৪০তম অধ্যায়
ত্রিগুণাত্মিকা সৃষ্টি—মহত্তত্ত্ব
“ব্রহ্মা বলিলেন, “হে ঋষিগণ! প্রকৃতি হইতে প্রথমতঃ মহত্তত্ত্বের উৎপত্তি হইয়াছে। ঐ মহত্তত্ত্বকে সমুদয় সৃষ্টির আদি সৃষ্টি বলিয়া কীৰ্ত্তন করা যায়। লোকে উহাকে মতি, বিষ্ণু, জিষ্ণু, শম্ভু, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, উপলব্ধি, খ্যাতি, ধৃতি ও স্মৃতি প্রভৃতি নামে নির্দ্দেশ করিয়া থাকে। যে ব্যক্তি ঐ মহত্তত্ত্বকে সবিশেষ অবগত হইতে সমর্থ হয়েন, তাঁহাকে কখনই মুগ্ধ হইতে হয় না। ঐ মহত্তত্ত্বের হস্ত, পাদ, চক্ষু, মস্তক, মুখ ও কর্ণ সর্ব্বত্রই বিদ্যমান রহিয়াছে এবং উনি সমুদয় স্থানে ব্যাপ্ত হইয়া অবস্থান করিতেছেন। ঐ মহাপ্রভাবসম্পন্ন মহত্তত্ত্ব সকলের হৃদয়ে বিদ্যমান রহিয়াছে। উনি অণিমা, লঘিমা, প্রাপ্তি, ঈশান, অব্যয় ও জ্যোতিস্বরূপ। ইহলোকে যাঁহারা বুদ্ধিমান, সদ্ভাবনিরত, ধ্যানপরায়ণ, যোগী, সত্যপ্রতিজ্ঞ, জিতেন্দ্রিয়, জ্ঞানবান, লোভপরিশূন্য, ক্রোধবিহীন, প্রসন্নচিত্ত, ধীরপ্রকৃতি এবং মমতা ও অহঙ্কারপরিশূন্য, তাঁহারাই ঐ মহত্তত্ত্বে বিলীন হইয়া থাকেন। ইহলোকে যে মহাত্মা গুহাশায়ী, বিশ্বরূপী, বুদ্ধিমান ব্যক্তিদিগের একমাত্র গতি, পুরাতন পরমপুরুষ মহত্তত্ত্বের গতি সবিশেষ অবগত হইতে সমর্থ হয়েন, তিনিই যথার্থ পণ্ডিত। তাহাকে কখনই মুগ্ধ হইতে হয় না। তিনি বুদ্ধিতত্ত্বকে অতিক্রমপূৰ্ব্বক অবস্থান করেন এবং সৃষ্টিকালে বিষ্ণুতুল্য হইয়া থাকেন।’ ”