স্কাউটশিপের নিয়ন্ত্রণ প্যানেলের সামনে ত্রালুস চিন্তিত মুখে বসে আছে। মহাকাশযানে সব মিলিয়ে তিনটি স্কাউটশিপ, তার মাঝে একটি কীশা নিয়ে গেছে। এটি দ্বিতীয় স্কাউটশিপ, প্রথমটির মতো এটি অত্যাধুনিক নয়–ত্রালুস সেটি নিয়ে চিন্তিত। অনেক ক্ষেত্রেই এটা চালানোর জন্য নিজের বিচারবুদ্ধি ব্যবহার করতে হয়। তৃতীয় স্কাউটশিপটি একেবারেই দায়সারা। সেটি যদি কখনো ব্যবহার করতে হয়, সফল উড্ডয়নের সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি।
পিছনে নিরাপত্তা মডিউলটি নিয়ে শুমান্তি বসেছিল, সে ত্রাসের চিন্তিত মুখ দেখে বলল, কী হল ত্ৰালুস? কোনো সমস্যা?
আলাদাভাবে নতুন কোনো সমস্যা নয়, পুরো ব্যাপারটি নিয়ে খানিকটা সমস্যা।
স্কাউটশিপটা চালাতে ভয় পাচ্ছ?
ভয়টা সঠিক শব্দ নয়, বলতে পার আতঙ্ক।
ইরন হেসে বলল, আমাদের এই প্রজেক্টে নতুন করে ভয় পাবার বা আতঙ্কিত হবার। কিছু নেই। মোটামুটিভাবে ধরে নাও একঘণ্টা পর নাকি দুই ঘণ্টা পর আমরা মারা পড়ব। সেটা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে আমার উদ্দেশ্য।
হ্যাঁ, এভাবে দেখলে পুরো ব্যাপারটা খুব সহজ হয়ে যায়।
এভাবেই দেখ।
বেশ! স্কাউটশিপে তোমাদের ভ্রমণ খুব আনন্দদায়ক হবে না আগেই বলে রাখছি।
শুমান্তি হাসিমুখে বলল, আমাদের অভিযান শুরু করার আগে কীভাবে স্কাউটশিপ চালাতে হয় তার ওপর একটি লম্বা ট্রেনিং হয়েছিল মনে আছে?
মনে আছে। তবে ট্রেনিঙে কী বলেছিল সেসব এখন আর মনে নেই।
ইরন যোগাযোগ মডিউলের বিভিন্ন সুইচ টেপাটিপি করে পরীক্ষা করতে করতে বলল, তুমি এসব নিয়ে চিন্তা না করে শুরু করে দাও। যদি সেরকম কিছু বিপদ হয় স্কাউটশিপের নিজস্ব নিয়ন্ত্ৰণ দায়িত্ব নিয়ে নেবে।
ঠিক আছে।
স্কাউটশিপে কী কী নিয়েছ?
বাইরে বের হওয়ার জন্য দ্বিতীয় মাত্রার স্পেস স্যুট, কিছু খাবার এবং পানীয় এবং অস্ত্র।
অস্ত্র?
হ্যাঁ। মহাকাশযানে যা ছিল প্রায় সব তুলে এনেছি। দরকার হলে নিনীষ স্কেলের পঞ্চম মাত্রার দুই–চারটা প্রাণীর মাথা উড়িয়ে দেব।
শুমান্তি বলল, সত্যি?
ত্রালুস হেসে বলল, আমি বলেছি দরকার হলে।
ইরন যোগাযোগ মডিউলটি সামনে রেখে নিজেকে চেয়ারের সাথে সংযুক্ত করে বলল, তুমি ধরে নিয়েছ এই গ্রহটিতে যে প্রাণীরা আছে তাদের আমাদের মতো মাথা রয়েছে?
কী করব বল! মহাকাশযানের মূল তথ্যকেন্দ্র তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছি, কোথাও এই প্রাণীদের সম্পর্কে এতটুকু তথ্য নেই। এরা কি বড় না ছোট, কার্বনভিত্তিক না সিলিকনভিত্তিক, ভিন্ন বা সামগ্ৰকি_
শুমান্তি বাধা দিয়ে বলল, হাসিখুশি না বদরাগী?
ইরন বলল, তার মানে তুমি ধরে নিয়েছ এদের আমাদের মতো অনুভূতি রয়েছে? কখনো হাসিখুশি থাকে কখনো রেগে থাকে?
আমার কোনো ধারণা নেই। কিন্তু যেহেতু বুদ্ধিমানের একটা পরিমাপ করা হয়েছে। মস্তিষ্কের মতো কিছু একটা নিশ্চয়ই থাকবে–যেখানে সব তথ্য বিশ্লেষণ করবে।
ইরন ভুরু কুঁচকে বলল, তার মানে তুমি ধরে নিয়েছ তথ্য বিশ্লেষণ করার প্রক্রিয়াটি আমাদের মতো? নিউরন সেল থাকবে, সিনাল থাকবে, তার ভিতর যোগাযোগ হবে সঙ্কেত আদান–প্রদান হবে?
শুমান্তি হাল ছেড়ে দিয়ে বলল, আমি জানি না। মানুষ ছাড়া যেহেতু আর কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী দেখি নি, তাই মহাজাগতিক কোনো প্রাণীর কথা মনে হলেই কেন জানি মনে হয় সেটা মানুষের মতোই হবে। হাত–পা থাকবে, নাক–মুখ, চোখ থাকবে–তবে সেটা হবে খুব ভয়ঙ্কর! হয়তো মস্তিষ্কটা শরীরের বাইরে, চোখগুলো সাপের মতো, হয়তো খুব নিষ্ঠুর!
ইরন একটু হেসে বলল, আমাদের সেটাই হয়েছে সমস্যা! আমরা আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের বাইরে চিন্তা করতে পারি না। হয়তো এই প্রাণীর সাথে আমাদের কোনো মিল নেই। হয়তো এটার ঘনত্ব এত কম যে আমরা দেখতে পাই না! কিংবা আসলে পুরো গ্রহটা একটা প্রাণী। কিংবা প্রাণীটা পদার্থের নয়, প্রাণীটা শক্তির। আলো বা বিদ্যুৎ বা যান্ত্রিক শক্তি! কত কিছু হতে পারে!
শুমান্তি বলল, ইরন, তুমি যেভাবে বলছ, শুনে আমার তো একটু ভয়ই লাগছে।
ভয়? ইরন হেসে বলল, আমাদের কেন জানি ভয় থেকে বেশি হচ্ছে কৌতূহল। প্রাণীটি দেখতে কী রকম? বিশাল মস্তিষ্কসহ কিলবিলে অক্টোপাসের মতো কোনো প্রাণী, নাকি এমন একটি প্রাণী যার অস্তিত্ব আমরা কল্পনাও করতে পারি না!
ত্রালুস বলল, হয়তো একটু পরেই দেখব।
হয়তো।
ত্রালুস কন্ট্রোল প্যানেলের সবকিছু দেখে বলল, তা হলে কি শুরু করব?
হ্যাঁ। শুরু করা যাক।
ত্রালুস সুইচ স্পর্শ করামাত্রই প্রচণ্ড একটা শব্দ করে স্কাউটশিপটি থরথর করে কেঁপে উঠল। খানিকক্ষণ তার শক্তিশালী ইঞ্জিনটি থেকে আয়োনিত গ্যাস বের হতে থাকে, ভিতরে একটা সতর্ক ধ্বনি শোনা গেল এবং হঠাৎ করে পুরো স্কাউটশিপটা একটা ঝাঁকুনি দিয়ে মহাকাশযান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
স্কাউটশিপটা মহাকাশযানকে ঘিরে একবার ঘুরে আসে, মহাকাশযানটি যে কত বিশাল সেটি আবার নতুন করে সবার মনে পড়ল। নিচে গা ঘিনঘিন করা গ্রহটির মহাকর্ষ বলে মহাকাশযানটি স্থিতি হয়েছে, প্রায় চল্লিশ হাজার কিলোমিটারব্যাপী একটি কক্ষপথ নিয়ে এখন সেটি এই গ্রহটাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাকাশযানটির নিয়ন্ত্রণ এখনো তাদের হাতে নেই, এই গ্রহটিকে কেন্দ্র করে বিশাল একটি কক্ষপথ নিয়ে ঘোরার ব্যাপারটিও পূর্বনির্ধারিত।
স্কাউটশিপটি মহাকাশযান থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে থাকে, চারদিকে নিকষ কালো অন্ধকার। দূরে কোনো একটি আলোকিত নেবুলা থেকে নীলাভ এক ধরনের আলো এসে এই গ্রহটাকে আলোকিত করছে। এই আলোতে সবকিছুকেই অতিপ্রাকৃত মনে হয়, এই গ্রহটিকে শুধু অতিপ্রাকৃত নয় অশুভ বলে মনে হতে থাকে।
ইরন স্কাউটশিপের গোলাকার জানালা দিয়ে নিচে গ্রহটির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বলল, এই গ্রহটা সম্পর্কে তথ্যগুলো এনেছ?
হ্যাঁ। ত্রালুস একটা সুইচ টিপে দিতেই তার সামনে আরো একটা ছোট স্ক্রিন বের হয়ে এল। স্ক্রিন থেকে তথ্যগুলো সে পড়ে শোনাতে থাকে, গ্রহটির ব্যাসার্ধ ছয় হাজার কিলোমিটার, এর ভর পৃথিবীর দেড়গুণ। গ্রহটির এক ধরনের বায়ুমণ্ডল রয়েছে। বায়ুমণ্ডলের বেশিরভাগ কার্বন–ডাই অক্সাইড। অল্প পরিমাণ ক্লোরিন এবং মিথেন রয়েছে। গ্রহের পৃষ্ঠদেশে বাতাসের চাপ বারশত মিলিবার। বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ হচ্ছে সত্তর থেকে দুইশত কিলোমিটার। গ্রহটির পৃষ্ঠদেশ এক ধরনের নরম পদার্থের তৈরি, স্থানে স্থানে তরল পদার্থ থাকতে পারে। তরল পদার্থের পি. এইচ. তিনের কাছাকাছি। মানুষের জন্য গ্রহটি বাসযোগ্য নয়–অত্যন্ত বৈরী পরিবেশ। গ্রহটি কাছাকাছি একটি নেবুলা দিয়ে আলোকিত হচ্ছে। গ্রহটির নিজস্ব কিছু আলোর উৎস রয়েছে, আলোর বেশিরভাগ অবলাল, খালি চোখে ধরা পড়ে না।
ইরন একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, তুমি গ্রহটির যে বর্ণনা দিয়েছ, শুনে মনে হচ্ছে ফিরে যাই, গিয়ে আর কাজ নেই।
ঠিকই বলেছ।
এখানে যদি সত্যিই বুদ্ধিমান প্রাণী থেকে থাকে তা হলে তার কোনো চিহ্ন থাকা উচিত। সেই চিহ্ন কি দেখা যাচ্ছে?
ত্রালুস আবার স্ক্রিনের ওপর ঝুঁকে পড়ল। কোনো একটা সুইচ স্পর্শ করে স্ক্রিনটা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে বলল, না। সভ্যতার চিহ্ন বলতে আমরা যা বোঝাই সেরকম কিছু নেই। কোনো দালানকোঠা রাস্তাঘাট বা শক্তি কেন্দ্র সেরকম কিছু নেই।
ইরন অবাক হয়ে বলল, কিছু নেই?
না, কিছু নেই। শুধু
শুধু?
শুধু মাঝে মাঝে কোনো কোনো স্থান থেকে অবলাল আলোর একটা বিচ্ছুরণ দেখা যাচ্ছে। কোথা থেকে আসছে বোঝা যাচ্ছে না। পুরোপুরি সামঞ্জস্যহীন বিচ্ছিন্ন অবলাল আলোর বিচ্ছুরণ।
হুঁ। ইরন ভুরু কুঁচকে চিন্তা করতে থাকে। সত্যি সত্যি যদি এই গ্রহটি বুদ্ধিমান প্রাণীদের গ্রহ হয়ে থাকে তা হলে তার কোনো চিহ্ন কি দেখা যাওয়ার কথা নয়?
শুমান্তি ইতস্তত করে বলল, হয়তো এই গ্রহটা ফাঁপা, হয়তো প্রাণীগুলো গ্রহটার ভিতরে থাকে।
ত্রালুস মাথা নেড়ে বলল, নিশ্চয়ই হতে পারে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এ রকম আরো এক হাজারটি সম্ভাবনা থাকতে পারে–আমরা কোনটাকে সত্যি বলে ধরে নেব?।
ইরন বলল, আমরা এখন কোনো বিচার–বিবেচনা–বিশ্লেষণে যাব না। আমরা আগের স্কাউটশিপটার পিছনে পিছনে যাব। যদি সত্যি বুদ্ধিমান প্রাণী থেকে থাকে তা হলে নিশ্চয়ই কীশার সাথে দেখা করে নিশিকে নিতে আসবে।
শুমান্তি জানালা দিয়ে নিচে গ্রহটির দিকে তাকিয়ে বলল, কী মন–খারাপ–করা একটি জায়গা!
শুমান্তির কথা শেষ হবার আগেই স্কাউটশিপটা একটা বড় ঝাঁকুনি খেল, ভিতরে একটা লাল আলো জ্বলে ওঠে এবং কর্কশ স্বরে সতর্কসূচক এলার্ম বাজতে শুরু করে। শুমান্তি ভয় পাওয়া গলায় বলল, কী হয়েছে?
ত্রালুস স্কাউটশিপটার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে করতে বলল, এতক্ষণ বাতাসহীন অবস্থায় ছিলাম বলে সহজে নেমে এসেছি। এখন গ্রহের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করছি। তোমাদের আরো ঝাঁকুনি সহ্য করতে হবে।
ইরন জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল, সত্যি সত্যি বাইরের অন্ধকার আকাশকে হালকাভাবে আলোকিত দেখা যাচ্ছে। স্কাউটশিপের দুই পাশে বাতাসে ওড়ার জন্য দুটি ফিন বের হয়ে এসেছে। ফিন দুটিকে ঘিরে বেগুনি রঙের এক ধরনের আলো দেখা গেল, বাতাসের ঘর্ষণে তৈরি হচ্ছে। মাঝে মাঝেই বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ বের হয়ে আসছে, গ্রহটির বায়ুমণ্ডল নিশ্চয়ই অত্যন্ত সক্রিয়।
এতক্ষণ মহাকর্ষ বলের আকর্ষণে স্কাউটসজিপটি নিচে নেমে এসেছে, গ্রহটির কাছাকাছি পৌঁছে যাবার কারণে এখন তার গতিবেগ কমিয়ে আনার প্রয়োজন হল। লুস আবার স্কাউটশিপের শক্তিশালী ইঞ্জিনটি চালু করে দেয়, সাথে সাথে ভয়ঙ্কর শব্দ করে স্কাউটশিপটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। স্কাউটশিপটি প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় নিচে নামতে থাকে, শক্ত করে বাঁধা না থাকলে স্কাউটশিপের ভিতরে সবাই বড় ধরনের আঘাত পেয়ে যেত। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে শুমান্তি ভয় পাওয়া গলায় বলল, আমরা কি ঠিকভাবে নামছি?
ত্রালুস ইঞ্জিনের শব্দ ছাপিয়ে উঁচু গলায় বলল, ঠিকভাবে কি না জানি না, কিন্তু নামছি!
ইরন বলল, শুধু নামলেই হবে না। কীশা যেখানে নেমেছে, সেখানে নামতে হবে।
হ্যাঁ। কীশার স্কাউটশিপের সিগন্যালকে এই স্কাউটশিপের নিয়ন্ত্রণ মডিউল লক করে নিয়েছে। এখন সেটার পিছু পিছুই যাচ্ছে।
চমৎকার।
শুমান্তি স্কাউটশিপের নিয়ন্ত্রণহীন ঝাঁকুনি সহ্য করতে করতে বলল, কীশা স্কাউটশিপটিকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে?
গ্রহটির মাঝামাঝি একটা জায়গায়। মনে হচ্ছে একটু উঁচু পাথুরে জায়গা।
অন্য কোনো বিশেষত্ব আছে জায়গাটার?
ত্রালুস খানিকক্ষণ স্ক্রিনটির দিকে তাকিয়ে বলল, না নেই। শুধু—
শুধু?
শুধু এর আশপাশে অবলাল আলোর বিচ্ছুরণ দেখা যাচ্ছে। তুলনামূলকভাবে একটু বেশি।
ইরন আবার ভুরু কুঁচকে জানালা দিয়ে নিচে তাকাল। সবুজ এবং বেগুনি রঙের এই কুৎসিত গ্রহটিতে তারা নামতে যাচ্ছে, সেখানে তাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে তারা জানে না। নিনীষ স্কেলে পঞ্চম শ্রেণীর বুদ্ধিমত্তার একটি প্রাণী তাদের সাথে কী ধরনের ব্যবহার করবে কে জানে? ইরনের বুকের ভিতরে একটা অশুভ চাপা আশঙ্কা পাক খেতে শুরু করে। সে তখন মুখ তুলে ত্রালুস এবং শুমান্তির দিকে তাকাল, দুজন হাসিখুশি তরুণ–তরুণী। মনে হয় এই দুজনই জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেয়েছে–তাই এত সহজে এই ভয়ঙ্কর অভিযানে রওনা দিয়েছে, যে অভিযান থেকে বেঁচে ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ইরন জোর করে তার ভিতরকার সকল চাপা ভয় এবং অশান্তিকে ঠেলে সরিয়ে দেয়। সত্যিই তো–বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের এই হিসেবে তারা কত ক্ষুদ্র একটি সময় বেঁচে আছে! এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সময়টুকু একটু বেশি বা একটু কম হলে কী ক্ষতি–বৃদ্ধি হতে পারে? তার পরিবর্তে যদি একটি প্রাণীকেও অল্প কিছু ভালবাসা দেওয়া যায় সেটাই কি বড় কথা নয়?
ইরন যখন সত্যি সত্যি পুরো ব্যাপারটি নিয়ে নিজের ভিতরে এক ধরনের আনন্দময়। অনুভূতি প্রায় সৃষ্টি করে ফেলেছে ঠিক তখন সে শুমান্তির একটি আর্তচিৎকার শুনতে পেল।
ইরন মুখ তুলে তাকিয়ে দেখল শুমান্তির সামনে শূন্য থেকে একটি বীভৎস কদাকার জিনিস ঝুলছে।