শেষ কথা
চার বছর পরের কথা।
রিহান ককপিটে বসে হাত দিয়ে ইঙ্গিত করতেই প্রপেলার ধরে রাখা মানুষটি সেটা ঘোরানোর চেষ্টা করল। রিহান ফুয়েল পাম্পে চাপ দিয়ে ইগনিশান কী-টা ঘোরানোর সাথেই। ভট ভট শব্দ করে ইঞ্জিনটা চালু হবার চেষ্টা করে কয়েকবার শব্দ করে থেমে গেল। রিহান। ফুয়েল পাম্প কয়েকবার চাপ দিয়ে হাত দিয়ে আবার ইঙ্গিত করতেই প্রপেলারের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা দ্বিতীয়বার গায়ের জোর দিয়ে প্রপেলারটা ঘোরানোর চেষ্টা করল, এবারে বার কতক আঁকুনি দিয়ে হঠাৎ ইঞ্জিনটা বিকট শব্দ করে চালু হয়ে যায়। দেখতে দেখতে ইঞ্জিনটা পুরো শক্তিতে ঘুরতে শুরু করে, প্রবল বাতাসে ধুলোবালি এবং বড়কুটো। উড়ে যেতে শুরু করে। রিহান গগলসটা চোখে লাগিয়ে কন্ট্রোলটা হাতে নিয়ে প্লেনটা একটু সামনে নেবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখন দেখতে পেল কে একজন হাত নাড়তে নাড়তে ছুটে আসছে মানুষটি ছুটতে ছুটতে প্রাণপণে রিহানের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। রিহান একটু অবাক হয়ে দেখল, মানুষটি গ্রুস্তান, তার ডান হাতে একটা কাগজ এবং কাগজটা নাড়তে নাড়তে সে ছুটে আসছে।
রিহান সুইচ টিপে ইঞ্জিনটা বন্ধ করে একটা যন্ত্রণাসূচক শব্দ করে চোখের গগলসটা খুলে গ্রুস্তানের জন্যে অপেক্ষা করতে লাগল। এই চার বছরে গ্রুস্তানের দেহটি আরো বিস্তৃত হয়েছে এবং ছুটে আসার কারণে সে রীতিমতো হাঁপাতে থাকে। রিহান জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে গ্রুস্তান?
গ্রুস্তান প্রত্যেকটি শব্দের পর একটা করে নিশ্বাস নিয়ে বলল, ঠিক সময়ে তোমাকে ধরেছি।
মোটেও ঠিক সময়ে আমাকে ধর নি। খুব ভুল সময়ে ধরেছ। রিহান গলা উঁচু করে বলল, আমি এক্ষুনি প্লেনটা ফিল্ড টেস্ট করতে নিয়ে যাচ্ছিলাম।
সেজন্যেই বলেছি ঠিক সময়ে ধরেছি। গ্রুস্তান হঠাৎ করে তার মুখটা প্রয়োজন থেকে অতিরিক্ত গম্ভীর করে বলল, তোমার এই প্লেনের কার্যক্রমের ওপর আইনগত বাধা এসেছে।
রিহানের কথাটা বুঝতে কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল, সে মুখ হাঁ করে বলল, কী বাধা?
আইনগত বাধা।
আইনগত বাধা? রিহানের মুখ দেখে মনে হল সে কথাটার অর্থ বুঝতে পারছে না। বারকয়েক চেষ্টা করে আবার বলল, আইনগত বাধা?
হ্যাঁ। গ্রুস্তান খুব চেষ্টা করে মুখে একটা কঠোর ভাব এনে বলল, একজন নাগরিক তোমার প্লেনের কার্যক্রমের ওপর মামলা করেছে। সে বলেছে মানুষের আকাশে ওড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। যদি প্রকৃতি চাইত মানুষ আকাশে উড়ুক তা হলে তাদের পাখির মতো ডানা থাকত। যেহেতু মানুষের ডানা নেই কাজেই তাদের আকাশে ওড়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
রিহান খুব চেষ্টা করে নিজেকে শান্ত রেখে বলল, কোর্ট এই যুক্তি গ্রহণ করেছে?
করে নাই। গ্রুস্তান গম্ভীর গলায় বলল, কোর্ট বলেছে বিজ্ঞানের গবেষণার ক্ষেত্রে কোনো সীমা বেঁধে দেওয়া যাবে না। যার যেটা ইচ্ছে সে সেটা নিয়ে গবেষণা করতে পারবে।
তা হলে আইনগত বাধাটা এল কোথা থেকে?
কারণ মামলার আবেদনে আরো একটি কথা ছিল।
সেটি কী কথা?
গ্রুস্তান হাতের কাগজটি দেখে বলল, সেখানে বলা হয়েছে তোমার প্লেনের কার্যক্রম এখনো পরীক্ষামূলক অবস্থায় আছে। এখনই এটার ফিড টেস্ট করা হলে জানমালের ক্ষতি হতে পারে।
রিহান এবার রেগে উঠতে শুরু করল, অনেক কষ্ট করে রাগটা প্রকাশ করতে না দিয়ে বলল, জানমালের ক্ষতি হতে পারে? কোর্ট এই যুক্তি গ্রহণ করেছে?
আমাদের বিচারকরা মামলাটা খুব গুরুত্ব দিয়ে নিয়েছেন। তারা অনেকক্ষণ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই মুহূর্তে এই প্লেন চালানো বেআইনি এবং জনস্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতিকর।
রিহানের মুখ রাগে থমথমে হয়ে ওঠে, সে দাতে দাঁত ঘষে বলল, জনস্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতিকর?
হ্যাঁ।
কীভাবে সেটা ক্ষতিকর?।
গ্রুস্তান হাত নেড়ে পুরো ব্যাপারটা উড়িয়ে দিয়ে বলল, ঐ সব ঘুঁটিনাটি ব্যাপার নিয়ে পরে শুনানি হবে। তুমি তখন বিচারকদের সামনে তোমার কথাগুলো বলার সুযোগ পাবে। তোমাকে সেটা বলার জন্যে ডাকা হবে।
রিহান এবার রাগে ফেটে পড়ল, ককপিটের দরজা খুলে সে লাফিয়ে নিচে নেমে পা দাপিয়ে বলল, তোমরা ফাজলেমি পেয়েছ? এরকম একটা ব্যাপার নিয়ে তোমরা ঠাট্টা গ্রু করেছ?
এটা মোটেও ঠাট্টা নয়। গ্রুস্তান কষ্ট করে মুখে একটা গাম্ভীর্য ধরে রেখে বলল, কোর্টের সিদ্ধান্তকে ঠাট্টা বললে তোমার ওপর কোর্ট অবমাননার অভিযোগ আনা যায়।
কোর্ট অবমাননা?
কোর্ট অবমাননার শাস্তি হচ্ছে কারাদণ্ড। তোমাকে তা হলে আমাদের জেলখানায় এক সপ্তাহ আটকে রাখতে হবে। গ্রুস্তান সবগুলো দাঁত বের করে হেসে বলল, এক দিক দিয়ে তা হলে ভালোই হয়–আমাদের জেলখানাটা একটু ব্যবহার হয়! এতদিন হল জেলখানা তৈরি করেছি এখনো একজনকে ঢোকাতে পারলাম না! তোমাকে দিয়ে শুরু করলে মন্দ হয় না–
রিহান হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারল না। খানিকক্ষণ চেষ্টা করে বলল, তোমরা মনে হয় ব্যাপারটা ধরতে পারছ না। আইন তৈরি করা হয় মানুষকে সাহায্য করার জন্যে, কারো ক্ষতি করার জন্যে নয়!
আমরা কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করছি না।
ক্ষতি করার চেষ্টা করছ না? এত দিন চেষ্টা করে আমরা একটা প্লেন দাঁড় করিয়েছি, সবকিছু প্রস্তুত, আমরা যাচ্ছি ফিড টেস্ট করতে ঠিক সেই মুহূর্তে এসে তোমরা এটাকে আটকে দিলে! কার বিরুদ্ধে সেটা করলে? আমার বিরুদ্ধে! আমি–রিহান, যে নাকি একা তোমাদের সবার বিরুদ্ধে থেকে সবার জন্যে তথ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। যে তথ্য পেয়ে আগে একজন মানুষ ঈশ্বর হয়ে যেত এখন কমিউনের যে কোনো মানুষ তার থেকে একশ গুণ বেশি তথ্য পেতে পারে। কে তার ব্যবস্থা করেছে? আমি! সেই আমার বিরুদ্ধে তোমরা ষড়যন্ত্র শুরু করেছ?
গ্রুস্তান গম্ভীর গলায় বলল, আইনের চোখে সবাই সমান। তুমি পৃথিবীর সব মানুষের জন্যে তথ্য সরবরাহ করে ঈশ্বর–ঈশ্বরীর ব্যাপারটা শেষ করে দিয়েছ সেজন্যে আমরা সবাই তোমার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা স্কুলের জন্যে যে ইতিহাস বই লিখছি সেখানে তোমার ওপরে একটা চ্যাপ্টার আছে কিন্তু মনে করো না সেজন্যে তোমাকে আইনের চোখে আলাদাভাবে দেখা হবে। একজন নাগরিক মামলা করেছে আমাদের সেই মামলাটা বিবেচনা করতে হয়েছে। একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
এই নাগরিকটা কে জানতে পারি?
তুমি নিয়মমাফিক আবেদন করলে কোর্ট তোমাকে এই সুনাগরিকের নাম জানাতে পারে।
রিহান চোখ পাকিয়ে বলল, দেখো গ্রুস্তান, ভালো হবে না বলছি। কে এই সুনাগরিক?
প্রিমা। গ্রুস্তানের মুখ হঠাৎ কৌতুকের হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে! তোমার বিবাহিত স্ত্রী, কিন্তু আমি তোমাকে নিশ্চিত করছি সিদ্ধান্ত নেবার সময়ে তাকে আমরা একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করেছি। একবারও তোমার স্ত্রী হিসেবে দেখি নি–
রিহান কিছুক্ষণ কথা বলতে পারে না, তারপর হতাশভাবে মাথা নেড়ে বলল, প্রিমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে?
গ্রুস্তান সহৃদয়ভাবে রিহানের হাত ধরে বলল, মাথা খারাপ হবে কেন? তোমাকে একশবার বলেছে তুমি শোন নি, একটা প্লেন তো আর ছেলেখেলা নয়। অ্যাকসিডেন্ট তো হতেই পারে–
তাই বলে কোর্টে!
আহা–হা। এত কষ্ট করে আমরা একটা আইন বিভাগ দাঁড় করিয়েছি কেউ যদি ব্যবহার না করে তা হলে কেমন করে হবে? বিচারকদের কথা চিন্তা কর–বেচারারা রীতিমতো ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছে কিন্তু এখন কোনো কাজ নেই। প্রিমার মামলার কারণে তবু শেষ পর্যন্ত একটা কাজ পেয়েছিল। সবার কী উৎসাহ তুমি যদি দেখতে?
রিহান মাথা থেকে হেলমেট খুলে ককপিটের ভেতরে রেখে হতাশভাবে মাথা নাড়তে নাড়তে বলল, প্রিমা কোথায়?
মনে হয় স্কুলে।
চলো যাই। দেখি অনুরোধ করে মামলাটা তুলিয়ে নেওয়া যায় কি না।
.
স্কুলটা তৈরি করা হয়েছে খুব সুন্দর করে। সাদা দেয়ালের ওপর লাল টাইলের ছাদ। চারপাশে গাছের ছায়া। পাহাড়ের উপর থেকে একটা ঝরনা নেমে এসেছে, পাথরের উপর দিয়ে স্বচ্ছ পানিটুকু ঝিরঝির করে গড়িয়ে যাচ্ছে, শব্দটুকু ভারি সুন্দর। রিহানের কোনো কাজ না থাকলে সে পানিতে পা ডুবিয়ে বড় একটা পাথরে বসে থাকে। কিছুদিন হল কিছু পাখি এসে এখানে ভিড় জমিয়েছে, তাদের কিচিরমিচির শুনতে বেশ লাগে!
রিহান স্কুলের ভেতর ঢুকে ক্লাসরুমগুলোতে উঁকি দিল, বারো তেরো বছরের কিছু ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে প্রিমা কী একটা এক্সপেরিমেন্ট দাঁড়া করছিল, রিহানকে দেখে বলল, কী ব্যাপার রিহান? কাজ শেষ?
রিহান রাগের ভান করে বলল, তোমার কী মনে হয়?
প্রিমা হঠাৎ খিলখিল করে হেসে বলল, কেমন জব্দ হলে আজ? আমাদের বিচার বিভাগের ক্ষমতা দেখলে?
সেটা নিয়েই তোমার সাথে কথা বলতে চাইছি।
একটু দাঁড়াও। আমি এদের প্লাঙ্ক কনস্টেন্টটা বের করে দিয়ে আসছি।
ঠিক আছে।
রিহান সময় কাটানোর জন্যে ক্লাসরুমের করিডর ধরে হাঁটতে থাকে। একপাশে একটা ল্যাবরেটরিতে একটা মাইক্রোস্কোপে চোখ লাগিয়ে একটা মেয়ে কিছু একটা দেখছে, মাথা তুলতেই দেখল মেয়েটি ত্রানা। রিহান হাসিমুখে বলল, কী খবর এনা? কেমন চলছে তোমার গবেষণা?
জানা গম্ভীর মুখে মাথা নাড়ল, এক জায়গায় আটকে গেছি! কিছুতেই একটা জিনিস ধরতে পারছি না।
কী জিনিস?
তুমি বুঝবে না। জিনেটিক কোডিঙের একটা ব্যাপার।
তথ্যকেন্দ্র থেকে জেনে নাও।
উঁহু। আমি নিজে নিজে বের করতে চাই। জিজ্ঞেস করে জেনে নিলে লাভ কী?
ত্রানা আবার মাইক্রোস্কোপে চোখ রাখতে গিয়ে থেমে গিয়ে উচ্চ স্বরে ডাকল, ক্লড।
পাশের ঘর থেকে ক্লড বলল, কী হল?
আমার পেটরি ডিশগুলো কোথায়?
এই যে নিয়ে আসছি। বলে একটা ট্রেতে বেশ কিছু পেটরি ডিশ নিয়ে ক্লড ল্যাবরেটরির ঘরে ঢুকল। তার মাথার চুলগুলো আরো সাদা হয়েছে, মুখে বয়সের বলিরেখা। ত্রানা একটা পেটরি ডিশ হাতে নিয়ে ভালো করে দেখে বলল, এটা কি পরিষ্কার করা হল? তোমাকে এত করে বলেছি ভালো করে পরিষ্কার করতে কিন্তু তুমি আমার কথা শোনোই না।
ক্লড অপরাধীর মতো মুখ করে কাঁচুমাচু হয়ে বলল, ইয়ে, মানে চেষ্টা করেছিলাম!
তুমি একটা পেটরি ডিশ ঠিক করে পরিষ্কার করতে পার না কিন্তু একসময় তুমি নাকি একজন ঈশ্বর ছিলে! মানুষ তোমাকে ডাকত প্রভু ক্লড আর তুমি কথায় কথায় মানুষকে ফাঁসি দিয়ে দিতে। তোমাকে দেখলে কেউ সেটা বিশ্বাস করবে?
ক্লড কিছু একটা কথা বলতে যাচ্ছিল না তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, এস আমার সাথে। আমি তোমাকে দেখিয়ে দিই কেমন করে পরিষ্কার করতে হয়। আর যেন ভুল না হয়।
.
প্রিমা রিহানের হাত ধরে যাচ্ছে বড় একটা পাথরের উপর থেকে পানির ধারা বাঁচিয়ে অন্য একটা পাথরে পা দিয়ে বলল, তুমি কি রাগ করেছ রিহান?
করেছিলাম, কিন্তু এখন কমে গেছে।
কমে গেলেই ভালো।
রিহান প্রিয়াকে নিজের কাছে টেনে এনে বলল, কিন্তু আমাকে একটা কথা বলল, কোর্টে মামলা করার বুদ্ধিটা তোমাকে কে দিয়েছে?
কে আবার? গ্রুস্তান!
আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল।
প্রিমা রিহানের হাত টেনে বলল, তুমি যেন আবার গ্রুস্তানের সাথে রাগারাগি না কর।
না, করব না।
প্রিমা সুর পাল্টে বলল, তুমি এরকম একটা পাগলামি করবে, আর আমার ভয় করবে না?
পাগলামি?
হ্যাঁ, যদি কিছু একটা হয়? সব বিপদের কাজগুলো তোমাকেই কেন করতে হয়? তুমি অন্যদের সুযোগ দিতে চাও না কেন?
রিহান বলল, কে বলেছে দিতে চাই না?
আমি জানি বিপদের কাজগুলো তুমি নিজে করতে চাও। মনে রেখো এখন কিন্তু তুমি মানে শুধু তুমি না। তুমি মানে তুমি আর আমি আর আমাদের বাচ্চা কিশি।
রিহান কোন কথা বলল না, ধীরে ধীরে একবার মাথা নাড়ল। প্রিমা হাত টেনে বলল, মনে থাকবে তো?
থাকবে।
.
রিহান তার টেবিলে একটা প্লেনের নকশার উপর ঝুঁকে পড়ে কত গতিবেগে কত লিফট হতে পারে সেটা হিসাব করে বের করছে। প্রিমা গিয়েছে কিশিকে ঘুম পাড়াতে। হিসাব করতে করতে রিহান শুনতে পেল কিশি বলছে, মা আমাকে সেই পাখির গল্পটা বলো না।
কোন পাখির গল্প?
ফিনিক্স পাখির গল্প।
এক গল্প কতবার শুনবে বোকা ছেলে।
শুনব মা শুনব! বলো না–
.
রিহান শুনতে পেল প্রিমা তাদের সন্তানকে ফিনিক্স পাখির গল্প বলছে। কেমন করে ফিনিক্স পাখি আকাশের বুকে পাখা উড়িয়ে উড়ত–কেমন করে একদিন সেই ফিনিক্স পাখি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। সেই ছাইয়ের ভেতর থেকে কেমন করে আবার নতুন ফিনিক্স পাখির জন্ম হল, বিশাল পাখা উড়িয়ে কীভাবে সেই পাখি আবার আকাশের বুকে ডানা মেলে দিল–
টেবিলের নকশার উপর ঝুঁকে কাজ করার ভান করতে করতে রিহান প্রিমার মুখ থেকে ফিনিক্স পাখির গল্প শুনতে থাকে।
তার ছেলের মতোই সমান আগ্রহে।