০৬.
অনুতাপ
দেখতে দেখতে চারদিন কেটে গেলো। কিছুই ঘটলো না। দিনের বেলা ব্যস্ত থাকতাম, মোটের উপর খারাপ লাগতো না, কিন্তু রাতগুলো ছিল বিশ্রী।
পাঁচদিনের দিন আমি গিল্ডার একটা চিঠি গেলাম। লিখেছে, ও এখন লস্ এঞ্জেলসে বাড়ি ভাড়া নিয়েছে। কাজ খুজছে একটা, যদিও এখনও কিছু পায়নি। ইনসিওরেন্স কোম্পানী ম্যাকলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওরা টি. ভি. সেটা দেখবার জন্য তোক পাঠাচ্ছে। শনিবার সকালে সেই লোকটি আসবে–মানে কালকে–আমি কি সেদিন বেলা এগারোটায় ব্লু-জয় কেবিনে গিয়ে সেটা দেখিয়ে দিতে পারব! বাড়ির চাবি কোথায় পাওয়া যাবে তাও চিঠিতে বলা আছে।
পরের দিন ঠিক এগারোটায় আমি ওখানে হাজির হলাম। মিনিট দুয়েক পড়ে একটা প্যাকার্ড এসে দাঁড়ালো।
বছর বত্রিশ-তেত্রিশের একটা লোক নেমে এলো। চেহারাটা যদিও রোদেপোড়া কিন্তু হাসিখুশী
আপনি মিঃ রেগান?
হা।
লোকটা হাত বাড়িয়ে দিলো।
আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগলো মিঃ রেগান, আমি স্টেভ হারমাস, ন্যাশনাল ফাইডেলিটি থেকে আসছি। আপনি তো ব্যাপারটা জানেন। মিসেস ডেলানির অ্যাটর্নী বলেছেন, যে সেটায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেটা আপনি দেখিয়ে দেবেন।
আমি সেটা দেখিয়ে দিতে ও আমাকে বসতে বললো তারপর বললো, এই দাবীটায় খুব হৈ চোই হয়েছে, কান পেতে থাকলে আপনিও শুনতে পেতেন।
আমি জানতে চাইলাম, হৈ-চৈ টা কিসের।
আমাদের ওখাঁনে একজন আছে, তার নাম ম্যাডজ। কোনো দাবী এলে ও এমনভাবে সেটা খুটিয়ে দেখে যেমন করে আপনি কোনো পুরোনো ডিম পরীক্ষা করে দেখেন।
এক বছরে আমাদের কাছে কুড়ি থেকে ত্রিশ হাজার দাবী এসেছিল। তার মধ্যে শতকরা দুটো, গোলমেলে হয়। ম্যাডক্স প্রথমেই সেটা ধরতে পারে। প্রত্যেকবারই ও ঠিক বলেছে। আমাদের গোয়েন্দারা তদন্ত করার আগেই ও ঠিক ধরে ফেলে। আমি চুপ করে বসে শুনলাম।
আমি বললাম, এটায় কি কোনো গোলমাল আছে?
ম্যাডক্স বলেছে–টি. ডি, পলিসি আমরা কুড়ি হাজার করিয়েছি। একটাও আমাদের ব্যক্তিগত দুর্ঘটনার জন্য টাকা দিতে হয়নি। এটা আমরা লোভ দেখাবার জন্য করেছি। দিতে হবে বলে আমরা মনে করি না।
মনে হচ্ছে এক্ষেত্রে দিতে হবে। আমি বললাম।
হতে পারে। যাই হোক, হঠাৎ কুড়ি হাজারের একটা দাবী এলো। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতো, কিন্তু তা নেই। পলিসিটা মাত্র পাঁচ দিনের, পলিসিটা ভালো করে দেওয়ার আগেই লোকটা কবরস্থ হয়ে গেছে। পোস্টমর্টেম ছাড়াই তাকে গোর দেওয়া হয়েছে। এতে যে কোনো লোকই সন্দেহ করতে পারে। ইনসিওরেন্সের এজেন্ট তো কুত্তার মত ক্ষেপবে।
আমি বললাম, কিন্তু সে রকম কিছু মনে হচ্ছে না।
হারমাস হাসলো, ম্যাডক্স বলছে এটাতে বিরাট ভুল রয়ে গেছে। ও উঠে গিয়ে ক্যাবিনেটটা খুলে দেখতে লাগলো।
ভালো সেট।
আমি করোনারের রিপোর্টটা পড়েছি। সাউন্ড কন্ট্রোলের তারটা খুলে গিয়েছিল, ডেলানি সেটা ঠিক করতে গিয়ে শক খেয়েছেন। তাই না?
ঠিক তাই।
ওঁর কাছে স্ক্রু-ড্রাইভার ছিল?
হা। ওঁর পাশেই পড়ে ছিল।
হারমাস সোজা হয়ে দাঁড়ালো, ডেলানির কোমর থেকে নীচে পর্যন্ত পক্ষাঘাতে অসাড় হয়ে ছিল না?
হ্যাঁ।
আমি যতদূর জানি বউটার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। ওঁরা মিলেমিশে ছিলেন না।
টি. ভি. সেটটার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললে, সেটটার পেছনটা লাগিয়ে দেবেন?
আমি সেটটা লাগিয়ে দিলাম। এরপর আমাকে চেয়ারে বসে সেটের পেছনটা খুলতে বলা হলো।
আমি চেষ্টা করলাম, কিন্তু ওপরের স্ক্রু-দুটো খুললেও নীচের স্ক্রু-দুটো খোলা কিছুতেই সম্ভব হলো না। আমি মুহূর্তের মধ্যে বুঝতে পারলাম যে, আমার নির্ভুল খুনের প্ল্যানটা টুকরো টুকরো হয়ে গেল। আমি অনেকক্ষণ ধরে নীচের স্ক্রু দুটোর দিকে তাকিয়ে বসে রইলাম। আমি বুঝতে পারছি হারমাস আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি নিজেকেই নিজে গালাগাল দিচ্ছিলাম। স্ক্রু দুটো এমন জায়গায় লাগিয়েছি যে ডেলানি ও দুটো ছুঁতেই পারেনি, ধরতেই পারে নি।
ও বললো, ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগছে। ডেলানির কোমর থেকে নীচের দিকটা অসাড়। ওর পক্ষে এ কাজ সম্ভব নয়। যন্ত্রপাতির বাক্সটা কোথায় থাকতো?
ঐ ওপরের তাকে। ডেলানি কোনো লাঠি দিয়ে পেড়েছিলেন। যন্ত্রপাতিগুলো আমি মাটিতে ছড়িয়ে থাকতে দেখেছি।
লাঠিটা কোথায়?
আমি সেটা এনে দিলাম। হারমাস লাঠিটা লাগিয়ে বাক্সটায় টান লাগালো, সব কিছু ছড়িয়ে পড়লো। ঝুঁকে পড়ে স্ক্রু-ড্রাইভার তুলতে গেলো। ধরতেই পারলো না। চেয়ারের চাকা দুটো বেশ বড়, অনেক উঁচুতে ও বসে আছে। ওখানে বসে তোলা অসম্ভব। আমার দিকে তাকালো হারমাস। আমি কিছু না বলে ব্যাপারটা সামলে নেবার জন্য একটা সিগারেট ধরালাম।
হারমাস আমার কাছ থেকে জেনে নিল আমি প্রথমে ঘরে ঢুকে ডেলানিকে কি অবস্থায় দেখেছিলাম, কি কি দেখেছিলাম। তারপর আমি কি করেছিলাম, কাকে ফোন করেছিলাম, কেন আমার মনে হয়েছিল যে ডেলানি মারা গিয়েছেন ইত্যাদি।
হারমাস এবার উঠে দাঁড়ালো, এখানে আমি সব দেখে নিলাম। সেটটা এইরকমই থাক। আমি আরো একবার দেখবো। জানলার কাছে গিয়ে বাইরে তাকালো, খুবই অদ্ভুত, কিন্তু ম্যাডক্সের কখনো ভুল হয় না দেখছি। ব্যাপারটায় একটা গোলমাল রয়েছে। আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
আমি কিছু বললাম না। আমার হৃৎপিণ্ডটা বোধ হয় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিল। খুব ভয় করছিল।
আচ্ছা এবার আমায় যেতে হবে, ও হাত বাড়িয়ে দিল, আবার দেখা হবে। আপনার সঙ্গে কোথায় যোগাযোগ করা যেতে পারে?
আমার টেলিফোন নম্বরটা দিলাম। আমি বললাম, আপনি কি মনে করছেন এতে কোনো গোলমাল আছে?
ও হেসে বললো, আপনি নিজেই ভেবে দেখুন। লোকটির পক্ষাঘাত ছিল। উনি স্ক্রু দুটো ধরতেই পারেন নি। স্ক্রু-ড্রাইভারটাও তুলে নিতে পারেন নি। আপনি যখন ওঁকে দেখেছেন তখন উনি একেবারে ঠাণ্ডা, যদিও মাত্র তিনঘণ্টা হলো মরেছে, মরবার কদিন আগে উনি একটা ইনসিওরেন্স করিয়েছে। এই ভাবে মরে যাওয়ায় ওঁর স্ত্রী পাঁচ হাজার ডলার পাবে। হতে পারে সবই স্বাভাবিক ভাবেই ঘটেছে। তবুও ইনসিওরেন্সের লোকেদের সব কিছুতেই সন্দেহ হয়। আচ্ছা পরে দেখা হবে। ওকে চলে যেতে দেখে ফিরে এলাম ভেতরে। মনে মনে ভাবলাম শুরুটা খারাপই হয়েছে, অবশ্য তার মানে এ নয় যে ডেলানিকে খুন করা হয়েছে এটা প্রমাণ হলো। তার জন্য অনেক দূর যেতে হবে। আমার প্ল্যানটা একেবারে নির্ভুল ছিল না। কিন্তু অন্ততঃ এটা একেবারে ভেস্তে যায় নি। আমি বুঝতে পারলাম যে, হারমাসের আমার আর গিল্ডার প্রেমটা ধরতে না পারার ওপর অনেকটা নির্ভর করছে। এটা জেনে ফেললে ও খুনের উদ্দেশ্যটা পেয়ে যাবে–স্ত্রী, পঙ্গুস্বামী, প্রেমিক আর পাঁচ হাজার ডলারের ইনসিওরেন্স পলিসি।
আমার মনে হলো গিল্ডাকে একবার সাবধান করে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে ও আমার তৈরী ঘটনাই বলে যে সে গ্লীন ক্যাম্পে গিয়েছিল, যাবার পথে টায়ার ফেসেছিল, সেটা বদলাতে দেরী হয়েছিল অনেক।
মনে মনে ঠিক করলাম যে, লস্ এঞ্জেলসেগিয়ে কোনো জায়গা থেকে ওকে টেলিফোন করব।
চারটের সময় আমি লস এঞ্জেলসে পৌঁছলাম। একটা জায়গা থেকে ওকে ফোন করলাম, সাড়া পেলাম না। বোধহয় কোনো কাজের খোঁজে বেরিয়েছে। ঘুরে ফিরে আবার টেলিফোন করলাম। প্রায় সাতটার সময় ওকে পেলাম। গি! আমার নাম ধরে ডেকে ফেলোনা। শোনো আমি রাস্তার বুথ থেকে ফোন করছি। আমার নম্বর ৫৫৭৮১। তুমি বেরিয়ে কোন বুথ থেকে ফোন করো। আমি অপেক্ষা করছি। খুব জরুরী। তোমার লাইনে বলা যাবে না। তাড়াতাড়ি করো।
দশ মিনিট ওখানে দাঁড়িয়ে থাকার পর ফোন বেজে উঠতেই রিসিভার তুললাম আমি।
হ্যাঁ, কি ব্যাপার টেরি?
যা ভেবেছিলাম, ইনসিওরেন্সের লোকেরা সেই ভাবেই খোঁজ খবর করছে। মৃত্যুর কারণটায় ওরা সন্তুষ্ট হয় নি। আমাদের সাবধান হতে হবে। আমার মনে হয় ওরা তোমার ওপরে নজর রাখছে। শোনো…
টেরি! তুমি কি কিছু লুকোচ্ছ! প্রথম থেকে আমার এই রকমই মনে হচ্ছে। কি ব্যাপার বলো তো?
ওরা তোমার ওপর নজর রাখতে পারে গিল্ডা। আমাদের দুজনকে যদি একসঙ্গে দেখে…
তুমি কোথায়?
ফিগোরো অ্যান্ড ফ্লোরেন্স ড্রাগস্টোরে।
বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। আমার বুইক নিয়ে একঘণ্টার মধ্যে পৌঁচ্ছচি।
সাড়ে সাতটা নাগাদ আমি ড্রাগস্টোরের ভিতর থেকে বেরিয়ে বাইরে একটু অন্ধকার দেখে দাঁড়ালাম।
মিনিট দশেক পর বুইকটা এসে দাঁড়ালো। আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে গেলাম। গিল্ডা আবার রাস্তার ভীড়ে বুইকটা নিয়ে ঢুকে পড়লো।
আমরা কেউ কোন কথা বললাম না। আমি পেছন ফিরে দেখতে লাগলাম কেউ পিছু নিয়েছে কি না। রাস্তার আলোয় গিল্ডাকে বিবর্ণ দেখাচ্ছিল। সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছিল, ভীড় ঠেলে সামনের গাড়িকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। মিনিট কুড়ির মধ্যেই আমরা লস এঞ্জেলস থেকে বেরিয়ে খানিকটা ফাঁকা জায়গায় এসে পড়লাম। কিছুক্ষণ পরে একটা গলির মধ্যে দিয়ে গিয়ে একটা পাহাড়ী পথে উঠে পড়লাম। এখান থেকে লস্ এঞ্জেলসকে নীচে দেখতে পাওয়া যায়।
গাড়ি থামিয়ে গিল্ডা এবার আমার দিকে তাকালো। টেরি, তুমি এত ভয় পেয়েছ কেন?
ভয় পাইনি, আমি চিন্তিত হয়েছি। এই ইনসিওরেন্সের দাবীটা ঠিক হয়নি। কোম্পানীর লোক সেটা দেখেছে। তার সন্দেহ হয়েছে। তোমার স্বামীর পক্ষে বসে সেন্টার নীচের স্ক্রু-দুটো খুলে ফেলা সম্ভব মনে হচ্ছে না।
আমার মনে হয় ম্যাকলিনকে বলে ব্যাপারটা বাতিল করে দিই। টাকাটা ছাড়াও আমি চালিয়ে নেব। বিক্রী করে দেব সব। তাতে দেনা শোধ করার মত হয়ে যাবে।
আমি শক্ত হয়ে গেলাম, এখন আর বাতিল করা যায় না। এখন তাহলে ইনসিওরেন্স কোম্পানী জালিয়াতি সন্দেহ করবে। ওরা ভাববে তুমি ভয় পেয়ে গেছ। তাহলে ওরা এল-এ. পুলিশকে জানাবে।
তাহলে কি হবে?
একথা আগেই তোমাকে বারবার বলেছি গিল্ডা, আমাদেরকে সাবধান হতে হবে।
গিল্ডা আমার দিকে ঘুরে বসে বললো, তুমি সত্যি করে বলতে কি ব্যাপার? তুমি নিশ্চয়ই কিছু লুকোতে চাইছে।
আমি মনে মনে ভাবলাম, গিল্ডাকে যখন ভালোবাসি তখন ওকে মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই। যদিও এটা মারাত্মক হতে পারে তবুও আমি আর চেপে রাখতে পারলামনা। না গিল্ডা, এটা দুর্ঘটনা নয়, আমিই ওঁকে খুন করেছি।
গিল্ডা চমকে সরে গেল, তুমি খুন করেছে?
আমার মাথার ঠিক ছিল না, তুমি ওঁর সঙ্গে বাঁধা পড়ে থাকবে এটা আমি ভাবতেই পারছিলাম না। উনি বেঁচে থাকা পর্যন্ত তুমি আমার হবে না এ চিন্তা অসহ্য হয়ে উঠছিল তাই খুন করেছি।
গিল্ডা স্তব্ধ হয়ে রইল। ওর দ্রুত, অসম নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যেতে লাগলো।
তোমাকে ভালোবাসি বলেই…। ওরা বের করতে পারবেনা। কয়েকমাস পরেই আমরা দূরে কোথাও নতুন জীবন শুরু করতে পারবো।
কি করে মারলে?
আমি বললাম সব। কিছু লুকোলাম না। পুরো ব্যাপারটাই বললাম।
গিল্ডা গাড়ির এককোণে চুপ করে বসে রইলো। কোলের ওপর হাত দুটো ফেলে বাইরে চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। তার বড়ো বড়ো ফরগেট—মি-নট চোখ দুটোয় কোনো ভাষা নেই।
এই ইনসিওরেন্সের ব্যাপারটা যদি না হতো, আমি বললাম, আমার চিন্তা ছিলনা। কিন্তু এখন… আমি জানি না কি হবে। হারমাস কিছু সন্দেহ করেছে। এই জন্যই ব্যাপারটা না মিটে যাওয়া পর্যন্ত আমাদের দেখা হওয়া ঠিক নয়।
গিল্ডা ভাবলেশহীন ভাবে বলল, আমাকে কি করতে বলল?
জেফারসনকে যা বলেছ, সেটাই বলবে। হারমাস প্রশ্ন করতে পারে। আমরা যে প্রেম করি, এটা যদি ওর ঘুণাক্ষরে সন্দেহ হয়, তাহলে আমাদের বিপদ হতে পারে। সেজন্য ব্যাপারটা মিটে না যাওয়া পর্যন্ত সাবধানে থাকা দরকার।
মানে তোমার বিপদ হতে পারে। আমি সত্যি বললে আমার কোনো বিপদ হবে না।
ও ঠিকই বলছে, আমি চুপ করে রইলাম।
ঠিক আছে। আমি তোমার জন্য মিথ্যে বলবো। বাইরের দিকে তাকিয়ে বললো, তুমি কি হেঁটে ফিরতে পারবে? আমি একাই যেতে চাই। বড়ো রাস্তায় তুমি লিস্ট পেয়ে যেতে পারো।
আমার বুকে ধাক্কা লাগলো। গিল্ডা! এতে আমার প্রতি তোমার মন কি বদলে যাবে? আমি তোমায় ভালোবাসি। আমি তোমাকে এখন আরো বেশি করে চাই।
আমার একটা ধাক্কা লেগেছে। এখন একটু একলা থাকতে চাই।
ফিরতে বুকে ধাক্কা লাগলো। কি এখন আরো বেশি কত চাই।
আমি ওর হাতটা ধরতে চাইলাম কিন্তু ও নাগালের বাইরে চলে গেল।
আমি ওকে কথাটা বলে ফেলেছি বলে আমার অনুতাপহলো৷ব্যাপারটা ওকে সামলাবার জন্য সময় দিতে হবে।
আমি গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। গিল্ডা, তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি বলেই…না হলে এ কাজ আমি করতাম না।
আমার চোখের সামনে দিয়ে গাড়িটা বেরিয়ে গেল। গিল্ডা আমার দিকে তাকালোনা। গাড়িটার পেছনের আলোটা পাহাড়ের পথে নীচে মিলিয়ে যেতে লাগলো। আমার হঠাৎ মনে হলো গিল্ডা আমার জীবন থেকে চিরকালের মত সরে যাচ্ছে।