৫. পোস্ট মর্টেম

০৫. পোস্ট মর্টেম

রাশিয়ান স্পাই মালিক ও স্মারনফ মার্কিন ফৌজী জোয়ান উইলি জ্যাকসনকে বোকা বানিয়ে তাকে মেরে বেহুঁশ করে এরিকা ওলসেনকে নিয়ে সরে পড়েছিল। উইলিকে ওরা রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। আর জ্ঞান ফিরে দেখে চোয়াল ফুলে উঠেছে। ওর ফাইলে ওর কম্যান্ডিং অফিসার ব্ল্যাকমার্ক দিয়েছে। ওর মেজাজ খারাপ দেখে কেউ ওকে সহজে ঘাঁটাতে চায়না।

ফেয়ার ফ্যাক্সের ডিউটি শেষ। ওলীয়ারি জ্যাকসনকে ভিলার পেছনের পাহাড়টার পেছনে বড় রাস্তার পাশে পাহারা দিতে পাঠিয়েছে। জ্যাকসন জীপে বসেনি। কুকুরটাকে ঘুমুতে দেয়নি, তার মেজাজ দারুণ গরম।

বড় রাস্তায় শ্লথগথি ট্রাফিকের অবিরাম স্রোত। বেলা দেড়টা, জ্যাকসন দেখলো। ভায়োলিন কেস হাতে এক বীটনিক ছোরা পাহাড়ের ধারে সরু ফুটপাতে দাঁড়িয়ে। এই ছোকরা কোথা : থেকে এলো?

হে, ইউ! দাঁড়াও।

ছোকরা হেঁটেই যাচ্ছে। দাঁড়াচ্ছে না।

ইউ

জো জো তবু হাঁটছে।

জ্যাকসন অ্যালসেশিয়ান কুকুরটাকে লেলিয়ে দেয়।

কালো কুকুরটা ঝাঁপিয়ে পড়ে জো জোর রাস্তা আটকে দেয়। জো জো কুকুরের হিংস্র চোখ দেখে এই প্রথম ভয় পায়।

তোমাকে থামতে বললাম না? জ্যাকসন এগিয়ে আসে অটোমেটিক রাইফেল হাতে।

ইয়াংক, তুমি বললেই আমি থামবো কেন?

তুমি কোথা থেকে এলে? পাহাড়ের ওপর থেকে?

পাহাড়ে কি করতে যাবো? আমি ফরাসী নাগরিক। তুমি বেকার ঝামেলা করো না—

ভায়লিন কেসটা খোলো—

ইয়াংকের হুকুম আমি মানি না।

সেই মুহূর্তে ধীরবহমান ট্রাফিকের স্রোতে একজন ফরাসী পুলিশকে দেখা গেল। ওকে হাত নেড়ে ডাকে জ্যাকসন।

দারুণ ভয় পেয়ে ভায়লিন কেস ফেলে জ্যাকসনের অটোমেটিক রাইফেলটা ছিনিয়ে নিতে গেল জো জো।

দুটো ঘটনা একই সঙ্গে ঘটল।

জ্যাকসনের বাঁ হাতের জোরালো ঘুষি জো জোর চোয়ালে এসে লাগলো।

 অ্যালসেশিয়ান কুকুর ঝাঁপিয়ে পড়ে জো-জোর ডান হাত কামড়ে ধরলো।

.

এবং তখনই.ভিলার ভিতরে…কিছু সংলাপ..

গারল্যান্ড। কালো আঙুর নয়, কালো মুক্তো। সোনার ড্রাগনের পিঠে বসান। পিকিং…ফেং হে কুং-এর বাড়িতে। মনে পড়ে?

এরিকা। মার্ক, আমার কিছু মনে পড়ছে না।

কথা বলতে বলতে এরিকা খোলা ফ্রেঞ্চ উইনডোর-এর সামনে গিয়ে চিৎকার করে উঠলো। গারল্যান্ড ছুটে জানালায় যায়।

নার্স জিনি রোশ টের্যাসের ওপরে অস্বাভাবিক ভঙ্গীতে ইজিচেয়ারে শুয়ে আছে। তার কপালের মাঝখানে ছোট্ট একটা লাল ফুটো। রক্তের ধারা গড়িয়ে পড়ছে।

চাপা আর্তনাদ করে এরিকা অচেতন হয়ে পড়ে।

.

কিছুক্ষণ পরে…।

 সমুদ্র পারের একটা ভিলায় সোভিয়েত স্পাই স্মারনফ ও মালিক…কিছু সংলাপ…

স্মারনফ। ভিলার পিছন দিকে যাওয়ার পাহাড়ী রাস্তাটা খুঁজে পেয়েছিল পেট্রোভকা। কিন্তু ইয়েৎ সেনের এজেন্ট জো জো তাকে খুন করে। টেলিস্কোপিক রাইফেলের গুলিতে সে, এরিকা ওলসেনকে খুন করেছে। পুলিশ জো জো-কে অ্যারেস্ট করেছে।

মালিক। বোরিস, এই আমাদের প্রথম ব্যর্থতা। এখন এখান থেকে সরে পড়াই ভালো।

.

…মিলিটারী প্লেনে ও দ্রুতগামী গাড়িতে নিজের বাড়িতে ডোরি ফিরে এসেছে। গারল্যান্ড। সোভিয়েত ও চীনা স্পাই তোমার সান্ত্রীর সামনে দিয়ে পাহাড়ে উঠলো। ব্লন্ড চুল দেখে জো জো জিনিকে খুন করলো এরিকা ভেবে। সাংবাদিকদের বলেছি, নিহত মহিলার নাম এরিকা ওলসেন। এরিকা এখন কালো পরচুলা পরে আর নার্সের ইউনিফর্ম পরে জিনি সেজে আমার সঙ্গে মতেকালো যাবে। ওখানে ধনী ব্যবসায়ী সাজতে হলে আমার অন্তত এক লাখ ফ্রা লাগবে। মালকড়ি ছাড়ো।

ডোরি। কুড়ি হাজার ফ্রাঁ দেব এবং হিসাব চাই।

সাতঘণ্টা কেটে গেল, জো জো এখনো ফেরেনি।

 রুবির হোটেল সাদু উদ্বিগ্ন, পার্ল কিন্তু নিরুত্তেজ।

হঠাৎ রুবির আর্ত চীৎকার। সাদু পিস্তল বার করে। পিস্তল ফেলে দাও খোলা জানালায় পুরুষের কণ্ঠস্বর।

সাদু গুলি চালায়। পাল্টা গুলির আওয়াজ।

ঘাসের ওপর সাদু লুটিয়ে পড়ে।

পার্ল স্থির নিশ্চল।

মরে যাওয়ার আগে সাদু দেখে, এক জোড়া কালো ফৌজী বুট তার দিকে এগিয়ে আসছে।