৪. বড়লোকের বাগানবাড়ি

শবর যে বাড়িটায় নিয়ে এল বিভাবরীকে, তা যে বড়লোকের বাগানবাড়ি তা দেখলেই বোঝা যায়। চারদিকে অনেকটা জমিতে ভারী সুন্দর নিবিড় গাছপালা। সামনে ফুলের বাগান। এই বর্ষাকালের শেষেও বাগানে ফুলের অভাব নেই। বাংলো প্যাটার্নের চমৎকার বাড়ির সামনে একটা মনোরম বারান্দা। তারপর ঘর টর।

এটা কার বাড়ি শবরবাবু?

একজন বড়লোকের। কেউ থাকে না। ফাঁকা পড়ে থাকে। শুধু মালি আছে।

জিপটা একেবারে বারান্দার কাছ ঘেঁষে দাঁড়াল। শবর জিপ থেকে নেমে বলল, আসুন।

কেউ নেই তো এখানে দেখছি।

আসবে। কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।

ভিতরে ঢুকে বিভাবরী চারদিকে চেয়ে দেখল। বৈঠকখানাটা কী সুন্দর করে যে সাজানো! বেশি আসবাব নেই। কিন্তু, রুচির পরিচয় আছে।

এখানে নয়, ভিতরের ডাইনিং হল-এ।

বিভাবরী বলল, ঠিক আছে।

ডাইনিং হলটাও দারুণ সাজানো। গ্লাস টপ মস্ত খাবার টেবিল ঘিরে গদি আঁটা চেয়ার। ভারী নরম। এয়ার কন্ডিশনার চলছে বলে ভ্যাপিসা গরম থেকে এসে ভারী আরাম বোধ করল। বিভাবরী। চারদিক নিস্তব্ধ।

কী খাবেন? চা, কফি বা কোন্ড ড্রিঙ্ক?

জল খাব। আর কিছু নয়।

একজন পরিচ্ছন্ন পরিচারক ট্রে-তে একটা টাম্বলার। আর ঝকঝকে কাচের গেলাস এনে রাখল সামনে। বিভাবরী খানিকটা জল খেয়ে বুঝল তার তেষ্টাটা নাৰ্ভাসনেসের। বারবার তেষ্টা পাবে।

শবর তাকে বসিয়ে রেখে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বলল, আমি বা আর কেউ আর আসব। না। ঘাবড়াবেন না। জাস্ট ফেস হিমা অ্যান্ড টকা।

বিভাবরী একটু হাসবার চেষ্টা করল, পারল না।

খাওয়ার ঘরের পিছন দিককার দেয়াল জুড়ে বিশাল চওড়া চওড়া জানালা দিয়ে পিছনের সবুজ বাগান আর গাছপালার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। শুধুই সবুজ যেন ছেয়ে আছে চারদিক ঘরে বাইরের প্রাকৃতিক আলো আসছে। আজও একটু মেঘলা বলে ঘরের আলোটার তীব্ৰতা নেই।

বিভাবরী বারবার ঘড়ি দেখছে। এক একটা মিনিট যেন এক একটা যুগ বলে মনে হচ্ছে। বিভাবরী টোক গিলছে বারবার। একটু করে জল খাচ্ছে। ভাবছে লোকটাকে যে কী বলবে। মাথাটা এত তালগোল পাকিয়ে আছে যে, সে কথা বলতে পারবে কি না সেটাই সন্দেহের ব্যাপার হয়ে দাড়াচ্ছে।

ঠিক পাঁচ মিনিটের মাথায় বৈঠকখানার দিককার ফ্লাশ ডোর খুলে দু’জন পুলিশ ঢুকল। ঢুকে দরজার দু’দিকে দাঁড়িয়ে রইল। কয়েক সেকেন্ড বাদে ক্রাচে ভর দিয়ে যে লোকটা অতি কষ্টে ঘরে ঢুকাল তাকে দেখে চেনার উপায় নেই যে, এ লোকটা সেই ভজন আচাৰ্য। মাথায় ব্যান্ডেজ, হাতে ব্যান্ডেজ, গালে স্টিকিং প্লাস্টার, পায়ে প্লাস্টার, ঠোঁট দুটো নীল হয়ে ফুলে আছে, একটা চোখ ও ব্যান্ডেজে ঢাকা। এত অবাক হল বিভাবরী যে বলার নয়।

ভজন ঘরে ঢুকতেই পুলিশ দু’জন বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দরজাটা টেনে বন্ধ করে দিল।

ভজন দরজার কাছেই খানিকক্ষণ দাড়িয়ে রইল। হাফাচ্ছে। তার পর দুটো ক্ৰাচে ভর দিয়ে অতি কষ্টে এগিয়ে এল।

বিভাবরীর হয়তো উচিত ছিল উঠে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে ওকে বসতে সাহায্য করা। কিন্তু ভজনের অবস্থা দেখে এমনই ঘাবড়ে গেছে বিভাবরী যে, সে নড়তেও পারল না।

ভজন খুব শব্দ করে শ্বাস নিচ্ছে। হাঁফাচ্ছে। এগিয়ে এসে একটা চেয়ার টেনে বসবার চেষ্টা করতে গিয়ে অ্যালুমিনিয়ামের একটা ক্ৰচ পড়ে গেল ঠনঠন করে। সেটা কুড়িয়ে নেওয়ার জন্য নিচু হওয়ার ক্ষমতাও নেই লোকটার। ভারসাম্যহীন শরীরে কোনওরকমে চেয়ারের পিছনটা ধরে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করল সে। চেয়ার নিয়ে উলটেই পড়ে যেত, কিন্তু সেটা বুকে কোনওরকমে আটকাল। তারপর অতি কষ্টে চেয়ারে বসে কিছুক্ষণ মাথাটা নুইয়ে শুধু শ্বাস নিতে লাগল। বড় বড় শ্বাস। কথা বলার মতো অবস্থাই নয়। লোকটার যে এ দশা হয়েছে তা একবারও বলেনি। শবর। কে এই অবস্থা করল? পুলিশ?

কিছুক্ষণ স্তব্ধ বিস্ময়ে লোকটার দিকে চেয়ে রইল বিভাবরী। গত তেরো-চোঁদ দিন দাড়ি কামায়নি বলে মুখটা দাড়িতে ঢাকা। গোঁফ নেমে ওপরের ঠোঁট আড়াল করেছে।

বিভাবরী খুব ধীরে উঠে গিয়ে মেঝে থেকে ক্রাচটা তুলে অন্য ক্ৰাচটার পাশে টেবিলের গায়ে হেলিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখল। তারপর নিজের চেয়ারে ফিরে এসে বসে ক্ষীণ গলায় বলল, জল খাবে?

লোকটা মৃদু মাথা নেড়ে জানাল, খাবে না।

এ দশা করল কে? পুলিশ।

ভজন একবার তার ক্লান্ত মুখখানা তুলে বিভাবরীর দিকে তাকাল। হী করা মুখে এখনও শ্বাস নিচ্ছে প্রবলভাবে। ফের মাথাটা যেন ঝুলে পড়ল আপনা থেকেই। কথা বলার মতো অবস্থায় এখনও আসেনি।

বিভাবরীর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। এ লোকটাকে সে ঘেন্না করে এসেছে এতদিন, আজ বড্ড দুঃখ হচ্ছে। মানুষের এরকম দুৰ্দশা দেখলে কারই বা না হবে। শবর কি তাকে ইচ্ছে করেই এই ঘটনার কথা বলেনি?

প্রায় দশ মিনিট নিস্তব্ধ ঘরে ভজনের শ্বাসযন্ত্রের শব্দ হল। তারপর একটু কমে এল হঁহাফধরা ভাবটা। মাথা নিচু করেই বসে রইল। ভজন।।

একটু জল খাও এবার।

ভজন ফের মাথা নাড়ল, খাবে না।

এ দশা কে করেছে তোমার?

ভজন কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ভাঙা গলায় বলল, সবাই।

সবাই বলতে?

ভজন ফের চুপ করে থেকে আরও মৃদু গলায় বলল, সবাই।

এরপর ভজনের শরীরটা হঠাৎ একটু কেঁপে কেঁপে উঠল। কাঁদছে নাকি? কান্নার মানুষ তো নয়। বিস্মিত বিভাবরী পলকহীন চেয়ে রইল।

কাঁপুনিটা কমে গেল। ভজন মুখ তুলল না।

তোমাকে কি পাবলিকও মেরেছে?

ভজন মাথা নেড়ে জানাল, হ্যাঁ।

পুলিশও?

ভজন মাথা নাড়া দিয়ে জানাল, হ্যাঁ।

রিঙ্কুকে কি তুমি খুন করেছ?

ভজন অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল মাত্র। জবাব দিল না।

বললেন না?

কিছুক্ষণ ঝুম হয়ে থেকে ভজন ভাঙা ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল, বলে কী লাভ?

লাভ নেই?

ভজন মাথা নেড়ে না জানাল। তারপর অনেকক্ষণ বাদে মাথা নিচু অবস্থাতেই বিড়বিড় করে আপনমনে বলল, কতবার তো বলেছি। কেউ বিশ্বাস করে না।

বিভাবরী কী বলবে ভেবে পেল না। অনেকক্ষণ বাদে সে বলল, রিঙ্কু তোমার কাছে সেই রাতে এসেছিল কেন? বিয়ের প্রস্তাব দিতে?

ভজনের রি-অ্যাকশন হচ্ছে অনেক দেরিতে হয়তো মাথায় বেশ জোরালো চোট পেয়েছে, রিফ্লেক্স কাজ করছে না। সময় নিচ্ছে। অনেকক্ষণ বাদে শুধু মাথা নেড়ে জানাল, না।

রিঙ্কু নয়?

না।

তা হলে কে?

ভজন একটা হিঙ্কার মতো শব্দ করল। টেবিলের ওপর মাথাটা নামিয়ে যেন একটু ঘুমিয়ে নিতে লাগল। এই অবস্থায় কেন যে লোকটাকে এতদূর টেনে আনল শবর, কেন যে তাকে বসােল ওর মুখোমুখি। বিভাবরী উঠে। ভজনের কাছে গিয়ে পিঠে হাত রেখে বলল, তোমার কি শরীর খুব খারাপ লাগছে?

ভজন একটু কেঁপে উঠল। তারপর ধীরে ধীরে মাথাটা তুলল। রক্তজবার মতো লাল ডানচোখটা দিয়ে বিভাবরীকে এক ঝলক দেখে নিয়ে বলল, না, ঠিক আছে।

একে কি ঠিক থাকা বলে?

ভজন চুপ করে কিছুক্ষণ বসে থেকে অতি মৃদু স্বরে বলল, আরও হবে। আরও কত হবে। এ তো কিছু নয়।

আর কী হবে তোমার?

ভজন ধীরে ধীরে চোখের জল আর লালায় মাখামাখি বীভৎস মুখটা তুলল। লাল চোখে চেয়ে সেই ভাঙা ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল, এখনও মরিনি যে! মারবে না?

আমি জানতে চাই তুমি সত্যিই রেপ আর খুন করেছ কি না।

ভজন ইহাফধরা গলায় শুধু বলল, কী লাভ বলে? বিশ্বাস করবে না কেউ।

আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে চাইছি। সত্যি কথাটা বলে আমাকে।

ভজন মাথা নেড়ে শুধু না জানাল। তার পর কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে থেকে হঠাৎ ধীরে ধীরে মুখ তুলে বিভাবরীর দিকে চাইল। দু’খানা কম্পিত হাত তুলে করজোড় করে রইল কিছুক্ষণ। দুটো হাত থারথার করে কাঁপছে।

ওরকম করছ কেন?

ভজন কিছুক্ষণ কথা বলতে পারল না। দু’চোখ বেয়ে জল পড়ছে। প্ৰায় অশ্রুত গলায় বলল, ক্ষমা… ক্ষমা…

দু’খানা ক্রাচের দিকে কম্পিত হাত বাড়িয়ে দিল ভজন। উঠবে।

বিভাবরী গিয়ে ক্রাচ দু’খানা এগিয়ে দিল। প্রায় ছ’ফুটের মতো লম্বা শক্ত সমর্থ শরীরটার ওপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে গেছে। থারথার করে কপিছে শরীর। তিনবারের চেষ্টায় উঠল। ভজন। দুবগলে ক্রাচ।

বিভাবরী গিয়ে দরজা খুলে সেপাইদের ডাকল।

বেরিয়ে যাওয়ার সময় যেন ভজনের কষ্ট হচ্ছিল অনেক বেশি। দু’জন সেপাই না ধরলে শুধু ক্ৰাচে ভর করে বেরতে পারত না সে।

পিছন থেকে অপলক চোখে চেয়ে ছিল বিভাবরী। এরকমভাবে কেউ কাউকে মারে? মানুষ এত নৃশংস? চোখে জল আসছিল তার, আবার একই সঙ্গে রাগে আগুন হয়ে যাচ্ছিল মাথা।

ভজন বেরিয়ে যাওয়ার পর বিভাবরী তার শরীরের কাঁপুনি আর দুর্বলতা টের পেল। ধপ করে চেয়ারে বসে পড়ল সে। হাফ ধরে যাচ্ছে।

দেখা হল ম্যাডাম?

বিভাবরী চোখ তুলে চেয়ে শবরকে দেখে বলল, আপনাদের নামে মামলা করা উচিত।

শবর হাসল, করুন না।

পুলিশ কেন মারবে? মারা তো বে-আইনি।

অবশ্যই। কিন্তু ভজনবাবুর বেশির ভাগ চোট পাবলিকের উপহার, পুলিশের নয়।

তাদের কেন ধরা হল না?

ক’জনকে ধরা যাবে বলুন। গোটা লোকালিটিটাই তো ইনভলভড।

ছিঃ শবরবাবু।

শবর একটু হাসল আবার। বলল, পাবলিকের হয়ে আপনার ধিক্কারটা আমি ঘাড়ে নিচ্ছি। ম্যাডাম। সরি। এক্সট্রিমলি সরি।

আপনি আমাকে ওর এই অবস্থার কথা বলেননি কেন?

শোনার চেয়ে দেখা অনেক বেশি এফেকটিভ। চলুন, আপনাকে পৌঁছে দিয়ে আসি।

বিভাবরী উঠল। শরীর ও মনের একটা বিকলতা টের পাচ্ছে সে। পা দুটো ভারী। মাথাটা একটু একটু টলছে। জিপে বসে সে বলল, আপনার কি এখন কোনও জরুরি কাজ আছে?

না তো!

তা হলে আমি ওর গ্যারেজটা দেখতে চাই।

স্বচ্ছন্দে। কিন্তু দেখে কী করবেন?

এমনি। কৌতূহল।

ঠিক আছে ম্যাডাম। এনিথিং ইউ সে।

গ্যারেজটা একটু প্রত্যন্ত জায়গায়। ছাড়া ছাড়া বাড়িঘর, ফাঁকা জমি, ঝোপজঙ্গল, পুকুর।

বাঁ ধারে বাঁশের বেড়া দেওয়া বেশ বড় একটা জায়গা। ফটকের সামনে দু’জন সেপাই গাড়ির একখানা সিট পেতে বসে আছে। তাদের দেখে উঠে দাড়াল।

এটাই ভজনবাবুর গ্যারেজ।

ভিতরে ঢোকা যাবে?

কেন নয়?

শবরের ইশারায় সেপাইরা ফটকের তালা খুলে দিল। বিকল মোটর গাড়ি, নানা যন্ত্রাংশ, তেল কালি, হাইড্রলিক প্রেস পেরিয়ে শেষ প্ৰান্তে ভজনের ঘর। সেপাইরা দরজা খুলে দিয়ে সরে দাঁড়াল।

আসুন ম্যাডাম।

ঘরে একটা সরু চৌকিতে সাধারণ বিছানা পাতা রয়েছে। একাধারে চেয়ার-টেবিল। বইয়ের র‍্যাকে প্রচুর টেকনিক্যাল বই, কিছু পেপারব্যাক উপন্যাস, কিছু ম্যাগাজিন। বা ধারে মেঝের ওপর একটা বায়োগ্যাসের উনুন। কিছু বাসনপত্র।

বসুন ম্যাডাম।

বিভাবরী চেয়ারে বসল। তারপর ঘরটা ভাল করে দেখল। কিছুই দেখার মতো নয়। একজন পুরুষমানুষের ঘর।

শবর বলল, সম্ভবত আপনি যে চেয়ারে বসে আছেন সেই চেয়ারেই রিঙ্কু বসে ছিল সেই রাতে।

কী করে বুঝলেন?

প্রবাবিলিটির কথা বলছি।

কিন্তু মেয়েটা যে রিঙ্কুই তা কী করে বুঝলেন?

আপনার কী মনে হয়?

ও তো বলছে রিঙ্কু নয়।

তা হলে কে হতে পারে ম্যাডাম?

কী করে বলব? আপনি বলতে পারেন না?

শবর মৃদু একটু হাসল। বলল, রিঙ্কু হতেই পারে। রিঙ্কু তো ভজনবাবুকে ভালবাসত বলেই মনে হয়।

আপনি কিছু লুকোচ্ছেন।

শবর ফের হাসল, আপাতত কিছু লুকোনোই থাক।

আচ্ছা, ভজনের সঙ্গে আমার কী কথা হল তা তো আপনি জানতে চাইলেন না।

শবর মৃদু মৃদু হাসি হাসছিল। বলল, পরে জেনে নেওয়া যাবে।

তার মানে আপনার জানার কৌতূহল মিটে গেছে?

তা নয়। ভজনবাবু এখন খুব বেশি কথা বলার মতো মুডে নেই। সেটা জানি বলেই অনুমান করছি আপনাদের মধ্যে খুব বেশি কথা হয়নি। কিন্তু

কিন্তু কী?

আপনার অমত না থাকলে কয়েক দিন পর আপনি আর একবার ওঁর সঙ্গে মিট করুন।

করবেন?

করব।

থ্যাঙ্ক ইউ। হিনিডস এ সিমপ্যাথেটিক হিয়ারিং।

তার মানে?

ওঁর মনটা অদ্ভুত। জোর করলে বা ফোর্স অ্যাপ্লাই করলে উনি ভিতরকার কপাট বন্ধ করে দেন। কোনো কনফেশনই তখন আদায় করা যায় না। কিন্তু এই কেসটার জন্ট খুলতে হলে ওঁর মুখ খোলানো দরকার। আমরা যেটা পারছি না সেটা আপনি হয়তো পারতেও পারেন।

চেষ্টা করব।

কাইন্ড অফ ইউ।

এবার কি আমরা উঠিব?

হ্যাঁ ম্যাডাম। চলুন।

ফেরার সময় বিভাবরী তেমন কথা বলছিল না। খুব ভাবছিল। আজ সে বড্ড নাড়া খেয়েছে ভজনকে দেখে। লোকটাকে তার আর ঘেন্না হচ্ছে না, কিন্তু ঘেন্না হচ্ছে তাদের যারা ওকে ওরকমভাবে মেরেছে।

শবরবাবু।

বলুন।

আমার মনে হয় না ভজন। এ কাজ করেছে।

কী করে বুঝলেন?

যেভাবে আপনিও বুঝেছেন।

আমি কী বুঝেছি?

আপনিও বুঝেছেন বা অনুমান করেন যে ও খুন বা রেপ করেনি।

কী সর্বনাশ! এ যে গোয়েন্দার ওপর গোয়েন্দাগিরি।

আমি জানি।