1 of 3

002.003

যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে
Who believe in the Ghaib and perform As-Salât (Iqâmat-as-Salât), and spend out of what we have provided for them [i.e. give Zakât , spend on themselves, their parents, their children, their wives, etc., and also give charity to the poor and also in Allâh’s Cause – Jihâd, etc.].

الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
Allatheena yu/minoona bialghaybi wayuqeemoona alssalata wamimma razaqnahum yunfiqoona

YUSUFALI: Who believe in the Unseen, are steadfast in prayer, and spend out of what We have provided for them;
PICKTHAL: Who believe in the Unseen, and establish worship, and spend of that We have bestowed upon them;
SHAKIR: Those who believe in the unseen and keep up prayer and spend out of what We have given them.
KHALIFA: who believe in the unseen, observe the Contact Prayers (Salat), and from our provisions to them, they give to charity.

০৩। যারা অদৃশ্যে বিশ্বাস করে, সালাতে দূঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং আমি তাদের যে জীবনপোকরণ সরবরাহ করেছি তা থেকে ব্যয় করে ২৭,

২৭। বিশ্বে যা কিছু সুন্দর সবকিছুর মূল চালিকাশক্তি সর্বশক্তিমান এক আল্লাহ্‌। আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাকে যা কিছু নেয়ামত দান করেছেন তা থেকে সৎকাজে দান করতে বলা হয়েছে। অনেক তফসীরকারগণ মনে করেন অর্থ এবং ধন-সম্পদই একমাত্র দান করার বিষয়বস্তু। কিন্তু আল্লাহ্‌র নেয়ামতকে শুধুমাত্র অর্থের নিক্তিতে মাপলে ভুল করা হবে। মানুষকে আল্লাহ্‌ সৃষ্টির সেরা জীব করেছেন সেটা শুধুমাত্র এজন্য নয় যে, সে আর্থিক সাচ্ছন্দ্য সংগ্রহে সক্ষম। মানুষ ‘আশরাফুল মাখলুকাত’- সৃষ্টির সেরা জীব, কারণ তার চারিত্রিক গুণাবলী। চারিত্রিক গুণাবলীর কারণেই মানুষ কখনও ফেরেশতার সমতুল্য, আবার এর অভাবে পশুর সমান। এই সব চারিত্রিক গুণাবলী, মেধা, মননশক্তি সবই মহান আল্লাহ্‌র দান। এ সবই আল্লাহ্‌র নেয়ামত। আল্লাহ্‌র নেয়ামতকে আমরা তিন ভাগে বিভক্ত করতে পারি।

প্রথমত : বস্তুগত দান, যথা ধন-সম্পদ, খাদ্য, বাসস্থান, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। অর্থাৎ যা কিছু আমরা পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে অনুভব করতে পারি, এ সব কিছুই এই শ্রেণীর নেয়ামতের অন্তর্গত।

দ্বিতীয়ত : স্পর্শাতীত দান অর্থাৎ যে নেয়ামত পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করা যায় না যথা- উচ্চ মর্যাদা, বংশ মর্যাদা, ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপক্তি, সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য, প্রতিভা, মেধা, বিদ্যা, বুদ্ধি ইত্যাদি যা ব্যক্তির চরিত্রের প্রকাশ পায় তা সবই আল্লাহ্‌র নেয়ামত।
তৃতীয়ত : বিবেক (Spiritual gift),জাগ্রত বিবেক আল্লাহ্‌র সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত। যথা-ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা,ন্যায় ও অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা, অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা, মানুষকে তার গুণাবলীর দ্বারা বিচার করার ক্ষমতা, ভালোবাসার ক্ষমতা, গুণাবলীর সনাক্ত করার ক্ষমতা,ইত্যাদি ইত্যাদি।

আল্লাহ্‌ বিভিন্ন ব্যক্তিকে তার এই নেয়ামতের বিভিন্ন অংশ দান করে থাকেন। কেউ হয়তো অর্থ-সম্পদে সম্পদশীল, আবার কেউ উচ্চ পদ মর্যাদার অধিকারী, কেউ মেধা, বুদ্ধিতে কৃতী। আল্লাহ্‌ বলেছেন যার মধ্যে এই তিন ধরনের যে কোন ধরনের নেয়ামতের প্রকাশ ঘটুক না কেন তা নিয়ে অহংকার করার কিছুই নাই। এ সবই বান্দার জন্য আল্লাহ্‌র দান। এ দান কখনও একা ভোগ করতে নাই। আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি বিধানের জন্য, তার সৃষ্টির সেবার জন্য, মানুষের মঙ্গলার্থে এসব নেয়ামত বা আল্লাহ্‌র দানকে ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ যার অর্থ আছে তিনি অর্থ দান করবেন জনহিতকর কাজে। যার মেধা আছে তিনি সেই মেধা, যার প্রভাব প্রতিপত্তি আছে তিনি সেই প্রভাব প্রতিপত্তি ইত্যাদি যে নেয়ামতই বান্দার থাকুক না কেন তিনি সেই নেয়ামত আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি বিধানের জন্য মানুষের মঙ্গলের জন্য তার সৃষ্টির সেবার জন্য ব্যয় করবেন। অর্থাৎ অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা, সঙ্গীত, শিল্প, সংস্কৃতি, সাহিত্য ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের যে দক্ষতা বা প্রতিভা যাই-ই থাকুক না কেন তা আল্লাহ্‌র সৃষ্টির মঙ্গলের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে আল্লাহ্‌র এবাদত করা। ঠিক সেইভাবে যে ব্যক্তি আত্মিক নেয়ামতে ধন্য বা বিবেকবান, তার উচিত তার সেই জ্ঞান ও অন্তর্দৃষ্টি সমাজের বিবেককে জাগ্রত করার কাজে নিবেদন করা। জনসাধারণের বিবেককে জাগ্রত করার জন্য, তারা যাতে ন্যায়কে-অন্যায় থেকে পার্থক্য করতে পারে, ভালকে মন্দ থেকে আলাদা করতে পারে, বিশ্ব মানবতার জন্য তাদের সেই জ্ঞানকে ব্যবহার বা বিতরণ করতে হবে। এর জন্য আমাদের কঠোর তপস্বী হওয়ার প্রয়োজন নাই অথবা অত্যন্ত কৃপণ বা অপচয়ী হওয়ারও প্রয়োজন নাই। এই হচ্ছে দানের সংজ্ঞা।