মনে হয় দুখ, পূর্ণচন্দ্র মুখ,
কি হেতু মলিন দেখি।
অম্লান অম্বর, দিল যে কিন্নর,
বাকল তাহা উপেক্ষি।।
মাণিক মঞ্জরী, হার শতেশ্বরী,
তোমার হৃদয়ে সাজে।
ছিল অনুরাগ, তাহা কৈলে ত্যাগ,
দিল যে রাক্ষসরাজে।।
যুগল কঙ্কণ, অমূল্য রতন,
করেতে সাজিতেছিল।
কাড়ি নিল কেবা, নাহি দেখি শোভা,
যক্ষপতি যাহা দিল।।
অতুল অঙ্গুরী, দিলা যে শ্রীহরি,
অনেক যতন করি।
তেঁই নাহি সাজে, দিলা কেন দ্বিজে,
কি বলিবে মধুহারী।।
মঞ্জরী সুন্দর, দিলা যাহা কর,
উত্তর কুরুর পতি।
তেঁই নাহি শুনি, সে ললিত ধ্বনি,
কি করিলা গুণবতী।।
যাক্ পাছে সর্ব্ব, কোন্ ছার দ্রব্য,
তোমার আপদ লৈয়া।
বিরস বদন, সজল নয়ন,
দেখিয়া বিদরে হিয়া।।
হরে মোর ক্ষুধা, তোমার সে সুধা,
বচনে কেবল মধু।
তুলি অধোমুখ, খণ্ড মোর দুঃখ,
কহ শুনি প্রাণবধূ।।
হেন লয় চিতে, স্বামিগণ প্রীতে,
কৈলা বধূ হেন বেশ।
দুঃশাসন দোষে, কৌরব বিনাশে,
মুক্ত কৈলা প্রায় কেশ।।
ধন্য তব ক্ষমা, ক্ষিতি নহে সমা,
দগ্ধ না করিলা ক্রোধে।
ধর্ম্ম সেবী সব, সকলি সম্ভব,
তেঁই কৈলা উপরোধে।।
না করহ মান, না ভাবহ আন,
ধাতা নারে খণ্ডিবারে।
পাল সত্য ধর্ম্ম, কর সাধুকর্ম্ম,
ধর্ম্ম রাখে ধার্ম্মিকেরে।।
তুমি সত্য জিতা, সতী পতিব্রতা,
আমি কি করাব শিক্ষা।
সহ স্বামিগণ, যাইতেছে বন,
আমি মাগি এক ভিক্ষা।।
কনিষ্ঠ নন্দন, আমার জীবন,
তুমি জান ভালমতে।
সহজে বালক, বনে মহাদুঃখ,
সদা দেখিবা স্নেহেতে।।
সুকুমার দেহ, প্রাণাধিক স্নেহ,
আপনি করিবা তুমি।
কুন্তী ইহা বলি, যেমন বাতুলী,
মূর্চ্ছিতা পড়িলা ভূমি।।
বিচিত্র স্ঙ্গীত, শ্রবণে অমৃত,
পাণ্ডবের বনবাস।
কাশীদাস কহে, পূর্ব্বপাপ দহে,
পুরাণে কহিল ব্যাস।।