আহলে-কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে যারা কাফের, তাদের মনঃপুত নয় যে, তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা বিশেষ ভাবে স্বীয় অনুগ্রহ দান করেন। আল্লাহ মহান অনুগ্রহদাতা।
Neither those who disbelieve among the people of the Scripture (Jews and Christians) nor Al-Mushrikûn (the disbelievers in the Oneness of Allâh, idolaters, polytheists, pagans, etc.) like that there should be sent down unto you any good from your Lord. But Allâh chooses for His Mercy whom He wills. And Allâh is the Owner of Great Bounty.
مَّا يَوَدُّ الَّذِينَ كَفَرُواْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَلاَ الْمُشْرِكِينَ أَن يُنَزَّلَ عَلَيْكُم مِّنْ خَيْرٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَاللّهُ يَخْتَصُّ بِرَحْمَتِهِ مَن يَشَاء وَاللّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
Ma yawaddu allatheena kafaroo min ahli alkitabi wala almushrikeena an yunazzala AAalaykum min khayrin min rabbikum waAllahu yakhtassu birahmatihi man yashao waAllahu thoo alfadli alAAatheemi
YUSUFALI: It is never the wish of those without Faith among the People of the Book, nor of the Pagans, that anything good should come down to you from your Lord. But Allah will choose for His special Mercy whom He will – for Allah is Lord of grace abounding.
PICKTHAL: Neither those who disbelieve among the people of the Scripture nor the idolaters love that there should be sent down unto you any good thing from your Lord. But Allah chooseth for His mercy whom He will, and Allah is of Infinite Bounty.
SHAKIR: Those who disbelieve from among the followers of the Book do not like, nor do the polytheists, that the good should be sent down to you from your Lord, and Allah chooses especially whom He pleases for His mercy, and Allah is the Lord of mighty grace.
KHALIFA: Neither the disbelievers among the followers of the scripture, nor the idol worshipers, wish to see any blessings come down to you from your Lord. However, GOD showers His blessings upon whomever He chooses. GOD possesses infinite grace.
১০৫। কিতাবীদের মধ্যে যারা ঈমানহীন তারা এবং মুশরিকরা চায় না যে, তোমার প্রভুর নিকট থেকে তোমার প্রতি কোন কল্যাণ অবতীর্ণ হোক। কিন্তু আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে নিজ অনুগ্রহের জন্য বিশেষভাবে মনোনীত করেন। কারণ আল্লাহ্ অসীম অনুগ্রহের মালিক।
১০৬। আমি কোন আয়াতকে রহিত করলে, বা ভুলে যেতে দিলে, তা থেকে উত্তম কিংবা সমতুল্য কোন আয়াত প্রতিস্থাপন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ্ সকল জিনিষের উপরে ক্ষমতাবান? ১০৭।
১০৭। উপরের আয়াতটির অর্থ সার্বজনীন। এর অর্থ সঙ্কীর্ণ অর্থে ব্যবহার না করাই উচিত। এই আয়াতের অর্থ ব্যাপকভাবে গ্রহণ করলে এর অর্থ দাঁড়ায় যে, যুগে-যুগে, কালে-কালে, সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আল্লাহ্র বাণী সময় ও যুগোপযোগী করা হয়েছে। এর ভাষা, নিয়ম-কানুনের মধ্যে বাহ্যিক কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে সময়ের দাবী ও সময়ের প্রয়োজনে এবং যুগের সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য। কিন্তু এর অন্তর্নিহিত বক্তব্য সেই আদি যুগ থেকে আজ পর্যন্ত একই রয়ে গেছে। হযরত মুসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের সাথে হযরত ঈসার ধর্মগ্রন্থের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য এবং শেষে হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের সামাজিক নিয়ম কানুনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় কিতাবীদের নৈতিক নীতিমালা যুগে-যুগে, কালে-কালে একই রয়ে গেছে। শুধু পরিবর্তন হয়েছে বাহ্যিক, সামাজিক নিয়ম নীতিমালা যা যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে যুগোপযোগী করা হয়েছে। এটা ভাবা অন্যায় নয় যে মানব সমাজ সময় ও যুগ অতিক্রম করে সভ্যতার দিকে এগিয়ে চলেছে। যুগে-যুগে আল্লাহ্ ধর্মকে সেই যুগের উপযোগী করার জন্য বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। [৩ : ৭] আয়াতে আল্লাহ্ পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করেছেন যে-
‘তিনিই তোমার প্রতি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন; যাহার কতক আয়াত সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন; এইগুলি কিতাবের মূল অংশ’ আর অন্যগুলি রূপক। যাদের অন্তরে সত্য লঙ্ঘন প্রবণতা রয়েছে শুধু তারাই ফিত্না এবং ভুল ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে যা রূপক তার অনুসরণ করে।’
উদাহরণ স্বরূপ যেমন-অনেকে বলে যে আয়াত [২ : ১১৫] কে [২ : ১৪৪] আয়াত দ্বারা রহিত করা হয়েছে। আয়াত [২ : ১১৫] এ বলা হয়েছে যে –
‘পূর্ব পশ্চিম সর্বত্রই আল্লাহ্ বিদ্যমান; এবং যে দিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন সে দিকেই আল্লাহ্র উপস্থিতি বিদ্যমান। আল্লাহ্ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।’ এবং আয়াত [২:১৪৪] তে বলা হয়েছে –
‘…. তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাইয়া দিতেছি যা তোমাকে সন্তুষ্ট করবে। অতএব তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও। তোমরা যেখানেই থাক না কেন উহার দিকে মুখ ফিরাও ….’।
– এর অর্থ এই দাঁড়ায় না যে আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা আয়াত [২:১১৫] কে রহিত করা হয়েছে। কারণ এটা ভাবা সংকীর্ণতা ও অন্যায় যে আল্লাহ্ শুধু কোনও নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ। তাঁর অবস্থান সর্বত্র; আয়াত [২:১১৫] দ্বারা এই বুঝানো হয়েছে যে আল্লাহ্র ব্যপ্তি বিশ্বজগৎব্যাপী; তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র। আয়াত [২:১৪৪] দ্বারা বুঝনো হয়েছে যে, এবাদতের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সকলে মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাবে।
পৃথিবীর দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই যে কালের আবর্তে পৃথিবীতে কোনও জিনিস স্থায়ী নয়। কত জনপদ, সভ্যতা, অনুসরণীয় প্রতিষ্ঠান সময়ের আর্বতনে লোপ পেয়ে যায়। বিবর্তনের ধারায় তাদের শিক্ষাও লোকে ভুলে যায়। আজকে যা মনে হবে প্রকৃষ্ট অনুসরণীয় নীতি আগামীকাল তা মনে হবে যুগোপযোগী নয়। কিন্তু আল্লাহ্র শাশ্বত বাণী অপরিবর্তনীয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা চলে, সত্য কথা বলা, চুরি না করা, অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ হস্তগত না করা, ব্যাভিচার না করা ইত্যাদি এগুলি হচ্ছে আল্লাহ্র শাশ্বত আইন। হযরত মুসার কিতাব থেকে হযরত ঈসা, হযরত মুহম্মদ (সাঃ) এর কুরআন পর্যন্ত একইভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে। যে কোনও কিতাবীদের ধর্মের মূল নৈতিক নীতিমালা এক। কিন্তু এমন অনেক ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান আছে যেখানে খৃষ্টানদের সাথে ইহুদীদের মেলে না, আবার খৃষ্টানদের সাথে মুসলমানদের মেলে না ইত্যাদি। তাই বলে ইহুদী, খৃষ্টান বা ইসলাম এর কোনটাই ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নয়। কিতাবীরা সবাই হযরত ইব্রাহীমের ধর্মের অনুসারী। সময়ের ব্যবধানে ধর্মের মধ্যে যে অনাচার প্রবেশ করেছিলো, সেগুলি পরিশুদ্ধ করে যুগোপযোগী করার জন্য ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পরিবর্তন করা হয়েছে। কুরআন হলো সম্পূর্ণ জীবন ব্যবস্থা । উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যুগোপযোগী করার জন্য ইসলামে মেয়েদের অধিকার স্বীকৃত করা হয় – জীবনের সর্ব অবস্থায় যথা : সম্পত্তি, সাক্ষী ইত্যাদিতে যা পূর্বে ছিল না।