৩০৫তম অধ্যায়
অজ্ঞানতায় বার বার সংসারে গতাগতি
“বশিষ্ঠ কহিলেন, ‘হে রাজন্! মনুষ্য স্বীয় অজ্ঞান ও অজ্ঞানান্ধ ব্যক্তিদিগের সংসর্গনিবন্ধন বারংবার কলেবর পরিত্যাগপূর্ব্বক অসংখ্য দেহ আশ্রয় করিয়া থাকে। সত্ত্ব, রজ ও তমোগুণপ্রভাবে তাহার কখন দেবযোনি, কখন মনুষ্যযোনি ও কখন তির্য্যোগযোনি লাভ হয়। যেমন যোড়শকলাপরিপূর্ণ চন্দ্রের পঞ্চদশ কলাই বারংবার ক্ষয়প্রাপ্ত ও পরিবর্দ্ধিত হয়, কিন্তু যোড়শী অমাকলার [অমানাম্নী মহাকলার] ক্ষয় বা বৃদ্ধি হয় না, তদ্রূপ জীবাত্মার স্থূলদেহই বারংবার ক্ষীণ ও পরিবর্দ্ধিত হইয়া থাকে; কিন্তু লিঙ্গশরীরের ক্ষয় বা বৃদ্ধি হয় না। আর যেমন প্রলয়কালে ষোড়শীকলার ক্ষয় হইলে চন্দ্রের সম্পূর্ণ বিনাশ হয়, তদ্রূপ লিঙ্গশরীর বিনষ্ট হইলেই জীবাত্মার মুক্তিলাভ হইয়া থাকে। স্থূলদেহের প্রতি মমতা থাকিতে জীবাত্মার কখনই মুক্তিলাভের সম্ভাবনা নাই। জীবাত্মা চতুর্ব্বিংশতিতত্ত্বাতীত নিৰ্ম্মল পরমাত্মার অপরিজ্ঞানবশতঃই স্বয়ং শুদ্ধ হইয়াও অশুদ্ধ দেহের সংসর্গনিবন্ধন অপবিত্রতা, চৈতন্যস্বরূপ হইয়াও জড়দেহের সংসর্গনিবন্ধন জড়ত্ব এবং নির্গুণ হইয়াও ত্রিগুণা প্রকৃতির সংসর্গনিবন্ধন ত্রিগুণত্ব লাভ করিয়া থাকেন।’ ”