এক সপ্তাহ সময় শেষ হয়ে গেছে। আর ঘন্টাখানেক পরে জাহিদের হাকশীকে সবকিছু ঠিক করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা। এই একটি সপ্তাহ জাহিদ আর কামাল প্রায় জন ত্রিশেক টেকনিশিয়ানকে নিয়ে কাজ করেছে। যদিও রি-অ্যাক্টরের ত্রুটিটি ছিল সাধারণ, কিন্তু কামাল টেকনিশিয়ানদের সাহায্যে পুরো রি-অ্যাক্টর সম্পূর্ণ টুকরো টুকরো করে খুলে ফেলেছে, তারপর আবার জুড়ে দিয়েছে। ঠিক কোথায় কি জিনিসটি সারা হল, কোনো টেকনিশিয়ান বুঝতে পারে নি। বোঝার দরকারও ছিল না।
এই দীর্ঘ সময়টিতে জাহিদ একটা স্কুও হাত দিয়ে নেড়ে দেখে নি। সে বসে বসে দিস্তা দিস্তা কাগজে কী-একটা অঙ্ক কষে গেছে। অঙ্কটির আকার-আকৃতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, কম্পিউটারে কষা উচিত ছিল কিন্তু এখানে সে কম্পিউটার পাবে কোথায়? তা ছাড়া অঙ্কটি সে কাউকে দেখাতে চায় না। ছয়দিনের মাথায় সে শুধু কামালকে একটা চিরকূটে কয়েকটা সংখ্যা লিখে দিল। সে-রাত্রে কামাল সব টেকনিশিয়ানকে ছুটি দিয়ে একা একা অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেছে। প্রথমে প্লুটোনিকের রিঅ্যাক্টরে, পরে ফোবোসের রি-অ্যাক্টরে। কি করেছে সেই জানে।
ফ্রিপসি অচল বলে হাকশী জাহিদ আর কামালের কাজকর্মে নাক গলাতে পারছিল না। কিন্তু সে গলাতে চাইছে না। জেসমিনের খাতিরে এরা দু জন যে রি-অ্যাক্টর দুটি ঠিক করে দেবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কখন কি করছে না-করছে সে তাতে উদ্বিগ্ন হল না। সে শুধুমাত্র ভয় পাচ্ছিল এই অসহায় অবস্থায় পৃথিবীর মানুষ যদি তাকে আক্রমণ করে বসে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তার প্লটোনিক আর ফোবোস—দুটিই পৃথিবীর রাডারের চোখে অদৃশ্য। সব রকম বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ এরা শোষণ করে নিতে পারে।
নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘন্টা আগেই কামাল আর জাহিদ হাকশীকে ডেকে পাঠাল। হাকশী হাসিমুখে সিগারেট টানতে টানতে হাজির হল, সামনে-পিছে দেহরক্ষী। ইদানীং এসব ব্যাপারে সে খুব সাবধান। কামাল কালিঝুলি মেখে শেষবারের মতো সবকিছু দেখে নিচ্ছিল–হাকশীকে দেখে সোজা হয়ে দাঁড়াল।
সব ঠিক হয়েছে?
কামাল হাকশীর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল, আগে জেসমিনকে ছেড়ে দাও। তারপর–
হাকশী পকেট থেকে চাবি বের করে ছুঁড়ে দিল একজনকে জেসমিনকে ঘর খুলে নিয়ে আসার জন্যে। মিনিটখানেকের ভেতরই জেসমিনকে নিয়ে সে ফিরে এল। এ কয় দিনে জেসমিন বেশ শুকিয়ে গেছে। রুক্ষ চুল, চোখের কোণে কালি। চেহারায় আতঙ্কের একটা ছাপ পাকাপাকিভাবে পড়ে গেছে।
হাকশী কামালকে বলল, বেশ, এবারে দেখাও।
কামাল এতটুকু না নড়ে বলল, তুমি আমাদের কি কথা দিয়েছিলে মনে আছে?
কি কথা?
প্লুটোনিক আর ফোবোসের রি-অ্যাক্টর দু’টি ঠিক করে দিলে আমাদের তিন জনকে ছেড়ে দেবে।
বলেছিলাম নাকি! কামাল মুখ শক্ত করে বলল, হ্যাঁ, বলেছিলে।
বলে থাকলে নিশ্চয়ই ছেড়ে দেব—তার আগে আমাকে দেখাও তোমরা রিঅ্যাক্টর দু’টি ঠিক করেছ।
দেখাচ্ছি। কিন্তু আমাদেরকে ছেড়ে দেবে তো?
সে দেখা যাবে বলে হাকশী এগিয়ে গিয়ে কামালকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সুইচ প্যানেলের সামনে দাঁড়ায়। বিভিন্ন সুইচ অন্ করে সে রি-অ্যাক্টরটি চালু করার আয়োজন করে।
মিনিট তিনেকের ভেতরই রি-অ্যাক্টর চালু হয়ে ঘরে ঘরে তীব্র উজ্জ্বল আলো জ্বলে ওঠে, এয়ার কণ্ডিশনারের গুঞ্জন শোনা যায়, প্লুটোনিকে প্রাণ ফিরে আসে।
হাকশীর মুখে হাসি ফুটে উঠল। সবকিছু পরীক্ষা করে সে ভারি খুশি হয়ে ওঠে। কামালের পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলে, ভালোকাজ করেছ হে ছেলে! এবারে চল ফোবাসটি দেখে আসি।
দাঁড়াও।
জাহিদের গলার স্বর শুনে হাকশী থমকে দাঁড়াল। বলল, কি?
ফোবোসে কামালের সাথে আমি আর জেসমিনও যাব—তুমি ওটা চালু করে আমাদের পৃথিবীতে রেখে আসবে।
হাকশী এমন ভান করল, যেন কথাটি বুঝতে পারে নি।
আমার কথা বুঝেছ?
না। হাকশী ধূর্তের মতো হাসল। তোমাদের সত্যি সত্যি পৃথিবীতে রেখে আসব, এ ধারণা কেমন করে হল।
কামাল চমকে উঠে বলল, মানে?
মানে খুব সহজ। হাকশীর মুখ নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে। তোমাদের সাহস খুব বেড়ে গেছে—ভেবেছিলে আমাকে ভয় দেখিয়ে কাজ উদ্ধার করবে। হাকশী ভয় পেতে অভ্যস্ত নয়। যদি কেউ ভয় দেখাতে চায়–
স্কাউণ্ড্রেল! কামাল তীব্র স্বরে চিৎকার করে উঠল, বেঈমান, মিথ্যুক।
কামাল। হাকশী সরু চোখে ওর দিকে তাকাল, তোমার ঔদ্ধত্যের শাস্তি তুমি পাবে আমি নিজের হাতে তোমায়–
হঠাৎ কামাল পাগলের মতো হেসে উঠল। বিকৃত মুখে হাসতে হাসতে বলল, হাকশী। নিজেকে খুব বুদ্ধিমান ভেবেছ? ভেবেছিলে আমরা তোমায় বিশ্বাস করেছি? আমরা–
জাহিদ হঠাৎ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে চিৎকার করে উঠল, কামাল।
কামাল জাহিদের দিকে তাকাল এবং তারপর চুপ করে গেল। শুধু ওর মুখ থেকে হাসিটি মুছে গেল না, বরং আরো বিস্তৃত হয়ে উঠতে লাগল।
কামাল কী বলতে চাইছিল হাকশী বুঝতে পারল না। এক পা এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করল, তুমি কী বলছিলে?
কিছু না।
হাকশীর চোখ ধক করে জ্বলে উঠল। তুমি বলছিলে তোমরা আমায় বিশ্বাস কর নি। তার মানে নিশ্চয় কিছু-একটা করেছ। বল কি করেছ?
বলব না।
তার মানে কিছু-একটা করেছ?
না।
হাকশীর চেহারা ভয়ংকর হয়ে ওঠে। ছোট হয়ে যাওয়া সিগারেটটাকে হাতে নিয়ে সে জেসমিনের দিকে এগিয়ে যায়। তারপর জেসমিনের চুল মুঠি করে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে—কিছু বোঝার আগেই সে তার গালে জ্বলন্ত সিগারেট চেপে ধরে
জেসমিন আর্তচিৎকার করে উঠল—কামাল ঝাপিয়ে পড়তে চাইছিল, কিন্তু তার আগেই তাকে দু’দিক থেকে ধরে ফেলল হাকশীর দেহরক্ষীরা।
বন্ধ কর—বন্ধ কর হারামজাদা–আমি বলছি!
হাকশী সিগারেটটা সরিয়ে নেয়—কামাল অপ্রকৃতিস্থের মতো বলল, শুধু তুই শুনবি! অন্যদেরও ডাক–
আমি শুনলেই চলবে। তুমি বল।
কামাল জাহিদের দিকে তাকাল, বলল, জাহিদ, বলেই দিই। কোনো ক্ষতি হবে না, সময় তো নেইও কিছু করতে চাইলেও করতে পারবে না।
জাহিদ চিন্তিত মুখে বলল, বলতে তো হবেই। নইলে বেচারি জেসমিন শুধু শুধু কষ্ট পাবে। ঠিক আছে, আমি বলছি।
জাহিদ হাকশীর দিকে তাকিয়ে হাসল। বলল, নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর কীভাবে কাজ করে নিশ্চয়ই তুমি জান। চেইন রিঅ্যাকশান কন্ট্রোল করার জন্যে ক্যাডমিয়াম রড থাকে। কেউ যদি ক্যাডমিয়াম রড় কেটে ছোট করে দেয় তাহলে কি হবে, জান নিশ্চয়ই। চেইন রি-অ্যাকশান শুরু হবে ঠিকই, কিন্তু কন্ট্রোল করা যাবে না। যে চেইন রি-অ্যাকশান কন্ট্রোল করা যায় না, তাকে বলে অ্যাটম বোমা।
কি বলতে চাইছ তুমি—তোমরা রি-অ্যাক্টরে–
হ্যাঁ, আমরা প্লুটোনিকের রি-অ্যাক্টরের ক্যাডমিয়াম রড কেটে ছোট করে দিয়েছি। কাজেই এই রি-অ্যাক্টরটা আসলে একটা অ্যাটম বোমা হয়ে গেছে। অনেক কষ্ট করে হিসেব করে বের করতে হয়েছে, ঠিক কতটুকু কেটে নিলে দশ মিনিট পরে বিস্ফোরণটি ঘটে। বন্ধ করার উপায় নেই তার আগেই দশ মিনিট পার হয়ে যাবে।
দশ মিনিট? হাকশী ঘড়ির দিকে তাকাল তারপর জাহিদের দিকে তাকাল তীব্র চোখে, সান অব বিচ! ব্লক হেডেড় ফুল–
কেন মিছিমিছি গালিগালাজ করছ। এখন সবাই মিলে মারা যাব, মাথা-গরম করে লাভ কি। অনেক লোক মেরেছ তুমি হাকশী পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তুমি অনেক মহাকাশযান ধ্বংস করেছ—এখন দেখ, মরতে কেমন লাগে! আর দুইএক মিনিট, তারপর তুমি তোমার দলবল নিয়ে চলে যাবে নরকে আর আমরা স্বর্গে!
হঠাৎ হাকশী ধরে রাখা জেসমিনকে ছেড়ে দিয়ে দু’পা এগিয়ে গেল, তারপর চিৎকার করে দেহরক্ষীদের বলল, আমার যারা লোকজন রয়েছে তাদের খবর দিয়ে দশ সেকেণ্ডের ভেতর ফোবোসে চলে আস—আমরা ফোবোসে করে এক্ষুণি প্লুটোনিক ছেড়ে চলে যাব।
কামাল হিংস্রভাবে বলল, না—তুই কিছুতেই ফোবোস চালু করতে পারবি —ওটা চালু হতে অন্তত পাঁচ মিনিট সময় নেয়—
হাকশী কামালের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি কিছুই জান না ছোকরা। ফোবোস পাঁচ সেকেণ্ডে চালু করা যায়। তোমরা মর—নিজেদের তৈরি অ্যাটম বোমায় নিজেরা মরে শেষ হয়ে যাও! আমি বেঁচে থাকতে জন্মেছি শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকব।
সে দ্রুত ছুটে গেল সিড়ি বেয়ে ফোবোসের দিকে।
জাহিদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল—জেসমিন মুখ ঢেকে বসে পড়ল সেখানে।
তিরিশ সেকেণ্ডের ভেতর হাকশী তার নিজের লোকজন নিয়ে ফোববাসে করে পালিয়ে গেল। প্লুটোনিকে রয়ে গেল শুধুমাত্র বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনা নির্দোষ নিরীহ বিজ্ঞানী আর টেকনিশিয়ানরা। প্লুটোনিক আর এক মিনিটের ভেতর ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে খবর পেয়ে অধিকাংশ লোকই পাগলের মতো হয়ে গেছে। হিস্টিরিয়াগ্রস্তের মতো দাপাদাপি করছে অনেকে। অল্প কয়জন হাটু গেড়ে শেষবারের মতো প্রার্থনা করছে—চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে টপটপ করে।
দেয়ালে টাঙানো মস্ত স্ক্রীনটা হঠাৎ আলোকিত হয়ে সেখানে হাকশীর চেহারাটা ফুটে উঠল। ফোবোস থেকে সে প্লুটোনিকের সাথে যোগাযোগ করেছে।
মৃত্যুর পূর্বমুহুর্তে তোমাদের কেমন দেখায় তাই দেখতে চাইছি।
দেখ—জাহিদ হাকশীর দিকে তাকিয়ে হাসল। মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তে আমি কেমন হাসতে পারি, দেখেছ?
তাই দেখছি। দুঃখ থেকে গেল তোমাদের দু’জনকে নিজের হাতে শেষ করতে পারলাম না। তা হলে দেখতাম কিভাবে হাসি বের হয়।
আমারও একই দুঃখ–তোমায় নিজহাতে মারতে পারলাম না।
হাকশী হো-হো করে হেসে উঠল—নিজহাতে বা পরের হাতে কোনোভাবেই হাকশীকে কেউ মারতে পারবে না
এক সেকেণ্ড হাকশী। একটা খুব জরুরি কথা মনে হয়েছে—
কি?
তোমায় বলেছিলাম না, প্লুটোনিকের নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টরের ক্যাডমিয়াম রড কেটে ওটাকে অ্যাটম বোমা বানিয়ে দিয়েছি? আসলে একটা ছোট ভূল হয়ে গেছে। ফোবোস বলতে আমি ভুলে প্লুটোনিক বলে ফেলেছিলাম।
হাকশী ভয়ংকর মুখে বলল, মানে?
মানে প্লুটোনিকের রি-অ্যাক্টর ঠিকই আছে। ফোবোসের রি-অ্যাক্টর আসলে অ্যাটম বোমা হয়ে গেছে। তুমি তোমার দলবল নিয়ে অ্যাটম বোমার উপর বসে আছ! এক্ষুণি ফাটবে ওটাদশ পর্যন্ত গোনার আগে।
প্রচণ্ড ক্রোধ, দুঃখ, হতাশা আর আতঙ্কে হাকশীর মুখ ভয়াবহ হয়ে উঠল। কী যেন বলতে চাইল গলা দিয়ে শব্দ বেরুল না। আবার কী যেন বলতে চাইল-তারপর বিকৃত মুখে হাঁটু ভেঙে সে ফোববাসের ভিতরে পড়ে গেল—
টেলিভিশনের পর্দা হঠাৎ করে কেঁপে উঠে স্থির হয়ে গেল। ঝুলিয়ে রাখা কাউন্টারগুলি ক-ক শব্দ করে বুঝিয়ে দিল, কাছাকাছি কোথাও একটা পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটেছে।
জাহিদ একটা নিঃশ্বাস ফেলে কামালের দিকে তাকাল। তারপর দুজনে দু’জনের দিকে তাকিয়ে হাসল।
বেচে গেলাম তা হলে! আমরা বেঁচে গেলাম, পৃথিবীও বেঁচে গেল।
যাই বলিস না কেন, অভিনয়টা দারুণ হয়েছিল। বিশেষ করে ঐ পাগলের মতো হেসে উঠে তুই যখন বললি—
থাক, আর বলতে হবে না। তুই নিজেও কিছু কম করিস নি!
দু’জনে হো-হো করে হেসে উঠে জেসমিনের কাছে এগিয়ে যায়। পূটোনিকের সবাই তখন ওদের কাছে ছুটে আসছে—প্লুটোনিক কীভাবে রক্ষা পেল এবং হাকশী কীভাবে ধ্বংস হল জানার জন্যে।
কামাল আর জেসমিনকে সবার অভিনন্দন নেয়ার দায়িত্ব দিয়ে জাহিদ হাকশীর নিজের ঘরে চলে এসেছে। এখানে পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে, যেটা এতদিন শুধুমাত্র হাকশী নিজে ব্যবহার করতে পারত।
সুইচ অন করে জাহিদ চুপচাপ অপেক্ষা করতে থাকে। পৃথিবী থেকে প্রায় দু’ কোটি মাইল দূরে, কাজেই মিনিট চারেক সময় লাগবে। বাইরে আনন্দ ঘূর্তির ঢেউ বইছে। বন্ধ ঘরেও মাঝে মাঝে চিৎকারের শব্দ চলে আসছিল। জাহিদ আপন মনে। হাসে—কিছুক্ষণের মাঝে কামালের মতো একটা কাঠগোঁয়ার লোক পপুলার হিরো হয়ে গেছে।
স্ক্রীনে আবছা পৃথিবীটা আস্তে আস্তে স্পষ্ট হতে থাকে। জাহিদ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে—পৃথিবী। তার সাধের পৃথিবী। তাকিয়ে থাকতে থাকতে কী-এক অজানা আবেগে ওর বুকের ভেতর যন্ত্রণা হতে থাকে, চোখে পানি জমে আসে।
ঘরে কেউ নেই, তবু জাহিদ এদিক-সেদিক তাকিয়ে চোখের পানি মুছে ফেলল। তারপর মাইক্রোফোনটা টেনে নিল নিজের দিকে।
————–
পরিশিষ্ট
১। নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর : পারমাণবিক শক্তিকে ব্যবহার করার জন্যে যেখানে নিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিক্রিয়া ঘটানো হয়।
২। রাডার : বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গের সাহায্যে দূরবর্তী কোনো বস্তুকে খুঁজে বের করার পদ্ধতি।
৩। ফ্লাইং সসার : অন্য কোনো গ্রহ থেকে আসা বিশেষ ধরনের মহাকাশযান সম্পর্কিত আলোচিত গুজব। পিরিচের মতো আকৃতি বলে নাম ফ্লাইং সসার।
৪। লেসার : প্রচণ্ড ক্ষমতাশালী আলোকরশ্মি।
৫। আইসোটোপ : একই পরমাণুর বিভিন্ন উক্লিয়াস, যেখানে প্রােটনের সংখ্যা সমান, কিন্তু নিউট্রনের সংখ্যা বিতি।
৬) ক্রিটিক্যাল মাস : বিশেষ ধরনের নিউক্লিয়াস; যে-নির্দিষ্ট ভরে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়।
৭। ভাইরাস : নিচুস্তরের অত্যন্ত ক্ষুদ্রকায় জীব। অনেক ভয়াবহ রোগ বিভিন্ন ভাইরাসের কারণে ‘ঘটে খাকে।
৮। চেইন রি-অ্যাকশান : একটি নিউক্লিয়াস ভা ভা থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক নিউক্লিয়াস ভেঙে পারমাণবিক শক্তি পাওয়ার নিরবচ্ছিন্ন পদ্ধতি।