আমন্ত্রণ ২০
রোদন কি হেতু সখা? সর্বশক্তি তোমারি তো অন্তরে নিহিত!
জ্ঞান-বীর্য-প্রদ সেই নিজ দিব্য স্বরূপেরে কর উদ্বোধিত—
ত্রিলোকে যা কিছু আছে সবই তব পাদমূলে আসিবে তখন!
আত্মার শক্তিই হয় চিরজয়ী—জড়শক্তি নহে কদাচন।
ত্রিভুবন উপাড়িব, তারকা চিবায়ে খাব [করি অট্টহাস]!
জান না কি কেবা মোরা? বীর গতভয় মোরা রামকৃষ্ণ দাস।
দেহকেই ‘আমি’ ভাবে—নাস্তিক্য ইহারি নাম—যারা অনিক্ষণ
‘ক্ষীণ মোরা, দীন মোরা’ বলি করে তাহারাই করুণ ক্রন্দন।
রামকৃষ্ণ-দাস মোরা—[দেহাতীত অবিকারী অমৃত অভয়
সত্তাকেই ‘আমি’ জানি] অভয়-পদেতে স্থিত হয়েছি যখন—
আস্তিক্য ইহারি নাম—হইয়াছি মোরা সবে বীর, গতভয়।
সংসার-আসক্তি ত্যজি, ত্যজি সর্ব-দ্বন্দ্ব-মূল স্বার্থপরতায়,
পরামৃত পান করি, ধ্যান করি সর্ববিধ কল্যাণ-নিলয়
শ্রীগুরু-চরণাম্বুজ, ধরাবাসী সবাকারে করি নমস্কার
অমৃতের পূর্ণপাত্রে পান তরে আমন্ত্রণ করি বারংবার—
পূর্ণ যেই পাত্রখানি অনাদি-অনন্ত-বেদ-
পয়োধি-মন্থন-লব্ধ অতুলন ধনে,
যাহে শক্তি প্রদানিলা প্রজাপতি-নারায়ণ-
মহেশাদি শক্তিমান্ সর্ব দেবগণে,
পরিপূর্ণ যাহা সর্ব-অবতার-প্রাণসারে—
পূর্ণ যহা সবাকার মিলিত সত্তায়—
সে অমৃত-পূর্ণপাত্র ধরিয়া মানবদেহ
রামকৃষ্ণ-রূপ লয়ে এসেছে ধরায়।