ছমাস বয়স্কে রাম দেন হামাগুড়ি।
হাসিয়া মায়ের কোলে যান গড়াগড়ি।।
ক্ষণেক মায়ের কোলে ক্ষণে পিতৃকোলে।
বদনে না আসে কথা আধ আধ বোলে।।
শ্রীরামের চন্দ্রাননে অমৃত-বচন।
প্রকাশিত মন্দ মন্দ হাসিতে দশন।।
এক বর্ষ বয়স্ক হইলে ভাই কটি।
পীতধড়া পরিধান গলে স্বর্ণ কাঁঠি।।
কাঁঠির মধ্যেতে দিব্য সোণার কিঙ্কিণী।
রত্নের নূপুর পায় রুণু রুণু ধ্বনি।।
করেন শ্রীরাম খেলা বালকের সনে।
পরস্পর সম্প্রীতি হইল চারি জনে।।
শ্রীরাম চলিতে পথে চলেন লক্ষ্মণ।
ভরতের চলনে চলেন শত্রুঘন।।
যার যে চরুর বংশ জানিল তাহাতে।
শ্রীরাম লক্ষ্মণে মিলে, শত্রুঘ্ন ভরতে।।
যথা তথা যান রাজা রাম যান সাথে।
এক তিল অদর্শনে প্রমাদ তাঁহাতে।।
ব্রহ্মা আদি যাঁর পদ না পান মননে।
পুনঃ পুনঃ চুম্ব দেন তাঁহার বদনে।।
চন্দ্রকলা যেমন বর্দ্ধিত দিনে দিনে।
সেইরূপ লাবণ্য বাড়িল চারি জনে।।
এক বিষ্ণু চারি ভাই মায়র কারণ।
রামে দেখি দশরথ ভাবে মনে মন।।
সর্ব্বক্ষণ দশরথ রামেরে নেহালে।
অন্ধক মুনির শাপ মনে মনে বলে।।
শাপ দিল মুনি মোরে গৌরব কারণ।
এই পুত্র না দেখিলে আমার মরণ।।
না’হাজার বর্ষ রাজ্য করি কুতূহলে।
রাম হেন পুত্র পাইলাম পুণ্যফলে।।
পুত্রমুখ দেখি সদা জীবন সফল।
দশরথ-গৃহে রাম প্রথম প্রবল।।
এই মত দশরথ করে অভিলাষ।
আদিকাণ্ড গাইল পণ্ডিত কৃত্তিবাস।।