এইত কহিল পূজা বিধান যেমতে।
ভূত প্রেত দানা খেলে সেবকের হিতে।।
শ্রদ্ধা করি পূজে ইন্দ্র করিয়া কামনা।
ভবানী পূজহ লোক, খণ্ডিবে যন্ত্রণা।।
দুঃখবিনাশিনী মাতা হরের ঘরণী।
মোরে কৃপা কর মাতা জগৎ-জননী।।
দুর্গতি নাশনী মাতা করুণাদায়িনী।
অনাথ-রক্ষিতা মাতা শুভ প্রদায়িনী।।
জগতজননী মাতা দুঃখবিনাশিনী।
বারেক করুণা কর গিরির নন্দিনী।।
অসুর সংহার মাতা কৈলে অবহেলে।
শুম্ভ নিশুম্ভ মারি রাখিলে সুরকুলে।।
স্বর্গ-মর্ত্ত্য পাতালে করয়ে তব পূজা।
আমার নিস্তার কর দেবী দশভূজা।।
হরি ব্রহ্মাশিব তোমা ধ্যায় নিরন্তর।
তোমার সেবনে হয় নিরাপদ নর।।
কেবল গঙ্গার জল আর বিল্বপাতা।
ইহাতে সন্তোষ বড় জগতের মাতা।।
কেবল মানস সেবা কায়মনে করে।
কভু নাহি ছাড় মাতা তাহার মন্দিরে।।
এই মত স্তব করে দেব পুরন্দর।
শচী ইন্দ্র দুই জনে করি যোড় কর।।
বিস্তর স্তবন যদি কৈল সুরপতি।
তুষ্ট হয়ে মহামায়া শুনি স্তুতি নতি।।
অধিষ্ঠাতা হৈলা তবে জগতের মাতা।
বর লহ দেবরাজ, কহে এই কথা।।
লাজে ইন্দ্র হেঁটমুখ না কহে কথন।
ভবানী দেখিল তবে ইন্দ্র লজ্জা-মন।।
তবে ত শঙ্করপ্রিয়া বলিলা ইন্দ্রেরে।
সহস্র লোচন হৌক তোমার শরীরে।।
দেবীবরে সহস্র যোনি সহস্র লোচন।
ভবানীর বরে ইন্দ্র সন্তুষ্ট তখন।।
অষ্টমী করিলে ব্রহ্মহত্যা পাপ হরে।
দেবীবরে ইন্দ্র সহস্রাক্ষ নাম ধরে।।
অষ্টমী তিথির কথা কহনে না যায়।
ভবানী সন্তোষ সদা থাকেন তাহায়।।
অষ্টমী-মাহাত্ম্য কথা যেই জন শুনে।
আয়ু যশ পুণ্য তার বাড়ে দিনে দিনে।।
যাহার শ্রবণে খণ্ডে ভবাব্ধি বন্ধন।
সেবহ দেবীর পদ করিয়া যতন।।
পৃথিবীতে পঞ্চ ব্রত করে যেই জন।
কদাচিত অমঙ্গল না হয় কখন।।
এই ত কহিনু ইন্দ্র-শাপের মোচন।
ইহার শ্রবণে লোক হয় ধর্ম্ম-মন।।