যাহ, লাশ থাকবে কেন? বিশ্বাস করতে পারছে না পাম।
জবাব দিল না মুসা। গণ্ডগোল যে হয়েছে সে তো দেখতেই পাচ্ছে। প্রচণ্ড লাফালাফি করছে হৃৎপিণ্ডটা। দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। মাথার ভেতরটা হালকা লাগছে। অক্সিজেনের ঘাটতি পড়েছে যেন ঘরে।
মাথা ঝাড়া দিয়ে মাথার ভেতরটা পরিষ্কার করতে চাইল সে। বলল, আসুন, ঘুরে দেখি।
মুসার জুতোর তলায় পড়ে কাচের টুকরো গুড়ো হচ্ছে। ছড়িয়ে রয়েছে। ওগুলো। কোন জিনিস না ছুঁয়ে, যেটা যেভাবে রয়েছে না নড়িয়ে, সতর্কতার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে লাগল সে। ভাবছে, কি হয়েছিল এখানে? বেডরুমে ঢুকল। ফোনের তার ছেঁড়া। ফোন করে তখন কেন জবাব পায়নি পাম, বোঝা গেল।
বেন নেই! ডাকাতি-টাকাতি হয়নি তো? মুসার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। মেয়েটা।
জানি না। ডাকাতেরা ড্রয়ার আর আলমারি ঘাটে শুনেছি, চেয়ার-টেবিল উল্টে ফেলতে শুনিনি। কিছু চুরি গেল কিনা দেখে বলতে পারবেন?
উঁচু একটা আলমারির দুটো ড্রয়ার খুলে দেখল পাম। ছোয়ওনি কিছু।
তোমার কথাবার্তা যেন কেমন লাগছে? ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল মারফি। মনে হচ্ছে এ লাইনে অভিজ্ঞতা আছে…।
আমি গোয়েন্দা, বলতে গিয়েও থেমে গেল মুসা। এখনই সেটা জানান। বোধহয় ঠিক হবে না। তবে কিছু একটা বলা দরকার। বাঁচিয়ে দিল পাম, চলে যাওয়া উচিত…।
এখনই কি? আবার কাচের টুকরো মাড়িয়ে লিভিংরুমে ফিরে এল মুসা। এত কাচ এল কোথা থেকে? ভাবতে গিয়ে কিশোরের একটা কথা মনে পড়লঃ কি ভেঙেছে সেটা যদি বের করতে না পার, কি ভাঙেনি সেটা দেখো।
কাচ এল কোথা থেকে বের করার জন্যে রান্নাঘরে এসে ঢুকল মুসা। আলমারি খুলে সেগুলোর অবস্থা দেখতে লাগল।
এই, করো কি? মুসার কাঁধ খামচে ধরল মারফি। বিখ্যাত অভিনেতার ঘর থেকে স্যুভনির নেয়ার মতলব?
কাচ ভাঙা এল কোত্থেকে দেখতে চাইছি।
কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে নিল মারফি। লজ্জিত কণ্ঠে বলল, সরি! মাথার ভেতরটা কেমন গোলমাল হয়ে যাচ্ছে।
কাচের সব জিনিসই মনে হলো ঠিক আছে, কিছু ভাঙেনি। জানালাগুলো দেখল মুসা। ভাঙা নেই একটাও। ফুলদানীও সব আস্ত। মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে না ফুল কিংবা পানি।
কয়েকবার করে ঘরগুলো দেখল মুসা। কিছু বুঝতে পারল না। পারলে ভাল হত! রহস্যের সমাধান করে অবাক করে দিতে পারত কিশোর আর রবিনকে।
কিন্তু পারল না।
গোরস্থানে ফেরার পথে চুপচাপ রইল মুসা। শুনছে মারফি আর পামের উত্তেজিত আলোচনা। নানা রকম যুক্তি খাড়া করছে ওরা। ওদের ধারণা, বাড়িটাতে ওসব ঘটার আগেই বেরিয়ে গেছে বেন। কিংবা মাতাল হয়ে এসে নিজেই ওই অবস্থা করেছে ঘরবাড়ির, শেষে রাত কাটাতে গেছে কোন মোটেলে।
ওদের এসব যুক্তি হাস্যকর লাগছে মুসার কাছে। শুনলই শুধু, কিছু বলল না। বলতে গেলে ওরাও তার মতামত শুনতে চাইবে। বলতে পারবে না সে। কিছুই ভেবে বার করতে পারেনি এখনও। কাজেই চুপ থাকতে হলো।
রিয়ার-ভিউ মিররে মুসার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল মারফি, ঠিক পথেই যাচ্ছি তো?
না। ডানে মোড় নিয়ে তারপর দক্ষিণে।
গোরস্থানে রিডারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল সদ্য খোঁড়া একটা কবরের মধ্যে। ধমক দিয়ে একজন অভিনেতাকে বোঝাচ্ছে কি করে বেলচা দিয়ে কবরের মাটি সরাতে হবে।
কবরের পাশে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ। ছিপছিপে শরীর, বেশ সুঠাম, নিয়মিত টেনিস খেলেন বা অন্য ব্যায়াম করেন বোঝা যায়। পরনের সাদা প্যান্ট আর গায়ের পিচ রঙের পোলো শার্ট রোদেপোড়া চামড়া ও ধবধবে সাদা চুলের সঙ্গে মানিয়েছে বেশ।
বেন কই? তিনজনকে ফিরতে দেখে ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলেন রিডার।
আপনার সঙ্গে একটু একা কথা বলা যাবে? কবরের দিকে তাকিয়ে বলল মুসা।
কবর থেকে উঠে এলেন রিডার। মুসা, মারফি আর পামের সঙ্গে সরে যেতে লাগলেন একটা নির্জন জায়গায়। পেছনে আসতে লাগলেন বৃদ্ধ ভদ্রলোক। পায়ের শব্দে মুসা ফিরে তাকাতেই হেসে আন্তরিক গলায় বললেন, আমি ব্রাউন অলিংগার। সাফোকেশন টু-র প্রযোজক। চেকগুলো যেহেতু আমাকেই সই করতে হবে, জানা দরকার টাকাগুলো সব পানিতে ফেলছে কিনা জ্যাক।
দ্বিধা করল মুসা। রিডার কিছুই বললেন না। বলল সে, ডিলন নেই।
মুসার চোখের দিকে তাকালেন অলিংগার। হাত বাড়িয়ে কাঁধ খামচে ধরলেন। শক্তি আছে। কানের কাছে বিপবিপ করল তার হাতঘড়ির অ্যালার্ম। আমাকে ভয় দেখানর চেষ্টা, না? এমনিতেই তো চুল সব পেকে গেছে, আর কি। পাকাবে? কে তুমি?
মুসা বলার আগেই রিডার বলে দিলেন, ও রাফাতের ছেলে।
বেনের ঘরে সব তছনছ! পাম বলল, যুদ্ধ করে গেছে যেন!
যুদ্ধ? হাসলেন রিডার। বেন? একটা মাছি মারার ক্ষমতাও নেই ওর। বাহাদুরি যা দেখায় সবই ছবিতে, অভিনয়ে। পর্দায় দেখলে তো মনে হয় ওর মত নিষ্ঠুর লোক আর নেই।
তাহলে অন্য কেউ ওই অবস্থা করেছে বেনের ঘরের, অলিংগার বললেন। ও তখন ছিল না।
আমারও সে রকমই ধারণা, মারফি বলল।
বেন সারারাত বাড়ি আসেনি, মুসা বলল।
অবাক হয়ে তার দিকে তাকাল সবাই।
তুমি কি করে জানলে? পামের প্রশ্ন।
শোবার ঘরেও তো ঢুকেছি আমরা। বিছানাটা দেখেননি? কেউ ঘুমায়নি ওতে, দেখেই বোঝা যায়।
চালাক ছেলে। বাপের মত। অলিংগার বললেন, যাই বলো, ঘটনাটা স্বাভাবিক লাগছে না।
অলিংগারের প্রশংসায় বুক ফুলে গেল মুসার। ভাবল, কিশোর যতই আমাকে মাথামোটা বলুক, গোয়েন্দা হিসেবে খারাপ নই আমি। তিন গোয়েন্দার একটা কার্ড বের করে দিয়ে বলল, মিস্টার অলিংগার, আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পারব। এখানে আরও দুটো নাম দেখছেন, ওরা আমার বন্ধু…;
তিন গোয়েন্দা? হাসলেন প্রযোজক। না, আপাতত সাহায্য লাগবে না। প্রয়োজন হলে পরে দেখা যাবে। আগে দেখি ও আসে কিনা। এখানে তার জন্যে চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করব আমরা।
চব্বিশ ঘণ্টা? আঁতকে উঠলেন রিডার, খরচ কত বাড়বে জানেন? বরং আরেক কাজ করতে পারি। বসে না থেকে অন্য দৃশ্যের শুটিং করি, মানুষের হৃৎপিণ্ড ছুঁড়ে বের করার দৃশ্যটা।
স্ক্রিপ্টে ওটা নেই, জ্যাক।
তাতে কি? ভাল আলো আছে। লোকজন আছে। গ্যালন গ্যালন রক্ত জোগাড় করা আছে। লোকে রক্তপাত দেখতে পছন্দ করে।
স্ক্রিপ্টে নেই, কাজেই বাজেটেও নেই। বাড়তি খরচ করতে পারব না।
ব্রাউন, ডিরেক্টর আপনি নন, আমি। কাজেই ছবি বানানোর ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হবে আপনাকে।
অলিংগার জবাব দেয়ার আগেই রওনা হয়ে গেলেন রিডার। কয়েক পা এগিয়ে ফিরে তাকিয়ে মুসাকে বললেন, রক্তাক্ত গাড়ির কথা ভুলো না। সবুজ জাগুয়ার চাই আমি, কালচে সবুজ।
লোকজন যেখানে অপেক্ষা করছে সেদিকে চলে গেলেন রিডার। মুসা, পাম আর মারফির দিকে তাকিয়ে হাসলেন অলিংগার। কণ্ঠস্বর নামিয়ে বললেন, একমাত্র আমরাই জানলাম বেন ডিলন বাড়ি নেই। আর কেউ যেন না জানে। লোকে জানলে ছবির বদনাম হবে। কোন স্ক্যাণ্ডাল চাই না। এমনিতেই আলসারের রোগী আমি, দুশ্চিন্তায় থেকে সেটা আর বাড়াতে চাই না। কাল পর্যন্ত অপেক্ষা। করব। তার পরেও বেনের খোঁজ না পেলে একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। তবে তখনকারটা তখন। বুঝতে পেরেছ?
কেউ জানবে না,কথা দিল পাম।
আমরা অন্তত বলব না, বলল মারফি।
বেশ, অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হলো মুসা। তার ইচ্ছে ছিল চমৎকার একটা রহস্যের তদন্ত করে একাই বাজিমাত করে দিয়ে হিরো হয়ে যাবে।
তাহলে কথা দিলে, হাত বাড়িয়ে দিলেন অলিংগার।
বেনের উধাও হওয়ার কথা কাউকে বলতে না পারলেও এখানে শুটিং দেখায় কোন দোষ নেই। রকি বীচে ফেরার তাড়া নেই মুসার।
লাঞ্চে বসেছে কয়েকজন টেকনিশিয়ান।
আজকে আর শুটিং হবে বলে মনে হয় না, একজন বলল খাবার চিবাতে চিবাতে। বেন আসছে না। অহেতুক বসে আছি আমরা।
আরেকজন বলল, মনে হচ্ছে, এই ছবিটাতেও গোলমাল হবে। ওর নাম ডজ।
মানে?
মানে আর কি? তোমরা তো প্রথম সাফোকেশনে কাজ করনি, করলে বুঝতে।
কি বুঝতাম?
কি কাণ্ডটাই যে হয়েছিল! জিনে ধরেছিল যেন ছবিটাকে।
আরে বাবা খুলেই বল না! অধৈর্য হয়ে বলল প্রথম টেকনিশিয়ান।
মুখের খাবারটা চিবিয়ে গিলে নিল ডজ। তারপর বলল, যতবারই জ্যান্ত কবর দেয়ার দৃশ্যটা নেয়ার চেষ্টা করলাম, কথা আটকে যেতে লাগল। পরিচালকের। কিছুতেই আর বলতে পারেন না। এক অদ্ভুত কাণ্ড! যা তা ডিরেক্টর নন, শ্যাডো জিপসন। আজেবাজে প্রযোজকের কাজ করেন না তিনি, জ্যাক রিডারের মত যা পান তাই করেন না। সেজন্যেই সাফোকেশন টু করতে রাজি হননি তিনি। প্রথম ছবির হিরো কোয়েল রিকটারও ছবিটা শেষ করার পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, স্নায়বিক রোগে। পুরো একটা বছর ভুগেছে। কাজ করার সময় আমারও খারাপ লাগত। শুটিঙের সময় মাথা ঘুরত। কেন, বুঝতে পারতাম না।
ওসব কিছু না, বলল অল্প বয়েসী একটা মেয়ে, সে-ও টেকনিশিয়ান, সব ছবির শুটিঙেই কমবেশি গোলমাল হয়।
তা হয়। তবে ওটার মত না। ওটাকে জিনে ধরেছিল! শুরুটা এটারও সুবিধের লাগছে না।
এরপর অন্য প্রসঙ্গে চলে গেল ওরা। একসারি কবরের কাছে সরে এসে একটা ফলকে পিঠ ঠেকিয়ে বসল মুসা। ভেসে আসছে ক্যাসেট প্লেয়ারে বাজান বিটলসের গান। রবিন আর কিশোর থাকলে এখন কি কি কথা হত, কল্পনা করতে পারছে সে। রবিন বলত বিটুলস্ কি ধরনের গান, কোন অ্যালবামে পাওয়া যাবে। তারপর শুরু করত বস বার্টলেট লজের কথা, তিনি কি কি গান শুনতে পছন্দ করেন, বিটলস কতটা ভালবাসেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিশোর এসব গানবাজনার ধার দিয়েও যেত না, সে বলত মুসাকে শান্ত হয়ে চোখ খোলা রাখতে, যাতে সব কিছু চোখে পড়ে। বোঝাত, জিন বলে কিছু নেই।
কিন্তু ওরা আজ নেই এখানে। আমাকে একাই সামলাতে হবে এই কেস। একা! ক
ছায়া পড়ল গায়ে। ফিরে তাকিয়ে দেখল, একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে।
খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে? বলল লোকটা। লম্বা, বয়েস চল্লিশের কোঠায়, মাথার ওপরের অংশের চুল খাটো করে ছাটা, ঘাড়ের কাছেরগুলো লম্রা লম্বা। পরনে ঢিলাঢালা সাদা পোশাক। অনেকগুলো বেল্ট, নেকলেস আর ব্রেসলেট লাগিয়েছে। গলায়, হাতে, কোমরে। সেগুলোতে লাগানো রয়েছে নানা ধরনের স্ফটিক।
রহস্যময় গলায় বলল লোকটা আবার, মাঝে মাঝে ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই না। করে গায়ের ওপর দিয়ে চলে যেতে দিতে হয়। মুসার মুখোমুখি ঘাসের ওপর আসনপিড়ি হয়ে বসল সে। দুহাত দিয়ে মুসার ডান হাতটা চেপে ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে নিজের নাম বলল, আমি পটার বোনহেড।
আমি মুসা আমান। আপনি কি অভিনেতা?
হেসে উঠল লোকটা, আন্তরিক হাসি, তাতে কুটিলতা নেই। সারাটা সময় আমি আমি হতেই পছন্দ করি, অভিনেতা নয়। অন্য কোন চরিত্র নয়। তোমার ব্যাপারটা কি? এই সিনেমা- রোগীদের সঙ্গে মিশলে কি করে?
আমি সিনেমার লোক নই, মুসা বলল। তবে এই ছবিতে একটা কাজ পেয়েছি।
গলায় ঝোলানো রূপার চেনে লাগানো লম্বা চোখা মাথাওয়ালা গোলাপী একটা স্ফটিকে আঙুল বোলাতে লাগল বোনহেড। এটাতে কাজ করার মানে জানো? দোরাস্তার কাছে থমকে যাওয়া। কোন দিকে যাবে বুঝতে পারবে না।
লোকটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুসা। আশ্চর্য! এ রকম করে কথা বলে। কেন?
আবার বলল বোনহেড, এরকম পরিস্থিতিতে কোন দিকেই তোমার যাওয়া উচিত না। বিপদ কাটানোর ওটাই সব চেয়ে সহজ পথ।
সন্দেহ জাগতে আরম্ভ করেছে মুসার। এসব উক্তি কোথা থেকে ধার করেছে সে? চীনা জ্যোতিষির সাগরেদ নয় তো?
গলা থেকে রূপার চেনটা খুলে নিয়ে মুসার হাতে দিতে গেল সে।
নো, থ্যাঙ্কস, মানা করে দিল মুসা, গহনা-টহনা পরতে আমার ভাল লাগে না।
এটা গহনা নয়, বোনহেড বলল, নাও। এর সঙ্গে কথা বলো, শব্দের কাঁপুনিতেই সাড়া দেবে। চেন থেকে স্ফটিকটা খুলে নিয়ে জোর করে মুসার হাতে গুঁজে দিয়ে উঠে দাঁড়াল সে। শুনবে, বুঝলে, কথা শুনবে স্ফটিকটার। আমি শুনেছি। এটা আমাকে বলল, এখানে একজনের ব্যাপারেই মাথা ঘামাতে। কার। কথা জানো? তুমি।
সাবধান করছেন, না হুমকি দিচ্ছেন?
কঠিন স্বরে বলল মুসা। লোকটাকে বুঝতে দিল না বুকের ভেতর কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে ওর। অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। বেন ডিলনের ঘরেও এরকম হয়েছিল। যেন সমস্ত অক্সিজেন শুষে নেয়া হয়েছে বাতাসের। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
মুসার দিকে তাকাল বোনহেড। ওরকম কিছু বলছি না। আমার তৃতীয় নয়ন। যা দেখেছে তাই কেবল জানাতে এলাম।
দেখুন, সহজ করে জবাব দিন দয়া করে। আমি কি কোন বিপদে পড়তে যাচ্ছি?
স্ফটিকটাকে জিজ্ঞেস করো। আর দাঁড়াল না বোনহেড।
মুঠো খুলে তালুতে রাখা গোলাপী জিনিসটার দিকে তাকিয়ে রইল মুসা। রোদ লেগে চকমক করছে। গরম হয়ে গেছে। আর বসে থাকতে পারল না। লাফিয়ে উঠে গাড়ির দিকে রওনা হলো।