০৪.
সামনে দীর্ঘ সময়
পরের দিন সকালে সাড়ে আটটায় আমি আমার টেলিফোন অপারেটরকে ডাকলাম, ডোরিস আমি বেরিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে আমি মিঃ হামিশের বাড়িতে যাবো। সাড়ে নটা নাগাদ পৌঁছব সেখানে। এর মধ্যে কিছু দরকার হলে আমাকে ওখানে সোয়া দশটা পর্যন্ত পাবে।
ডোরিসকে জানিয়ে রাখা দরকার যে আমি সাড়ে নটায় হামিশের বাড়িতে থাকছি। এটা নিশ্চিত যে ডেসি ফ্লিমটা শুরু হবার আগেই ডেলানি টি. ভি. চালাতে চেষ্টা করবেন। টাইম সুইচ ক্লকটা তখন সেটের মধ্যে কারেন্ট খেতে দেবে না, ফলে সেট চলবে না। উনি ভাববেন খারাপ হয়ে গেছে, আমাকে নিশ্চয় ডাকবেন। ডোরিস খবরটা পেয়ে হামিশের বাড়িতে আমাকে খবর দেবে। আমি হামিশকে বলবো যে ডেলানি আমাকে যেতে বলেছেন। এতে আমি সবাইকে বুঝিয়ে দিতে পারবো যে কেন আমাকে ব্লু-জয় কেবিনে যেতে হয়েছিল। এবং সেইজন্য আমি-ই প্রথম ব্যক্তি যে ডেলানির মৃতদেহ দেখতে পাবো। ডাঃ ম্যালার্ড আর শেরিফকে ডাকার আগে আমাকেই প্রথম ঘটনাস্থলে হাজির হতে হবে।
পাহাড়ী পথটায় জোরে গাড়ি চালিয়ে আমি সেই জায়গাটায় পৌঁছে গেলাম, যেখান থেকে ডেলানির বাড়িটা দেখা যায়। ঘড়িতে তখননটা বাজতে দশ। দূরে বাড়িটার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
গিল্ডা কি গ্লীন ক্যাম্পে যাবে? না কি রিমোট কন্ট্রোল সুইচ সামলাবার জন্য আমাকে পাগলের মত দৌড়ে ঐ বাড়িতে যেতে হবে? মিনিট সাতেক লাগবে আমার ওখানে পৌঁছতে, নটা কুড়ি পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করতে পারি তার বেশি নয়।
গাড়িতে বসে আছি হঠাৎ দেখলাম গিল্ডা গ্যারেজের দিকে চলেছে। কোন সন্দেহ রইলো না যে গিল্ডা গ্রীন ক্যাম্পে গেল, যেমন প্রতি শুক্রবার যায়, দুপুরের আগে ফিরবে না।
বাড়িটার দিকে তাকালাম। এখন সোয়া নটা, আধঘন্টার মধ্যেই উনি মারা যাবেন। হামিশের বাড়ি যেতে যেতে আমি ডেলানির কথাই ভাবছিলাম। কি জানি এখন উনি কি করছেন।
সাড়ে নটা বাজতে মিনিট দুই বাকি আমি হামিশের বাড়ি গেলাম। হামিশ চেয়ারে বসে আছেন কানে রিসিভার। আমাকে দেখে মাথা নাড়লেন। এই যে উনি এসেছেন, আপনি ধরুন, তারপরে আমাকে বললেন, মিঃ রেগান, আপনার ফোন।
বুঝতে পারলাম ডোরিস ফোন করছে, আমি বললাম, ডোরিস বলছে? এক ধাক্কায় সোজা হয়ে দাঁড়ালাম।
টেরি, আমি কথা বলছি।
গিল্ডা? কোথা থেকে বলছো?
আমি তোমার বাড়ি থেকে বলছি, টেরি, আমি ওকে চিরদিনের মতো ছেড়ে চলে এসেছি।
আমার মনে হলো কেউ যেন আমার হৃদপিণ্ডে গুলি করেছে।
ছেড়ে এসেছ? কি বলছো তুমি? তুমি তো ছাড়তে পারবে না বলেছিলে।
কাল রাত্তিরে আমাদের মধ্যে দারুণ কাণ্ড হয়ে গিয়েছে। আজ সকালেও হয়েছে একবার। টেরি, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। একেবারে চলে এসেছি আমি, তোমার সঙ্গে এ ব্যাপার নিয়ে কথা বলবো বলে এসেছি। আমি ডিভোর্স নেবো।
আমি প্রায় কিছুই শুনছিলাম না। যখন ও চলেই এসেছে তখন আর ডেলানির মরবার কোনো কারণ নেই। ঘড়িটা দেখলাম। খুন করার হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য আর দু মিনিট আছে।
গিল্ডা, তুমি অপেক্ষা করো, এখন কথা বলতে পারছি না। এক ঘণ্টার মধ্যেই আমি তোমার কাছে যাবো।
আমি লাইন কেটে দিলাম। তারপরে প্রাণপণে ডেলানির নম্বর ঘোরালাম। হাত দুটো ঘামে ভিজে গিয়েছে। কানে রিসিভার ধরে রইলাম আমি। ঘন ঘন নিঃশ্বাস পড়ছে আমার। ওদিকে রিং, বেজে যাচ্ছে শুনতে পাচ্ছিলাম বুঝতে পারলাম খুব দেরী হয়ে গেছে।
ঘড়িতে পৌনে দশটা বাজা পর্যন্ত টেলিফোন ধরে রইলাম আমি। তারপরে খুব ধীরে ধীরে রিসিভার নামিয়ে রাখলাম।
এতক্ষণে ডেলানি মারা গিয়েছেন, আর আমিই ওঁকে মেরেছি। ওঁর মরবার কোনো দরকার ছিল না। গিল্ডা কেবল ওঁকে ত্যাগ করে এসেই মুক্তি পেয়ে গিয়েছে।
যাই হোক, এখন নিজের কথা ভাবা প্রয়োজন। মন আমার আতঙ্কে ভরে গৈলো।
হামিশকে আসতে দেখে আমি নিজেকে সহজ রাখার চেষ্টা করলাম। রেডিওগ্রামটায় আমার আনা গ্যাজেটটা লাগিয়ে দিলাম।
উনি বললেন, আমি এই রকমই একটা চাইছিলাম।
প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে আমি ওঁকে গ্যাজেটটার সব কিছু বোঝালাম। নিজেই ঠিক করতে পারছিলাম না যে আমি কি বলছি। কিন্তু হামিশের জিনিসটা এতো ভালো লেগেছিল যে উনি কিছুই নজর করেন নি।
খুব ভালো, আমি এখুনি একটা চেক লিখে দিচ্ছি।
আমার হঠাৎ মনে পড়লো ডেলানি ডোরিসকে ফোন করেন নি। হামিশকে বলতে হবে যে আমি ডেলানির ওখানে যাবো, কোনো তদন্ত হলে আমি কেন প্রথমে ওর মৃতদেহ দেখতে পেলাম তার একটা কারণ দেখাতে হবে।
যদিও মনে হয় না, তবু ডোরিস হয়তো আমাকে ডাকতে ভুলে গিয়েছে।
আমি খুবই বিপদে পড়লাম। যদি ডেলানি মারা গিয়ে থাকেন, তবে ওঁর বাড়িতে যেতে আমার সাহস হচ্ছে না। আর যদি উনি বেঁচে থাকেন তাহলে ঐ রিমোট কন্ট্রোল যাতে না ছুঁয়ে ফেলেন তার ব্যবস্থা আমাকে করতে হবে।
আমি আর দাঁড়ালাম না। হামিশ চেক লিখে দিয়েছিলেন। আমি ডেলানিকে ফোন করলাম। কয়েক সেকেন্ড ধরে টেলিফোনটা বাজছে শুনে ছেড়ে দিলাম।
হামিশ চেকটা আমাকে দিলেন। সেটা পকেটে পুরে নিয়ে বললাম, আমাকে একবার ডেলানির বাড়িতে যেতে হবে। ওঁর জন্য একটা সেট বানিয়ে দিয়েছি। কেমন চলছে একটু দেখতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকালাম এগারোটা বাজতে কুড়ি।
বিদায় নিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দিলাম। গাড়িটা খুব জোরে চালাই নি। নার্ভের ওপরে চাপ পড়ছিল। স্টিয়ারিং চেপে ধরেছিলাম। ওখানে কি দেখবো জানি না। উনি কি বেঁচে আছেন?
যা কোনদিন করিনি তাই করলাম। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে লাগলাম আমি। যেন বাড়িতে ঢুকে দেখতে পাই ডেলানি বেঁচে আছেন।
ব্লু-জয় কেবিনের সামনে গাড়িটা দাঁড় করাচ্ছি যখন, মেল ভ্যান এসে পাশে দাঁড়ালো। হ্যাঁঙ্ক ফ্লেচার–গ্রীন ক্যাম্পের পিওন খুশি হয়ে হাসলো, জানলা দিয়ে দুটো চিঠি বাড়িয়ে ধরলো।
মিঃ ডেলানির কাছে যাচ্ছেন? এ দুটো নিয়ে যাবেন? আমাকে আর তাহলে ঢুকতে হয় না।
এটা একদিক থেকে ভালোই হলো। আমি ঠিক কটার সময় এখানে এসেছি, আর একজন সাক্ষী পাওয়া গেল।
দুটো চিঠিই ডেলানির, সে দুটো পকেটে রেখে গেটটা খুলে গাড়িটা ঢুকিয়ে দিলাম। বুকের মধ্যে ধক্ ধক্ করে উঠলো। ডেলানি কি মারা গিয়েছেন? আমি কি ওঁকে খুন করলাম? গাড়ি থেকে নেমে নিস্তব্ধ বারান্দার দিকে তাকালাম। ধীরে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলাম। লাউঞ্জের দরজাটা খোলা, একটু থামলাম। ভেতরে টেলিভিশন পর্দাটা একটা ধবধবে চোখের মতো তাকিয়ে রয়েছে।
এগিয়ে গিয়ে থমকে দাঁড়ালাম, ডেলানি মাটিতে পড়ে আছেন, মুখটা দুহাতে ঢাকা, মারা না গেলে কেউ ওভাবে পড়ে থাকতে পারে না। শরীরে একটা বীভৎস কাঠিন্য দেখেই বোঝা যাচ্ছে, উনি মারা গেছেন। মনে মনে ভাবলাম আমিই এর জন্য দায়ী। আমিই ওঁকে খুন করেছি।
ধীর পায়ে লাউঞ্জে ঢুকলাম। এখন আমার বিপদটা অনুভব করতে পারলাম। যদি একটা কিছু ভুল হয় তবে আমাকেও মরতে হবে। আমি জানি এখন প্ল্যান অনুযায়ী চলতে হবে। কেবল এক এক করে সব কিছু করে যেতে হবে। তাহলেই আমি নিরাপদ।
মেন সুইচটা বন্ধ করে দিয়ে প্লাগটা খুলে দিলাম। নীচু হয়ে ডেলানির ঘাড়ে আমি হাত রাখলাম। আঙুলে ওঁর ঠাণ্ডা চামড়া ছুঁয়েই বুঝলাম যে উনি মারা গেছেন। বারান্দার দরজাটা বন্ধ করে দিলাম। টি. ভি. সেটের পেছনের প্যানেলটা খুলে ফেললাম। টাইম সুইচ কুকটা বার করে দিয়ে রিমোট কন্ট্রোলের তারটা খুলে ফেললাম। তারপর আবার ঠিক জায়গা মতো বসিয়ে দিলাম সব।
কাজটা পাঁচ মিনিটেই হয়ে গেল। ক্লকটা নিয়ে গাড়িতে সিটের তলায় রেখে এলাম। মেন্ লাইনের তারটা বদলে আগের রাত্রের মতো করে দিলাম।
একটা কোনো খুচরো যন্ত্রের বাক্স, চাই, আঁতিপাঁতি করে খুঁজতে লাগলাম। পেয়ে গেলাম একটা, দুটো স্ক্রু-ড্রাইভার ছিল তাতে, একটা পুরোপুরি ইস্পাতের। সেইটাই নিয়ে এসে ডেলানির হাতের কাছে ফেলে রাখলাম।
রিমোট কন্ট্রোল সুইচের রবারের ঢাকনাগুলো পরিয়ে দিলাম আবার। টি. ভি. সেটটা ঘুরিয়ে বসালাম যাতে পেছনের খোলা দিকটা ডেলানির শরীরের দিকে থাকে।
দুরে সরে এসে সবটা দেখলাম। সব ঠিকই আছে কেবল একটা খালি গ্লাস ডেলানির পাশে কার্পেটের ওপর গড়াচ্ছে। মনে হলো এটা ঠিক মানাচ্ছে না। হয়তো মরবার আগে ডেলানি মদ খাচ্ছিলেন। গ্লাসটা তুলে নিলাম। তদন্তে কোনো ঝামেলা হয় এটা আমি চাই না। ব্যাপারটা যতটা পারা যায় স্বাভাবিক করে রাখাই ভালো। জো স্ট্রংগার যদি সন্দেহ করে যে ডেলানি মাতাল হয়েছিলেন তাহলে সে হয়তো অনেক বেশি করে খোঁজ খবর করবে। গ্লাসটা রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখলাম। একটা কাপড় দিয়ে ধরে রেখেছিলাম পাছে আমার আঙুলের ছাপ না পড়ে যায়। কাবার্ডে গেলাসটা রেখে দিলাম।
লাউঞ্জে ফিরে এলাম। সমস্ত কিছু সাজাতে দশ মিনিট লেগেছে।
এখন শেরিফ জেফারসনকে খবর দেওয়া যেতে পারে।
টেলিফোন তোলার আগে আমি আর একবার চারিদিকে দেখে নিলাম। সবটা বিশ্বাসযোগ্য লাগছে কি না। ডেলানি টি. ভি.র সামনে পড়ে আছেন, সেটটার পেছনটা ভোলা ওঁর দিকেই ফেরানো। হাতের কাছে স্ক্রু-ড্রাইভার, কেউ দেখলে এই কথাই ভাববে যে উনি সেটটার কোনো মেরামতি করতে গিয়েই শক খেয়েছেন।
এই ধরনের ব্যাপার আগেও অনেক ঘটেছে। মাঝে মাঝেই কাগজে বের হতে যে কেউ এরকম চালু অবস্থায় টি. ভি. সেট সারাতে গিয়ে মরেছে।
টেলিফোন তুলতে গিয়ে আমার হঠাৎ মনে হলো সেটটার তো কোন গোলমাল নেই। আমি প্রায় একটা ভুল করে ফেলছিলাম। কোনো দোষ না থাকলে ডেলানি একে সারাবার চেষ্টা করতে যাবেন কেন? কোনোরকম তদন্ত হলে সেটটা চালিয়ে যদি দেখা যায় যে এটা ঠিকমত কাজ করছে তাহলে পুলিশ তখনই সন্দেহ করবে।
আমার যন্ত্রের বাক্স থেকে একটা স্ক্রু-ড্রাইভার নিলাম, এটার গায়ে রবার জড়ানো। সেটটা খুলে টার্মিনালে ভ্রু–ড্রাইভারের মুখটা ঠেকিয়ে দিলাম। একটা ঝলকানি দেখা গেল, কটা ভাল্ভ পুড়ে গেল, ধোঁয়া বের হলো একটু।
টেলিফোন তুলে শেরিফ জেফারসনকে ডাকলাম। শেরিফ? কণ্ঠস্বরে জরুরী ভাব আনবার জন্য চেষ্টা করতে হলো না। এতক্ষণে ব্যাপারটা আমাকে যথেষ্ট ধাক্কা দিয়েছে, ভেতরে ভেতরে বেশ খারাপ লাগছে। টেরি রেগান বলছি। আপনি এখনই একবার ব্লু-জয় কেবিনে চলে আসুন। একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। ডেলানি মারা গেছেন।
তাই নাকি! ওঁর গলার স্বরটা শান্ত। আমি এখনই যাচ্ছি।
ডাক্তারকে নিয়ে আসবেন।
ও এখানেই আছে, দুজনেই যাচ্ছি। টেলিফোন ছেড়ে দিলেন, ওঁর এখানে আসতে আধঘণ্টা লাগবে।
আমি একটু সময় পেলাম। গিল্ডার কথাই মনে হলো।
আমার হঠাৎ মনে হলো যে, যদি কোনো গোলমাল হয় পুলিশ যদি জানতে চায় ডেলানির মৃত্যুর সময় থেকে গিল্ডা কোথায় ছিল। পুলিশ সন্দেহ করবে আমাদের মধ্যে কোনো ব্যাপার আছে। ওরা তাহলে হত্যার মোটিভটা আন্দাজ করবে। গিল্ডা আমার ঘরে দেড় ঘণ্টা হলো অপেক্ষা করছে।
গিল্ডার জন্য একটা অ্যালিবাই বানাতে হবে আমায়। কিন্তু প্রথমে ওকে গ্লীন ক্যাম্পে পাঠানো দরকার। আমি বাড়িতে ফোন করলাম। গিলা ধরলো।
আমি বললাম, যা যা বলছি কোনো প্রশ্ন না করে ঠিক ঠিক ভাবে সেগুলো করে যাও। খুব জরুরী।
নিশ্চয় করবো টেরি। কোনোরকম গোলমাল হয়েছে নাকি?
আমি চাই তুমি এখনই গ্লীন ক্যাম্পে চলে যাও। রাস্তা দিয়ে যাবেনা লেকের পাশ দিয়ে যাবে। পথে জেফারসনের সঙ্গে ওর দেখা হয়ে যাক, এটা আমি চাই না। সেখানে গিয়ে যেমন হপ্তা শেষে কেনাকাটা করো, তাই করবে। সাড়ে বারোটার আগে আসার দরকার নেই। বুঝেছো?
কিন্তু টেরি, কেন? আমার কোনো কেনাকাটা করবার নেই। আজ বিকেলে আমি লস্ এঞ্জেলসে যাবো।
গিল্ডা! দোহাই! এটা খুব জরুরী! একটা বিপজ্জনক কিছু ঘটেছে। প্রশ্ন না করে যা বলছি তাই করো। তোমার ফেরার পথে মোড়ের মাথায় পৌনে একটার সময় আমি দেখা করবো, তখন তোমায় সব বলবো। সঙ্গে তোমার মালপত্র নিয়েছ নাকি?
হ্যাঁ
ওগুলো যেন দেখা না যায়। গাড়ির পেছনে ঢুকিয়ে দাও। কেউ যেন জানতে না পারে যে তুমি ডেলানিকে ছেড়ে গেছ। যখন দেখা হবে সব বুঝিয়ে বলবো।
টেলিফোন ছেড়ে দিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। নার্ভগুলো যেন কুঁকড়ে যাচ্ছে। মিনিট কুড়ি ধরে সিগারেট খেতে খেতে মনটাকে হালকা করতে লাগলাম।
এমন সময় শেরিফের গাড়ির শব্দ পেলাম আমি।
জেফারসন আর ডাঃ ম্যালার্ড সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলেন।
ডাক্তারকে খুব বৃদ্ধ ও ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। একটা কালো ফ্রক কোট, কালো প্যান্ট পরনে, প্যান্টের নীচের দিকটা রাইডিং বুটের মধ্যে ঢোকানো।
জেফারসন জানতে চাইলেন, মিসেস ডেলানি বাড়ি আছেন কিনা।
না। উনি বোধহয় গ্লীন ক্যাম্পে কেনাকাটা করতে গেছেন।
আমি ওদের লাউঞ্জের দিকে নিয়ে গেলাম।
আমি যখন দেখি তখন ঠিক এইভাবেই উনি পড়েছিলেন। মনে হচ্ছে উনি সেটটার কিছু করতে গিয়েছিলেন, কোথাও খুঁয়ে ফেলে শক্ খেয়েছেন। উনি নিশ্চয়ই খুব অসাবধান হয়ে কাজ করছিলেন। যে স্ক্রু-ড্রাইভারটা নিয়েছিলেন সেটায় কোনো রবারের ঢাকনা ছিল না। ওটা ওঁর হাতের কাছেই পড়েছিল।
ডাক্তার ভালো ভাবে ডেলানির দেহটা দেখতে লাগলেন। প্রায় তিনঘণ্টা হলো শেষ হয়েছেন। রাইগার মটিশ অনেকদূরে ছড়িয়েছে। দেহটাকে ঘুরিয়ে দেওয়া হলো।
ডেলানির মুখে নীল ছোপ ধরেছে। চোখ দুটো ঘোলাটে, ঠোঁটে যন্ত্রণার চিহ্ন, বীভৎস দেখাচ্ছে।
ডাক্তার বললেন, শক খেয়ে মারা গেছেন। কোনো সন্দেহ নেই। নীল ছোপটা একটা নিশ্চিত চিহ্ন। চেয়ারটার পুরোটা ধাতব। সারা শরীরে শকটা সমানভাবে ছড়িয়ে গেছে।
জেফারসন টি. ভি. সেটটার দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখতে লাগলেন। উনি আমার কাছে জানতে চাইলেন কি করে ব্যাপারটা হলো? আমি বললাম, আপনি যদি ইস্পাতের স্ক্রু-ড্রাইভার নিয়ে টি.ভিতে কাজ করতে যান, তাহলে বিপদ হবেই। কোথাও ছুঁয়ে ফেললেই সর্বনাশ।
সেটটায় কি কোনো গোলমাল ছিল?
এখানে একটা তার খোলা দেখছি। আমারই বানিয়ে রাখা ঢিলে করা তারটা দেখালাম।
জেফারসন আর ডাক্তার ভেতরটায় উঁকি দিলেন।
কি করে ঢিলে হলো এরকম, তুমি কিছু বুঝতে পারছ? জেফারসন জিজ্ঞেস করলেন।
জোড়টা খুলে গিয়েছিল। ডেলানি খুব তাড়া দিচ্ছিলেন, আমি এটা খুব তাড়াতাড়ি তৈরী করে দিয়েছিলাম। উনি ডেম্পসির মারপিটের ছবিটা দেখতে চেয়েছিলেন। আমার মনে হয় সেটটা চলছে না দেখে উনি আমায় না ডেকে নিজেই ঠিক করতে গিয়েছিলেন। তার ফলেই এরকম হয়েছে।
উনি যদি তোমায় না ডাকেন তবে তুমি এখানে কেন এসেছিলে?
আমি বললাম, সেটটা ডেলিভারী দেওয়ার পর, এ পর্যন্ত আমি এটা দেখতে আসিনি, হামিশের বাড়িতে এসেছিলাম, ফিরে যাবার পথে ভাবলাম একবার দেখে যাই, উনি ঠিকমতো কাজ পাচ্ছেন কিনা। এসে ওঁকে এইভাবে দেখলাম।
জেফারসন দেহটার কাছে এগিয়ে গেলেন, অ্যাম্বুলেন্সে খবর দিতে হবে। মিসেস ডেলানি আসার আগেই একে সরিয়ে ফেলা দরকার।
শেরিফ আমাকে যদি দরকার না হয়, আমি গ্লীন ক্যাম্পে গিয়ে মিসেস ডেলানিকে খবরটা দিতে পারি। আমি বললাম।
তাই করো। উনি খুব আঘাত পাবেন। অ্যাম্বুলেন্স চলে না যাওয়া পর্যন্ত ওঁকে আটকে রাখো। ওঁকে বোলো, আমি এখানেই কিছুক্ষণ থাকবো। ওঁর সঙ্গে একটু কথা বলবো। একটা তদন্ত হবে, তবে ঝামেলার কিছু নেই।
আমি বেরিয়ে গেলাম। গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবতে লাগলাম যে যদি একটা বিরাট ভুল না করে থাকি তাহলে এই খুনের দায়ে আমাকে কেউ জড়াতে পারবে না।
গিল্ডা মোড়ের মাথায় আমার জন্য দাঁড়িয়েছিল ওর মুখটা বিবর্ণ ও উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল।
কি ব্যাপার টেরি?
গিল্ডা একটা খারাপ খবর আছে, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ওর চোখ দুটো আতঙ্কে কালো হয়ে গেলো।
জ্যাকের কিছু হয়েছে?
আমি ওর হাত দুটো ধরে বললাম, উনি মারা গেছেন।
গিল্ডা চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো, সাদা হয়ে গেল মুখটা। একটু পরেই চোখ খুলে বললো, দুর্ঘটনা? তার মানে? কি হয়েছিল?
উনি শক্ খেয়ে মারা গেছেন। শেরিফ জেফারসন আর ডাঃ ম্যালার্ড ওখানেই আছেন।
শক খেয়েছে? আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
দূর থেকে একটা সাইরেনের শব্দ কাছে আসছে শুনে দুজনেই শক্ত হয়ে গেলাম। প্লীন ক্যাম্প অ্যাম্বুলেন্সটা আমাদের পাশ দিয়ে ঝড়ের মতো চলে গেল। বুইকের দরজা খুলে আমি ভেতরে ঢুকে গিল্ডার পাশে বসলাম।
টি. ভি. সেটটার একটা তার খুলে গিয়েছিল, আমি বললাম।
ওঁর ডেম্পসির মারপিঠের ছবিটা দেখার খুব আগ্রহ ছিল। যখন দেখেছেন যে টি. ভি. কাজ করছেনা, নিজেই নিশ্চয় কিছু ঠিক করতে গিয়েছিলেন। তাতেই প্রচণ্ড শক খেয়েছেন। চেয়ারটাও ধাতব ছিল, কোনো কিছু করার ছিল না।
গিল্ডা হঠাৎ মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করে দিল। আমি অপেক্ষা করতে লাগলাম।
একটু পরে ও সামলে নিয়ে বললো, তুমি এসব জানলে কি করে? তুমি তো তখন ওখানে ছিলে না।
নিশ্চয়ই ছিলাম না। আমি মিঃ হামিশের বাড়িতে ছিলাম, ফেরার পথে তোমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে আসতে হয়, সেটা কি রকম চলছে দেখার জন্য ঢুকেছিলাম, তখন দেখতে পেলাম…।
গিল্ডা চোখ মুছতে মুছতে বললো, যখন তুমি জানতে যে আমি ওকে ত্যাগ করে এসেছি আর তোমার জন্য অপেক্ষা করছি তারপরও তুমি ওখানে গিয়েছিলে?
সোজাসুজি ওর চোখের দিকে তাকাতে আমার অস্বস্তি হতে লাগলো। গিল্ডা আমি তাকে সেটটা বিক্রী করেছি কিন্তু এখনও দাম পাইনি। আমার এতে অনেক টাকা লেগেছিল।
তুমি ভেতরে গিয়ে ওকে দেখতে পেলে?
হ্যাঁ, এখন গিল্ডা, ওরা যেন জানতে না পারে যে, তুমি জ্যাককে ছেড়ে চলে আসছিলে। এই জন্যই আমি তোমাকে গ্লীন ক্যাম্পে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবে কেনাকাটা করতে বলেছিলাম।
কিন্তু আমি ওকে ছেড়ে যাচ্ছিলাম এটা না জানাবার কারণ কি?
একটা তদন্ত হবে, করোনার নানা প্রশ্ন করবেন। যদি জানাজানি হয় তুমি ওকে ছেড়ে যাচ্ছিলে, তাহলে নানারকম কথা উঠবে। এটা ঝামেলার ব্যাপার হতে পারে গিল্ডা। তুমি জানো না, এ জায়গাটায় কি রকম কেচ্ছা রটে! এমন কি ওরা ভাবতে পারে যে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। যদি এটা জানাজানি হয় যে, আমার জন্য তুমি আমার বাড়িতে গিয়েছিলে, আমার জন্য অপেক্ষা করছিলে, সবাই আমাদের জড়িয়ে গল্প ফাঁদবে, বুঝতে পারছ তো?
গিল্ডা বললো, আমার মনে হয় ও আত্মহত্যাই করেছে। কালরাত্রে আমাদের দারুণ ঝগড়া হয়েছিল, আবার আজ সকালেও আমি ওকে বলেছিলাম যে আমি ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। হয়তো সেটাই আমার দোষ। আমার জন্যেই এরকম হলো। তুমি যদি তখন ওর মুখটা দেখতে…
ওসব ছাড়ো। এটা একটা দুর্ঘটনা। সেটটা চালু করতে গিয়েছিলেন, এমন কিছু ছুঁয়ে ফেলেছিলেন, যাতে শক্ খেয়েছেন। একটা ইস্পাতের স্ক্রু-ড্রাইভার নিয়েছিলেন, চেয়ারটাও ইস্পাতের…।
এছাড়া পেছনের সেটটা তিনি খুলে ফেলেছিলেন, একটা স্ক্রু-ড্রাইভার তখন তার হাতে ছিল,
গিল্ডার ভুরু কুঁচকে উঠলো। আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না, ও তো হাতের কাজ কিছু করতো না। কখনো ও এসব মেরামতের কাজে হাত দিত না। সেটটা মেরামত করার কথা ও চিন্তাও করতে পারে না।
একথাটা আমি ভেবে দেখিনি, তদন্তের সময়ে একথা বললে, করোনারের সন্দেহ হতে পারে। আমি বললাম, কদিন আগে একটা ছবি দেখার জন্য উনি পাগল হয়েছিলেন। আমাকে টেলিফোন করে জানতে চাইলেন সেটটা কি করে অ্যাডজাস্টকরতে হয়। তুমি তো জানই মারপিটের ব্যাপারে উনি কেমন আগ্রহী। ছবিটা হচ্ছে না দেখে, পেছনটা খুলে উনি তারটা লাগাবার চেষ্টা করতে গিয়ে শক্ খেয়েছেন।
গিল্ডার চোখে সম্পূর্ণ অবিশ্বাস। উত্তেজিত ভাবে জিজ্ঞেস করলো, ওর পাশে স্ক্রু-ড্রাইভার ছিল বললে না?
আমি ঘামতে শুরু করলাম। আমার মনে পড়লো যে যন্ত্রপাতির বাক্সটা স্টোরের ওপরের তাকে ছিল, তাকটা মাটি থেকে অন্ততঃ সাত ফিট উঁচুতে। ডেলানি চেয়ার থেকে নড়তেই পারেন না, তার পক্ষে এটা পেড়ে নেওয়া সম্ভব নয়। একটা বিচ্ছিরি ভুল করে ফেলেছি।
একটু সামলে নিয়ে বললাম, গিল্ডা, এটাকে রহস্যময় করে তোলার চেষ্টা করো না। সেটটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। চারিদিকে খুঁজেছেন বাক্সটা, একটা লাঠি দিয়েও টেনে নামাতে পারেন। বাক্সটা মাটিতেই ছিল দেখেছি। তুমি ব্যাপারটা জটিল করে তুলছ। আমি বুঝতে পারলাম ও কিছুই শুনছে না। ও কি সন্দেহ করছে, যে আমিই তাকে খুন করেছি?
মনে মনে ভাবলাম, ব্যাপারটা একে একে জটিল হয়ে উঠছে। যদি আমি গিল্ডাকে বোঝাতে না পারি, আর ও যদি করোনারকে বলে যে ডেলানি আত্মহত্যা করেছে। এবং কাগজে বের হয়, তাহলে লস্ এঞ্জেলসের পুলিশ তদন্ত করতে আসবেই। উনি নেশা করেছিলেন। আমি দেখেছি ওঁর পাশে হুইস্কি আর গ্লাস ছিল। ঠিক আছে তোমার কথা অনুযায়ী উনি ভেঙে পড়েছিলেন, এবং বিচলিত হয়েছিলেন। টি. ভি. চালিয়ে তোমার ব্যাপারে অন্যমনস্ক হতে চাইছিলেন। ওটা চলছে না দেখে রেগে গিয়েই হয়তো সারাতে গিয়েছিলেন। একজন অসুখী মাতালের পক্ষে যা করা সম্ভব তাই হয়েছে।
আমি বিশ্বাস করি না ও এরকম করতে পারে।
গিল্ডা এটা দুর্ঘটনা। তুমি যদি করোনারকে বলো উনি আত্মহত্যা করেছেন, খবরের কাগজে বেরোবে সেটা, তোমাকে আমাকে নিয়ে কেচ্ছা রটবে, আমাদের জীবন বরবাদ হয়ে যাবে।
ঠিক আছে টেরি, ও যেন হঠাৎ ব্যাপারটা ছেড়ে দিল। আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, তবু মনে হয় না কিছু যায় আসে, ও মারা গেছে, আমি স্বাধীন, এটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন।
গিল্ডা আমাদের হাতে আর বেশি সময় নেই, সাবধান হতে হবে। এখন যা বলবো একটু পাগলামো মনে হলেও শোনো। তদন্ত হবে একটা, আমরা যে প্রেমিক প্রেমিকা এটা যেন কেউ না জানে। তাহলে আমরা মুস্কিলে পড়ে যাবো। পুলিশ হয়তো জানতে চাইবে, ওই সময়ে তুমি কোথায় ছিলে, তুমি যে ওই সময় আমার বাড়িতে ছিলে এটা বলা খুব ভুল হবে। তুমি বলবে যে তুমি নটার সময় যেমন গ্লীন ক্যাম্পে যাও, তেমনি গিয়েছিলে, লেক রোড দিয়ে গিয়েছে। পথে টায়ার ফেটেছিল। টায়ার বদলাতে অনেক সময় লেগেছে সাড়ে এগারোটার আগে তুমি গ্রীন ক্যাম্পে পৌঁছতে পারেনি।
আমি লক্ষ্য করলাম সে শক্ত হয়ে গেল। আমার দিকে বিব্রত হয়ে তাকালো।
কিন্তু এ কথা কি করে বলবো এ তো সত্যি নয়।
আমি যতোটা সম্ভব গলার স্বর সংযত করে বললাম, ওরা যদি জানতে না চায় তবে কিছু বলার প্রয়োজন নেই, কিন্তু যদি জানতে চায় তবে এই গল্পটাই তোমাকে বলতে হবে। না হলে আমাদের দুজনেরই বিপদ। আমি তোমার স্পেয়ার টায়ারটা ফাঁসিয়ে দিচ্ছি, যদি ওরা দেখতে চায়–
টেরি গিল্ডা আমার হাত চেপে ধরলো, তুমি কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো? এমন করছে যেন আমি কোন অন্যায় করেছি।
শুধু তুমি একা নও, আমিও, আমরা দুজনেই ভুল করেছি। আমরা ভালোবেসেছি গি। তুমি, কি বুঝছে না যে, লোকের সহানুভূতি হবে একজন পর ওপরেই। উনি মারা যাবার আগে আমরা প্রেমে পড়েছি একথা যদি ছড়িয়ে যায়, কেউ কি আমাদের জন্য সহানুভূতি দেখাবে? সব কাগজের প্রথম পাতায় আমাদের কলঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে। আমি তোমাকে বাঁচাতে চাই গিল্ডা তাই যা বলছি তাই তোমাকে করতে হবে।
ঠিক আছে, তাই হবে, আমি এখন ঠিকমতো ভাবতে পারছি না, কিন্তু তুমি যা বলছে তাই হবে।
বুইক থেকে বেরিয়ে পেছনে স্পেয়ার টায়ারটা পরীক্ষা করলাম তারপর সেটাকে অকেজো করলাম। আমি গিল্ডাকে জানিয়ে দিলাম যে, এখন থেকে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পরস্পরের দেখা না হওয়াই ভালো। তদন্তের পরে তুমি লস এঞ্জেলসে যাবে। সেখানে ঘর ভাড়া নেবে। আমি তোমার সঙ্গে ওখানে গিয়ে দেখা করতে পারবো। তারপরে কয়েকমাস বাদে বিয়ে করবো। এখান থেকে আমরা চলে যাবো। তোমার কাছে ওর টাকা থাকবে। আমরা দোকানকরবো। তুমি এখন স্বাধীন, কিছুদিন বাদেই আমরা মিলিত হবো। ওর হাতে আমি হাত রাখলাম।
একটা গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল, আমরা দুজনেই দুজনের দিকে তাকালাম। দুজনেরই খুব খারাপ লাগলো। আমরা বুঝতে পারলাম অ্যাম্বুলেন্সে কি আছে।
ওখানে যাও গিল্ডা, আমি বললাম, জেফারসন অপেক্ষা করছেন। চিন্তা করোনা। একবার তদন্ত শেষ হলে চিরদিন আমরা একসঙ্গে থাকব।
মনে মনে বললাম চিরদিন মানে একটা সুদীর্ঘ সময়।