৩৫৩. ভীষ্ম-যুধিষ্ঠিরসংবাদে আশ্রমধর্ম্মপ্রশ্ন

৩৫৩তম অধ্যায়

ভীষ্ম-যুধিষ্ঠিরসংবাদে আশ্রমধর্ম্মপ্রশ্ন

সৌতি কহিলেন, মহর্ষে! মহাত্মা বৈশম্পায়ন জনমেজয়ের নিকট এইরূপে নারায়ণমাহাত্ম্য কীৰ্ত্তন করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, মহারাজ! অতঃপর ধর্ম্মরাজ যুধিষ্ঠির ভীষ্মকে যাহা যাহা জিজ্ঞাসা ও মহাত্মা ভীষ্ম তাঁহাকে যেরূপ উত্তর প্রদান করিয়াছিলেন, তাহা কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। ধর্ম্মপরায়ণ ধৰ্ম্মরাজ পিতামহের মুখে নারায়ণমাহাত্ম্য শ্রবণ করিয়া যারপরনাই সন্তুষ্টচিত্তে পুনরায় তাঁহাকে কহিলেন, “পিতামহ! আপনি আমার নিকট মঙ্গলময় মোক্ষধর্ম্মসমুদয় কীৰ্ত্তন করিলেন। এক্ষণে আশ্রমবাসীদিগের শ্রেষ্ঠধর্ম্ম কীৰ্ত্তন করুন।”

ভীষ্ম কহিলেন, “ধৰ্ম্মরাজ! সমুদয় অশ্রমেই স্বর্গ ও মোক্ষপ্রদ নানাবিধ ধৰ্ম্ম নির্দ্দিষ্ট আছে। যজ্ঞাদি বিবিধ উপায় অবলম্বনপূৰ্ব্বক ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করিতে হয়। ধৰ্ম্মক্রিয়া কখনও নিষ্ফল হয় না। যাঁহার যে ধৰ্ম্মে অভিরুচি হয়, তিনি সেই ধৰ্ম্মেরই সবিশেষ প্রশংসা করিয়া থাকেন। এক্ষণে পূর্ব্বে দেবর্ষি নারদ ইন্দ্রের নিকট যাহা কীৰ্ত্তন করিয়াছিলেন তাহা কহিতেছি, শ্রবণ কর। একদা ত্রিলোকপূজিত দেবর্ষি নারদ বায়ুর ন্যায় অব্যাহতগতিপ্রভাবে ত্রিলোক পর্য্যটন করিতে করিতে ইন্দ্রালয়ে উপস্থিত হইলে, দেবরাজ তাঁহাকে যথেষ্ট সমাদর করিয়া আসন প্রদানপূৰ্ব্বক সমীপে উপবেশন করাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘দেবর্য্যে! আপনি কৌতূহলাক্রান্ত হইয়া সাক্ষীর ন্যায় এই চরাচর বিশ্ব পরিভ্রমণ করিতেছেন। আপনার অবিদিত কিছুই নাই; অতএব যদি আপনি কোন স্থানে কোন আশ্চর্য্য বিষয় দর্শন, শ্রবণ বা অনুভব করিয়া থাকেন, উহা কীৰ্ত্তন করুন। দেবরাজ এইরূপ জিজ্ঞাসা করিলে দেবর্ষি নারদ তাঁহার নিকট যাহা কহিয়াছিলেন, তাহা কীৰ্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ কর।”