৩৮তম অধ্যায়
সত্ত্বগুণের কাৰ্য্য
‘ব্রহ্মা বলিলেন, “হে ঋষিগণ! অতঃপর আমি তোমাদিগের নিকট সৰ্ব্বভূতের হিতকর পরমপবিত্র সত্ত্বগুণের বিষয় কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর।
‘আনন্দ, প্রীতি, উন্নতি, প্রকাশ, সুখ, বদান্যতা, অভয়, সন্তোষ, শ্রদ্ধা, ক্ষমা, ধৈৰ্য্য, অহিংসা, মমতা, সত্য, সরলতা, অক্রোধ, অনসূয়া, শৌচ, দক্ষতা, উৎসাহ, বিশ্বাস, লজ্জা, তিতিক্ষা, ত্যাগ, অতন্দ্রিয়তা, অনৃশংসতা, অসংমোহ, সৰ্ব্বভূতে দয়া, অক্রূরতা, হর্ষ, তুষ্টি, বিস্ময়, বিনয়, সাধুব্যবহার, শান্তিকাৰ্য্যে সরলতা, বিশুদ্ধবুদ্ধি, পাপকার্য্যে নিবৃত্তি, ঔদাসীন্য, ব্রহ্মচর্য্য, অনাসক্তি, নিৰ্ম্মমত্ব, ফলকামনাপরিত্যাগ ও নিত্যধর্ম্মের অনুশীলন, এই সমুদয় কার্য্য সত্ত্বগুণ হইতে সমুৎপন্ন হয়। যেসমুদয় ব্রাহ্মণ ঐ সমুদয় অবলম্বন করিয়া ক্রমে ক্রমে শাস্ত্রীয় জ্ঞান, ব্যবহার, সেবা, আশ্রম, দান, যজ্ঞ, অধ্যয়ন, ব্রত, পরিগ্রহ, ধৰ্ম্ম ও তপস্যাতে অনাস্থা প্রদর্শনপূৰ্ব্বক পরব্রহ্মে নিতান্ত ভক্তিপরায়ণ হয়েন, তাঁহারাই যথার্থ সাধুদর্শী। সত্ত্বগুণাবলম্বী মহাত্মারাই রাজস ও তামস কাৰ্য্যসমুদয় পরিত্যাগ করিয়া যোগবলে স্বর্গারোহণপূৰ্ব্বক দেবগণের ন্যায় ইচ্ছানুসারে ঐশ্বর্য্যশালী, স্বাধীন ও ক্ষুদ্রকায় হইতে সমর্থ হয়েন। উঁহাদিগকে দেবতুল্য বলিয়া নির্দ্দেশ কর। উঁহারা স্বর্গারূঢ় হইয়া অভিলষিত দ্রব্যসমুদয় লাভ ও অন্যের সুখসাধন করিয়া থাকেন।
“এই আমি তোমাদিগের নিকট সত্ত্বগুণের বিষয় সবিস্তর কীৰ্ত্তন করিলাম। যে ব্যক্তি ঐ গুণ বিশেষরূপে পরিজ্ঞাত হইতে পারেন, তিনি অনায়াসে সমুদয় অভিলষিত বিষয় প্রাপ্ত ও বিষয়ে নির্লিপ্ত হইতে সমর্থ হয়েন।”