২০. কিরীটী মৃদু হেসে বললে

কিরীটী মৃদু হেসে বললে, গতরাত্রে আমাদের বিশেষ আলোচ্য সময়টি হচ্ছে সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটা—ঐ একটি ঘণ্টা অর্থাৎ সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটা ঐ একঘণ্টা সময়ের মধ্যে ওখানে যারা যারা উপস্থিত ছিল বা আসা-যাওয়া করেছে, তাদের মুভমেন্টস্-এর ওপরই আমাদের মিত্রা সেনের হত্যা-ব্যাপারে যাবতীয় রহস্য ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে—এই কথাটা ধরে নিতে হবে। কিন্তু প্রত্যেকের আলাদা আলাদা statement থেকে যতটা আমরা আপাতত সংগ্রহ করতে পেরেছি তার মধ্যে দুটি প্রাণী ব্যতীত অন্য কাউকেই

ঐ সময়ের জালে আটকাতে পারছি না। তাদের মধ্যে আবার একজন নিহত। দ্বিতীয়জন। আপাতত পলাতক। নাগালের বাইরে। অর্থাৎ মিত্রা সেন ও অশোক রায়। কিন্তু একটা ব্যাপার নিশ্চয়ই তুই লক্ষ্য করেছিস, বিশাখার statement যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমত অশোক রায় কিছুতেই হত্যাকারী হতে পারে না। এবং দ্বিতীয়ত যে নারী-কণ্ঠস্বরকে বিশাখা অশোকের সঙ্গে কথা বলতে গতরাত্রে শুনেছিল সে কার কণ্ঠস্বর?

তোর মতে তা হলে বুঝতে পারছি সেই অদৃশ্য নারী-কণ্ঠস্বরের অধিকারিনীই মিত্রা সেনের হত্যাকারিণী। অর্থাৎ এক্ষেত্রে মিত্রা সেনকে হত্যা করেছে কোন এক নারীই, পুরুষ নয়—তাই কি?

হ্যাঁ, আমার তাই ধারণা। মৃদুকণ্ঠে কিরীটা বললে, এবং শুধু তাই নয়, সেই হত্যাকারিণী নারী আগে থাকতেই অকুস্থানে উপস্থিত ছিল এও আমার স্থির বিশ্বাস।

কিন্তু কে সে নারী?

আপাতত অন্তরালে থাকলেও খুঁজে তাকে বের করবই।

কিন্তু গতকাল বৈকালী সঙ্ঘে এমন কোনো অপরিচিতা নারীর উপস্থিতির কথাই তো জানা যায়নি কারও জবানবন্দি থেকেই!

তা অবিশ্যি জানা যায়নি সত্যি!

তবে শশী হাজরার স্টেটমেন্টকে যদি নির্ভুল বলে ধরে নেওয়া যায় এবং বাইরের কোনো অপরিচিতা নারী না হয়ে যদি সঙ্ঘেরই কোন মেম্বার নারী হয় তো সে মিত্রা সেনই।

কেন?

কারণ শশী হাজরার স্টেটমেন্ট থেকে জেনেছি মিত্রা সেনই গতরাত্রে প্রথম আসে।

না। সত্যি কথা সে বলেনি। আর সেই জন্যই লাহিড়ীকে বলে এসেছি তাকে এ্যারেস্ট করে তার ওপরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখবার জন্য। বুঝলাম, কিন্তু তারপর?

এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে অশোক রায়ের সন্ধান করা। তাকে খুঁজে পাওয়া গেলে হয়ত হত্যাকারিণীকে ধরতে আমাদের বিশেষ বেগ পেতে হবে না, কারণ সে-ই একমাত্র হত্যাকারিণীকে দেখেছিল।

আর কোনো প্রোগ্রাম নেই?

আছে। দু-জায়গা নিঃশব্দে আজই রাত্রে রেইড করতে হবে।

একটা তো বুঝতে পারছি ডাঃ ভুজঙ্গ চৌধুরীর চেম্বার ও নার্সিং হোম। দ্বিতীয়টি?

তাঁর আবাসগৃহ।

বলিস কি?

হ্যাঁ।

ঐদিনই বিকেলের দিকে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গেল কিরীটীর অনুমান মিথ্যে নয়। তীব্র বিষের ক্রিয়াতেই মিত্রা সেনের মৃত্যু ঘটেছে-Curara (রারা) বিষের ক্রিয়ায়। এবং তার পাকস্থলীতে যা পাওয়া গিয়েছেসেটার মধ্যে আর যাই থাক অ্যালকোহলের নামগন্ধও নেই। শুধু তাই নয়,যে পেগ গ্লাসটি অকুস্থানে মৃতদেহের সন্নিকটে পাওয়া গিয়েছিল সেটা কেমিকেল অ্যানালিসিস করেও কিছু পাওয়া যায়নি, তবে সিরিঞ্জ অ্যানালিসিস করে Curara বিষ পাওয়া গিয়েছে। এমন কি অ্যালকোহলও না। বিশেষ একটি ব্যাপার যা পুলিস সার্জেন জানিয়েছেন কিরীটীকে সেটা হচ্ছে, মৃতদেহের পৃষ্ঠদেশে একটি নীডল পাংচারের দাগ পাওয়া গিয়েছে, সম্ভবত সেইখানেই ঐ বিষ সিরিঞ্জের সাহায্যে মিত্রা সেনের দেহে প্রবেশ করানো হয়েছিল।

যাক নিঃসন্দেহ হওয়া গেল একটা ব্যাপারে যে, মিত্রা সেনের মৃত্যুর ব্যাপারটা হত্যাই—আত্মহত্যা নয়।

বিকেলের শেষ রৌদ্রালোকটুকুও যেন যাই-যাই করছিল।

কিরীটীর ঘরের মধ্যে বসে আমি ও কিরীটী ময়নাতদন্ত-রিপোর্টও কেমিকেল অ্যানালিসিসের রিপোর্ট নিয়েই আলোচনা করছিলাম।

জংলী এসে ঐসময় ঘরে ঢুকল। বললে ব্যারিস্টার সাহেব রাধেশ রায় এসেছেন, দেখা করতে চান।

কিরীটী বললে, হ্যাঁ, এই ঘরেই নিয়ে আয়।

একটু পরেই প্রৌঢ় ব্যারিস্টার রাধেশ রায় এসে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন।

ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকাতেই যেটা অত্যন্ত সুস্পষ্ট হয়ে আমার চোখে ধরা পড়ল সেটা হচ্ছে, গভীর একটা ক্লান্তি ও দুশ্চিন্তার ছায়া যেন তাঁর সমগ্র মুখখানির উপর ফুটে উঠেছে।

বসুন মিঃ রায়। কিরীটীই রাধেশ রায়কে আহ্বান জানাল।

রাধেশ রায় সামনের দামী সোফাটার উপরে বসে বারেকমাত্র আমার মুখের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টিটা নামিয়ে নিলেন, তারপর অত্যন্ত মৃদুকণ্ঠে বললেন, না মিঃ রায়, তার কোন সন্ধানই করতে পারলাম না। রাত সাড়ে নটার কিছু পরে শুনলাম সে নাকি একবার বাড়িতে এসেছিল। তারপরেই একটা সুটকেস হাতে সে বের হয়ে যায় মিনিট দশ-পনেরোর মধ্যেই। চাকরটা জিজ্ঞাসা করেছিল কোথায় সে যাচ্ছে কিন্তু সে কোনো জবাব দেয়নি। বলেনি কোথায় যাচ্ছে। কিন্তু সত্যি কি আপনার মনে হয় মিঃ রায়, তারই এ কাজ?

কিরীটী কোনো জবাব দেয় না, চুপ করে থাকে।

রাধেশ রায় আবার বলতে লাগলেন, অশোকের টেম্পারামেণ্ট আমার শুধু ভাল করে জানা বলেই নয়, এ ধরনের ক্রাইম,—আইন-আদালত নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকেও বলতে পারি সে এ কাজ করেনি মিঃ রায়। তার দ্বারা এ কাজ সম্ভব নয়।

সেটা তো পরের কথা মিঃ রায়, কিরীটী বলে, কিন্তু এভাবে আকস্মিক তাঁর নিরুদ্দিষ্ট হওয়ায় যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তাতে করে পুলিসের চোখে কেমন করে নিজেকে তিনি

পরিষ্কার করবেন, যতক্ষণ না তিনি সামনাসামনি এসে দাঁড়াচ্ছেন ও তাদের সমস্ত প্রকার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন!

কিন্তু আমি কি করতে পারি বলুন? আজ পর্যন্ত কোন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কখনও সে যায়নি। তবু আমি অবিশ্যি পাটনায় আমার ভাইয়ের কাছে, দিল্লীতে তার মেশোর কাছে তার করে দিয়েছি। যথাসম্ভব এখানেও পরিচিত-অপরিচিত সকলের কাছে সন্ধান নিয়েছি।

পরিচিত কোন জায়গায় সে যায়নি। তাছাড়া কাল রাত্রে যে সময় সে বাড়ি ছেড়ে গিয়েছে, দুরপাল্লার কোনো ট্রেনই তখন আর ছিল না প্রথমত এবং দ্বিতীয়ত ট্রেনে গেলে সেখানে এত তাড়াতাড়ি সে পৌঁছতে পারত না। সে তার নিজের গাড়ি নিয়েই গিয়েছে।

না না—এ আপনি কি বলছেন মিঃ রায়! তার গাড়ি তো গ্যারেজেই রয়েছে। কিরীটী এবারে প্রত্যুত্তরেমুহূর্তকাল নীরব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রাধেশ রায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে শান্তকণ্ঠে বললে, হ্যাঁ, গ্যারেজে আছে সে গাড়ি এবং কাল রাত্রে ছিল না। সে গাড়ি গ্যারেজে ফিরে এসেছে আজ সকাল আটটায়।

কে—কে বলল আপনাকে এ কথা?

মিঃ রায়, আপনি যে আপনার একমাত্র পুত্রস্নেহে অন্ধ সেকথা তো আমার অজানা নয়। শুনুন রাধেশবাবু, আজ সকালে যে পাঞ্জাবী ড্রাইভার অশোকবাবুর গাড়িটা নিয়ে এসে গ্যারেজে গাড়ি রেখে সোজা আপনার বাড়ির অন্দরে গিয়ে প্রবেশ করেছিল আমি তার সঙ্গে কয়েকটা কথা বলতে চাই। এই যে টেলিফোন আছে ওখানে। ফোনে তাকে এখুনি একবার এখানে ডেকে আনবেন কি?

কিরীটীর কথায় দিশেহারা বিবশ দৃষ্টিতে কয়েক মুহূর্ত রাধেশ রায় তাকিয়ে থাকেন তার মুখের দিকে নিঃশব্দে। তারপর মৃদু দ্বিধাজড়িত কণ্ঠে যেন কতকটা আত্মগত ভাবেই কথাটা উচ্চারণ করেন, পাঞ্জাবী ড্রাইভার!

হ্যাঁ। আপনি জানেন না রাধেশবাবু, গতরাত থেকেই প্লেন ড্রেসে আমার লোক আপনার বাড়ির প্রহরায় ছিল। এবং এখনও আছে। তারা আপনার গৃহের প্রতিটি খুঁটিনাটির ওপর নজর রেখেছে। তারাই যথাসময়ে রিপোর্ট দিয়েছে।

কিন্তু আমার বাড়িতে তো কোন পাঞ্জাবী ড্রাইভার নেই। একজন মাত্র ড্রাইভার,বাঙালী,

সেও আমারই গাড়ি চালায়। অশোক বরাবর তার নিজের গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করত। তার  তো কোন ড্রাইভারই আজ পর্যন্ত নেই।

তাও আমার অজানা নয়। তাই তো আমি জিজ্ঞাসা করছি, পাঞ্জাবীর ছদ্মবেশে তাহলে সে ব্যক্তিটি কে, যে আজ সকালে আপনার ছেলের গাড়িটা গ্যারেজে এনে তুলে আপনার বাড়ির ভেতরই অদৃশ্য হয়ে গেল?

আপনি যে কি বলছেন মিঃ রায়, বুঝতেই পারছি না! ব্যাপারটা আগাগোড়া আমার কাছে যে গল্পের মতই মনে হচ্ছে!

গল্প নয় রাধেশবাবু, নিষ্ঠুর সত্য–বলতে বলতে হঠাৎ পকেট থেকে একখানা ফটোগ্রাফ চকিতে বের করে আমার দিকে তাকিয়ে কিরীটী বললে, আলোটা জ্বেলে দে সুব্রত।

নিঃশব্দে উঠে আমি ঘরের আলোটা জ্বেলে দিলাম সুইচ টিপে, কেননা ইতিমধ্যেই ঘরের মধ্যে সন্ধ্যার অন্ধকার বেশ চাপ বেঁধে উঠেছিল।

 হাতের ফটোটা নিঃশব্দে সম্মুখে উপবিষ্ট রাধেশ রায়ের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে কিরীটী পূর্ববৎ শান্ত অথচ তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বললে, এই ফটোটার দিকে ভাল করে চেয়ে দেখুন রাধেশবাবু। সেই ড্রাইভারটি যখন গ্যারেজে গাড়ি রেখে অন্দরে প্রবেশ করছিল, সেই সময়ই আমার লোক দূর থেকে তার এই ফটোটা তুলে নিয়েছে। ঘণ্টা তিনেক আগেই মাত্র এটা আমার হাতে এসে পৌঁছেছে। দেখুন তো চিনতে পারেন কিনা, এই লম্বা লোকটি, মাথায় পাগড়ি—এ কে?

নির্বাক বিহ্বল বোবা দৃষ্টিতে রাধেশ রায় কিরীটীর দেওয়া ফটোটা হাতে নিয়ে সেই দিকে তাকিয়ে রইলেন।

সুট পরিহিত দীর্ঘকায় এক ব্যক্তি, মাথায় পাঞ্জাবীদের মতন পাগড়ি, অন্দরের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করতে উদ্যত, ঐ সময়ই স্ন্যাপটা নেওয়া হয়েছে।

ঘরের মধ্যে একটশ অদ্ভুত স্তব্ধতা। কেবল দেওয়ালঘড়ির পেণ্ডুলামটা একঘেয়ে টকটক শব্দ জানিয়ে চলেছে।

কি, জবাব দিন রাধেশবাবু! এ লোকটিকে এখন পর্যন্ত আপনার বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায়নি। কে এ লোকটি?

রাধেশ রায় তথাপি নির্বাক।

এ হয়তো আপনার ছেলের খবর জানে। আমি এর সঙ্গে কথা বলতে চাই। দয়া করে ফোনে এখানে লোকটিকে একবার ডাকবেন কি! আবার কিরীটী বলে।

রাধেশ রায় পূর্ববৎ নিশ্চুপ।

শুনুন রাধেশবাবু, মাসখানেক আগে একদিন আপনি ব্যাকুল হয়ে এবং আপনার ছেলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিশেষভাবে চিন্তিত হয়েই সাহায্যের জন্য আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। এবং আজ বলতে বাধা নেই, আপনার মুখে সেদিনকার সেই কাহিনী শুনেই সেদিন তার ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে অনেকখানিই এগুতে হয়েছিল আমাকে পরে। যার ফলে আমাকে ঘটনাচক্রে শেষ পর্যন্ত এমন একটা ব্যাপারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল যার পশ্চাতে আমি অনুসন্ধানের দ্বারা জানতে পেরেছিলাম যে, একটা বিরাট ব্ল্যাক মেইলিংয়ের প্ল্যান রয়েছে। এবং শুধু আপনার ছেলে অশোকবাবুই নন, আরও অনেকেই সে প্ল্যানের মধ্যে, পরে জানতে পারি যে, অলক্ষ্যে জড়িয়ে পড়ে শোষিত হয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এবং সেই রহস্য উদঘাটনের জন্য এগুতে এগুতে হঠাৎ এক বিষধর সর্প গতরাত্রে গরল উদগীরণ করে সমগ্র ব্যাপারটিকে জটিল করে তুলেছে আরও। মন বলছে আমার সেই ব্ল্যাক মেইলিংয়ের সঙ্গে মিত্রা সেনের হত্যার ব্যাপারটা নিশ্চয়ই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না এখনো পর্যন্ত কিভাবে সেই যোগাযোগটা ঘটেছে। এবং যতক্ষণ না সেটা আরও স্পষ্ট করে বুঝতে পারছি, আসল ব্যাপারে আর অগ্রসর হবারও যেন পথ করতে পারছি না। আর সেই কারণেই আপনার ছেলে অশোকবাবুর সঙ্গে দেখা হওয়ার আমার একান্ত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। প্লিজ, আপনি আমাকে সাহায্য করুন। ঐভাবে চুপ করে থেকে আমাকে নিরর্থক দেরি করাবেন না।

ক্ষমা করবেন মিঃ রায়। যে লোকটি সম্পর্কে আপনি জানতে চাইছেন সে লোকটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

ফটোর ঐ লোকটি—ওকেও চেনেন না?

না।

কিন্তু আমি যদি বলি রাধেশবাবু, আপনি সত্যকে এড়িয়ে যাচ্ছেন?

এড়িয়ে যাচ্ছি!

হ্যাঁ। কার ফটো আপনি তা না স্বীকার করলেও আমি জানি ঐ ফটোর খায্যে যে ধরা পড়েছে সে কে, কি তার পরিচয়?

কে? ভীত-বিহ্বল কণ্ঠে অস্ফুটে কথাটা উচ্চারণ করে রাধেশ রায় তাকালেন কিরীটীয় মুখের দিকে।

আপনার ছেলে আশোক রায়। শান্ত দৃঢ়কণ্ঠে কিরীটী শেষ কথাটা উচ্চারণ করল।

এবং কিরীটীর কথাটা উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই রাধেশ রায়ের বিষণ্ণ মুখখানি যেন আরও বিষণ্ণ—একেবারে কালো হয়ে গেল মুহূর্তে।

বোবার মতই তাকিয়ে থাকেন রাধেশ রায় কিরীটীর মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে অতঃপর।