২৫২তম অধ্যায়
সূক্ষ্ম পঞ্চভূতের কাৰ্য্য
“ব্যাস বলিলেন, হে বৎস! গুণবান বক্তা মাপনাপমানাদিসহিষ্ণু [মান ও অপমানে সহনশীল], ধর্ম্মার্থানুষ্ঠানপরতন্ত্র [ধর্ম্ম ও অর্থের অনুষ্ঠানে নিরত], মোক্ষজিজ্ঞাসু [মুক্তি জানিতে অভিলাষী] ব্যক্তিকে অগ্রে. পূর্বোক্ত বাক্যসকল শ্রবণ করাইয়া পশ্চাৎ উপদেশ প্রদান করিবেন। আকাশ, বায়ু, জ্যোতিঃ, জল ও পৃথিবী এবং উৎপত্তি, বিনাশ ও কাল সমস্ত প্রাণীতেই বিদ্যমান রহিয়াছে। আকাশ ছিদ্ৰাত্মক ও শ্রবণেন্দ্রিয় আকাশাত্মক। মূৰ্ত্তিশাস্ত্রবেত্তা পণ্ডিতেরা শব্দকে আত্মগুণ বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়া থাকেন। চরণ, প্রাণ, অপান ও তগিন্দ্রিয় বায়ুর কাৰ্য্য ও স্পর্শ উহার গুণ। তাপ, পাক, প্রকাশ, উম্মা ও চক্ষু তেজের কাৰ্য্য এবং তাম্র, গৌর ও কৃষ্ণাদি রূপই উহার গুণ। ক্লেশ, দ্রবীকরণ, রসন, জিহ্বা ও রক্ত, মজ্জা প্রভৃতি পদার্থসমুদয় সলিলের কাৰ্য্য ও রস উহার গুণ। ধাতু, অস্থি, দম্ভ, নখ, শ্মশ্রু, রোম, কেশ, শির, স্নায়ু ও চৰ্ম্ম প্রভৃতি পদার্থ এবং ঘ্রাণেন্দ্রিয় এই সমুদয় পৃথিবীর কাৰ্য্য এবং গন্ধ উহার গুণ। আকাশের শব্দ; বায়ুর শব্দ ও স্পর্শ, জ্যোতির শব্দ, স্পর্শ ও রূপ; সলিলের শব্দ, স্পর্শ, রূপ ও রস এবং পৃথিবীর শব্দ, রূপ, রস ও গন্ধ বিদ্যমান রহিয়াছে। মহর্ষিগণ এইরূপে পঞ্চভূত এবং তাঁহাদের কাৰ্য্য ও গুণনিরূপণ করিয়া গিয়াছেন। মনুষ্যের দেহমধ্যে ঐ পঞ্চভূত, প্রকৃতি, মহত্তত্ত্ব, অহঙ্কার, মন, বুদ্ধি ও জীবাত্মা বিদ্যমান রহিয়াছে। বুদ্ধি নিশ্চয়ত্মক, মন সংশয়াত্মক ও দেহাভিমানী জীব কৰ্ম্মের আশ্রয়। জীব সত্যাদি কালকৃত পুণ্যপাপসংযুক্ত হইলেও যদি আপনাকে পুণ্যপাপে নির্লিপ্ত বলিয়া জ্ঞান করে, তাহা হইলে আর তাহাকে বিমোহিত হইতে হয় না।”