ভৌতিক উপন্যাস
ভৌতিক গল্প

২.৩ সুনয়নী-উপাখ্যান

।।তিন।। সুনয়নী—উপাখ্যান

গভীর রাত্রে সুনয়নীর মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে অবিনাশ আর তার এক সঙ্গী তাকে মোটর থেকে নামিয়ে বিরাট কম্পাউন্ডওয়ালা বাড়ির দোতলার একটা ঘরে আটকে রাখল।

সুনয়নী পড়ে পড়ে গোঙাতে লাগল। কিন্তু কথা বলতে পারল না। মুখ বাঁধা।

সুনয়নী দেখল ঘরটা বেশ বড়ো। কিন্তু অন্ধকার। ঘণ্টাখানেক পরে রাত তখন ঠিক কত জানে না, মনে হল কেউ একজন দরজার বাইরে এসে দাঁড়াল। তারপর ঝনাৎ করে শেকল খুলে ঘরের ভেতর এসে ঢুকল।

কালো কোট—প্যান্ট পরা সেই ম্যাজিশিয়ান। হাতে তার খাবার।

ম্যাজিশিয়ান থালা—বাটি একটা টেবিলের ওপর রেখে সুনয়নীর মুখের বাঁধন খুলে দিল। সুনয়নী তার দু—পা জড়িয়ে ধরল।

ম্যাজিশিয়ান পা দিয়েই তাকে ঠেলে দিয়ে বলল, খাবার রইল। কুঁজোয় জল আছে। না খেলে লাভ নেই। কেননা তোমাকে এখন নতুন করে বেঁচে থাকতে হবে। কাল রাত্তিরে আবার দেখা হবে।

বলেই ঘরের বাইরে বেরিয়ে গিয়ে দরজার শেকল তুলে দিল।

পরের দিন সকাল, দুপুর, বিকেল কেটে গেল। ম্যাজিশিয়ান আর আসেনি। ঝি আবার খাবার দিয়ে গেল।

—ও মা! সব খাবারই যে পড়ে আছে! কিছুই তো খাওনি। না খেয়ে লাভ নেই বাছা। এসে যখন পড়েছ—

বলে আর এক থালা রেখে দিয়ে গেল।

অনেক রাত্তিরে বাড়ির সামনে মোটর গাড়ির শব্দ। একটা গাড়ি যেন কম্পাউন্ডের মধ্যে ঢুকল। তারপর গাড়ির দরজা খোলার আর বন্ধ করার শব্দ।

সুনয়নী ভাবল—নিশ্চয়ই পুলিশ এসেছে তাকে উদ্ধার করতে। এই মনে করে রুদ্ধ নিশ্বাসে অপেক্ষা করতে লাগল।

একটু পরেই দরজার শেকল খোলার শব্দ। সুনয়নী চমকে উঠল। দেখল দরজা খুলে ঢুকছে অবিনাশ বক্সী। সঙ্গে পুলিশের পোশাক পরা একজন ফিরিঙ্গি সাহেব।

—উঠে এসো। অবিনাশ বক্সী কঠিন স্বরে যেন আদেশ করল।

—উঠে এসো বলছি।

—না। বলে চিৎকার করে সুনয়নী ভয়—বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে রইল।

তখন অনিশ বক্সী এগিয়ে গিয়ে ওর হাত ধরে টানতে গেল। কাছেই ছিল টেবিলটা। সুনয়নী প্রাণপণে টেবিলের পায়া আঁকড়ে ধরে রইল। তার দু—চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। —আমায় দয়া করে ছেড়ে দিন। এই আমি আপনাদের পায়ে পড়ছি।

অবিনাশ বক্সী লাথি মেরে বলল, হ্যাঁ, ছাড়ছি। নীচে চল।

সুনয়নী হাত জোড় করে বলল, দোহাই আপনাদের। আমি বিবাহিতা। আমার স্বামী আছেন। তিনি এখনও পাগলের মতো খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

অবিনাশ বলল, তোমার স্বামী তোমাকে নিশ্চয়ই পাবে। তবে সাত দিন পর।

এইসময়ে ফিরিঙ্গি পুলিশ অফিসার বললেন, আজ না হয় থাক মিঃ বক্সী। আগে ও পোষ মানুক।

—না না, এ—সব মেয়ে কোনোদিনই পোষ মানবে না। আজই—

বলে সুনয়নীকে জোর করে টেনে তুলতেই সুনয়নী মরিয়া হয়ে আচমকা অবিনাশকে একটা ধাক্কা মারল। অবিনাশ হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল। আর সেই ফাঁকে সুনয়নী খোলা দরজা দিয়ে বেরিয়ে খাড়া সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগল।

অবিনাশ তখনই উঠে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে উঠল—সাবধান!

সঙ্গে সঙ্গে পকেট থেকে পিস্তল বার করে ফায়ার করল।

—উঃ মাগো! বলে সুনয়নী সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়ল।

ঠিক তখনই তিনতলা থেকে একটি স্ত্রীলোক ছুটে নেমে এল।

—এ কী করলে! মেয়েটাকে মেরে ফেললে!

সামনে যে একজন ফিরিঙ্গি পুলিশ অফিসার রয়েছে স্ত্রীলোকটি তা গ্রাহ্যও করল না।

—না, মারিনি। ভয় দেখিয়েছি শুধু। এমন জিনিস কি মেরে ফেলা যায়? কিন্তু ঘর থেকে তুমি বেরিয়ে এলে যে? তোমায় না বারণ করেছিলাম, আমি না ডাকলে তুমি বেরোবে না।

স্ত্রীলোকটি চেঁচিয়ে উঠে বলল, হ্যাঁ জানি। শুধু সাহেব—মেমদের সামনে তোমার স্ত্রী হয়ে দেখা দেওয়া ছাড়া আমার বের হওয়া তুমি চাও না। কিন্তু—কিন্তু কী করব? অসহায় এক—একটি মেয়েকে ধরে এনে তুমি তাদের সর্বনাশ করবে এ আর আমি কতদিন সহ্য করব?

—আঃ পদ্মা! চলে যাও বলছি।

—যাচ্ছি। তার আগে দেখব মেয়েটি বেঁচে আছে কি না। যদি মরে গিয়ে থাকে তাহলে আমিই তোমায় পুলিশে দেব। আর তুমিই বা কীরকম পুলিশ—সাহেব, চোখের সামনে নিরীহ মেয়েটাকে গুলি করল তবু হাঁ করে দেখছ?

ফিরিঙ্গি পুলিশ অফিসার তাড়াতাড়ি সুনয়নীর কাছে এগিয়ে গেল। দেখল গুলি লাগেনি।

কোনো কথা না বলে ফিরিঙ্গি অফিসার মাথা নীচু করে সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগল। অবিনাশ ছুটে গেল। হাত জোড় করে বলল—স্যার, আপনি চলে যাচ্ছেন?

—হ্যাঁ, আজ থাক। পরে একদিন—

বলতে বলতে ফিরিঙ্গি পুলিশ গাড়িতে গিয়ে উঠল।

সেদিনের মতো সুনয়নী বেঁচে গেল।

.

পরের দিন।

গভীর রাত্রি। অন্ধকার ঘরে দেওয়ালে ঠেসান দিয়ে নিজের ভাগ্যের কথা সুনয়নী ভাবছিল। একদিন ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়েছে। আজ না জানি কী হয়।

তার মনে পড়ছিল বাড়ির কথা। না জানি তার স্বামী কী করছে? কোথায় খুঁজে খুঁজে বেড়াচ্ছে! আর বুড়ো শ্বশুর? সুনয়নী নইলে যাঁর একবেলা চলত না? না জানি কেঁদে কেঁদে বোধহয় অন্ধ হয়েই গেলেন!

চিন্তায় বাধা পড়ল। দরজায় ঠুক—ঠুক শব্দ। সুনয়নী চমকে উঠল। নিজের অজ্ঞাতসারেই আর্তনাদ করে উঠল—না না না—

নীচু গলায় বাইরে থেকে কে যেন বলল, সুনয়নী, ভয় নেই। দরজা খোলো।

ভয় নেই! তবু ভয়ে ভয়েই সুনয়নী দরজা খুলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে একটা ছায়ার মতো ঘরে এসে ঢুকল অবিনাশের স্ত্রী।

—আপনি!

পদ্মা ঠোঁটের ওপর আঙুল চেপে ইশারায় বলল, চুপ। শিগগির পালাও।

সুনয়নী যেন নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারল না। অস্ফুটস্বরে বলল, পালাব!

—হ্যাঁ, হ্যাঁ, পালাবে। পালাবে না তো কি মরবে? ছেলেমানুষ তুমি। তোমায় আমি নষ্ট হতে দেব না।

সুনয়সী হাত জোড় করে বলল, কী করে যাব?

পদ্মা গলার স্বর যতটা সম্ভব নীচু করে বলল, সিঁড়ির দরজা খুলে রেখেছি। একটু সাহস করে বেরিয়ে পড়ো।

—কিন্তু তারপর? এই রাতে যাব কোথায়?

পদ্মা বিরক্ত হয়ে বলল, যমের বাড়ি! তোমার কি এখান থেকে যেতে ইচ্ছে নেই?

সুনয়নী কান্না—জড়ানো স্বরে বলল, আমি এখুনি যাচ্ছি। পথ—ঘাট চিনি না। তাই—

বলেই সুনয়নী ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল, পদ্মা হাত চেপে ধরল।

—দাঁড়াও। পাগলের মতো যেও না। যা বলি মন দিয়ে শোনো। এইটে রাখো। বলে কাপড়ের ভেতর থেকে একটা পিস্তল বের করে সুনয়নীর হাতে দিল।

—এটা কী? আঁতকে উঠল সুনয়নী।

—গুলিভরা পিস্তল। এইটে টেনে দিলেই গুলি ছুটে যাবে। অনেক কষ্টে সরিয়ে রেখেছি। এটা আমার জন্যেই সরিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি তোমার দরকার বেশি।

—কিন্তু—

—না, কিন্তু—টিন্তু নয়। ধরো এইভাবে । শক্ত করে ধরো। যদি ও টের পায়—তোমায় ধরতে যায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে মারবে। আর তুমি যদি ধরা পড়ে যাও তাহলে আত্মঘাতী হবে। বুঝলে?

সুনয়নী কোনোরকমে মাথা নেড়ে সায় দিল।

—যাও।

পদ্মাকে প্রণাম করে সুনয়নী চলে যাচ্ছিল, পদ্মা পিছু ডাকল।—শোনো। কাল দেখেছিলাম আমাদের পাড়ার জ্যোতিষী শিবানন্দ ভট্টাচার্য কয়েকজনকে নিয়ে বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিল। লোকটি ভালো। তোমার সৌভাগ্য হলে আজও হয়তো পথে ওঁকে পাবে। যদি পথে দেখা না পাও তাহলে ওঁর বাড়িতে চলে যাবে। পথের ওপাশে বেলগাছওলা যে একতলা বাড়ি—ওটাই শিবানন্দ ঠাকুরের বাড়ি। যাও। জয় মা শঙ্করী! বলে পদ্মা দু—হাত কপালে ঠেকাল।

সবই হল—শুধু পদ্মাদেবী যদি সঙ্গে একটা টর্চ দিতে পারতেন!

খুব তাড়াতাড়ি সরু আঁকাবাঁকা সিঁড়ি দিয়ে নামছিল সুনয়নী। পা দুটো কাঁপছিল থরথর করে। হঠাৎই কীসে পা বেধে হোঁচট খেল। সঙ্গে সঙ্গে সেটাও শব্দ করে সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ল।

সেই শব্দে ঘুম ভাঙল অবিনাশের। নিজের ঘর থেকেই চেঁচিয়ে উঠল—কে?

তারপরই শোনা গেল ভারী পায়ের শব্দ। তিনতলা থেকে নেমে আসছে অবিনাশ বক্সী। দু—চোখ জ্বলছে হিংস্র পশুর মতো।

—সু—ন—য়—নী—

মূর্তিমান বিভীষিকা তাড়া করে আসছে। সুনয়নী তখনো দরজার কাছে পৌঁছোতে পারেনি। হোঁচট খেয়ে সেও গড়িয়ে পড়েছিল সিঁড়ি থেকে। অবিনাশ তিন ধাপ উঁচু সিঁড়ি থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ল সুনয়নীর ওপর।

—এইবার—

—ছাড়ো, ছাড়ো বলছি—

—হ্যাঁ ছাড়ছি। বলে অবিনাশ আঁচল চেপে ধরতেই সুনয়নীর হাতের পিস্তল গর্জে উঠল।…

.

শিবানন্দ ভট্টাচার্য থামলেন। দু—বার কেশে নিয়ে বললেন, এইভাবেই পিশাচ অবিনাশ বক্সী সুনয়নীর হাতে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করল। আগের রাত থেকে আমার লোকেরা অবিনাশের বাড়ির ওপর লক্ষ রাখছিল। তারা উদভ্রান্ত সুনয়নীকে আমার কাছে নিয়ে এল। আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সুনয়নীকে নষ্ট হতে দেব না। তার স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দেবই। আমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা হয়েছে।

বলে বৃদ্ধ শিবানন্দ কাঁপা কাঁপা দুই হাত তুলে ভগবানের উদ্দেশে প্রণাম জানালেন।

—তারপর?

—তারপর কী হতে পারে আপনারা অনুমান করে নিন। অবিনাশের অতৃপ্ত আত্মা নিশ্চয় ওই গোলবাড়িতে অপেক্ষা করেছিল বছরের পর বছর, কবে সুনয়নীকে পাবে। সে বোধহয় এমনই ক্ষমতার অধিকারী হয়েছিল যে এত বছর পরেও আকর্ষণ করে এনেছিল নতুন প্রজন্মের সুনয়নীকে। কিন্তু সৌভাগ্য—এবারেও চরম ক্ষতি করতে পারল না।

সঞ্জয় আশ্চর্য হয়ে বলল, আপনার মতে কি রীণাই সে সুনয়নী?

—তাই তো মনে হয়। রহস্যময় জন্মান্তরবাদের ওপর কে শেষ কথা বলবে?

—আমি বিশ্বাস করি না।

শিবানন্দর চোয়াল শক্ত হল। উত্তেজিত গলায় বললেন, সেটা আপনার অভিরুচি। এ ব্যাপারে আমি আপনার সঙ্গে তর্ক করব না। আপনারা একটা পুরোনো বাড়ির খবর জানতে এসেছিলেন, আমি খবরের সঙ্গে একটা বিশেষ ঘটনাও জানিয়ে দিলাম। যে ঘটনার সঙ্গে আমিও জড়িয়ে ছিলাম।

একটু থেমে বললেন, তবে আপনার স্ত্রীকে দেখতে পেলে অন্তত নিজের কাছে নিজে পরিষ্কার হয়ে যেতাম।

ডাক্তার রুদ্র পকেট থেকে সঞ্জয় আর রীণার ছবিটা বের করে বললেন, দেখুন তো এই ছবিটা।

শিবানন্দ ছবিটা হাতে নিয়ে চোখের খুব কাছে ধরে দেখতে লাগলেন। তার পর নাতিকে বললেন, আমার তেরো নম্বর কাগজের বান্ডিলটা নিয়ে এসো তো।

ভদ্রলোক তখনি ভেতরে চলে গেলেন। শিবানন্দ তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে রীণার ছবিটা দেখতে লাগলেন।

মিনিট দশেক পরে নাতি পুরোনো দড়ি দিয়ে বাঁধা একটা ফাইল নিয়ে এলেন।

ধুলো ঝেড়ে শিবানন্দ সেটা খুলে একগাদা কাগজপত্রের মধ্যে থেকে বের করলেন আর—এক দম্পতির ফটো। ফটোটার রং হলদেটে হয়ে গেছে। চারিদিকে পোকায় কেটেছে।

ছবিটা একবার দেখে নিয়ে শিবানন্দ দুখানি ছবিই ডাক্তার রুদ্রের হাতে দিয়ে বললেন, এইটে সুনয়নী আর তার স্বামীর ফটো। থানায় যদি দরকার হয় মনে করে সুনয়নীর স্বামীর কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছিলাম। এবার দুটো ছবিই আপনারা ভালো করে দেখুন।

ডাক্তার রুদ্র ছবি দুখানা দেখলেন। স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। কী ভাবতে ভাবতে ছবিটা সঞ্জয়ের হাতে দিলেন।

কিশোরী মেয়েটি এসে দাঁড়াল দরজার কাছে। চকিতে একবার সঞ্জয়ের দিকে তাকিয়ে শিবানন্দকে বলল, সন্ধে হয়ে গেছে, খাবে চলো।

—হ্যাঁ, চলো।

শিবানন্দ উঠে বসলেন। নাতি এসে কাছে দাঁড়ালেন।

—তবু যদি আপনাদের সন্দেহ থাকে আপনার স্ত্রীকে একদিন নিয়ে আসবেন। তাঁকে কিছু বলবেন না। দেখবেন তিনি আমায় চিনতে পারেন কি না। তা হলেই সত্যাসত্য প্রমাণ হয়ে যাবে। নমস্কার।

বলে নাতির হাত ধরে কাশতে কাশতে ভেতরে চলে গেলেন।

.

ট্যাক্সিতে সারাক্ষণ দুজনে একটি কথাও বলেননি।

ট্যাক্সি এসে দাঁড়াল বাড়ির সামনে।

নামবার সময়ে সঞ্জয় বলল, তাহলে কালই কি রীণাকে নিয়ে শিবানন্দবাবুর কাছে যেতে বলেন?

—কখনোই না।

সঞ্জয় থমকে গেল।

—কেন? একটা মীমাংসা হয়ে গেলে হত না? যদিও ছবিতে দুজনের খুবই মিল তবু আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।

ডাঃ রুদ্র হেসে বললেন, কি দরকার বিশ্বাস করে? ও নিয়ে আর মাথা ঘামিও না। এমনকি, আমার বিবেচনায় রীণার কাছেও এ—সব কথা বলার দরকার নেই। ওই যে রীণা আমাদের দেখতে পেয়েছে। হাত নাড়ছে।

সঞ্জয়ও ওপরে তাকাল। হেসে হাত নাড়ল।

—আমি এই ট্যাক্সতেই বাড়ি চলে যাই।

সঞ্জয় বলল, তা কী করে হয়? একটু কফি খাবেন না? ওই দেখুন রীণা আপনাকে ডাকছে।

ডাঃ রুদ্র হাসতে হাসতে ট্যাক্সি থেকে নেমে এলেন।

.

১৯৯২, ধারাবাহিক, নবকল্লোল