দরজা খুলে সর্বজিৎ দেখল, ডেভিড।
কী চাও ডেভিড?
ডেভিড হাসল, জাস্ট টু সি ইউ।
এখানে এসে ভুল করেছ। কখনও এসো না। চলে যাও।
মিস্টার সরকার, আমি বাঁচতে চাই।
তার মানে?
আমি ড্রাগ ছাড়তে চাই। একটা ক্লিনিকে ভরতি হব। আই নিড মানি।
তোমার তো টাকার অভাব হওয়ার কথা নয় ডেভিড। যথেষ্ট দিয়েছি।
ঠিক কথা। আর হয়তো বিজনেস টার্ম-এ আসব না আপনার সঙ্গে। প্লিজ, হেল্প মি।
কত চাও?
পঞ্চাশ হাজার।
মাই গড। এ তো অনেক টাকা।
না মিস্টার সরকার, এটা অনেক টাকা নয়। ক্লিনিকের খরচ অনেক। একজন মৃতপ্রায় মানুষকে বাঁচতে সাহায্য করুন।
তুমি ভাবিয়ে তুললে। তোমার চাহিদার শেষ নেই।
আর আসব না। কথা দিচ্ছি।
ড্রাগ অ্যাডিক্টদের কথার দামও থাকে না।
এবার দেখুন। শেষ বার।
আমি জানি টাকাটা তুমি ড্রাগের পিছনেই ওড়াবে। তারপর আবার চাইতে আসবে। তুমি কি ব্ল্যাকমেল করছ আমাকে?
না। ব্ল্যাকমেল কেন হবে?
ডেভিড, আমার মন ভাল নেই। সিংঘানিয়া খুন হওয়ায় আমার ঝামেলা বেড়েছে। পুলিশ আমাকে সন্দেহ করছে। কে যে কাণ্ডটা করল কে জানে।
কোনও মাগার হবে।
মাগার হলে তো হতই। কিন্তু সব এমন কাকতালীয়ভাবে হবে কেন বুঝতে পারছি না। যাই হোক, আমার মাথা এখন খুব গরম। লিভ মি অ্যালোন।
জাস্ট একটা চেকে একটা সই। তার বেশি তো কিছু না।
ওঃ ডেভিড।
প্লিজ স্যার।
ঠিক আছে, তুমি ক্লিনিকের ঠিকানা দাও, আই উইল মেক দি পেমেন্ট দেয়ার।
কেন, আমাকে বিশ্বাস হচ্ছে না?
না ডেভিড, তোমাকে বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এতদিন তো বিশ্বাস করেছিলেন।
না, করিনি। ইউ ডিড এ জব ফর মি। অ্যান্ড দ্যাট ইজ দ্যাট।
ডেভিড একটু হাসল। সেই সুন্দর হাসি। তারপর জামার তলা থেকে একটা চপার বের করে বলল, রাইট দি চেক ইউ বাস্টার্ড।
ওটা কী হচ্ছে ডেভিড?
ইটস এ শো-ডাউন। রাইট ইট।
সর্বজিৎ এক পা পিছিয়ে গেল। তারপর বলল, ডেভিড, আমার সন্দেহ হয়, সিংঘানিয়াকে মেরেছ তুমিই। কেন মেরেছ? হিরের আংটির জন্য?
সেটা আমার ব্যাপার। আই ওয়ান্টেড হিম ডেড। নাউ আই ওয়ান্ট ইউ ডেড।
কেন ডেভিড?
ইউ আর রাসক্যালস। ডাউনরাইট রাসক্যালস। দি হোল সিভিলাইজড ওয়ার্ল্ড ইজ ফুল অফ রাসক্যালস। রাইট দি চেক।
ডেভিড, বাড়াবাড়ি কোরো না। তুমি জানো, আমি তোমাকে অনেক টাকা দিয়েছি। এত টাকা কেউ তোমাকে কখনও দেয়নি।
ইয়েস, আপনার নোংরা ঘাঁটার কাজের জন্য টাকা দিয়েছেন। আমি নেশা করি বলে টাকা নিতে বাধ্য হয়েছি। তাতে কী? নাউ আই ওয়ান্ট টু এন্ড দি রিলেশন। রাইট দি চেক, ইট উইল বি দি ফাইনাল পেমেন্ট। দেয়ার উইল বি নো মোর ডেভিড অ্যান্ড নো মোর নাথিং।
বেশ, দিচ্ছি, কিন্তু গ্যারান্টি কী?
নো গ্যারান্টি। শুধু মুখের কথা।
সর্বজিৎ গিয়ে সুটকেসটা খুলল। এবং রিভলভারটা তুলে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াল, নাউ গেট আউট।
ডেভিড রিভলভারটা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখল। একটু হেসে বলল, ট্রায়িং টু স্কেয়ার মি? ইউ বাস্টার্ড–
সর্বজিৎ কোনও সময় পেল না। ট্রিগার টিপতে পারত। কিন্তু আঙুল বড় অবশ। চিতাবাঘের গতিতে ডেভিড এসে তার ওপর পড়ল। পরপর দু’বার চপারটা চালাল ডেভিড।
দুটো হেঁচকি তোলার শব্দ করে মেঝেতে পড়ে গেল সর্বজিৎ। তারপর তার শরীর চমকাতে লাগল আহত সাপের মতো।
ডেভিড ভ্রুক্ষেপ করল না। সে সুটকেস খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিতে লাগল কাপড়চোপড়। তলা থেকে এক বান্ডিল নোট পেয়ে পকেটে পুরে ফেলল সে। টেবিলের ওপর থেকে মানিব্যাগটাও নিল।
তারপর দরজা খুলল।
গুড মর্নিং ডেভিড।
ডেভিড একটু পিছিয়ে গেল। তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দু’জন সিপাই ঘরে ঢুকে পড়ল। আহত সর্বজিতের দেহটা তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেল তারা।
ডেভিড চেঁচাল, ইউ রাসক্যাল! বাস্টার্ড! কী করতে পারো তোমরা আমার কিছুই করতে পারো না। হ্যাং মি, শুট মি, কিপ মি ইন জেল, কিছুই যায় আসে না। আই অ্যাম বিয়ন্ড এভরিথিং। বিয়ন্ড এভরিথিং…
শবর করুণ চোখে চেয়ে রইল।
ডেভিড চিৎকার করতে লাগল, আই হেট ইউ! আই হেট ইউ অল। গো টু হেল বাস্টার্ডস। দুনিয়া গোল্লায় যাক। আমি তোমাদের সিভিলাইজেশনের মুখে পেচ্ছাপ করি…
চিৎকার করতে করতে ক্লান্ত অবসন্ন ডেভিড ধীরে ধীরে একটা চেয়ারে বসে পড়ল। তারপর দু হাত মুখ ঢেকে কাঁদতে লাগল।
শবর পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকল শুধু।