ইতিমধ্যে পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। আবু তালেব তখনো ছিলেন শংকিত। পৌত্তলিকদের পক্ষ থেকে তিনি তাঁর ভ্রাতস্পুত্রের ব্যাপারে আশংকা বোধ করছিলেন। তিনি এযাবত সংঘঠিত ঘটনাবলী পর্যালোচনা করছিলেন। পৌত্তলিকরা তাকে মোকাবেলার হুমকি দিয়েছিলো। আম্মার ইবনে ওলিদের বিনিময়ে তার ভ্রাতুস্পুত্রকে নিয়ে হত্যা করার প্রস্তাব করেছিলো। আবু জেহেল একটি ভারী পাথর তাঁর ভাতিজার মস্তক চূর্ণ করার চেষ্টা করেছিলো। ওকবা ইবনে আবু মুঈত গলায় চাদর পেচিয়ে তাঁর ভাতিজাকে শ্বাষরোধ করে হত্যা করতে চেয়েছিলো। খাত্তাবের পুত্র খোলা তলোয়ার হাতে তাঁকে হত্যা করতে বেরিয়েছিলো। পর্যায়ক্রমে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার প্রতি লক্ষ্য করে আবু তালিব এমন গুরুতর বিপদের আশংকা করলেন যে, তাঁর বুক কেঁপে উঠলো।
তিনি ভালভাবে বুঝতে পারলেন পৌত্তলিকরা তাঁর ভাতিজাকে হত্যা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এমতবস্থায় কোন কাফের যদি তাঁর ভাতিজার উপর হঠাৎ করে হামলা চালায় তাহলে বিচ্ছিন্নভাবে হযরত হামযা বা হযরত ওমর বা আন্য কেউ কি করে তাঁকে রক্ষা করবে।
আবু তালেবের এ আমংকা অমুলক ছিলনা। কেন না পৌত্তলিকরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করতে সংকল্পবদ্ধ ছিলো। তাদের এ সংকল্পের প্রতি ঈঙ্গিত করেই আল্লাহ তায়ালা বলেন, “ওরা কি কোন ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে ? আমিইতো সিদ্ধানতকারী”।
প্রশ্ন হচ্ছে এ ধরণের পরিস্থিতে আবু তালেবের কি করা উচিত ? তিনি দেখলেন যে, পৌত্তলিকরা চারিদিক থেকে তাঁর ভাতিজাকে নাজেহাল করতে উঠে লেগেছে। তখন তিনি তার পিতামহের দুই বিশিষ্ঠ ব্যক্তিত্য হাশেম ও মোত্তালিবদের একত্রিত করলেন। তিনি সেই সমাবেশে তাঁর ভাতিজাকে রক্ষার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানালেন। তিনি আবেগজড়িত কন্ঠে বললেন, যে দায়িত্ব এতদিন আমি একা পালন করেছি, এবার এসো, আমরা সবাই মিলে সে দায়িত্ব পালন করি। আবু তালেবের এ আহবানে তার দুই পুর্বপুরুষের বংশধররা সাড়া দিলেন। আবু তালেবের ভাই আবু লাহাব শুধু ভিন্নমত পোষন করলো। সে অস্বীকৃতি জানিয়ে পৌত্তলিকদের সাথে গিয়ে মিলিত হলো।