাফ’ এর উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হচ্ছে মসজিদে অবস্থান করে এবাদত বন্দেগীতে মশগুল হওয়া। আমাদের নবী (সাঃ) রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদেই অবস্থান করতেন।