আইল চামুণ্ডা, করে খর খাণ্ডা,
গলে দোলে মুণ্ডমালা।
লহ লহ জিহ্বা, বিদ্যুতের প্রভা,
ঘন বদন করালা।।
বিকট দশানা, শোণিত রসনা,
ভৈরবী ভৈরব ডাকে।
সঙ্গে শত শিবা, অতিশয় শোভা,
ভূত প্রেতগণ থাকে।।
সবার কুণ্ডল, মিহির কুণ্ডল,
দোলয়ে যুগল গণ্ডে।
দনুজ-দলনী, সক্রোধে চাহনি,
গলে নরমালা মুণ্ডে।।
যুগ্ম পয়োধর, জিনিয়া ভূধর,
দশ অষ্ট চতুর্ভূজা।।
অধরে বারুণী, সদা মুক্তবেণী,
সর্ব্বদেব করে পূজা।।
উদর সমুদ্র, সশঙ্কিত রুদ্র,
গম্ভীর উচ্চ শবদা।
পর্ব্বত-কন্দর, সদৃশ খর্পর,
সদাই আনন্দ-হ্রদা।।
চিরদিন কৃষ্ণা, সাতিশয় তৃষ্ণা,
সংগ্রাম শুনিয়া আইসে।
দেখি কুতূহলে, হাসে খল খল,
কম্পে সুরাসুর ত্রাসে।।
সঙ্গে সহচর, ভূচর খেচর,
ধেয়ে চতুর্দ্দিকে বেড়ে।
ফেলি নরমুণ্ডে, তুলি ধরে তুণ্ডে,
যেমন গেন্দুয়া পড়ে।।
করতালি বাদ্যে, রণভূমি মধ্যে,
নাচয়ে বিহ্বল মতি।
কটিতে সুন্দর, ব্যাঘ্র-চর্ম্মম্বর,
চরণে বিদরে ক্ষিতি।।
ঘোর রণস্থলী, আথালি পাথালি,
পড়িল তুরঙ্গ-সেনা।
নদী বহে রক্তে, খরতর স্রোতে,
পর্ব্বত সদৃশ ফেনা।।
তুরঙ্গম সব, সদৃশ কচ্ছপ,
কুম্ভীর মকর গজ।
রথ সহ রথী, যেন যুথপতি,
ভাসি যায় রথধ্বজ।।
ছত্র হৈল পত্র, পুষ্প হৈল বস্ত্র,
ভুজ কমলের দণ্ড।
সদৃশ জলধি, তৃণ কাষ্ঠ আদি,
ভাসে কর-পদ খণ্ড।।
কাটা পদ কর, ছিন্ন কলেবর,
শত শত ছত্র দণ্ড।
দীঘল কুন্তল, শ্রবণে কুণ্ডল,
ভাসি যায় নরমুণ্ড।।
প্রলয় গম্ভীর, বহিছে রুধির,
ক্রীড়য়ে কালীর গণ।
কত উঠে ডুবে, ধরি আনি সবে,
ভক্ষয়ে মেলি বদন।।
খর্পর ভরিয়া, উদর পূরিয়া,
করিয়া রুধির পান।
অর্জ্জুনে কল্যাণ, করি নিজ স্থান,
কালিকা কৈল প্রয়াণ।।
ভারত-অমৃত, পিয়ে অনুব্রত,
শ্রুতিযুগে সাধুজন।
কালী-পদযুগে, কাশীদাস মাগে,
দাসার্থে নন্দ-নন্দন।।