সূর্যাসূক্ত
অনন্য বিষয়গৌরবের জন্য কিছু কিছু সূক্ত আমাদের বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করে। মোট সাতচল্লিশটি মন্ত্রযুক্ত সূর্যাসূক্ত (১০ : ৮৫) রূপে পরিচিত বিবাহ সূক্তটি বেশ আগ্রহ-উদ্দীপক। যদিও এতে মূলত সবিতৃকন্যা সূৰ্যার পতিগৃহে যাত্রার বর্ণনা রয়েছে, প্রকৃতপক্ষে শেষ পর্যন্ত তা বিবাহ-অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আশীর্বাদ ও মাঙ্গলিক আচার এবং তৎসহ ঐন্দ্ৰজালিক ও আনুষ্ঠানিক অনুপুঙ্খাসমূহের প্রামাণিক বিবৃতিপূর্ণ সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের একটি আদর্শ বিবাহ সূক্তে পর্যবসিত হয়েছে। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে যে সাধারণত শীত-প্রধান অঞ্চলেই সূৰ্য নারী বা দেবী রূপে কল্পিত, যেমন প্রাচীন মধ্যপ্রাচ্যের দেবী আরিন্না। জার্মান ভাষায়ও সূর্য শ্ৰীলিঙ্গ। আলোচ্য সুক্তে সূর্যাকে বধুরূপে পাওয়ার জন্য দেবতারা পরস্পরের সঙ্গে ক্রীড়া-প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সূৰ্যার পিতা সূর্যাকে তার প্রেমিক সোমদেবের কাছে অৰ্পণ করতে উদ্যত ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত অশ্বীরা রথে করে তাকে হয়ত সোমের কাছেই নিয়ে যান। সূক্তের শেষ ভাগে নবদম্পতীর জীবনকে নির্বিঘ্ন করার জন্য অশুভ জাদুশক্তি ও অধিদৈবিক আধি-ব্যাধিকে মন্ত্রবলে বিতাড়িত করার কথা পাই। সবশেষে রয়েছে বিখ্যাত আশীর্বাণী : বধু যেন শ্বশুরালয়ে সম্রাজ্ঞী হতে পারে।