রাত্রিসূক্ত ও অরণ্যানীসূক্ত
প্রাচীন ভারতীয়দের অরণ্যবেষ্টিত বসতিতে ঘনকৃষ্ণ রাত্রি যে রহস্য ও ভীতি সঞ্চার করত, তারই সজীব অভিব্যক্তি ঘটেছে রাত্রিসূক্তে (১০ : ১২৭)। অন্ধকারের শক্তি যেহেতু অনতিক্রম্য, কবি রাত্রির কাছে রাত্রিকালীন বিভিন্ন বিপদ–নেকড়ে বাঘ, চোরডাকাত ও আকস্মিক মৃত্যু থেকে রক্ষা করার জন্য তাই প্রার্থনা জানিয়েছেন। আদিম মানুষ যখন মূলত প্ৰকৃতির দয়ার উপর নির্ভরশীল ছিল, অজ্ঞাত বিপদের আশঙ্কায় যখন সে নিরস্তর কলপমান থাকত–তখনকার উদ্বেগের সুন্দর প্রতিফলন রয়ে গেছে এই সূক্তে ।
অরণ্যানীর প্রতি উদ্দিষ্ট সূক্তটিও (১০ : ১৪৭) বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে এর সঙ্গে তুলনীয়। নূতন আর্য বসতিগুলির চতুষ্পার্শ্বের নিবিড় অরণ্য ছিল একই সঙ্গে জীবনধারণের উৎস ও বহুবিধ সমাধানহীন রহস্যের আকর। এই সূক্তেও বৈদিক কবির কল্পনাশক্তি ও বর্ণনাচাতুর্য স্পষ্ট অভিব্যক্তি লাভ করেছে।