বিশ্লেষণ
জাস্টিস মৈত্র আবার কিরীটীর চিঠিতে মন দিলেন, একপাশে কিরীটীর ডাইরীর অনুলিপিগুলো সরিয়ে রেখে
কিরীটী লিখেছে :
আবার ফিরে যাওয়া যাক রায়পুর-রহস্যের মধ্যে। মালতী দেবী নিজেই বলেছেন, জানতে পারলেন গরীবের ঘরে তাঁর জন্ম। তবু রূপ ছিল বলে রাজবাড়িতে বিয়ে হল তাঁর। কিন্তু ভাগ্যদেবতা পরিহাস করলেন তাঁর সঙ্গে—রাণীর মুকুট তাঁর মাথায় পরিয়ে দিলেন বটে কিন্তু সে মুকুট ছিল দুঃখের কণ্টকে কণ্টকিত। তবু বলব বোধ হয় মালতী রাণীর একটা সহজাত গরিমা নিয়েই জন্মেছিলেন। ভেবে দেখুন শেষ পর্যন্ত তাঁর সেই আভিজাত্যবোধই তাঁকে দিয়ে সব কিছু স্বীকার করাল এবং মালতী দেবী যদি নিজ হতে আমার সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করে না ধরতেন, তবে হয়ত রায়পুরের রহস্য এত শীঘ্র উদঘাটন করা আমার পক্ষেও সম্ভব হত না। তাঁকে আমি কোনদিনই ভুলতে পারব না। সেরাত্রে আমার বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার পর আর তিনি রাজবাড়িতে ফিরে যাননি। কোথায় গেছেন কেউ তা জানে না। তবে যতদূর মনে হয় তিনি কোন তীর্থস্থানেই জীবনের বাকি কটা দিন কাটাতে চলে গেছেন হয়ত। তাঁর জীবনের শেষের দিন কটি শান্তিতে কাটুক, এই প্রার্থনাই জানাই সেই সর্বনিয়ন্তার কাছে। তাঁকে আমার প্রণাম জানিয়ে আরও একবার রহস্য বিশ্লেষণে ফিরে যাই।
আগেই বলেছি শ্ৰীকণ্ঠ মল্লিক মৃত্যুর কয়েকদিন পূর্বে যখন নৃসিংহগ্রামে যান, তাঁর ছেলে রসময়ও সেইসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাপ ও ছেলেতে বনিবনা আদপেই ছিল না কোনদিন। তার কারণও হয়ত রসময়ের শরীরে যে অতি সাধারণ রক্ত প্রবাহিত হয়েছিল তার দুষ্ট প্রভাব। এবং রসময় যে মুহূর্তে শুনলেন শ্রীকণ্ঠ নতুন উইল করেছেন, তিনি হয়ত ভেবেছিলেন তাঁর তখন পিতা শ্রীকণ্ঠকে হত্যা করা ছাড়া হয়ত আর দ্বিতীয় কোন পথ নেই। তাই শিবনারায়ণের সঙ্গে গোপনে চক্রান্ত করে শ্রীকণ্ঠ মল্লিককে হত্যা করা হল।
এবং নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, সম্পত্তির লোভেই রসময় তাঁর দত্তক পিতা শ্রীকণ্ঠ মল্লিককে হত্যা করতে কুণ্ঠিত হননি। সত্যিকারের পিতা ও পুত্রের মধ্যে রক্তের যোগাযোগে যে স্বাভাবিক স্নেহ ও ভালবাসা গড়ে ওঠে তার কিছুই তো ছিল না রসময় ও শ্রীকণ্ঠ মল্লিকের মধ্যে, এবং সেটা না থাকাটাই স্বাভাবিক। অবশেষে সম্পত্তি পাবার পর এবং ঐ সুবিপুল সম্পত্তি তাঁর হাতের মুঠোর মধ্যেও এসে পাছে আবার নাগালের বাইরে চলে যায় এই ভয়েই হয়ত তাঁকে শেষ মুহূর্তে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে ফেলেছিল। রসময় যদি নিজ হাতে তাঁর পিতাকে হত্যা করতেন দুষ্কর্মের কোন সাক্ষী না রেখে, তবে হয়ত বর্তমান হত্যা-মামলা অন্যপথে প্রবাহিত হত; কিন্তু তা হল না। অত বড় গহিত ও দুষ্কর্ম একাকী সাঙ্গ করবার মত মনোবল রসময়ের হয়ত ছিল না বলেই তাঁর দুষ্কর্মের সঙ্গী হিসাবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন শিবনারায়ণকে। এবং এসব ক্ষেত্রে যা হয়, শিবনারায়ণই অবশেষে ভূত হয়ে রসময়ের কাঁধে চেপে বসল, রক্ত চোষার মতই শিবনারায়ণ রসময়ের রক্ত চুষে নিতে লাগল দিনের পর দিন। এবং স্বভাবতই ক্রমশ রসময় রক্তহীন হয়ে পড়তে লাগলেন।
এমন সময়ে রঙ্গমঞ্চে এসে দাঁড়ালেন সুধীনের পিতা হতভাগ্য নির্বিরোধী সুরেন চৌধুরী।
শ্রীকন্ঠের দ্বিতীয় উইল রসময় শ্রীকণ্ঠকে হত্যার পূর্বেই সরিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু কথা হচ্ছে, শ্ৰীকণ্ঠ দ্বিতীয়বার উইল করেছেন এ কথা রসময় জানতে পারলেন কি করে? ব্যাপারটা
তো আগাগোড়াই অত্যন্ত গোপন করা হয়েছিল সকলেই তা জানে। তবে?
দেখুন নিয়তির কি অলঙঘ্য আদেশ! নিয়তি কি নির্মম!
উইল করবার পর শ্রীকণ্ঠ যখন তাঁর স্ত্রীর কাছে সেই কথা একদিন বলেছিলেন, সেই সময় হঠাৎ রসময় সেই ঘরে গিয়ে প্রবেশ করেন এবং সব কথা তিনি জানতে পারেন।
একথাটা রসময় তাঁর মৃত্যুর কিছুক্ষণ পূর্বেই সখেদের সঙ্গে নাকি তার স্ত্রী মালতী দেবীকে বলেছিলেন।
মালতী দেবীই পরে সেকথা আমাকে বলেন। এই ব্যাপারের আগে পর্যন্ত মালতী দেবীও শ্রীকণ্ঠের দ্বিতীয় উইল সম্পর্কের বিন্দুবিসর্গও জানতেন না। আগেই বলেছি হত্যার বিষ রায়বংশের রক্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং সেই বিষের নেশাতেই রসময় শ্রীকণ্ঠ মল্লিককে হত্যা করেন এবং সুবিনয় আবার তার পিতা রসময়কে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেন। কারণ শ্রীকন্ঠের দ্বিতীয় উইলের কথা তিনি শুনেছিলেন। যদিও সুবিনয়ের সেই উইলটির অস্তিত্ব সম্পর্কে তাঁর কোন জ্ঞানই ছিল না। তাঁর হয়ত ভয় হয়েছিল, তাঁর পিতা না আবার বিমাতার প্ররোচনায় নতুন করে কখনও কোন দুর্বল মুহূর্তে কোন এক উইল করেন। পিতা রসময়ের চাইতে পুত্র সুবিনয় আর এক ধাপ উঠে যান। শ্রীকণ্ঠকে হত্যা করবার পর রসময় সুরেন চৌধুরীকেও ইহসংসার থেকে সরাতে মনস্থ করেন। আপদের শেষ না রাখাই ভাল, হয়ত এই নীতিই তাঁর ছিল। চিরদিনের মত সরিয়ে ফেলবার জন্যই সাদরে চাকুরি দিয়ে রসময় সুরেনকে নৃসিংহগ্রামে দেওয়ানজীর পদে এনে নিযুক্ত করলেন। এক ঢিলে দুই পাখীই মারা হল। এবং এবারেও শিবনারায়ণকেই সুরেনকে হত্যা করবার জন্য নিযুক্ত করলেন। শিবনারায়ণ হয়ত এবারে দেখলে, বার বার এইভাবে টাকার লোভে হত্যা করবার মধ্যে প্রচুর বিপদের সম্ভবনা আছে, তাই সে এবারে রসময়ের উপরেও এক হাত নিল।
সুরেনকে হত্যা না করে তাঁকে গুম করে ফেললে এবং শ্রীকণ্ঠকে হত্যা করবার সময় যে কর্মচারীটি তার দক্ষিণ হস্তস্বরূপ ছিল, তাকেই হত্যা করে হত্যার পর চেহারার বিকৃতি ঘটিয়ে সুরেনের মৃতদেহ বলে চালিয়ে দিল। এবং সুরেনের মৃত্যু (?) রটনার সঙ্গে সঙ্গে শিবনারায়ণ আবির্ভূত হল রঙ্গমঞ্চে এবারে। এতদিন ছিল লোকচক্ষুর অন্তরালে, এবারে প্রকাশ্যে রসময়ের সাহায্যে নৃসিংহগ্রামে নায়েবীর গদীতে উপবেশন করে তার আসল খেলা শুরু করল।
শিবনারায়ণ সুরেনকে একেবারে হত্যা না করে কেন গুম করে রাখলো তা নিয়ে আগেই আলোচনা করেছি।
শিবনারায়ণের সঙ্গে যদি কোনদিন দেখা করতে পারতাম তবে এই ব্যাপারের একটা খোলাখুলি আললাচনা করতে পারতাম, কিন্তু ঘটনাচক্রে তা তো হয়ে উঠল না, তাই বর্তমানে হত্যা-রহস্যের মীমাংসার ব্যাপারে যে explanationটা মনে মনে আমি দাঁড় করিয়েছিসেটাই এবার আলোচনা করব। ইচ্ছা হলে আপনি সেটা গ্রহণ করতে পারেন, না হলে ভুলেও যেতে পারেন, কারণ বর্তমান মূল ঘটনার মীমাংসার ব্যাপারে উক্ত ঘটনাটা একেবারে বাদ দিলেও হতভাগ্য সুধীন চৌধুরীর মুক্তির কোন বাধা থাকবে বলে আমার মনে হয় না।
আমার মনে হয় শিবনারায়ণের কাছে অর্থটাই ছিল সব চাইতে বড় জিনিস, তার পূর্ববর্তী জীবনকে পর্যালোচনা করলেও সেই কথাটা বেশী করে এক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলেই মনে হবে।
শিবনারায়ণ লোকটা ছিল যেমন প্রচণ্ড নৃশংস, তেমনি ভয়ঙ্কর অর্থপিশাচ, অথচ সুবিনয়ের চাইতে ঢের বেশী বুদ্ধি রাখত সে।
রসময়ের সহকারীরূপে সে শ্ৰীকণ্ঠ মল্লিককে হত্যা করতে এতটুকু দ্বিধা করেনি, এবং নিজেকে বাঁচাবার জন্যই সে নিজহাতে শ্ৰীকণ্ঠ মল্লিককে হত্যা না করে অন্যের দ্বারা হত্যা করিয়েছিল। তারপর রসময় যখন সুরেনকে আবার হত্যা করবার জন্য মনস্থ করলে, তখনও সে রসময়কে সাহায্য করতে দ্বিধাবোধ করেনি বিন্দুমাত্রও। শিবনারায়ণ ইতিমধ্যে সুবিনয়ের সঙ্গেও বেশ জমিয়ে নিয়েছিল। সে দেখলে রসময়ের দিন ফুরিয়ে এসেছে, ভবিষ্যতে গদীতে বসবে সুবিনয় মল্লিক, সুবিনয়কে হাতে রাখতে পারলে ভবিষ্যতে সুবিনয়কেও অনায়াসেই দোহন করা চলতে পারে। তাই হয়ত সে সুরেনকে প্রাণে একেবারে না মেরে গুম করে ফেলবার মনস্থ করলে, অবিশ্যি আগেই বলে নিয়েছি এটা আমার একটা অনুমান মাত্র।
সুরেন চৌধুরীকে হত্যার অভিনয় করে এক ঢিলে চতুর-চুড়োমণি শিবনারায়ণ দুই পাখি মারল। এখানে একটা কথা মনে হওয়া স্বাভাবিক, গুপ্তকক্ষের সংবাদ শিবনারায়ণ কেমন করে পেল? এক্ষেত্রেও আমার মনে হয়, প্রথমে হয়ত সে সুরেনকে অন্য কোথাও লোকচক্ষুর অন্তরালে বন্দী করে রেখেছিল, পরে নৃসিংহগ্রামে নায়েবী পদে অধিষ্ঠিত হয়ে গুপ্তকক্ষের সন্ধান পায় কোন উপায়ে এবং সেখানে সুরেনকে বন্দী করে রাখে।
শিবনারায়ণ শ্রীকণ্ঠকে নিজহাতে হত্যা না করলেও, হত্যায় সাহায্য সে করেছিল, হত্যার সাহায্যকারী হিসাবে সে অপরাধী এবং murder or abattement of murder বস্তুত অপরাধটা একই শ্রেণীর। দণ্ড মুকব হয় না। শ্ৰীকণ্ঠর হত্যার ব্যাপারে রসময়ই একমাত্র সাক্ষী বেঁচে তখনও, প্রধান সাক্ষীকে তো আগেই সে শেষ করে ফেলেছিল। যা হোক নির্বিঘ্নে রসময়কে পৃথিবী হতে সরানো হল বিষপ্রয়োগে। হতভাগ্য সুবিনয় নিজের অজান্তেই শিবনারায়ণের মুঠোর মধ্যে এসে ধরা দিলেন।
এতদিনে সুবিনয়ের পীত বিষের ক্রিয়া শুরু হল।
আবার একটা কথা এসে পড়ছে, সুবিনয় কি জানতেন সুরেন চৌধুরী আসলে নিহত হননি? আমার কিন্তু মনে হয়, হ্যাঁ, তিনি এ কথা বোধ হয় জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু জানতে পারলে কি হবে, তাঁর তখন সাপের ছুঁচো গেলবার মত অবস্থা অনেকটা। এবং সম্ভবত দুটি কারণে সুবিনয় মুখ খুলতে পারেননি। প্রথমত এতদিন পরে যদি লোক জানতে পারে আসলে সুরেন চৌধুরী মরেননি, তাহলে মল্লিকবংশের সম্মান গৌরব সব ধূলায় লুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়ত এই রহস্যের উদঘাটনের সঙ্গে সঙ্গে বংশের অনেক কলঙ্ক-কাহিনীই আর চাপা থাকবে না। এবং এ কথাও সেই সঙ্গে প্রমাণিত হবে রসময়ই শ্ৰীকণ্ঠ ও সুরেনের হত্যার উদ্যোক্তা। কাজেই বেচারাকে চুপ করে বিষ হজম করতে হয়েছে।
জাস্টিস মৈত্র যেন অবাক হয়ে যান। একটা কঠিন রহস্যের গোলকধাঁধায় যেন কিরীটী তাঁকে ঘুরিয়ে নিয়ে চলেছে। সত্যি, এ রহস্যের কিনারা কোথায়? ভাবেন কেমন করেই বা কিরীটী কঠিন রায়পুর হত্যারহস্যের মীমাংসায় গিয়ে পৌঁছাল? কোন্ পথ ধরে? অদ্ভুত বিচার-বিশ্লেষণ শক্তি লোকটার!
দীর্ঘদিন ধরে বিচারালয়ে বাদী ও বিবাদী পক্ষের জেরা ও জবানবন্দি নিয়ে এতগুলো লোকের সম্মিলিত বিচারশক্তি দিয়ে যে অপরাধের মীমাংসায় পৌঁছনো গেল, অলক্ষ্যে যে তার মধ্যে এত বড় গলদ থেকে গেল দৃষ্টি এড়িয়ে, ব্যাপারটা শুধু আশ্চর্যই নয় অভূতপূর্ব যেন।
ডাঃ সুধীন চৌধুরী সুহাস মল্লিকের হত্যাকারী নয়?
সত্যি মানুষের সাধারণ বিচারবুদ্ধি বাইরেও যে কত অমীমাংসিত জিনিস থেকে যায়, ভাবতেও আশ্চর্য লাগে!
প্রমাণ—প্রমাণই আমাদের বিচারে সব চাইতে বড় কথা।
মন যেখানে বলছে সেটা সত্যি নয়, ভুল, মিথ্যা—সেখানেও তো নিছক আমাদের মনগড়া কতকগুলো প্রমাণের দোহাই দিয়েই কত সময় আমরা আমাদের বিচারের মীমাংসা করে নিই।
বিবেক বলে কি তবে কিছুই নেই? মানুষের মন হল মিথ্যা, আর সামান্য প্রমাণই হল সত্যি?
জাস্টিস মৈত্র আবার কিরীটীর চিঠিতে মনঃসংযোগ করেন। রসময়ের রক্তের সঙ্গেই রায়-গোষ্ঠীতে এসেছিলবেনোজল। এবারে আবার সেইবেনোজলের স্রোতে ফিরে আসা যাক!
রসময়ের মৃত্যুর পর সুবিনয় মিল্লক গদীতে আসীন হলেন।
কিন্তু যে অর্থের লালসায় তিনি তাঁর জন্মদাতা পিতাকেও বিষপ্রয়োগে হত্যা করতে পর্যন্ত দ্বিধা করেননি, এবার সেই লালসার মুখে বাধা হল তাঁর বৈমাত্রেয় ভাই হতভাগ্য সুহাস। সুহাস অন্ধের মত তার দাদাকে যতই ভালবাসুক না কেন, সুবিনয়ের মনে সুহাসের জন্য এতটুকু স্নেহও হয়ত কোথাও ছিল না। ছোটবেলা থেকেই সুবিনয় সুহাসকে সম্পত্তির ভাগীদার হিসাবে দেখে এসেছে। ক্রমে সেটাই প্রবল হিংসায় পরিণত হয়। এবারে সুবিনয় সুযোগের সন্ধানে ফিরতে লাগলেন, কি করে সকলের সন্দেহ বাঁচিয়ে সুহাসকে তাঁর পথ হতে সরাবে ঐ চিন্তাই হল তাঁর আসল চিন্তা। ঐভাবেই সুহাসের হত্যারহস্যের হল গোড়াপত্তন। অতীত থেকে আমরাও এবারে ফিরে যাব বর্তমান রায়পুর হত্যা-মীমাংসায়।